নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ পর্যায়ে কাজিন হঠাৎ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল...

১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৫

গতকাল এক কাজিন এ প্লাস না পাওয়াতে খুব হতাশা প্রকাশ করছিল। তার একমাত্র স্বপ্ন সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। এখন কী হবে তার? ঢাবিতে পড়ার স্বপ্ন কি স্বপ্ন-ই থেকে যাবে? বলতে বলতে একপ্রকার কেঁদে ফেলল সে।

তার মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে একটা গল্প শুনালাম। আমার আর বন্ধু নূর এ আলমের গল্প। আমাদের দুজনার বন্ধুত্ব অনেকেরই জানা।

আমি আর নূর এ আলম এস এস সি পর্যন্ত একই প্রতিষ্ঠানে পড়তাম। ইংরেজি ও অঙ্ক দুটোতেই ও বেশ দুর্বল ছিল। এস এস সি তে এ দুই বিষয়ে ওর পাশ করা নিয়ে আমরা দুজনই দারুণ চিন্তিত ছিলাম। এক বন্ধু পাশ করবে, আরেক বন্ধু করবে না, তা কি করে হয়? আমাদের দুজানার রোল নং এর ব্যবধান ছিল অনেক। তারপরও বুদ্ধি করে দুজনার একসাথে রেজিস্ট্রেশন করলাম।

এস এস সি তে আমার পেছনে ওর সিট ফেললাম। ইংরেজি ও অঙ্কে পাশ করলেও এস এস সিতে ওর রেজাল্ট তেমন একটা ভালো হয় নি। আমার রেজাল্টও আশানুরূপ হয় নি। (আজও আমার এস এস সির প্রকৃত রেজাল্ট আমার পরিবারের কোন সদস্য জানে না।)

এরপর আমি নটরডেম কলেজ এ ভর্তি হলাম। আর নূর এ আলম অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলো।

ইন্টারেও ওর রেজাল্ট তেমন একটা ভালো হয় নি। রেজাল্ট দেখে কিছুটা মন খারাপ হলেও ও ভেঙ্গে পড়ে নি।

দুজনই ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোমড় বেঁধে লাগলাম। নূর আলমকে বললাম, তুই চেষ্টা কর পারবি।

নূর এ আলম পেরেছিল। খুব ভালো ভাবেই পেরেছিল সে। ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়ার পর দেখলাম, আমার সিরিয়াল ওর চে' চার শ' জনের পর!

এমনকি বাংলা ও ইংরেজি দুটোতেই সে ২০ করে পেয়েছিল। আমাদের সময় ইংরেজি অনেক কঠিন হয়েছিল। ইংরেজির কোটা পূরণের জন্য ৪০০০ এর উপরে সিরিয়াল থেকে এনে ইংরেজিতে ভর্তি করা হয়েছিল।

নূর এ আলম ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করে ইংল্যান্ড থেকে এম বি এ করে সেখানকার একটি কোম্পানিতে সাফল্যের সাথে এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেছে বেশ কিছু দিন।

নূর এ আলম যদি তার এস এস সি ও ইন্টার এর রেজাল্ট নিয়ে বসে বসে হতাশায় দীর্ঘশ্বাস ফেলতো, তবে আজ গর্ব করে উদাহরণ স্বরূপ তার কথা লিখতে পারতাম না।

তাই রেজাল্ট নিয়ে বসে বসে হাতাশা প্রকাশ না করে, তোমাদের উচিত নূর এ আলমের মতো কোমড় বেঁধে নামা। এখন ঠিক মতো প্রস্তুতি নিতে পারলে, অনেক গোল্ডেন কিংবা এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীর চেয়েও তুমি এগিয়ে থাকবে..।

এ পর্যায়ে কাজিন হঠাৎ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল।

"কী ব্যাপার দাঁড়ায় গেলা যে? আরেকটু বসো। তোমাকে আরেকটি গল্প শোনাই...."

"নাহ ভাইয়া যাই। আর গল্প শোনার সময় নাই। আজ থেকেই আমার প্রস্তুতি শুরু....যাই পড়তে বসতে হবে।"

আমি মৃদু হাসলাম.....







মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.