নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.islamictechbd.blogspot.com

হাফেজ মিনহাজ

আমি মিনহাজ উদ্দীন, পড়াশোনার পাশাপাশি আইটি নিয়ে ঘাটতে ভালো লাগে।

হাফেজ মিনহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উসূলে হাশতগানাহ্

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৭


উসূলে হাশতগানাহ্-এর রচয়িতাঃ
মহান শিক্ষক-সাধক ও সংস্কারক কাসেমুল উলূম ওয়াল খায়রাত হযরত কাসেম নানুতুবী রহ: পরাধীন ভারতে ধ্বসে পড়া ইসলামী শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত করার মহান লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে গণ-চাঁদার উপর ভিত্তি করে শিক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেছিলেন। সময় ও অবস্থার প্রেক্ষাপটে সে ধারাকে সুশৃঙ্খলভাবে টিকিয়ে রাখা এবং তার অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এ সকল দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ করে দারুল উলূম দেওবন্দের জন্য তিনি তাঁর বিদগ্ধ চিন্তার আলোকে কতিপয় মূলনীতি প্রবর্তন করেছিলেন। ইতহাসে এই মূলনীতিগুলোই " উসূলে হাশত গানাহ " বা ' মূলনীতি অস্টক' নামে পরিচিত। রচয়িতা তাঁর দূরদর্শীতা ও বিচক্ষণতার আলোকে এবং সময়ের রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রীয় অনুদানের প্রাচীন ধারার পরিবর্তে গণ-চাঁদার বিষয়টির প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। সেই নীতিমালার তিনি একথাও উল্লেখ করেছেন যে, যে কোন দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের জন্য মৌলিকভাবে এসকল নীতিমালাকে অত্যাবশ্যকীয় মনে করতে হবে।
মূলনীতি অষ্টকঃ
১। যথাসম্ভব মাদ্রাসার কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের অধিক হারে চাঁদা আদায়ের বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। নিজেও এর জন্য চেষ্টা করতে হবে, অন্যের মাধ্যমেও চেষ্টা করাতে হবে। মাদ্রাসার হিতাকাঙ্খীদেরও এ বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।
২। যেভাবেই হোক মাদ্রাসার ছাত্রদের খানা চালু রাখতে হবে বরং ক্রমান্বয়ে তা বৃদ্ধি করার ব্যাপারে মাদ্রাসার হিতাকাঙ্খী ও কল্যাণকামীদের সর্বদা সচেষ্ট থাতে হবে।
৩। মাদ্রাসার উপদেষ্টাগণকে মাদ্রাসার উন্নতি, অগ্রগতি এবং সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার দিকে সর্বদায় লক্ষ্য রাখতে হবে। স্বীয় মত প্রতিষ্ঠার এগুঁয়েমী যাতে কারো মঝে সৃষ্টি না হয় এদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
আল্লাহ না করুন যদি এমন অব্স্থা দেখা দেয় যে, উপদেষ্টাগণ স্ব-মতের বিরোধীতা কিংবা অন্যের মতামতের সমর্থন করার বিষয়টি সহনশীলভাবে গ্রহণ করতে না পারেন; তাহলে এ প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিমূল নড়বড়ে হয়ে পড়বে। আর যথাসম্ভব মুক্ত মনে পরামর্শ দিতে হবে এবং তার অগ্রপশ্চাতে মাদরাসার শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি লক্ষণীয় হতে হবে। স্বমত প্রতিষ্ঠার মনোবৃত্তি না থাকতে হবে। এ জন্য পরামর্শ দাতাকে মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে তার মতামত গ্রহণীয় হওয়ার ব্যাপারে অবশ্যয় আশাবাদী না হতে হবে।
