![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শব্দ গুলো যখন লুকোতে পারি না তখন , লিখতে বসি।
নতুন কেনা আরাম কেদারায় বসে রাস্তার লোকজন দেখছিল জব্বার সাহেব । প্রতি সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর এই মানুষ দেখা তার একটা অভ্যেসে দাড়িয়ে গেছে এখন । এখানে বসার পাচ সাত মিনিটের ভেতরই কাজের ছেলেটা এক কাপ চিনি ছাড়া চা দিয়ে যায় । আজ কেন দিচ্ছে না ?
এই বারান্দায় বসে প্রতি সন্ধ্যায় তিনি বিচিত্র সব মানুষ দেখেন । কত বিচিত্র মানুষ , বিচিত্র তাদের কার্যকলাপ
। বিচিত্র এই মানুষ গুলো সন্ধার আলো আঁধারিতে আরও বেশি বিচিত্র হয়ে ওঠে । এই বাষট্টি বছর পর্যন্ত তিনি এগুলো খেয়ালই করেন নি। অনেক কাজের ভিতর তিনি আসলে এভাবে মানুষ দেখার ফুসরতই পাননি তিনি ।
গত দুই বছর হল তিনি দেশে ফিরেছেন , তার শেষ জীবন কাটানোর জন্য । এসে ধানমণ্ডির এই ফ্লাট টা কিনেছেন ।
ছোট বেলা বাবা মা হারানো জব্বার বড় হয়েছে দাদার কাছে , একদিন দাদা স্কুলে ভর্তি করে দিলো তাকে , স্কুলে ভর্তি হবার পরই যেটা তিনি বুঝতে পারলেন আর দশটা বাচ্চা থেকে বই এর অনেক কিছুই তিনি অনেক তারাতারি বুঝেন , অন্যরা যেটা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরে থাকে তিনি তা কয়েক মিনিটেই শেষ করে ফেলতে পারেন ।
তাই স্কুলে তার একটা আলাদা আদর ছিল । শিক্ষক রা ক্লাস এ এসে বাকি ছাত্রদের দেখিয়ে বলতো গাধার দল জব্বারকে দেখ, ওকে দেখে কিছু শেখ ।
তখন তার গর্বে বুকটা ফুলে উঠত ।
দাদা তাকে বুকে জড়িয়ে বলেছিল একদিন আমার জব্বার দারোগা হবে । কি দাদা হবি না ?
এর পর এভাবে কলেজ , ভার্সিটি , সব জায়গাতে মানুষের প্রশংসা শুনতে শুনতে আর কাউকে দেখার প্রয়োজনই হয় নাই কখনো তার । কারন সবাই তো তাকেই দেখত ।
পড়ালেখা শেষ করে সবাই ভালো ভালো সরকারি চাকুরি নিল কিন্তু জব্বার পুলিশে জয়েন করলো । দারোগা হল ।
তার দারোগা হবার কিছুদিনের ভিতর দাদা মারা গেল । জব্বার এর দুনিয়াতে আর কেউ থাকল না ।
দেশ তখন স্বাধীন হয়নি , সরকারি অফিসার মানে সেই বিরাট পাওয়ার। তার উপর ছেলে থানার দারোগা ।
পাত্রির বাপ রা মৌমাছির মতো ঘুরত তার পিছে । কিন্তু জব্বার সাহেব অটল ।
তার পাত্রি কি আর যেমন সেমন হলে হবে ।
ডিসেম্বর এর মাঝামাঝি , হঠাৎই বদলি হলেন দিনাজপুর জেলায় । দিনাজপুর এর ছোট একটা থানা , ছিমছাম গোছান একটা থানা । এসেই পরলেন প্রচণ্ড শীত এর কবলে।
এর ভিতর একদিন তার দাওয়াত আসলো চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে,
দুই জন সিপাহি নিয়ে এক বিকালে গেলেন চেয়ারম্যান বাড়ি । পুরানো বিরাট এক বাড়িতে থাকেন চেয়ারম্যান । তার বাড়ির আশেপাশে তেমন কোন বাড়িঘর নেই কেমন জানি ভূতের বাড়ি মনে হয় । তার পূর্ব পুরুষ নাকি এলাকার জমিদার ছিল সেই প্রথা উঠে যাওয়ার পর থেকে তিনি এলাকার চেয়ারম্যান । কেউ তার সামনে দারাতে পারে না ভোটের মাঠে ।
রাতে সেই বিরাট রাজকীয় খাওয়াদাওয়া হল । চেয়ারম্যান বয়স্ক শিক্ষিত লোক তার সাথে জব্বার সাহেবের ভালো খাতির হয়ে গেলো । জব্বার সাহেবেরও তিঙ্কুলে কেউ ছিল না , তিনি চেয়ারম্যানকে চাচা বানায় নিলেন ।
এর পর থেকে জব্বার সাহেব মাঝে মাঝেই চেয়ারম্যান বাড়ি যেতেন।
এক বর্ষার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান জব্বার সাহেবকে লোক দিয়ে ডেকে পাঠালেন , জব্বার সাহেব সেই লোকের সাথে চেয়ারম্যান এর বাড়ি গেলেন । গিয়ে দেখেন চেয়ারম্যান মুখ কালো করে বসে আছেন ।
কি হয়েছে চাচা জি ? কোন সমস্যা ?
