নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীরব কথামালা

মুক্তমত প্রকাশের প্লাটফর্ম ব্লগ। তাই ব্লগে আসতেই হয়, ভাবনা প্রকাশে......!

এম এ হাসান মাহামুদ

লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।

এম এ হাসান মাহামুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের ইতিহাস আমাদেরই উপেক্ষা করে, করছে, হয়তো করবেও...

৩০ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩২

ফুটবলের কালো মানিক পেলে কথাটা ছোটবেলায় আমরা সবাই জেনেছি। কারণ আমাদের পাঠ্যবইয়ে ব্রাজিলের এই কিংবদন্তি ফুটবলারের জীবনী সম্বলিত একটি অধ্যায় অর্ন্তভুক্ত ছিল।

যতদূর মনে পড়ে ১৯৮৫ সালে পরিবর্তিত ক্যারিকুলামে অধ্যায়টি সংযোজন করা হয়। এমনকি কুদরত-ই-খুদার শিক্ষা কমিশনেও এই অধ্যায়টি রাখার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের ফুটবলের বীরদের জীবনী কেউ জানে না, তাদের সম্মান করার একটু অবসরও পায়না। অবশ্য এতে সাধারণ মানুষের দোষ কোথায়, সরকার বা আমাদের স্বার্থবাজ ইতিহাস লেখকরা তো উনাদের প্রজন্মের কাছে পরিচিত করেনি।



মজার এবং একই সঙ্গে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের এর চেয়ে গর্ব করার ফুটবলের ইতিহাস ছিল। আরো অবাক হবেন জেনে, বাংলাদেশের ফুটবলের সেই কীর্তি বিশ্বে অনন্য এবং অদ্বিতীয়। অথচ আমাদের পাঠ্যবইয়ে তা অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি কখনো।

পৃথিবীর কোনো দেশে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধে ফুটবল দল লড়েনি। আমাদের একটি দল লড়েছে। সরকারি ভাবে পৃথিবীর একমাত্র গেজেটেড ফুটবল দল তারা।

'Swadin Bangla Football, A weapon' নামে দলটির একটি আর্ন্তজাতিক মানের পুস্তক রচনা করছি আমি।



পৃথিবীর ২১৩ টি ফেডারেশনে বইটি পৌঁছানো হবে। এরই মধ্যে জার্মানীর বেকেনবাওয়ার বইটির বিষয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন।



বইটির বিষয়ে কোনো ধরনের সহযোগিতা হয়তো কাউকে করতে হবে না, কারণ আমার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে সবাই প্লিজ দোয়া করবেন।

কারণ, এই বই রচনাকে আমি শুধু ব্যক্তিগত দ্বায়বদ্ধতা মনে করছি না, রাষ্ট্রীয় দ্বায়শোধ বললেও হয়তো খুব একটা ভুল বলা হবে না।.....



একই সঙ্গে আমি এবং আমরা কয়েকজন মিলে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অনন্য একটি অর্জনকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করার দাবি জানিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা কয়েক দফা আলোচনাও করেছি।



১৯৭১ সালের দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম এবং ত্যাগ-তিতিক্ষার ফসল আমাদের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা অর্জনে বাঙ্গালী যে যার অবস্থান থেকে অবদান রেখেছেন। সম্মুখ সমরের পাশাপাশি যুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালনকারীদের অবদানও ছিল অনন্য। তেমনি একটি অনুষঙ্গ ছিল ফুটবল খেলা। বাংলাদেশের ফুটবলের অবদানও ছিল অনবদ্য। পরাধীন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল হিসেবে ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিক ফুটবল ম্যাচে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ফান্ড সংগ্রহ করেছিল। সেই ১৯৭১ সালের ভারতীয় মুদ্রায় ৫ লক্ষ রুপি এই ফান্ডে দেয়া হয়েছিল। এই অর্থে সর্বপ্রথম অস্ত্র কেনা হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। যুদ্ধচলাকালীন পুরোটা সময় জুড়ে এসব খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৪ জুলাই ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে ‘নদীয়া একাদশ’ দলের সঙ্গে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচে অংশ নেয় ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’। এদিন নদীয়ার তৎকালীন জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে পরাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল স্টেডিয়ামে। কিন্তু ঐতিহাসিক এই ঘটনাটির কোনো রকম স্বীকৃতি কোনো সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।



