নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এমন কিছু এখনো হতে পরি নাই , যে নিজের নিয়ে লিখবো ।

েমা ফয়সাল হাসনাইন

শব্দ গুলো যখন লুকোতে পারি না তখন , লিখতে বসি।

েমা ফয়সাল হাসনাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জব্বার সাহেব শেষ যেদিন দারোগা ছিলেন ।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

নতুন কেনা আরাম কেদারায় বসে রাস্তার লোকজন দেখছিল জব্বার সাহেব । প্রতি সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর এই মানুষ দেখা তার একটা অভ্যেসে দাড়িয়ে গেছে এখন । এখানে বসার পাচ সাত মিনিটের ভেতরই কাজের ছেলেটা এক কাপ চিনি ছাড়া চা দিয়ে যায় । আজ কেন দিচ্ছে না ?

এই বারান্দায় বসে প্রতি সন্ধ্যায় তিনি বিচিত্র সব মানুষ দেখেন । কত বিচিত্র মানুষ , বিচিত্র তাদের কার্যকলাপ

। বিচিত্র এই মানুষ গুলো সন্ধার আলো আঁধারিতে আরও বেশি বিচিত্র হয়ে ওঠে । এই বাষট্টি বছর পর্যন্ত তিনি এগুলো খেয়ালই করেন নি। অনেক কাজের ভিতর তিনি আসলে এভাবে মানুষ দেখার ফুসরতই পাননি তিনি ।

গত দুই বছর হল তিনি দেশে ফিরেছেন , তার শেষ জীবন কাটানোর জন্য । এসে ধানমণ্ডির এই ফ্লাট টা কিনেছেন ।

ছোট বেলা বাবা মা হারানো জব্বার বড় হয়েছে দাদার কাছে , একদিন দাদা স্কুলে ভর্তি করে দিলো তাকে , স্কুলে ভর্তি হবার পরই যেটা তিনি বুঝতে পারলেন আর দশটা বাচ্চা থেকে বই এর অনেক কিছুই তিনি অনেক তারাতারি বুঝেন , অন্যরা যেটা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরে থাকে তিনি তা কয়েক মিনিটেই শেষ করে ফেলতে পারেন ।

তাই স্কুলে তার একটা আলাদা আদর ছিল । শিক্ষক রা ক্লাস এ এসে বাকি ছাত্রদের দেখিয়ে বলতো গাধার দল জব্বারকে দেখ, ওকে দেখে কিছু শেখ ।

তখন তার গর্বে বুকটা ফুলে উঠত ।

দাদা তাকে বুকে জড়িয়ে বলেছিল একদিন আমার জব্বার দারোগা হবে । কি দাদা হবি না ?

এর পর এভাবে কলেজ , ভার্সিটি , সব জায়গাতে মানুষের প্রশংসা শুনতে শুনতে আর কাউকে দেখার প্রয়োজনই হয় নাই কখনো তার । কারন সবাই তো তাকেই দেখত ।

পড়ালেখা শেষ করে সবাই ভালো ভালো সরকারি চাকুরি নিল কিন্তু জব্বার পুলিশে জয়েন করলো । দারোগা হল ।

তার দারোগা হবার কিছুদিনের ভিতর দাদা মারা গেল । জব্বার এর দুনিয়াতে আর কেউ থাকল না ।



দেশ তখন স্বাধীন হয়নি , সরকারি অফিসার মানে সেই বিরাট পাওয়ার। তার উপর ছেলে থানার দারোগা ।

পাত্রির বাপ রা মৌমাছির মতো ঘুরত তার পিছে । কিন্তু জব্বার সাহেব অটল ।

তার পাত্রি কি আর যেমন সেমন হলে হবে ।



ডিসেম্বর এর মাঝামাঝি , হঠাৎই বদলি হলেন দিনাজপুর জেলায় । দিনাজপুর এর ছোট একটা থানা , ছিমছাম গোছান একটা থানা । এসেই পরলেন প্রচণ্ড শীত এর কবলে।

এর ভিতর একদিন তার দাওয়াত আসলো চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে,

দুই জন সিপাহি নিয়ে এক বিকালে গেলেন চেয়ারম্যান বাড়ি । পুরানো বিরাট এক বাড়িতে থাকেন চেয়ারম্যান । তার বাড়ির আশেপাশে তেমন কোন বাড়িঘর নেই কেমন জানি ভূতের বাড়ি মনে হয় । তার পূর্ব পুরুষ নাকি এলাকার জমিদার ছিল সেই প্রথা উঠে যাওয়ার পর থেকে তিনি এলাকার চেয়ারম্যান । কেউ তার সামনে দারাতে পারে না ভোটের মাঠে ।

রাতে সেই বিরাট রাজকীয় খাওয়াদাওয়া হল । চেয়ারম্যান বয়স্ক শিক্ষিত লোক তার সাথে জব্বার সাহেবের ভালো খাতির হয়ে গেলো । জব্বার সাহেবেরও তিঙ্কুলে কেউ ছিল না , তিনি চেয়ারম্যানকে চাচা বানায় নিলেন ।

এর পর থেকে জব্বার সাহেব মাঝে মাঝেই চেয়ারম্যান বাড়ি যেতেন।

এক বর্ষার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান জব্বার সাহেবকে লোক দিয়ে ডেকে পাঠালেন , জব্বার সাহেব সেই লোকের সাথে চেয়ারম্যান এর বাড়ি গেলেন । গিয়ে দেখেন চেয়ারম্যান মুখ কালো করে বসে আছেন ।

কি হয়েছে চাচা জি ? কোন সমস্যা ?

