নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাই।

সুপথকামী হাফিজ

বলার নাই কিছুই।

সুপথকামী হাফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পড়ে দেখুন (অবুঝদের জন্য নয়)

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৫৯

শাহবাগে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় সব ব্লগে একটা বিষয় কমন হয়ে গেছে, যারাই ব্লগিং করছে, তারা প্রায় সকলেই ধর্ম আর ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ গুলোর বিপক্ষে লেখা শুরু করেছে। আবার অন্যদিকে ধর্মপ্রাণ (!) মানুষগুলো ব্লগার বলতেই এক দল নাস্তিককে কল্পনা করছে, এতে আবার দেখা যাচ্ছে যারা ধর্মীয় বিষয় নিয়ে নেতিবাচক কিছু লিখত না- তারা আবার এখন নেতিবাচক লেখা শুরু করেছে, কারন, ধর্মের প্রতি সহানুভূতি দেখালে যে আবার প্রতিষ্ঠিত ব্লগারেরা তাদের সম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু করবেন!

এতক্ষণ যে ধর্মের কথা বলা হয়েছে, তা শুধু একটা ধর্মকেই বুঝাচ্ছে, যা হল ইসলাম। প্রথম কথা হল বর্তমানে ব্লগ সাইট গুলো কিংবা ফেসবুক এর জনপ্রিয় মানুষগুলো কারা? আমার দেখা মতে যারা “যৌবন আমার কচুপাতার পানি” কিংবা “হাসাইতে হাসাইতে মাইরা ফালামু” টাইপ লেখা যারা লেখে তারা। আর বুদ্ধিজীবী হিসেবে এ সকল জায়গায় প্রতিষ্ঠিত কারা? তাও প্রায় এক-ই রকম, অর্থাৎ, টুপিওয়ালা মানুষ দেখলেই যারা রাজাকার বলে নয়তো ইসলামের নামে বেশ কিছু অগ্নিঝরা এবং শ্রবণযোগ্য ভাষার গালি দিতে পেরেছেন তারা। অর্থাৎ, আমরা এখানে যাদেরকে মাথায় তুলি, তারা হয় ভাঁড়, নয়তো শরীর কেন্দ্রিক সাহিত্যিক অথবা কিছু দুই পা ওয়ালা হায়েনা; যারা মানুষের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।



প্রথমে একটু বোঝার চেষ্টা করলে হয়না আমরা এমন কেন করছি? বা আমরা কারা? একটা জিনিস বলে রাখি, ব্লগ সাইট গুলোতে একটা করে আই.ডি ওপেন করে চটকদার কিছু লিখে ফেললেই কেউ বুদ্ধিজীবী হয়ে যায় না। আর ধর্ম নিয়ে আশালীন কিছু লিখলে বা শালীন ভাষায় কতক্ষণ গালাগালি করলেই প্রগতিশীল হওয়া যায় না।

ধর্ম কী তা বুঝে ক’জন? ধর্ম যা বলে তা সত্য না মিথ্যা তা আমি বলতে চাইনা, তবে এতটুকু মাথায় রাখা উচিত, ধর্ম একটা আবেগ, একটা সংস্কৃতি। মানুষ আবেগ কে ধারণ করেই এতদূর এসেছে। দেশপ্রেম ও একটা আবেগ। আর দেশ বা জাতি সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই ধর্মকে আশ্রয় করে গড়ে উঠেছে; যা প্রমাণিত। দেশপ্রেমের আবেগ এত কড়া হতে পারে আর ধর্মেরটা হলেই দোষ? দেশপ্রেমের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করতে পারলে; দেশের বিরোধী শক্তিকে জানের দুশমন মনে করতে পারলে এটাও বোঝা উচিৎ, যেই ধর্মকে আশ্রয় করে সেই দেশ গঠিত হয়, সেই ধর্মকে নিয়ে ফাজলামো করলেও কিছু মানুষ আপনাকে জানের দুশমন মনে করবে, আর সেটা বৈধ।



পরের কথা হল, যদি আপনি অলৌকিকতা বিশ্বাস না করেন, তবে আপনি মুক্ত চিন্তার অধিকারী হতে পারবেন, ঠিক আছে, মানলাম, কিন্তু একজন মুক্ত চিন্তার অধিকারী হিসেবে আপনার এটা তো বোঝা উচিৎ, গোঁড়া ধর্মে বিশ্বাসী মানুষগুলো তো বুঝেনা, তাদের বিরুদ্ধে অলিখিত যুদ্ধ ঘোষণা করাটা কি ঠিক? আপনি সচেতন হয়ে যদি এই কাজ করেন তবে ঐ মানুষগুলো কী করবে? আপনি মুক্ত মনের মানুষ, তাই আপনি মুক্ত মনের-ই থাকুননা, কে মানা করেছে? আপনি যেটা বিশ্বাস করেননা সেটা অন্য কেউ ও বিশ্বাস করতে পারবেনা? আর আপনি যদি বলতে চান যে, আপনি জনতার সেবক হিসেবে মানুষের মন থেকে এই কুসংস্কারের বোঝা সরিয়ে দিবেন, তাহলে সেটা সুন্দর প্রমাণসহ জনসাধারনকে জানানোর চেষ্টা করুন। আপনি আপনার তত্ত্ব প্রমাণ না করে তাদের ধর্মের দোষ-গুন নিয়া টানাটানি করেন কেন? এতে তো মানুষ বিক্ষুদ্ধ হয়!

