নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১
জমিদার বাড়ী সিরিজের সব লেখাঃ "বাংলার জমিদার বাড়ী"
জায়গাটার নাম স্থানীয় ভাষায় ‘হাসুন্দি’ গ্রাম, রেকর্ডপত্রে ‘হামছদি’। সিএনজী অটোরিকশা ড্রাইভার বলল তার এক চাচাতো বেয়াইয়ের শ্বশুর বাড়ী আছে ঐ জায়গায়, তাকে ফোন দিলে কাজ হতে পারে। আমি বলা মাত্র তিনি গাড়ী থামিয়ে একপাশে রেখে উনাকে ফোন দিয়ে উনার শ্বশুরকে ফোন দিলেন। ভদ্রলোক ঠিকই চিনতে পারলেন জায়গাটা, কিন্তু ইসহাক জমিদার বাড়ী সেখানে আছে কিনা তা বলতে পারলেন না। আমি বললাম, আগেতো সেখানে যাই, চলেন।
জমিদার বাড়ীর খোঁজে আমি এখন প্রায়ই এখানে ওখানে ঢুঁ মারি। যে কোন লোকাল এলাকায় গেলে সেখানকার মানুষ আশেপাশের সব এলাকা চিনবে এমনটা ভাবাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল প্রমাণ পেয়েছি। গত ফেব্রুয়ারী’তে যখন অফিসের কাজে লক্ষ্মীপুর গেলাম তখন একটা লিস্ট করে নিয়ে গিয়েছিলাম কি কি দর্শনীয় স্থান আছে। মজার ব্যাপার আমার অফিসের বেশীরভাগ কলিগ এবং এমডি নিজে লক্ষ্মীপুরের হওয়া সত্ত্বেও বেশীরভাগ জায়গাই চিনতে পারে নাই। আমি যখন ইসহাক জমিদার বাড়ী’র কথা বললাম, তখন সবার মুখের অবস্থা এমন হল যেন তারা আকাশ থেকে পড়ল।
শেষে লোকাল অফিসের পিয়নকী ডেকে বললাম, এখানকার এমন কোন একজন সিএনজী অটোরিকশা ড্রাইভারকে ডেকে আনেন যিনি পুরাতন এবং মোটামুটি সব জায়গা চেনেন। রাত দশটা নাগাদ বছর পঞ্চাশের এক বেটেখাটো লোককে নিয়ে হাজির হল। তিনদিনে এই প্রথম একজনকে পেলাম যে কিনা প্রায় সব কয়টা জায়গাই চিনতে পেরেছে। তাকে পরেরদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কন্টাক্ট করলাম। পরদিন সকাল সাতটা হতে আমাদের যাত্রা শুরু করে আমরা এখন আছি ‘ইসহাক জমিদার বাড়ী’র খোঁজে।
যাই হোক হাসুন্দি ইউনিয়নে পৌঁছে আমরা দেখা পেলাম সিএনজী অটোরিকশা
চালকের আত্মীয় ভদ্রলোককে। আমি মনে মনে অবাক হলাম, আমি কোথাকার কে, আমাকে একটা জমিদার বাড়ীর খোঁজ দিতে সিএনজী অটোরিকশা ড্রাইভারের দূর সম্পর্কের এই পৌঢ় ভদ্রলোক রোঁদ মাথায় দাঁড়িয়ে আছেন। খুব হৃদয় ছুঁয়ে গেল ব্যাপারটা। যাই হোক ভদ্রলোকের সাথে কুশল বিনিময়ের পর আমরা জানলাম এখানে হিরু চৌধুরী’রা একসময় জমিদার ছিলেন। হিরু চৌধুরী এখনো খুব ডাকসাইটে রাজনৈতিক নেতা। তবে এলাকাটা ভালো না, সিএনজী অটোরিকশা ড্রাইভারের আত্মীয় আমাদের জানালেন। দিনের বেলা বলে আমরা তেমন তোয়াজ না করে বললাম আচ্ছা গিয়ে দেখি সেইটা কিনা...।
গ্রামের কাঁচা মাটির পথের সাথে পিচঢালা পথ দিয়ে আমরা একসময় যথাস্থানে পৌঁছলাম এবং আমি দূর থেকে দেখেই চিনতে পারলাম, হ্যাঁ ইহাই সেই ‘ইসহাক জমিদার বাড়ী’। কারণ এই জমিদার বাড়ী’র ছবি আমি আগে দেখেছি। গাড়ী হতে নেমে এগিয়ে গেলাম জমিদার বাড়ীর দিকে। প্রবেশপথের সম্মুখে একটি বিশাল পুকুর, আগে বোধহয় দীঘিই ছিল। সেখানে এক লোক একটা গাছের গুঁড়ি কাটায় ব্যাস্ত ছিল, তার সাথে কথা বলতে এগিয়ে গেলাম। জানতে পারলাম উনি ইসহাক চৌধুরীর নাতি হন। আমাদের আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করলেন, বিশেষ করে আমরা সাংবাদিক কিনা! আমি তাকে আমার আগমনের হেতু বুঝিয়ে বলতে উনি আমাদের ভেতরে নিয়ে গেলেন। ভেতরে কিছু মহিলা খোলা বিশাল উঠানে হাতের কাজ করছিলেন, আমরা তাদের অনুমতি চাইতে বললেন আপানারা সানন্দে দেখেন জমিদার বাড়ী।
