নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাসু দুপুর থেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আয়নার ঐ মুখ টা সে চিনতে পারে না। কিন্তু জন্ম থেকেই ঐ মুখের সাথে সে পরিচিত। কিন্তু আজ তাকে বড় অসহায় এবং অচেনা লাগছে।

হাসু সমাচার

আমি হাসু। এটাই আমার পরিচয়।

হাসু সমাচার › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ভোজন পর্ব - ১

২৫ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:০৮

হাসু সহ পুরো জ্ঞাতি-গোষ্ঠির দাওয়াত । সম্ভ্রান্ত গ্রাম্য পরিবারে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। তাই যোহরের নামাজের পর রিকশা-ভ্যান করে পরিবারের সবাই রওনা দিল। পথে যেতে যেতে হাসুর যাতে বাতাস খেতে খেতে পেট না ভরে সে জন্য হাসু সতর্ক হয়ে রইল। দুপুরের আগে লাইফবয় এবং ঝামার সহযোগীতায় হাসু নিজেকে ঝকমকে করার চেষ্টা চালানোর সময় লাইফবয় ফুড়ুত করে পুকুরের পানিতে হারিয়ে গেল। হাসু তাকে রেস্কিউ করবে কি করবে না, এটা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার দরুন অনেকক্ষণ ঝিম ধরে পুকুর পাড়ে দাড়িয়ে থাকার সময় তাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিয়ে বাধ্যতামূলক গোসল করাল তার কাজিন, ওবামা। গোসল টোসল শেষ করে হাসু মাথায় প্রায় ১ লিটার নারকেল তেল দিয়ে, বাম পাশে সিঁথি কেটে লাঙল দিয়ে জমি চাষ করার মত চিরুনি দিয়ে চুল চাষ করে রাখল। একটি জামা পরল সাদার উপর সবুজ ফুলের ছাপ মারা এবং একটি ভেলভেটের প্যান্ট । সেই সাথে লোটো র ছাপ মারা লোকাল বেল্টওয়ালা স্যান্ডেল।

হাসুরা পৌছে গেল দাওয়াতি বাড়িতে। সেই বাসার পশ্চিম দিকে বিশাল বারান্দা। বারান্দায় লম্বা টেবিল এবং বেঞ্চ রাখার মাধ্যমে খাওয়ার যায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসু ভ্যান থেকে নেমে কাউকে সালাম না দিয়ে ঐ দিকে মন্ত্র মুগ্ধের মত হেটে যেতে লাগল। কিন্তু দুষ্টু এবং নিষ্ঠুর ওবামা কলার টা ধরে তাকে থামালো এবং ঐ দাওয়াতি বাড়ির সকল কর্তা গিন্নি, তাদের ছেলেপুলে এমন কি ছেলেপুলের ছেলেপুলেদেরকে সালাম দেওয়াল। হাসুর মাথায় খালি খাবো খাবো চিন্তা। তাই এই অপমান গায়ে লাগল না।

সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে হাসু দৌড়ে গিয়ে টেবিলের এক কোনায় বসে পড়ল। ওবামা বসল আরেক কোনায়। তাদের মাঝে সব মুরুব্বিরা বসল। মহিলা এবং মেয়েদের খাওয়া পর্ব ঘরের ভিতর, তাই তারা ঘরের মধ্যে গেল।

খাওয়া শুরু হল হাসুর দিক থেকে। হাসু খুশিতে বত্রিশ টা দাঁত বের করে পা দুলাতে লাগল। ওদিকে ওবামা বিমর্ষ হয়ে গেল এবং হায় হায় করতে লাগল।

গরম ধোয়া ওঠা পোলাও এর চালের ভাত অনেকটা নিয়ে নিল হাসু। মনে মনে, "আজ খেলা হবে" বলে একটা হুংকার দিয়ে নিল। সবাইকে পোলাও চালের ভাত দেওয়া হলেও, ঝামেলা করল ওবামা, সে একটা গলা খাঁকারি দিয়ে বলল, "সাদা ভাত আছে? "
এইটা শুনে ওবামার বাপে চিতকার দিয়ে বলল,"ওই বান্দর, যেটা দিছে ওইডা খা, না খাইলে চুপ কইরা বইয়া থাক। মাইনষেরে আর জ্বালাইয়া মারিস না।" হাসু মনে মনে কইল,"ইয়েস!!! " ওবামা মিনমিনাইয়া বলল, " না না, ঠিক আছে, পোলাও ই খাব, কোন সমস্যা নাই।"