তারও পরের কথা হল, অনেকেই স্বঘোষিত নাস্তিক হিসেবে নিজেকে দাবী করছেন, আসলেই কী আপনি নাস্তিক? যদি নাস্তিক-ই হন, তাহলে আপনার বর্ণনায় শুধু ইসলামের কু-কীর্তি (!) কেন উঠে আসে? অন্য ধর্মেরটা কোথায়? উল্টো আরও অন্য ধর্মের কীর্তন শোনা যায়! এর দুটো কারন থাকতে পারে- প্রথমত, অন্য ধর্ম সম্বন্ধে ধারনা নেই বলে বেড়ার ওপারের ঘাসগুলোকে সবুজ মনে করছেন। দ্বিতীয়ত, এই কারন দেখানোর চেষ্টা যে, আমি আগে নিজের ধর্মের সমালোচনা করছি, কারন, আমি নিরপেক্ষ!!!

আসলেই কী তাই? উপরের কারন গুলো কী যথার্থ? নাকি এর মাঝে অন্য কাউকে অনুসরণ করার চেষ্টা? নাকি নিজেকে পশ্চিমা সমাজ উপযোগী হিসেবে প্রমাণ করার নিরন্তর চেষ্টার একটা মাত্র? আধুনিক হতে গেলে কি ধর্মকেই আগে জবাই করা দরকার? ভেবে দেখুন, ধর্ম; সেটা যে ধর্মই হোক, সেটা মানুষকে অনেক বেশি সু-শৃঙ্খল রাখে, যা সমাজের উন্নয়নে অনেক বেশি দরকার। ধর্মের যত দোষ-ই থাকুক, এই গুনটা তার অসাধারন। নিজেকে বুদ্ধিজীবী প্রমাণ করার জন্য ও ধর্ম বিদ্বেষী হিসেবে প্রস্তুত করারও কোন দরকার নেই। অন্য অনেক বিষয় আছে। এটা মানুষের আবেগের স্থান, যেমনি একজন লোকের বোন, মা, কিংবা স্ত্রী তার আবেগের জায়গা। আপনি নিশ্চয়-ই মানুষের পরিবারের মহিলাদেরকে ধর্ষণ করার জন্য অন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবেননা, তাদের শরীরের ঘ্রান কেমন, তাদের জৈবিক ক্ষুধা কেমন তা নিয়ে কটাক্ষ করার চেষ্টা করবেননা, সেভাবেই ধর্মটাকেও নেয়ার চেষ্টা করুন। দেখবেন, আপনি ও যেমন আপনার চিন্তা নিয়ে ভালো থাকবেন; তৃপ্তি পাবেন, তারাও আপনাকে মারতে আসবে না। সর্বোচ্চ হলে আপনি যেমন তাদের দেখে মনে মনে গোঁড়া বলবেন, তারাও তেমনি আপনাকে দেখে মনে মনে অস্বীকারকারী বলবে, তাতে সমাজের স্থীরতায় কোন ব্যাঘাত ঘটবে বলে আমি মনে করিনা।



সকল ব্লগারদের কাছে একটা জিজ্ঞাসা, আপনারা আবেগপ্রান মুসলিম মানুষ গুলোকে এভাবে হেয় করছেন কেন? তারা বলছে আপনারা নাস্তিক, আর আপনিও তাদেরকে এটা কেন বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে আপনি নাস্তিক? এ দেশে তো নাস্তিক বলতে শুধু ইসলাম বিদ্বেষীদেরকেই বুঝানো হয়। আপনি যদি সত্যিকারের নাস্তিক হয়েও থাকেন, তবে আপনি বলুন যে, আমি কোন ধর্ম মানিনা, কোন ধর্মের বিপক্ষেও যাই না। কারন, এ দেশে কোন নাস্তিক নাই, আছে হয় ইসলাম সহিষ্ণু নয়তো ইসলাম বিদ্বেষী; অন্য ধর্মের ব্যাপারে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই! তাই এদের ক্ষেত্রে নাস্তিক শব্দটা খাটেনা। আর অনুরোধ সকল ব্লগারদের কাছে, সাধারণ মানুষদেরকে বুঝতে দিন, ব্লগাররাও সাধারণ মানুষ, তাদের মাঝেও ধার্মিক আছে, আর ব্লগাররা কেউ-ই ধর্ম-বিদ্বেষী না; কিছু লোক ব্যক্তিগতভাবে এমন হতে পারে, তবে তার সাথে সবার সম্পর্ক নেই।



আমরা একটা সুন্দর দেশ চাই, প্রতিষ্ঠিত জাতি হিসেবে নিজেদেরকে আরো অনেক অনে-এ-এ-ক উপরে দেখতে চাই, অন্য কারো নকল করে যা হয়না, অন্যের অনুকরণে শুধু হালের বলদ হওয়া সম্ভব। নিজের মান উন্নত করুন নিজের চেষ্টায়, নিজেকে বদলে নিন নিজের চাহিদা মাফিক। সফলতা না এসে যাবে কই?



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.