পক্ষান্তরে শ্রোতাদেরকে মুক্তমন ও সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তা শ্রবণ করতে হবে। অর্থাৎ এরূপ মনোবৃত্তি রাখতে হবে যে, যদি অন্যের মত যুক্তিযুকত্ ও বোধগম্য হয়, তাহলে নিজের মতের বিপর‌ীত হলেও তা গ্রহণ করে নেওয়া হবে। আর মুহতামিম বা পরিচালকের জন্য পরামর্শ সাপেক্ষে সম্পাদনীয় বিষয়ে উপদেষ্টাগণের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া অবশ্যই জরুরী হবে। তবে মুহতামিম নিয়মিত উপদেষ্টাদের থেকেও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত এমন কোন বিদগ্ধ জ্ঞানী আলেম থেকেও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন যিনি সকল দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের জন্য হিতাকাঙ্খী ও কল্যাণকামী। তবে যদি ঘটনাক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্যদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্যের সাথে পরামর্শ ক্রমে কাজ করে ফেলা হয়, তাহলে কেবল এজন্য অসন্তুষ্ট হওয়া উচিত হবে না যে ‘আমার সাথে পরামর্শ করা হল না কে’? কিন্তু যদি মুহতামিম কারো সঙ্গেই পরামর্শ না করেন তাহলে অবশ্যই উপদেষ্টা পরিষদ আপত্তি করতে পারবেন।
৪। মাদ্রাসার সকল মুদাররিসীনকে অবশ্যই সমমনা ও একই চিন্তাচেতনার অনুসারী হতে হবে। সমকালীন (দুনিযাদার) আলেমদের ন্যায় নিজ স্বার্থ প্রতিষ্ঠা ও অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার দুরভিসন্ধিতে লিপ্ত না হতে হবে। আল্লাহ না করুন যদি কখনো এরূপ অবস্থা দেখা দেয়, তাহলে মাদ্রাসার জন্য এটি মোটেই শুভ ও কল্যাণকর হবে না।
৫। পূর্ব থেকে যে পাঠ্যসূচী নির্ধারিত রয়েছে কিংবা পরবর্তীতে পরামর্শের ভিত্তিতে যে পাঠ্যসূচী নির্ধারণ করা হবে তা যাতে সমাপ্ত হয়; এই ভিত্তিতেই পাঠদান করতে হবে। অন্যথায় এ প্রতিষ্ঠান সুপ্রতিষ্ঠিতই হবে না, আর যদি হয়ও তবু তা ফায়দা জনক হবে না।
৬। এ প্রতিষ্ঠানের জন্য যতদিন পর্যন্ত কোন স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হবে; ততদিন পর্যন্ত আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতার শর্তে তা এমনিভাবেই চলতে থাকবে ইংশাআল্লাহ। কিন্তু যদি স্থায়ী আয়ের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যেমন কোন জায়গীর লাভ, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, মিল ফ্যাক্টরী গড়ে তোলা, কিংবা বিশ্বস্ত কোন আমীর উমরার অনুদানের অঙ্গিকার ইত্যাদি। তাহলে এরূপ মনে হচ্ছে যে আল্লাহর প্রতি ভয় ও আশার দোদুল্যমান অবস্থা; যা মূলতঃ আল্লাহ অভিমুখী হওয়ার মূল পুঁজি, তাই হাত ছাড়া হয়ে যাবে এবং গায়েবী সাহায্যের দ্বার রুদ্ধ হয়ে যাবে। তদুপরি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও কর্মচারীগণের মাঝে পাস্পরিক বিদ্বেষ ও কলহ বিবাদ দেখা দিবে। বস্তুতঃ আয়-আমদানী ও গৃহাদি নির্মাণের বিষয়ে অনেকটাই অনাড়ম্বরতা ও উপায় উপকরণহীন অবস্থা বহাল রাখার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।
৭। সরকার ও আমীর উমরাদের সংশ্লিষ্টতাও এ প্রতিষ্ঠানেরর পক্ষে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে বলে মনে হচ্ছে।
৮। যথা সম্ভব এমন ব্যক্তিদের চাঁদাই প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিক বরকতময় হবে বলে মনে হচ্ছে; যাদের চাঁদাদানে মাধ্যমে সুখ্যাতি লাভের প্রত্যাশা থাকবে না। বস্তুতঃ চাঁদা দাতাগণের নেক নিয়ত প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিক স্থায়ীত্বের কারণ হবে বলে মনে হয়।

বি: দ্র: সময়ের স্বল্পতার জন্য আর লিখতে পারলামনা, পরবর্তী সময়ে লিখবো ইংশা আল্লাহ! সকলে ভালো থাকুন- আমীন

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.