প্রথম পদ আসল, কই মাছ ভাজা। হাসু হাত তালি দিয়ে বেছে বড় একটা মাছ নিল, সাথে কিছু ভাজা পেয়াজ। পেয়াজ দিয়ে কিছু ভাত মেখে নিল। মাছের পিঠের অংশ থেকে কিছু নিয়ে ভাতের সাথে মুখে দিল.........

আহ!!!!! কি স্বাদ। টাটকা ভাজা মাছের স্বাদ ই আলাদা। হাসু যেন মাছের নেশায় বিভোর হয়ে গেল। হাসু অপেক্ষা করা কে পাপ মনে করে আবার খাওয়ার দিকে মনোযোগী হল। এবার একটা কাচা মরিচ পাতে তুলে নিল। এবার লেজের থেকে কিছু অংশ নিয়ে ভাতের সাথে নিয়ে মুখে দিল কিন্তু সে সাথে সাথে সেটা চাবানো শুরু করল না। সে ঐ অবস্থায় মরিচে একটা কামড় দিল তারপর সে চাবানো শুরু করল। মুখের ভিতর যেন একটি যুদ্ধের ময়দান তৈরি হল এবং যুদ্ধের কমান্ডার হিসেবে সে সে যুদ্ধের পরিচালনা করতে লাগল। এপাশ খাওয়া শেষ হলে সে ভাজা কই মাছ টা উল্টে নিল। এবং আবারো একই ভাবে অত্যন্ত তৃপ্তি সহকারে খাওয়া শুরু করল।

ওদিকে বিকট কাশিতে সবাই চমকে উঠল। ওবামা গলায় মাছের কাটা বিধিয়েছে। যন্ত্রণায় কষা কাশি দিয়েছে সে। যারা পরিবেশন করছিল তারা তাড়াহুড়া করে শুকনা ভাত ওবামা কে খাইয়ে দিল। ওবামা কোন মতে ঢোক গিলে গলার কাটা ঘুচাল। চোখে পানি চলে এসেছে যন্ত্রণায়। এদিকে মিস্টার হাসু মনের আনন্দে মাছ ভাজা খাচ্ছে। মাছের তেলে তার দুই ঠোট চকচক করতেছে।

এমন সময় টেবিলে আসল এমন একটা পদ যেটা হাসু প্রত্যেকদিন স্বপ্নে খায়। হাসু আপ্লুত হয়ে গেল। চোখ জলে ঝাপসা হয়ে গেল। কারন পরবর্তি পদ টি কোন সাধারণ পদ ছিল না, সেটা ছিল "ইলিশের ঝোল "

হাসু কে পেটির টুকরা দেওয়া হচ্ছিল, কিন্তু হাসুর পছন্দ ইলিশের দাড়া। সে মন খারাপ করল। পাল্টে দিতে বলবে কি বলবে না এ নিয়ে সে দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে গেল। সে পরিবেশনকারীকে বলল,"মতিন ভাইজান, আমারে কি দাড়া ডা দেওন যায়? আমি পেটি খামু না" মতিন হাসুর চাচা কে তখন ইলিশের একটা বড় পিস তুলে দিচ্ছিল। হাসুর কথা শুনে তার পরিবেশন অইখানে পজ হয়ে গেল। সে হাসু বলল,"তুমি ছুড মানুষ, তুমি দাড়া খাইতে পারবা? দাড়াতে কিন্তু অনেক কাটা। " হাসুর চাচার ইলিশ শূন্যে ঝুলে আছে অনিকেত প্রান্তরের মত। হাসুর চাচা সেটিকে দেখে চলেছেন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:১৬

রাকু হাসান বলেছেন:

ব্লগে স্বাগতম আপনাকে। :)

২৫ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:২৮

হাসু সমাচার বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ৩০ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪

ইসিয়াক বলেছেন: সামহোয়্যার ইন ব্লগে আপনাকে স্বাগতম ।
হ্যপি ব্লগিং

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.