নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড় বড় উৎসবগুলোই কারো কারো কাছে বড় বেদনার হয়ে দাঁড়ায়!

২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৪৯

ঈদের নামাজ শেষে বরাবরের মতো ক্যাম্পাসের দিকে গেলাম। আমার প্রিয় ক্যাম্পাস। বহু স্মৃতি আর আবেগ জড়ানো ঢাবির চির সবুজ ক্যাম্পাসটা না মাড়িয়ে আসলে ঈদের আনন্দটা যেন অপূর্ণই থেকে যায়। আজ এগারো বছর ধরে রোজা ও কোনবানি দুই ঈদেই নিয়মিত ক্যাম্পাসে যাই আমি।

ক্যাম্পাসে গিয়ে একা একা হাঁটলাম অনেক সময় ধরে। ভিসি চত্ত্বর, নীলক্ষেত পাড় হয়ে নিউ মার্কেটের দিকে হাঁটতে লাগলাম। আস্তে আস্তে আজিমপুর কবরস্থানের দিকে এগিয়ে গেলাম। ঈদ শুধু আনন্দের জন্য নয়। কিছু কিছু বেদনা ভাগাভাগি করে নেয়ার নামও ঈদ।

শত শত মানুষ ভিড় করেছে আজিমপুর কবরস্থানের গেটের সামনে। অধিকাংশেরই মাথায় টুপি আর গায়ে নতুন পাঞ্জাবি। কারও কারও গায়ে পুরনো মলিন পোশাকও চোখে পড়লো। ঈদের নামাজ শেষে সবাই এসেছেন যার যার প্রিয়জনের সাথে দেখা করতে। যে প্রিয়জন চির দিনের মতো শুয়ে আছেন শান্ত শীতল নিশ্চুপ মাটির ঘরে।

ঝলমলে পোশাক পড়ে অনেক শিশুরাও এসেছে। কেউ বাবার হাত ধরে আছে। কেউ ভাইয়ের কিংবা অন্য কোন আপন জনের হাত ধরে আছে। শিশুদের বেদনার্ত মুখ দেখার কষ্টের চেয়ে বড় কষ্ট বোধ করি পৃথিবীতে আর নেই।

একটা মেয়ে শিশুকে দেখলাম, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মুছচে। চেহারাটা দেখে বেশ মায়া হলো আমার। কিছু সময় শিশুটির পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম। জানতে পারলাম, তার মা শুয়ে আছেন এই কবরস্থানে। মাস তিনেক আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আচমকা হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল তার।.... গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির নিচে দাঁড়িয়ে শিশুটি কাঁদছে। তার মায়ের জন্য। গত ঈদে কতো সুন্দর করেই না মা নিজ হাতে তাকে সাজিয়ে নতুন পোশাক পড়িয়ে দিয়েছিলেন। এই ঈদে মা নেই। মায়ের ভালোবাসা নেই। আদর নেই।

আরও কিছু শিশুর জলভরা ক্বচি চোখের দিকে তাকিয়ে অশ্রু সংবরণ করা কষ্ট সাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।

ঈদের আনন্দের দিন সকালেও আগত সবার মুখ কেমন গম্ভীর আর কালো হয়ে আছে। চোখে মুখে গাঢ় বেদনার ছাপ বিদ্যমান।

অন্যদের সাথে আমিও ভিতরে প্রবেশ করলাম। ঘুরে ঘুরে দেখলাম। একজনকে দেখলাম, তার বাবার কবরের উপর পড়ে থাকা কয়েকটি সবুজ আর শুকনো পাতা খুব যত্ন সহকারে সরিয়ে দিচ্ছেন। যেন একটু এদিক সেদিক হলেই বাবার শরীরে ব্যথা লাগবে।

এই মানুষগুলোর ঈদের কথা ভেবে বুকের ভেতরটা ভারী হয়ে উঠলো। দলা পাকানো দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো গভীর থেকে।

বড় বড় উৎসবগুলোই কারো কারো কাছে বড় বেদনার হয়ে দাঁড়ায়!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.