নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I am a former teacher, writer of poems and essays, idol talker on facebook and blogs. Sometimes I make websites and always listen to songs, songs mean only Rabindra Sangeet. My idea is that there is no need for sports in human life, because life itself is

আবদুল হক

https://www.facebook.com/HaqueIsOne

আবদুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি থাকি বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১:২০

সকাল ন’টায় সাদিকের কল : “হক ভাই, আপনার লেখাটা দারুণ হয়েছে!” ব্যাপার বুঝলাম না। “কোন লেখা? কোথায়?” প্রশ্ন শুনে সে অবাকই হলো। “কী কাণ্ড, আপনি নিজেই জানেন না! এইমাত্র না ‘ডাক’-এ পড়লাম! ‘আমাদের আমি’।” এবার মনে পড়লো। গত রমযানে ওই লেখাটি দিয়েছিলাম ‘ দৈনিক সিলেটের ডাক’-এ। যাকে বলে আলোর মুখ দেখা, অবশেষে তবে তা-ই ঘটলো! সাদিককে ধন্যবাদ দিয়ে মনে মনে পত্রিকার অপেক্ষা। দেখতে হবে, তার আগে স্বস্তি নেই। কারণ স্থানীয় ওই পত্রিকাটার শুদ্ধি-অশুদ্ধি নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। এমনকী শিরোনামেও প্রায়ই বানান ও ব্যাকরণগত ভুল দেখা যায়। মুদ্রণপ্রমাদও বিস্তর।







আমি যেখানে থাকি, শহর থেকে তা চল্লিশ কিলোমিটার দূরে। প্রতিষ্ঠানটা সময়ের দায় খানিকটা মানে। রোজ দু’টো পত্রিকা রাখা হয়, স্থানীয় ও জাতীয়। কিন্তু পত্রিকা কখনোই ঠিক সময়ে আসে না। কেননা যে- সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক ধরে হকার যায়, তার থেকে এ পর্যন্ত রিকশাভাড়া দশ টাকা। গোটা পাঁচেক কাগজ এখানে চলতে পারে, তার জন্যে তো হকার যাওয়া-আসায় বিশ টাকা ভাড়া গুণতে পারে না। তাই আমাদের কাগজ দু’টো সে দিয়ে যায় রিকশাঅলার কাছে। রিকশাঅলা এনে দেয় বাজারের দোকানঅলার কাছে। মুদি মশাই বেচাবিক্রির ফাঁকে ফাঁকে বিনে পয়সায় দেশ-বিদেশের হাল-হকিকত জানবার সুযোগটা তো শুধুশুধু নষ্ট করতে পারে না। তাই সে আমাদের ছাত্রদের সারাক্ষণ তার সমুখ দিয়ে চলাচল করতে দেখলেও নিজ থেকে কাউকে পত্রিকা আসার খবর বলতে চায় না, যতোক্ষণ না তা নিয়ে আসতে লোক পাঠানো হচ্ছে। ফলে কখনো পত্রিকা পৌঁছুয় বিকেলে, কোনো কোনো দিন একেবারে সন্ধ্যেয়।







আজ সন্ধ্যেও গড়িয়ে গেলো, পাত্তা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখি মুদি দোকান বন্ধ। একবার, দু’ বার, তিন বার। বলা বাহুল্য নয় যে, আমি পত্রিকাসক্ত নই। ঈশ্বর কৌতূহল জিনিসটা আমাকে খুব কম দিয়েছেন। তাই সুঘটনা দুর্ঘটনা কোনো ঘটনারই বর্ণনা পাঠ করে আমাকে সময় নষ্ট করতে হয় না। দিনরাত নেটে থাকি, প্রতিদিন দুনিয়ার কয়েক হাজার দৈনিক পত্রিকা আমার সামনে অপঠিত পড়ে থাকে। কিন্তু আজ ‘ডাক’ নিয়ে হাঁকডাকের হেতু তো ওই লেখা, যা ঢের দেরিতে আলোর মুখ দেখলো, তার মুখ দেখতে আমার পরাণটা মুখিয়ে ছিলো যে! আর কাগজখানাও আক্ষরিক অর্থেই কাগুজে, ওদের ওয়েবের বালাই নেই। ইচ্ছে হলেই মিশরের আল-আহরাম পড়তে পারি, কিন্তু সিলেটের ডাক পারি না।







সামনে একটা মস্ত মজমা আছে। তার মালামাল কিনতে শহরে গিয়েছেন তিন জন। ফোন করে বললাম, ‘একখানা ডাক আনবেন’। আমার ডাকে তাঁরা সাড়া দিলেন। আশায় আশায় থাকলাম, কেননা খবর বাসি হয় শুনেছি, কিন্তু দর্শন-মনস্তত্ত্ব কচলানো নিবন্ধ এতো জলদি তো আর পঁচে যাবে না। নাহয় রাতেই দেখলাম।







ওরা ফিরলেন রাত দশটার দিকে। কিন্তু পত্রিকা আনলেন না। লাখ খানেক টাকার মাল কিনেছেন তো, মালের চাপে গাড়ির জানালা দিয়ে হাত বের করতে ভুলে গেছেন। বিরক্তি মাথায় উঠে গেলো। ঠিক করলাম, ভোর হলেই এই বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগৎ ছেড়ে পালাতে হবে। সাধারণত একবার কোনো কারণে বিরক্ত হলে আমার বিরক্তি বৃদ্ধির ক্রমাগত আরো নানা কারণ তৈরি হতে থাকে। তখন তাৎক্ষণিক একটা ডুব দেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। ঠিক এ সময়, দফতরি আবুল ফয়েয ভাই আমার বিরূপ রূপ দেখে হাতের কাজকর্ম ফেলে দৌড় দিলো বাজারে, এবং পত্রিকা হাতে নিয়েই ফিরলো। খুশি হয়ে তাকে পঞ্চাশ টাকা বখশিশ দিলাম, কারণ শেষ পর্যন্ত লোকটা আমার ডুব দেয়া মনসূখ করে দিয়েছে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.