নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুকের ভেতর থেকে \'ফোস\' করে একটা গরম বাতাস বেরিয়ে এলো আমার...

১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৬

রাত সাড়ে দশটার মতো বাজে। রাজধানীর তিনশ ফিট রাস্তার ধারের একটি ফুডকোর্টে বসে আছি আমরা। এমন সময় তরুণীটির দিকে দৃষ্ট গেল আমাদের। উত্তপ্ত দণ্ডটি রক্ত রাঙা ঠোঁট দুটোর মাঝখানটায় চেপে ধরে নাড়াচাড়া করছিল সে। ডান হাতে অগ্নিমুখো দণ্ডটির একেবারে গোড়ায় ধরে আলতো করে তার বাঁ হাতের লাউয়ের ডগার মতো কোমল আঙুলির পরশ বুলিয়ে দিলো বার তিনেক।

তারপর আবার দুই ঠোঁটের মাঝখানটায় দণ্ডটি চেপে ধরে যথা সম্ভব ভেতরের দিকে টেনে নিতে লাগলো। আবেশে চোখ দুটি বুজে আসছিল তার। খোলা চুলগুলো মৃদুবাতাসে কেঁপে কেঁপে উঠছে খানিক পর পর।

"উহ আস্তে। আরো আস্তে টানতে হয়। কুল বেবী কুল...।" তরুণীর সামনে বসে থাকা সুদর্শন যুবকটি উদ্দেশ্য করে বলল তাকে।

কিছু সময় তাকিয়ে থাকার পর আমার কেমন যেন লজ্জা লাগতে লাগলো। যদিও আমার লজ্জিত হবার কথা নয় মোটেও। তারপরও মাথা নিচু করে ফেললাম। এ দৃশ্য আর দেখতে পারছিলাম না যেন। আমার টেবিলে থাকা অপর দু'জনের একজন কফির মগে চুমুক দিয়ে বলল, "শালার কি জগত আইলো...এইভাবে ওপেনলি!! আজকালকার মেয়েরা এত ফার্স্ট!"

আমি আবারও তরুণীর মুখের দিকে তাকালাম। আলতা-রাঙা জিহ্বার সরু অংশটি বের করে দু'ঠোঁটের উপরে হালকা পরশ বুলিয়ে নিচ্ছে সে। কি মায়াবী দুটি চোখ। জবা ফুলের মতো ফোলা ফোলা আদুরে ঠোঁট। দুকানে নীল রঙের পাথরের দুল দুটোতে যেন দেব কণ্যার মতো লাগছে ওকে।

বুকের ভেতর থেকে 'ফোস' করে একটা গরম বাতাস বেরিয়ে এলো আমার।

টেবিল থেকে ওঠে গিয়ে যুবকটির গালে কষে একটা চড় মারতে ইচ্ছে হলো। একবার ই্চ্ছে হলো তরুণীর মুখ থেকে দণ্ডটি কেড়ে নেই...।

"লাজ লজ্জার বালাই নাই এদের বুঝছেন। যেমন বাপ-মা তেমন সন্তান...। ছি! এইভাবে ওপেনলি....ছি! কি করে পারে একটা মেয়ে! চেহারাটা দেখছেন- কি সুন্দর আর পবিত্র। এই মেয়ে কিনা এভাবে ওপেনলি...!!" আক্ষেপের সুরে আমার সামনের ভদ্রলোক বললেন।

তরুণীর ঠোঁটে লেগে থাকা দণ্ডটি পুড়তে পুড়তে গোড়ায় এসে ঠেকেছে প্রায়...। এমন সময় যুবক দণ্ডটি তরুনীর হাত থেকে টেনে নিয়ে নিজের ঠোঁটে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে টানতে লাগলো।

