নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

দূরত্ব.....

৩১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

আজ শুক্রবার রিমোটের বাটন টিপতে টিপতে বিটিভির বাংলা ছায়াছবির কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় আমাদের বাসায় একটা সাদাকালো টেলিভিশন ছিল। ১৪ ইঞ্চি ন্যাশনাশ টেলিভিশন।

বাড়ি অলাদের বাসা ব্যতীত কারো বাসায়ই ডিশের কানেকশন ছিল না সেই সময়। সুতরাং বিটিভিই ছিল আমাদের বিনোদন লাভের একমাত্র ভরসা। বাধ্য হয়েই আমরা বিটিভি দেখতাম । ‘বাধ্য’ বললে অবশ্য ভুল , ‘ব্যাপক উৎসাহ’ নিয়েই দেখতাম । বিটিভির অনুষ্ঠানমালা শুরু হতো বেলা তিনটায় । দেখা যেতো দুপুর আড়াইটার দিকে আমরা টেলিভিশন চালু করে বসে আছি । আধাঘন্টা বসে বসে টেলিভিশনের পর্দায় ঝির ঝির দেখতাম । খারাপ লাগতো না ।

তিনটা বাজার সাথে সাথে অনুষ্ঠানমালা শুরু। ২টা ৫৯ থেকে মধুর দেশাত্মবোধক সুর বাজতে বাজতে শুরু হতো। পবিত্র কোরআন তিলওয়াত থেকে শুরু করে সব কিছু দেখতাম। আমাদের চোখে মুখে আনন্দ ছিল । ৩টা ১৫ মিনিটে একজন উপস্থাপক কিংবা উপস্থাপিকা হাসিমুখে ঘোষণা দিতেন- প্রিয় দর্শক আপনাদের জন্য এখন রয়েছে, পূর্ণ দৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি"......" শ্রেষ্ঠাংসে "..........."। আমাদের চোখের মনি নড়তো না। আযান, খবর ও বিজ্ঞাপন বিরতিতে উঠে পায়ের ঝিঝি ছাড়াতাম। কেউ কেউ বাথরুম সেরে পানি খেয়ে আবার বসতাম। কেউ বসার জায়গা দখল করে ফেললে তার সাথে ঝগড়া এমনকি হাতাহাতিও করতাম।

বিরহ কিংবা আবেগী সিন দেখে ছোট বড় সবাই চোখের জলে বুক ভাসাতাম। শাবানা, ববিতা, রোজিনা, কিংবা আনোয়ারার চেয়ে আমাদের মা-চাচী-খালা-ফুফুদের চোখের জলও কম ঝরতো না। জসিম আর ইলিয়াস কাঞ্চনের কান্না দেখে চোখের জল আটকে রাখা দায় ছিল।

ভিলেন হিসেবে হুমায়ূন ফরিদি, রাজিব আর আহমেদ শরীফ মার খেলে আমরা হাততালি দিতাম। চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক খেলে যেত। মন হতো টিভি ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে নায়কের সাথে সাথে আমরাও দুয়েকটা লাগিয়ে আসি গিয়ে!!

সবাই চিৎকার করে বলতাম, "মার মার ভালা কইরা মার!" মার খাবার পর বলতাম, "এইবার বুঝ মজা!"

হাবা হাসমত, টেলিসামাদ, আনিস, আর দিলদারের কমেডি দেখে হাসতে হাসতে একজন আরেকজনের গয়ে গড়িয়ে পড়তাম। সেই হাসির পরও চোখে জল দেখতে পেতাম। অধিক হাসিতে চোখে জল নেমে আসতো।


আহারে জীবন! কতোই না মধুর ছিল সেই সাদা কালো দিন গুলো......


এখন বাসায় তিন তিনটা রঙিন টেলিভিশন। যার যার পছন্দের চ্যানেল আলাদা। টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমরা কখনোই ঐকমত্যে পৌঁছতে পারি না।

চাইলেও এখন আর সবাই একসাথে বসে একটা অনুষ্ঠান দেখা হয়না। টেলিভিশনের চ্যানেল আমাদের মাঝে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে । যতই চ্যানেল বাড়ছে, ততই বাড়ছে দূরত্ব!

মাঝে মাঝে মনে হয় ছোটবেলার মনের রঙ এখন টেলিভিশনের কাঁচের ভেতরে বন্দী...।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১১

সুমন কর বলেছেন: পুরনো স্মৃতির কথা মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.