![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
.......স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দেখতাম, মা হয়তো একটা ডিম ভেজে পুরো অর্ধেকটা খুব যতনে রেখে দিয়েছেন আমার জন্য। ডিম ভাজিটা যাতে বড় হয়, সে জন্য ডিমের সাথে খানিক ভাত কচলে দেয়া হতো। ছোট্ট এক দু টুকরো আদাকুচি দেয়া হতো যাতে খেতে স্বাদ হয়। ঘরের সামনের আঙিনায় লাগানো বিলেতি ধনেপাতাও দেওয়া হতো কয়েকটি।
স্কুল থেকে ফিরে অর্ধেক ডিমভাজি দেখে বেশ আনন্দিত হতাম। ডিমভাজির সাথে গরম ভাত আর টিউবঅয়েলের পানি। পানিটা ব্যবহার করতাম ডালের বদলে। কালেভদ্রে ডাল কেনা হতো আমাদের। তাও আবার খেসারি ডাল। মসুরি ডাল কেনার সামর্থ্য কই! ডালের বদলে চালভাজার গুড়ো দিয়েও ডাল রান্না করা হতো কখনও কখনও। আমরা তৃপ্তি করেই খেতাম তা।
মা'র জন্য একটু ডিম ভাজি ভেঙে রাখলে তিনি পুনরায় তা আবার আমার পাতে তুলে দিতেন।
বলতেন, "তুই পড়া ল্যাহা করস, তোর বল-বুদ্ধির দরকার আছে। ডিম খাইলে বল-বুদ্ধি হইবো।"
তারপর মা কোনও এক ফাঁকে শুধু পানি ঢেলে একটা শুকনো মরিচ ডলে কিংবা কিছু মরিচের গুড়া আর লবণ মেখে ভাত খেয়ে নিতেন। ঝালে তার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল গড়িয়ে পড়তো।
যেদিন হাঁস কিংবা মুরগি ডিম পাড়তো না.... সেদিন পাশের ঘরের জ্যাঠি মা'র কাছ থেকে এক চামচ তরকারি এনে রেখে দিতেন ছেলের জন্য। জ্যাঠি মা'র তরকারি স্বাদ হতো খুব। কেন না তরকারিতে তেলের পরিমানটা একটু বাড়িয়ে দিতেন তিনি। তাঁর ছেলের বাজারে তেল-নুনের ব্যবসা ছিল যে...।
কারও বিয়ে শাদি, মেজবানি, রমজান মাসের দোয়া ইত্যাদি ব্যতীত গরুর মাংসের স্বাদ নেয়াটা ছিল কল্পনাতীত সেই সময়।
আর মুরগির মাংসের স্বাদ পেতাম বাড়িতে কোনও মেহমান অতীত এলে। তাছাড়া বড় ফুফুর অবস্থা তখন ভালো ছিল। মাঝে মধ্যে তাঁর বাড়ি গেলে মুরগি জবাই দিয়ে খাওয়াতেন খুব আদর করে।
তাঁর ঋণ এই জীবনে শোধ করতে পারবো না আমি। তিনি আমার আরেক মা।....
....কোনও মুরগি যদি আচমকা রাণিক্ষেত রোগে আক্রান্ত হতো কোনও দিন তখনই কেবল সেটি জবাই করা হতো। অন্যথায় নয়....। সেই মুরগির মাংসও খুব আরাম করে খেতাম। মড় মড় করে হাড় চিবুতাম। গিলাটা, কলিজাটা, মাথাটা, রানের পিছটা ছেলের জন্য আলাদা করে রেখে দিতেন মা।............
এখন বাজারে গেলে এক হালির নিচে মুরগি কেনা হয় না, দশ কেজির নিজে গরু কেনা হয় না। আস্ত খাসি ছাড়া খাসির গোস্ত কেনা হয় না।.......
জীবন মানুষকে কখন কোথায় নিয়ে দাঁড় করায় কেউ জানে না।.....
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:০১
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: জ্বি আছেন আল্লাহর রহমতে। খানিক অসুস্থ আছেন।
২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:২৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনার মা আপনার ভালো দিনগুলো দেখেছেন?
১৭ কোটীর জন্য ভালো করতে পারবো?
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:০২
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: জ্বি মা আছেন.... দেখছেন এখন...
৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:২৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: অনেক কথা মনে করিয়ে দিলেন। কিন্তু আমি সেসব লিখতে পারি না। নিজেকে কেমন জানি করুণাপ্রার্থী মনে হয়। লজ্জা লাগে। অবশ্য আপনার মত আমার অবস্থা আগের চেয়ে খুব বেশি ভাল হয়নি। তবে সেই দিনগুলো, মায়ের কথা, ভাই-বোনদের কথা মনে পড়লে কষ্ট লাগে।
তবে এইটুকু ভেবে শান্তনা পাই যে, হয়তো আল্লাহ কোন একটা কারণে আমাকে সেই দিনগুলোর অভিজ্ঞতা দান করেছেন।
আপনার লেখা পড়ে মনে হলো আমিও লিখব একদিন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:০৪
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: আপনার লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকবো ভাই। লিখলে জানাবেন।
৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৫৭
নিলু বলেছেন: ভালই লাগলো , লিখতে থাকুন
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪২
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ...
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৫
রিয়াদ হাকিম বলেছেন: জীবন মানুষকে কখন কোথায় নিয়ে দাঁড় করায় কেউ জানে না।..... - চরম ভাবে সহমত . মা কি বেচেঁ আছেন ?