আমি আমার ছোট্ট ক্যামেরা বের করে ঘুরতে ঘুরতে সাটার টিপতে লাগলাম। ভগ্নদশা বাড়ীটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জমিদার বাড়ি নিয়ে ধারাবাহিক লেখা শুরু করার পর এই বিষয় নিয়ে অল্পবিস্তর ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। উন্নতবিশ্বে যে সকল স্থাপনা হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষিত হয়, আমাদের দেশে সেইসকল স্থাপনা পড়ে থাকে অবহেলায়, ক্ষয়ে যায় অস্থি-মজ্জা সকল, ঘুণে ধরে বিচূর্ণ হয় ইতিহাসের পাতা। অপূর্ব সকল স্থাপনা আর নির্মাণশৈলী নিয়ে আমাদের বাংলাদেশের আনাচে কানাচেতে পড়ে আছে অসংখ্য জমিদার বাড়ি, রাজবাড়ীসহ আরও কত স্থাপনা। আর এই সব স্থাপনার কিছু কথা এই বোকা মানুষটার ছেঁড়া খাতায় লিখে রাখার প্রয়াস হল এই “বাংলার জমিদার বাড়ী” সিরিজ।
বৃটিশ আমলে সর্ব প্রথম এই বাড়ীর গোড়া পত্তন হয়। এই বাড়ীর মূল স্থপতি বা বসতি স্থাপনকারী হলেন মো: মনির উদ্দিন ভূইয়া । তিনি বর্তমানে পুরান ভূইয়া বাড়ী হিসেবে পরিচিত (ইসহাক চৌধুরী বাড়ীর এই বাড়ীতে দক্ষিনে) সর্বপ্রথম বসতি স্থাপন করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিল দালাল বাজার (খোয়া সাগর দীঘির উত্তরে ) আসকার ভূইয়া বাড়ী এবং তার পিতার কবর ঐ স্থানে রয়েছে। তিনি এই বাড়ীর মূল ভূমি ইজারা নিয়ে বসতি স্থাপন করেন এবং পরবর্তী সময়ে আরো ভূ-সম্পত্তি ক্রয় করে তার পরিধি বৃদ্ধি করেন। তৎকালীন সময়ে বৃটিস জমিদারী প্রথা বিদ্যমান ছিল। ইজারা প্রাপ্ত ভূমির মালিকগন তখন জমিদারদের নিকট ভূমির খাজনা পরিশোধ করত। আর এই ভূ-সম্পত্তির অধিকারীদেরকে ভূইয়া নামে অভিহিত করা হত। ভূইয়ারা তাদের অন্তর্গত প্রজাদের নিকট থেকে কর গ্রহন করত। এই বাড়ীর পূর্বনাম মনির উদ্দিন ভূইয়ার নাম অনুসারে মনির উদ্দিন ভূইয়া বাড়ী হিসেবে পরিচিত ছিল । পরবর্তীতে তার নাতী ইসহাক মিঞা ও ইউনূস মিঞা জমিদার হওয়ার পরে বর্তমান বাড়ীর নাম ইসহাক চৌধুরী বাড়ী নামকরন হয়।
ইসহাক জমিদার বাড়ী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা হইতে সিএনজি যোগে উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের পাশ দিয়ে উত্তর পূর্বে আধা কি:মি গেলে যাওয়া যায় । জমিদার বাড়ীটি উত্তর হামছাদী ইউণিয়নের অন্তগত হাসন্দী গ্রামে অবস্থিত । প্রায় ১৬ একর জমির উপর তৎকালীন প্রভাবশালী জমিদার ইসহাক চৌধুরী এই জমিদার বাড়ীটি নির্মান করার উদ্যোগ গ্রহন করেন ।
আমার ছোট্ট ক্যামেরায় তোলা 'ইসহাক জমিদার বাড়ী'র কিছু ছবি...