হুম আমি খবর পেয়েছি আজ রাতে আমার বাড়ি ডাকাতি হবে , এলাকার ভিতর সবথেকে ভয়ঙ্কর ডাকাত আসগর মাঝি আজ রাতে আমার বাড়ি হানা দিবে ।

আপনি চিন্তা নিয়েন না চাচাজি আমি ব্যাপার টা দেখছি , আমি আপনার বাড়ি পাঁচ জন পুলিশ পাঠিয়ে দিচ্ছি । সাথে আমি ও থাকব । আর আপনার বাড়ির দুইটা দারোয়ান তো আছেই ।

বাবা তুমি আমার ছেলের মতো তুমি জান না ও কত বড় ডাকাত ওর সামনে পাঁচ জন পুলিশ কোন ব্যাপার না ।

তো আপনি আপনার এলাকার লোক দের কে ব্যাপারটা জানান , সেটাও সম্ভব না আমি জমিদার হয়ে প্রজাদের কাছে সাহায্য চাইবো ?

এর থেকে ডাকাতের গুলি খেয়ে মরা ভালো ।

সমস্যা এখানে না সমস্যা হল আমার ঘরে একটা যুবতী মেয়ে আছে , তুমি কি জানো ? না তো চাচা , আমার মেয়ে কে আমি সব সময় অন্তর পুরে রেখেছি , কখনো কোন পর পুরুষ লোকের সামনে আনি নি । আমি চাই না ডাকাত দল আমার টাকা পয়সার সাথে আমার মেয়ে কেউ নিয়ে যাক।

বাবা আমি কাজি ডেকে আনছি তুমি আমার মেয়ে কে বিয়ে করে পালাও

। আমি তোমার চাচা হয়ে বলছি আমার মেয়েকে বিয়ে করলে তুমি ঠকবে না ।

এটা বলতে বলতেই দেখলাম কাজি হাজির , আর একটা মেয়েকে বিয়ের সাড়ি পড়িয়ে আমার সামনে এনে হাজির করা হয়েছে ।

এমন অপূর্ব মেয়ে যে আমি দেখে মানা করতে পারলাম না । বিয়ে পরাতে পরাতে রাত দশটা বেজে গেলো ।

বিয়ে পরানোর সময় মেয়ের নাম জানলাম হুমায়রা চৌধুরী ।

বিয়ে শেষ হতেই , আমার শ্বশুর আমার সামনে এসে বলল বাবা তুমি এখন আমার মেয়েকে নিয়ে পালাও । শহরে চলে যাও ।

তখন হুমায়রা বলে উঠলো বাবা আপনি একটু এখান থেকে জান আমার জামাই এর সাথে কথা আছে ।

আমার শ্বশুর চলে গেলেন , হুমায়রা বলা শুরু করলো

আপনি আমাকে কেন বিয়ে করেছেন জানি না , তবে এটা জানি আমার বাবা অনেক বড় বিপদে পরেই আপনার সাথে আমাকে বিয়ে দিয়েছেন , ছোট বেলা আমার মা মারা যাবার পর বাবা একাই আমাকে বড় করেছে । তার এ বিপদে আমি তাকে ছেরে যাবো না । আর আপনি তো দারোগা ,আপনি কি এতই কাপুরুষ যে নিজের নতুন বউ আর শ্বশুরকে বিপদের সামনে রেখে পালাবেন ?

তখনি কোমরে ঝোলানো পিস্তলের উপর হাত রাখলাম ।

বাইরে একটা গুলির শব্দ হল । কারা যেন বাড়ির ভিতর ঢুকছে ।

মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম আজ যদি এ অসম লড়াইয়ে না জিততে পারি তো আজই আমার দারোগা গিরির শেষ দিন ।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৯

নূর আদনান বলেছেন: অসমাপ্ত মনে হলো.....তবে এতটুকু ভাল হয়েছে

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১২

েমা ফয়সাল হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৩

শফিউল আলম চৌধূরী বলেছেন: টুইষ্ট খাইল যে? গল্প বলছিলেন জব্বারের, কিন্তু শেষ করলেন নিজেরে দিয়ে... আশাকরি বুঝতে পারবেন।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৬

েমা ফয়সাল হাসনাইন বলেছেন: একটু এডিট করে দিয়েছি এবার মনে হয় ঠিক আছে । যাই হোক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.