২৪ ঐতিহাসিক এই দিনটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে ঠাঁই করে দেয়ার লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে ‘জাতীয় ক্রীড়া দিবস বাস্তবায়ন ও উদযাপন পরিষদ’। আমি এই পরিষদের সদস্য সচিব।



আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল দুই বছর আগে ২০১২ সালে। এই দুই বছরে আমাদের কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল শুধুমাত্র ২৪ জুলাই তারিখটিকে জাতীয় দিবস ঘোষনার দাবি সম্বলিত।



১৯ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবে আমরা দিবসটির দাবি জানিয়ে '২৪ জুলাই জাতীয় ক্রীড়া দিবস ঘোষণা চাই' শীর্ষক একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলাম আমরা। আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক, বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, এক সময়ের প্রভাবশালী খেলোয়াড় জনাব মো. জাকারিয়া পিন্টু, দলের সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শংকর হাজরা, সদস্য আবদুস সাত্তার, জাপান প্রবাসী বিশিষ্ট লেখক ও সাহিত্যিক এবং বিবেকবার্তার সম্পাদক জনাব পি. আর. প্ল্যাসিডসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।

আমাদের একমাত্র দাবি ছিল ২৪ জুলাই তারিখ জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে ঘোষণা চাই। দেশে অসংখ্য দিবস রয়েছে।

ক্রীড়া বা খেলাধুলার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কোনো দিবস নেই, এটি কী কল্পনা করা যায়?

এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে, আমরা কেন জাতীয় ক্রীড়া দিবস ঘোষণা চাই? এবং ২৪ জুলাই তারিখকে কেন জাতীয় ক্রীড়া দিবস ঘোষণা চাই?

একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে একটি জাতীয় দিবসের জন্য যৌক্তিক দাবি যে কেউ করতে পারে। আমরা করছি। তবে এক্ষেত্রে আমরা এই দাবি করছি, ইতিহাসের দায়বদ্ধতা থেকে। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীর বিভীষিকা বাইরের দেশে তুলে ধরতে এবং যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য ফান্ড সংগ্রহ করার জন্য স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল দেশের বাইরে ফুটবল খেলেছিল। সেই খেলা খেলতে গিয়ে দলটির খেলোয়াড়দের পাকিস্তান সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছিল। তবুও তারা থেমে থাকেন নি দেশের প্রতি অসীম ভালবাসা আর টানের কারণে। কিন্তু তাদের সেই অর্জনের কোনো রকম স্বীকৃতি আজো মিলেনি, শুধুমাত্র একটি গেজেট প্রকাশ ছাড়া। আমরা চাইছি, দলটির একটি ঐতিহাসিক অর্জনের দিনটি জাতীয় ক্রীড়া দিবস ঘোষনা হোক, যার মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল এবং দলটির অর্জন আমাদের মাঝে বেঁচে থাকে। একই সঙ্গে বইটির মাধ্যমে সারাবিশ্ব অন্তত জানতে পারবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম বিশ্বের অবশ্যই অনন্য।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: ইনফরমেটিভ!

২| ৩০ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:০৬

ল্যাটিচুড বলেছেন: আমাদের স্বার্থবাজ ইতিহাস লেখকরা বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ব্যবসায় ব্যস্ত - তাদের হাতে প্রকৃত ইতিহাস লেখার সময় নাই।

তাছাড়া এখন মুক্তিযুদ্ধে ফুটবলদলের ভূমিকা লিখার চেয়ে - স্বাধীনতা যুদ্ধে শেখ হাসিনার অবদান অথবা ৭১এ জিয়ার কাপুরষতার ইতিহাস লিখা অনেক লাভজনক ব্যাবসা :P

৩০ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:৪৮

এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.