![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের অনেকের মধ্যেই না বুঝেই পশ্চিমা কালচার ফলো করার একটা প্রবনতা দেখা যাচ্ছে বিশেষ করে নুতনদের মধ্যে। টকশো কিংবা যে কোন অনুষ্ঠানে এখন সিনিয়রদের নাম ধরে ডাকার প্রচলন চালু হয়েছে যেটা আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির সাথে যায় না। ৮০ বছরের এবিএম মুসা ভাইকেও বলা হয়, 'বলুন মুসা, এবার আপনার টার্ন'! সেদিন খুব জুনিয়র উপস্হাপকেরা সিনিয়র গায়ক ও অভিনেত্রী টুটল ও তানিয়াকেও দেখলাম টুটল ও তানিয়া বলে ডাকছে। চরম ভুল এটা। আমাদের সমাজ, দেশ দিন যত যাচ্ছে, ক্রমেই কেমন যেন 'দুরুত্বের' আবহ সৃষ্টি করছে নানা কারনে। ফলে হানাহানি, অশান্তি বাড়ছে সমাজে, সংসারে। জাতীয় টেলিভিশনের কাজ সে বন্ধনগুলোকে সুদৃঢ় করতে সাহায্য করা, কোনভাবেই ঢিলা করা নয়। ইংরেজীতে একটা কথা প্রায়ই বলা হয়, 'বি ইউর সেলফ।' অর্থাৎ আমরা যা তাই, অন্যের ধার করা কালচারে মিশতে গেলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। আপনি যখন টিভিতে নাটক দেখেন তখন জীবন ঘনিষ্ট কোন কিছু দেখলে যেমন বেশী উপভোগ করেন, আপন মনেই হেসে উঠেন, অবাস্তব কিছু দেখলে কিন্তু অতটা উপভোগ্য হয় না। ধরুন, টিভির টক শো বা কোন অনুষ্ঠানে যদি উপস্হাপক বলেন, 'আচ্ছা মুসা চাচা আপনি বলুন আপনার মতামত', কিংবা 'তোফায়েল ভাই আপনি কিছু বলবেন?' আর সেটা না বলে আমরা বলি আচ্ছা তোফায়েল, আপনি বলুন। অথচ দেখা গেল যে উপস্হাপকের বয়স তোফায়েল ভাইয়ের হাটুর সমান। সেটা মানায় না। তো যেটা আমরা বাইরে বলতে পারবো না, লজ্জা পাব, সেটা কেন জাতীয় টেলিভিশনে বলে একেবারে উঠতি প্রজন্মকে ভুল সিগনাল দেব? আমাদের ঐতিহ্যই হলো ১৫ কোটি বাংগালী একে অপরকে চিনি বা না চিনি কোথাও দেখা হলে বা পরিচয় হলে ভাই, আংকেল, চাচা, আপা বা আন্টি বলে ডাকি। এটা প্রমান করে আমরা একে অপরের আত্মীয়, আমাদের সমাজের, পরিবারের বন্ধন অনেক বেশী মজবুত। একে অপরের সাথে সাম হাউ কানেক্টেড। আমার কথার সপক্ষে হাজার যুক্তি আমি তুলে ধরতে পারি, তবে এখানে শুধু একটা ঘটনা বলি। বছর দুয়েক আগে দেশ থেকে ফিরছিলাম। কুয়েতে এক রাত স্টে করতে হলো। পরের দিন সকাল ১১ টার দিকে টরন্টোর ফ্লাইট। ইচ্ছে হলো সকালে কুয়েত শহরটা একটু ঘুরে দেখার। হাতে মাত্র একঘন্টা সময়। হোটেল হলিডে ইন এর সামনের ড্রাইভ ওয়েতে দাড়িয়ে বাংগালী ট্যাক্সি খুজছি। পাকিস্তানি ড্রাইভাররা এসে বলছে, হামি বাংলা জানে, আমি পন করে দাড়িয়ে আছি, বাংগালী ট্যাক্সিতে উঠবো। অনেকক্ষণ পর একজনকে পেলাম। বললাম ভাই আমাকে একঘন্টার মধ্যে পুরো কুয়েত এক চক্কর ঘুরিয়ে দেখাতে পারবেন? তিনি রাজী হলেন। গাড়ীতে উঠেই প্রশ্ন করলাম, বাড়ী কোথায়? নোয়াখালী। যে উপজেলার কথা বললেন, সেখানকার প্রমিনেন্ট কিছু পলিটিশিয়ান যাদের সাথে এক সময় ভাল পরিচয় ছিল তাদের কথা বললাম, চিনেন নাকি? বললেন, হা উনার পাশের গ্রামেই আমার বাড়ী। যা হোক এভাবেই শুরু। তিনি শুধু আমাকে ঐ স্বল্প সময়ে কুয়েত শহরই দেখালেন না, দুজনে একসাথে সমুদ্রপাড়ে ছবি তুললাম, ফোন নাম্বার দিলেন যাতে যোগাযোগ থাকে এমনকি কুয়েতের দিনার না থাকায় ক্যানেডিয়ান ডলার ভাংগাতে কিছুটা ধকলও সহ্য করলেন। এই হচ্ছে বাংগালী। পৃথিবীর যেখানেই দেখা হবে, আত্নীয়। এই কানাডা আমেরিকায় কিন্তু পুরোটাই উল্টো। ক্লাশের শিক্ষকদেরকেও নাম ধরে ডাকতে হয়। তিন বছর এখানকার সরকারি কলেজে পড়তে যেয়ে কখনোই ৭০ বছরের শিক্ষককেও স্যার বলে সম্মান করতে পারি নাই। অফিসেও তাই, ছোট বড় সবাই নাম ধরে ডাকে। প্রফেশনালিজম আর কৃত্তিমতায় ভরা। তবে আইনের শাষনের দেশ এগুলো, একথাটা মানতেই হবে। ভাল মন্দ সবই আছে, ভালটাই বেশী। আমাদেরও উচিত ওদের ভালটা গ্রহন করা, মন্দটা নয়।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৫
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: দুর্ভাগ্যক্রমে তাই হচ্ছে, মেহেদী হাসান মানিক।
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮
মেহেদী হাসান মানিক বলেছেন:
৩| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:২০
ডরোথী সুমী বলেছেন: একদম একমত। আমাদের একটি চ্যানেলের কম বয়সী পাঠিকাকে নাম ধরে ডাকতে শুনলাম তাদের পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব রিপোর্টারকে। শুনে চমকে উঠেছিলাম। এমন চলতে থাকলে আমরা গুরুজনের ভালবাসাএবং আমাদের ঐতিহ্য উভয়ই হারাব।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৪
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: আপনার সাথে একমত, ঠিক বলেছেন ডরোথী সুমী।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮
মেহেদী হাসান মানিক বলেছেন: আমাদের সংস্কৃতি দিন দিন অন্য সংস্ক্রিতির দ্বারা পরিবেস্টিত হয়ে যাচ্ছে।