![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ আমিই দি হাবলু । আর আমার মত যারা তাদের জীবনে একটাই কথা সেটা হল: be the হাবলু to rule the world
সেদিন হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ তে মিটিং ছিল। সবাই ফর্মাল ড্রেসে গেলেও আমি গেছিলাম হলুদ পাঞ্জাবি পরে। মুখভর্তি দাঁড়ি। অনেকটা হিমু টাইপ অবস্থা। বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে মিটিং ছিল।
মিটিং শেষে উবার নিয়ে বের হলাম। ইচ্ছা ছিল হাতিরঝিল হয়ে বাড্ডা-কুড়িল হয়ে খিলখেত ফ্লাইওভার দিয়ে উত্তরা যাব। কিন্তু সোনারগাঁ থেকে বের হয়ে হাতিরঝিল যাওয়ার পথে জ্যামে পড়লাম। গাড়িতে রেডিও চলছে।
গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকালাম। সোনারগাঁ যেদিকে আছে ওইদিকের ফুটপাথে চোখ গেল। অনেক মানুষ হেঁটে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা ছেলের দিকে চোখ গেল। উষ্কখুষ্ক চুল। মুখভর্তি দাঁড়ি।
গায়ে টিশার্ট-জিন্স আর কানে হেডফোন গুজে গান শুনতে শুনতে আপন মনে হেঁটে যাচ্ছে। চেহারা টা কেমন জানি পরিচিত মনে হল। জ্যাম তখনি আছে। ছেলেটা পার হয়ে যাচ্ছে। আমার কাছে কেন জানি মনে হচ্ছে ওকে
ডাকতে হবে। ওকে কিছু বলতে হবে। আমি গাড়ি কাচ নামিয়ে গলায় যত জোর আছে সব একত্র করে ছেলেটাকে ডাক দিলাম, "হাবলু"। কানে হেডফোন থাকায় ছেলে টা শুনতে পেল না। আবারো ডাকলাম,"হাবলু"
তারপরেও শুনতে পেল না। জ্যাম ছেড়ে দিল। আমার গাড়ি চলা শুরু করেছে। আমার গাড়িটা ওকে পার হয়ে যাচ্ছে। আমি জানালা দিয়ে মাথা বের করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ আমার দিকে তার চোখ পড়ল। হতভম্ব হয়ে গেল।
কান থেকে হেডফোন খুলে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। আমি আবারো সব শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বললাম,"হাবলু, I made it, I made it." তার মুখে গর্বের হাসি ও আনন্দের পানি দেখলাম। তার মুখ নড়ে উঠল। আমি যেন
স্পষ্ট শুনতে পেলাম, সে আমাকে বলছে,"থ্যাঙ্কস"। আমার গাড়ি জোরে হাতিরঝিলে ঢুকে গেল। আমারো চোখে আনন্দের পানি ও মুখে হাসি নিয়ে রেডিও শুনতে থাকলাম।
ওই হেঁটে যাওয়া হাবলু ছেলেটা হল তিন বছর আগের আমি। বেকার। অনেক জায়গা থেকে রিজেক্টেড। ভাঙা মন নিয়ে একবার হাটতে হাটতে প্যান প্যাসিফিক সোনারগা এর সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এবং নিজেকে প্রমিস করেছিলাম যে
একদিন আমি এইখানে আসব। সন্মানের সাথে। অফিসিয়াল কাজ করব। আয়েশ করব। আড্ডা দিব। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেই সুযোগ টা আমি পেয়েছি। আজ যাওয়ার পথেই ওই মন ভাঙা উষ্কখুষ্ক আমার সাথে দেখা হয়ে গেল। আহা ছেলেটা না
কি কষ্টেই দিন পার করতেছে। মাসের শেষ সপ্তাহে ছেলেটার হাতে ৭০০ টাকা থাকলেই সে আনন্দে ডুবে যেত। কত মানুষের কাছে থেকে ছেলেটা কত রকম খোঁটা খাচ্ছে। কেউ নেই হাত ধরে টেনে তোলার।
মাঝে মধ্যে ইচ্ছে হয়, তিন বছর আগের আমি কে নিয়ে ডেকে ভালো কিছু খাওয়াই। আর ওকে বলি,"চিন্তা করিস না, সব ঠিক হয়ে যাবে। এই দেখ, আমার দিকে তাকা। আমার এই পর্যায়ে আসতে কারোর কোন তদবীর বা সাহায্য লাগে নাই। আমি নিজ যোগ্যতায়
আসছি। আমি যেকোন জায়গায় বুক ফুলিয়ে চলতে পারি। ভার্সিটিতে থাকা কালিন যেই মেয়ে বড়লোক ছেলের সাথে রিলেশনশিপ করার জন্য তোর সত্য ভালোবাসাকে প্রত্যাখ্যান করে দিছিল, সেই তোর নাম্বার জোগাড় করে তোর কাছে জব অফার খোঁজে (যদিও ঐ মেয়ের গলা তুই প্রথমে চিনতে পারবি না)।
সুতরাং চিন্তা নাই। এই দেখ আমি লাইফ কে কি পরিমান এনজয় করতেছি। কাজ কে কাজ মনে হয় না। মনে হয় আমি যেন আড্ডা দিতে অফিসে যাচ্ছি। সো চিল কর। জীবন কে উপভোগ কর"
২| ২১ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: মন থেকে কিছু চাইলে সেটা অবশ্যই পাওয়া যায়।
৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:২৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: চিয়ার্স!
জীবনটা এমনই- অদ্বুতুরে
৪| ২১ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:১০
তারেক ফাহিম বলেছেন: চেষ্টা আর প্রেরনা দেয়ার মত মানুষ থাকলে জীবন সহজে পাল্টে যায়।
৫| ২১ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫০
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: জীবনে কিছু স্বপ্ন হয়তো পূরণ হয় কিন্তু সবস্বপ্ন আবার পূরণ হয়না।
৬| ২২ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৮
দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: লেখাটি ভাল লাগল ।
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৩২
লিংকন১১৫ বলেছেন: এগিয়ে জান ভাই
৮| ০৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৮:৫৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন। লেখায় সারল্য, কোমলতা এবং শান্তিময়তার একটা ছাপ পাওয়া যায়।
নিজ যোগ্যতায় একটা জব খুঁজে পাওয়ায় দি হাবলু কে অভিনন্দন!
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৭:১৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর, অসাধারণ।