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ মেজবাহুল হক। দোয়া করবেন যেন এই কাজ অব্যাহত রাখতে পারি। পরিকল্পনা আছে এই বিষয় নিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করার।
আর হ্যাঁ, আশা করি এই সিরিজের সাথেই থাকবেন।
২| ২৩ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব ভাল লাগলো ...
এই ধরনের পুরনো স্থাপনা গুলি দেখলে মন কেমন করে ...
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: খুব কষ্ট হয় অবহেলা আর অনাদারে সুবর্ণ সময়ের এই সাক্ষীগুলোকে হারিয়ে যেতে দেখে।
৩| ২৩ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬
রাখালীয়া বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো.......
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ রাখালীয়া
৪| ২৩ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৭
নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪১
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৫| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৫
প্রকৌশলী নির্ভিক রাইডার বলেছেন: ভালো লাগলো রে ভাই
থ্যাংকস পোস্ট টার জন্য
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আপনাকেও পাঠ এবং মন্তব্যর জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৬| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৫৯
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: সুন্দর পোস্ট
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ স্বপ্নবাজ অভি।
৭| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:০০
মিনুল বলেছেন: আপনার উদ্দ্যোগটি সত্যি প্রসংশনীয়...চালিয়ে যান
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ইনশাল্লাহ চালিয়ে যাব, আশা করি আপনারা সবসময় সাথে থাকবেন।
৮| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:১৪
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: বরাবরের মতোই চমৎকার । এমন মমতা যদি প্রশাসনের থাকতো !
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন:
৯| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:০৭
হাফিজ হিমালয় বলেছেন: খুব ভাল লাগল। এখনও যা অবশিষ্ঠ আছে তা সত্যি গরব করার মত। মুলত জানতামিনা এই খবর। ধন্যবাদ আপনাকে
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ হাফিজ হিমালয়, সাথে থাকুন, এই সিরিজ চলবে বহুদিন ইনশাল্লাহ।
১০| ২৪ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৪৯
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: চমৎকার এতিহ্যবাহী পোস্ট।
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৯
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন:
১১| ২৪ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আপনার "বাংলার জমিদার বাড়ি" সিরিজটা অসাধারন একটা কাজ। এই সিরিজের চমৎকার সব পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫১
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: সাথে থাকবার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন।
১২| ২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৪৭
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
বরাবরের মত দারুণ!!!
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আপনাকেও বরাবরের মত সাথে থাকবার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
১৩| ২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:০৪
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !! আপনি অনেক ঘুরে বেড়ান।
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর সবসময় এই বোকা মানুষের ব্লগে সাথে থাকার জন্য। খুব বেশী কি ঘুরতে পারি? মনতো ভরে না। সময়, অর্থ আর শারীরিক সীমাবদ্ধতা আমার ভ্রমণের জগৎটা অনেক সংকুচিত করে রেখেছে রে ভাই
১৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০২
মাদিহা মৌ বলেছেন: কীভাবে যেতে হয় তা তো বললেন না …
আচ্ছা, গেইটের উপর এমন স্তম্ভ কেন?
১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা হইতে সিএনজি যোগে উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের পাশ দিয়ে উত্তর র্পর্বে আধা কি:মি গেলে উক্ত জমিদার বাড়ীতে যাওয়া যায় ।
১৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২১ ভোর ৫:১৮
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: খুব ভালো উদ্যগ।
সাধুবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৪
মোঃ মেজবাহুল হক বলেছেন: অনেক সুন্দর একটা উদ্যোগ, সংগ্রহে রাখার মত। আসলেই মনটা খারাপ হয়ে যায় যখন দেখি অনেক সুন্দর সুন্দর জমিদার বাড়ি গুলো ধসে খসে নষ্ট হয়। আমার গ্রামের বাড়ি শ্যামনগর উপজেলায়, সাতক্ষীরা। সেখানেও একটা জমিদার বাড়ি আছে, অবশ্য আছে বললে ভুল হবে, ছিল বলাটাই শ্রেয়। চোখের সামনে নষ্ট হতে দেখেছি, কষ্টও পেয়েছি। কিছু করার নেই।