নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাফসা আক্তার নাফিসা

হাফসা আক্তার নাফিসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্তমান জেনারেশন

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০১



সেদিন আমার বাসায় আমার আত্মীয় এসেছিলেন , তাঁর ছোট্ট ছেলেগুলোর হাতে স্মার্টফোন , আমার থেকে ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড নিল , না করতে পারি নাই , আত্মীয় বলে কথা । দেখি ইউটিউবে পড়ে আছে সারাদিন ।
বাসে করে বাসায় ফিরছিলাম , সামনের সিটের দুই লোক দেখি বেশ গর্ব করে বলছে - আরে জানেন না ভাই আমার ছোটটাতো এখন নিজে নিজেই গেম নামায়ে খেলে , কি যেন যুদ্ধের গেম । আমিই তো অনেক কিছু জানি না ।
আজকাল বাবা মায়েদের দেখি , কথা বলতে না পারা বাচ্চাটা যখন স্মার্ট ফোনে নিজে নিজেই ভিডিও ওপেন করে , সেল্ফি তোলে তখন সেই কথা গর্ব ভরে পাড়ায় পাড়ায় বলে বেড়ান ।
আঙ্কেলগণ , আন্টিগণ প্লিজ থামেন । গর্ব করার আগে এর কনসিকোয়েন্স চিন্তা করেন ।
একটা সময় ছিল যখন নেট এভেইলেবল ছিল না , ইন্টারনেট ছিল ব্যয়সাপেক্ষ বিষয় , সেই সময়ের শিশু কিশোরদের শৈশব কৈশর আসলেই ছিল নির্জলা নির্মল , তাদের জগৎ ছিল নিষ্পাপ নির্ভ্যাজাল । তাদের চিন্তাধারা জুড়ে ছিল তাদের বাবা মা , ভাই বোন, বন্ধু বান্ধব ।
আর এখন ক্লাস সিক্সে পড়ুয়া মেয়ে স্ট্যাটাস দেয় আমি আমার অতীত ভুলে যেতে চাই ।
কেন দেয় জানেন ?
আপনি যা পারেন না , সেটায় এখন সে পারদর্শি , স্মার্টফোনে আপনার আগোচরে আপনার সন্তান অনেক কিছু করে , আপনি সেটা বোঝেন না । বরং ভাবেন বাহ ! ওরা কি এডভান্স ! স্মার্টফোনে সব পারে !
স্মার্ট ফোনে সব পারাটা কতটুকু সেইফ ভেবে দেখেছেন ?
ইউটিউবে আপনার ছেলেটা কার্টুন দেখে , কিন্তু স্পন্সর্ড ভিডিও কি ফিল্টার করা যায় ? সেটা কি মূল ভিডিওর পাশে পপ আপ হয় না ? সেটায় যে এডাল্ট কন্টেন্ট নেই কিভাবে জানবেন ? সেখানে যে তার ক্লিক পড়ে না কিভাবে জানবেন ?
বারাক ওবামাকে চেনেন ? না চেনার কথা না , মেয়ে সাশাকে ফোন কিনে দিয়েছেন কলেজ লেভেলে ওঠার পর , তাদের কি পয়সার অভাব ছিল ? নাকি সিকিউরিটির অভাব ? সাশার ফোন কল মনিটর করা কি এতই দুরূহ ছিল ?
জাপানিজ একটা ভিডিও দেখলাম , সচেতনতামূলক ভিডিও - বাবা মা তার বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে এসেছেন স্মার্ট ফোনের দোকানে , ট্যাব দেখছেন , বাচ্চার মায়ের সাথে পরামর্শ করছেন এটায় ভাল ভাল গেম প্রি ইনস্টলড আছে , এটাই ভাল হবে ।
দাম জিজ্ঞেস করলেন কত , রিপ্রেজেন্টেটিভ দাম বলল , এরপর জিজ্ঞেস করল কার জন্য নেবেন ?
- বাচ্চার জন্য ।
- ওর বয়স কত ?
- পাঁচ ।
- ধন্যবাদ স্যার , আপনার প্রোডাক্ট আপনার বাসায় পৌঁছে যাবে ঠিক সাত বছর পর ।
- কি বলছেন আপনি ?
- বার বছর বয়েসই ট্যাবলেট ইউজ শুরুর এপ্রপ্রিয়েট সময় , এখন ওর বয়স তার বাবা মায়ের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর , বাবা মায়ের স্নেহ ভালবাসাকে চেনার বয়স , before he becomes heartless .....
এখন ফেইসবুকে হোয়াটসঅ্যাপে ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা চ্যাটিং করে রিলেশন করে তাদের লাইফটাকে কত জটিল করে ফেলছে , এজন্যই তো স্ট্যাটাস দেয় - " আমি আমার অতীত ভুলে যেতে চাই "।
টিচার্স লাউঞ্জে ডাইনিংয়ে একসাথে খাওয়ার সময় একদিন আমার এক শ্রদ্ধেয় স্যার বলছিলেন , আমার ছেলেটা দেখি পরীক্ষা শেষ হলেই সারাদিন তিন গোয়েন্দা, মাসুদ রানা নিয়ে পড়ে থাকে ।
আমি বললাম - স্যার ওকে নিরুৎসাহিত করবেন না , আজকাল ছেলেমেয়েরা গল্পের বই পড়া ভুলেই গেছে ।
শুধু মুখে বলিনি , স্যার আপনার ছেলে এই জেনারেশনের আর দশটা ছেলের মত না , যারা স্মার্ট টেকনোলজির স্রোতে গা ভাসায় , স্মার্টফোনের ওই আলোকিত স্ক্রিনকে আমার কাছে খুব অন্ধকারাচ্ছন্ন একটা জগৎ মনে হয় ।
এই যুগে তিন গোয়েন্দা বা মাসুদ রানার ওই আলোহীন নিউজপ্রিন্টের পাতায় যে ছেলেটা রঙিন একটা জগৎকে খুঁজে নিয়েছে সে ছেলেটাকে আমি একটা হিরের টুকরো বলব ।
ডাঃ যুবায়ের আহমেদ