হুম আমি খবর পেয়েছি আজ রাতে আমার বাড়ি ডাকাতি হবে , এলাকার ভিতর সবথেকে ভয়ঙ্কর ডাকাত আসগর মাঝি আজ রাতে আমার বাড়ি হানা দিবে ।
আপনি চিন্তা নিয়েন না চাচাজি আমি ব্যাপার টা দেখছি , আমি আপনার বাড়ি পাঁচ জন পুলিশ পাঠিয়ে দিচ্ছি । সাথে আমি ও থাকব । আর আপনার বাড়ির দুইটা দারোয়ান তো আছেই ।
বাবা তুমি আমার ছেলের মতো তুমি জান না ও কত বড় ডাকাত ওর সামনে পাঁচ জন পুলিশ কোন ব্যাপার না ।
তো আপনি আপনার এলাকার লোক দের কে ব্যাপারটা জানান , সেটাও সম্ভব না আমি জমিদার হয়ে প্রজাদের কাছে সাহায্য চাইবো ?
এর থেকে ডাকাতের গুলি খেয়ে মরা ভালো ।
সমস্যা এখানে না সমস্যা হল আমার ঘরে একটা যুবতী মেয়ে আছে , তুমি কি জানো ? না তো চাচা , আমার মেয়ে কে আমি সব সময় অন্তর পুরে রেখেছি , কখনো কোন পর পুরুষ লোকের সামনে আনি নি । আমি চাই না ডাকাত দল আমার টাকা পয়সার সাথে আমার মেয়ে কেউ নিয়ে যাক।
বাবা আমি কাজি ডেকে আনছি তুমি আমার মেয়ে কে বিয়ে করে পালাও
। আমি তোমার চাচা হয়ে বলছি আমার মেয়েকে বিয়ে করলে তুমি ঠকবে না ।
এটা বলতে বলতেই দেখলাম কাজি হাজির , আর একটা মেয়েকে বিয়ের সাড়ি পড়িয়ে আমার সামনে এনে হাজির করা হয়েছে ।
এমন অপূর্ব মেয়ে যে আমি দেখে মানা করতে পারলাম না । বিয়ে পরাতে পরাতে রাত দশটা বেজে গেলো ।
বিয়ে পরানোর সময় মেয়ের নাম জানলাম হুমায়রা চৌধুরী ।
বিয়ে শেষ হতেই , আমার শ্বশুর আমার সামনে এসে বলল বাবা তুমি এখন আমার মেয়েকে নিয়ে পালাও । শহরে চলে যাও ।
তখন হুমায়রা বলে উঠলো বাবা আপনি একটু এখান থেকে জান আমার জামাই এর সাথে কথা আছে ।
আমার শ্বশুর চলে গেলেন , হুমায়রা বলা শুরু করলো
আপনি আমাকে কেন বিয়ে করেছেন জানি না , তবে এটা জানি আমার বাবা অনেক বড় বিপদে পরেই আপনার সাথে আমাকে বিয়ে দিয়েছেন , ছোট বেলা আমার মা মারা যাবার পর বাবা একাই আমাকে বড় করেছে । তার এ বিপদে আমি তাকে ছেরে যাবো না । আর আপনি তো দারোগা ,আপনি কি এতই কাপুরুষ যে নিজের নতুন বউ আর শ্বশুরকে বিপদের সামনে রেখে পালাবেন ?
তখনি কোমরে ঝোলানো পিস্তলের উপর হাত রাখলাম ।
বাইরে একটা গুলির শব্দ হল । কারা যেন বাড়ির ভিতর ঢুকছে ।
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম আজ যদি এ অসম লড়াইয়ে না জিততে পারি তো আজই আমার দারোগা গিরির শেষ দিন ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১২
েমা ফয়সাল হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৩
শফিউল আলম চৌধূরী বলেছেন: টুইষ্ট খাইল যে? গল্প বলছিলেন জব্বারের, কিন্তু শেষ করলেন নিজেরে দিয়ে... আশাকরি বুঝতে পারবেন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৬
েমা ফয়সাল হাসনাইন বলেছেন: একটু এডিট করে দিয়েছি এবার মনে হয় ঠিক আছে । যাই হোক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৯
নূর আদনান বলেছেন: অসমাপ্ত মনে হলো.....তবে এতটুকু ভাল হয়েছে