![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভেবে চিন্তে সঠিক ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিন
অনেকগুলো বিকল্প যখন একসাথে সামনে আসে, তার মধ্য থেকে সবচেয়ে-গ্রহণযোগ্য, উপযুক্ত বিকল্পটি বেছে নেওয়ার নাম সিদ্ধান্ত। জীবনের প্রত্যেকটি পদে, এমন হাজার বার আমাদের বিকল্প বেছে নিতে হচ্ছে। কখনও আমরা সঠিকটা নিতে পারি, কখনও হয়ে যায় ভুল। হয়তো আপনি যে সিদ্ধান্তটা ভালো বুঝবেন, কিন্তু তা গ্রহণ করতে পারছেন না-এমনটিও হতে পারে। এক্ষেত্রে পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী যেটি ওই সময়ের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর সেটি বেছে নিন। সেটিই হতে পারে আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত। কাজেই সততা ও সাফল্যের সাথে নিজ অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করতে সঠিক সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্ব পূর্ণ বিশয়।
সিদ্ধান্তগুলো কখনও মামুলি বিষয়, আবার কখনোও বা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর হয়ে থাকে। একজন ব্যাক্তি সকালবেলা ঘুম থেকে নাস্তায় কি খাবেন, কোন কাপড় পরবেন-এ থেকে শুরু হয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা এবং তা নিজ নিজ অবস্থান ভেদে কখনও কখনও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত পর্যন্ত হতেপারে। অর্থাৎ প্রত্যেকটা সময়ে সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয়। কাকে ভোট দিব, কোন বিষয়ে পড়ব, কোন পেশা গ্রহন করবো, কোন ব্রান্ড পছন্দ করবো, জিনিস কোনগুলো কিনবো-হাজারটা প্রশ্নের ভীড়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আমরা প্রায়শই ইতস্তত করি, কালক্ষেপন করি। আবার কখনোও হুট করে সিদ্ধান্ত নেই যা পরবর্তীকালে ভুল বলে প্রমাণিত হয়। কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে।
চিন্তাশক্তিঃ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা ব্যবহার করি আমাদের চিন্তাশক্তি। তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বশর্ত হচ্ছে চিন্তাশক্তি শাণিত করা, তবে সময়মতো সঠিক চিন্তা শেষ করে যিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, তিনিই বুদ্ধিমান।
বুদ্ধিমত্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ বুদ্ধিমত্তা পরিমাপ করতে আধুনিক সংজ্ঞা প্রদান করা হয়। এতে বলা হয়, যিনি একই ধরণের কয়েকটি সম্ভাব্য সমাধানের মধ্য থেকে সর্বশ্রেষ্ঠটি দ্রুততম সময়ে বেছে নিতে পারেন, তার বুদ্ধি ততো বেশি অর্থাৎ সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ মানেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।
চিন্তা ও আবেগঃ চিন্তার ক্ষেত্রে আবেগকেও মূল্য দিতে হবে। তবে তা অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে। যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাকে দুভাবে দেখা যেতে পারে। একটি হচ্ছে পুরো বিষয়টি সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করে একটি একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা ঐ বিষয়টিকে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে প্রতিটা ভাগের জন্য আলাদা সিদ্ধান্ত নিয়ে-এরপর মূল সিদ্ধান্তটি নিতে হবে।
প্রশ্নের উত্তর খুঁজুনঃ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো আপনার মনের প্রশ্ন। কে? কে নয়? কেন? নয়? কীভাবে? কীভাবে নয়? কখন? কোথায়? কী? কোনটি? কোনটি নয়? প্রভৃতি প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন। এরপর যৌক্তিকভাবে বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে হবে। মনে রাখুন, আপনার সিদ্ধান্ত যেনো শতভাগ যৌক্তিক হয়।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়ঃ সিদ্ধান্ত গ্রহণে অযথা তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই। কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু ধাপ পার হতে হবে, তা হলোঃ-
০০ লক্ষ্য সুনির্দিষ্টভাবে স্থির করা
০০ বিষয়টি সম্পর্কে যথাযথ তথ্য সংগ্রহ করা
০০ অনেক বিকল্প তৈরি করা
০০ বিকল্পগুলোর মূল্যায়ন ও একটি বেছে নেওয়া
০০ বেছে নেওয়া বিকল্পটি বাস্তবায়ন করা
আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এ ধাপগুলো পার হয়ে আসি; কিন্তু এ ধাপগুলোর মাঝে অসম্পূর্ণতা রয়ে যায় বলে-সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় না। তাই এ ধাপগুলো সঠিকভাবে পার হতে হয়। তাইবলে আপনার সব সিদ্ধান্তই সঠিক হবে, আপনার অনূকুল হবে-তেমন নাও হতে পারে। মনে রাখতে হবে-একটা ভুল সিদ্ধান্ত থেকেও অনেক কুছু শেখার আছে।যা আপনার পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহনে সাফল্য এনে দেবে।
মনে রাখবেন পুরো বিষয়টি যতো তাড়াতাড়ি সম্পাদন করা যায়, ততোই ভালো। অনেক সময় অন্যের সাথে আলাপের প্রয়োজন হতে পারে। পরামর্শের প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে নিজেকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। খোলামন নিয়ে নির্ভর করা যায়, এমন মানুষের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। এতে আপনার বিষয়টির অজানা দিকগুলো। আপনার সামনে আসতে পারে। এ থেকেও নিতে পারেন সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে আপনার সিদ্ধান্ত আপনার নিজের। সবাই হয়তো সিদ্ধান্তের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবে, তারমধ্য থেকে আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ বিষয়ে কাউকে অপরাধী করার চিন্তা না থাকাই ভালো। লজ্জা, সংকোচ আপনার সিদ্ধান্তকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই সিদ্ধান্ত হওয়া চাই দৃঢ়।
©somewhere in net ltd.