plz visit my blog AmaderPage.Com

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বাঙ্গালী চিরকাল আত্মঘাতি জাত। স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যাওয়ার পর আমরা এসব বুঝবো।

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: খুবই কঠিন সময় সামনে। সরকারের আইন করা উচিত। তাহলে ১৮-র আগে কারো হাতে স্মার্টফোন দিতে হবে না...

৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:১২

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: সময় বদলাচ্ছে। সময় সময়ের মতো এগিয়ে যাবেই। আর নিয়ম মেনে অনেকে পেছনে ফেরার কথাও বলবেন। কিন্তু সময় বদলাচ্ছে, বদলে যাবে।

৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৩৯

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: আইন কানুন রীতি নীতি করে তো কোন লাভই হবে না।

এখনকার অভিভাবকরাই তো সচেতন না। যারা বাচ্চাদেরকে চেপে রাখে - তারা অতিরিক্ত চাপে রাখে - যার ফলে ঐ বাচ্চাটার মানুসিকতাই চাপা হয়ে যায়। এবং, দেখা যায় - ওরা লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক বড় অঘটনই ঘটিয়ে ফেলে।

আর, যারা বাচ্চাদেরকে স্বাধীনতা দেয় - তারাও খুব বেশি দিয়ে ফেলে - যার ফলে বাচ্চাগুলো তাদের সামনেই অঘটন ঘটাতে দ্বিধা করে না। কারণ, তার মাঝে তো ঐ সেন্সটা আসার আগেই অন্য আবেগ এসে পড়েছে।

অভিভাবকদের এই ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া উচিৎ। বাচ্চাদেরকে বই পড়ার দিকে আগ্রহ দেওয়া উচিৎ। কিন্তু, বেশির ভাগ অভিভাবকই মনে করে - বই পড়া মানে পড়ালেখা নষ্ট হওয়া। তাহলে তো আর কোন উপকার হবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.