"কখনো সিগারেট খেতে পারবে না কিন্তু!" প্রেমিকের প্রতি প্রেমিকার এমন একটি কঠিন শর্ত ছিল একসময়। সেই প্রেমিকা উচ্চবিত্ত মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত যে বিত্তেরই হোক না কেন। প্রেমিকের সিগারেট না ছাড়ার কারণে অনেকের প্রেম ভেঙে গেছে- হয়তো এমন নজিরও থেকে থাকবে কিছু কিছু। অথচ আজকাল উম্মক্ত পরিবেশে প্রেমিক যুগলকে একসাথে বসে চা আর চুমুর মতো সিগারেট খেতেও দেখা যায় প্রায়ই।

এই অসভ্য প্রজন্মের কাছে দেশ-জাতি কী আশা করতে পারে? প্রশ্ন রইলো তাদের পিতা-মাতার কাছে। শেষ অবধি দায়টা তো তাদেরই!

ই্চেছ করলে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ হাজার করে টাকা দিতে পারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া আমার ছোটবোনের হাতে। দিয়ে বলতে পারি, ই্চ্ছে মতো খরচ করিস।

কিন্তু পঞ্চাশটি টাকা দেবার আগেও ধাপে ধাপে তার কাছ থেকে কয়েকবার হিসেব নেই- এই পঞ্চাশ টাকা কোথায় কী কাজে খরচ করবে সে। মোবাইলে হিসেব করে ফ্লেক্সি করে দেই। তার হিসেবও নেই। বিকেল পাঁচটার পর কখনো কোন কারণে বাইরে থাকলে আমি, আমার মা ও বাবা এই তিন জনের কাছে একে একে জবাবদিহি করতে হয় তাকে। "থাপড়িয়ে দাঁত সব ফেলে দিবো" এখনো এমন কঠিন বাক্য আমার মুখ থেকে প্রায়ই শুনতে হয় তাকে। তার চোখ টলমল করে। আমি বিচলিত হই না...। আমার বুকে বোনের জন্য পৃথিবীর কোন ভাইয়ের চেয়ে ভালোবাসা কম নেই। বরং অনেক বেশিই আছে বোধ করি...।

যে চাষী হালচাষ করেন, লাঙলের বাঁট তাকে শক্ত হাতে ধরে রাখতে হয়। অন্যথায় লাইন বাঁকা ত্যাড়া হয়ে যায়। হালের গরুকে চাষী অনেক যত্ন করেন। বাজারের সেরা খৈল ভূসি খাওয়ান। নিজে মশার কামড় খেলেও রাতে মশারি টানিয়ে গরুকে শুতে দেন। পশমের নিচে লুকিয়ে থাকা উকুন ময়লা যতন করে বেছে দেন। কিন্তু হালচাষের সময় চাষী ঠিকই তার হাতে একটি বেত রেখে দেন....।

সঠিক পথে চালানোর জন্য ভালোবাসার মতো শাসনও যে অনেক জরুরী জীবনে....।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬

বাকরখানি বলেছেন: মেয়েরা সিগারেট খাইলে কি সমস্যা আপনের? শুরুতে যেমনে উত্তপ্ত দন্ড আর থাবড়ানির কথা লেক্সেন, আমি তো ভাবছিলাম মেয়ে ব্লো জব দিতাসে ওপেন প্লেসে।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫

অরন্যে রোদন - ২ বলেছেন: হাবিবুর রহমান জুয়েল ভাই আপনি পোস্টের প্রথম ১০-১২টি লাইন অত্যন্ত যত্নের সাথে লিখেছেন বলে মনে হচ্ছে। সেখানে সুক্ষভাবে রগরগে যৌনতাকে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। ঠিক যেন চিনি ছাড়া ডায়েট কোক, স্বাদে গন্ধে চিনির উপস্থিতি আছে বলে মনে হলেও আসলে চিনি ছিলই না।
যাকগে আপনি যে বিষয়টাকে কেন্দ্র করে পোস্ট দিয়েছেন সেটি আর নতুন করে বলার কিছু নেই , মর্মাহত বাঙ্গালীর কাছে এটি এখন এক সে যাওয়া বেদনা। তবে যাই হোক এমন একটি বিষয়কে এমন রগরগে করে তুলে ধরার প্রয়াস সত্যিই অতুলনীয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.