![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আত্মজা-১
আত্মজা-২
বউ-বাচ্চাকে রেখে দিনে দিনেই ফিরে আসল কামাল।সকাল সকাল রওনা দিয়েছিল।শ্বাশুড়ী মানে ইতি-ইরার নানী অনেক করে সেধেছিলেন যেন আজকের দিনটা থেকে যায়। মেয়ের জামাই বলে কথা।আদর-আপ্যায়ন কম করেনা ওরা।কিন্তু কামালের পছন্দ হয় না ঐবাড়িতে পড়ে থাকা,দুপুরে খেয়েই রওনা দিয়ে দিল।
আসার আগে মনোয়ারা বারবার বলছিল একরাত থেকে যেতে।পরদিন ভোরেই নাহয় চলে যাবে।
সেকথা শুনল না কামাল।
‘ইতি কোথায়।দেখা করে যাই?’
‘ওরা কি আর আছে?দিগবিদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে দুই বোনে মিলে।এখন গেছে ছিপ বড়শি নিয়ে মাছ ধরতে।তুমি থেকে গেলে পারতে’-স্বামিকে অনুরোধ করল মনোয়ারা।বেশ খুশি খুশি।নিজের মায়ের বাড়ি আসলে খুশি হবার-ই কথা।
কামাল দুই মুহুর্ত ভাবল,একবার মনে আসল থেকেই যায়।পরে চিন্তা করে দেখল,এখন খারাপ না লাগলেও পরে আফসোস হবে,এরচেয়ে ফিরে যাওয়া যাক।
সন্ধ্যার আগে আগে ফিরে আসল।যাতায়াতে ঘন্টা দুয়েক লেগে যায়। বাসায় ফিরে তালা খুলে মনটা খারাপ হয়ে গেল কামালের।খা খা করছে বাসা।
জামাকাপড় খুলে বিছানায় বসে পড়ল।খালি বাসায় মন খারাপ লাগছে খুব।কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে জামা গায়ে দিয়ে আবার বেরিয়ে পড়ল।চা-সিগারেট খেয়ে এদিক-সেদিক করে পার করে দিবে কিছুসময়।
মাগরিবের আযানের আগে আগে ঘরে ফিরল।মেয়েদুটোর কথা মনে পড়ছে।ইতিটা গুটগুট করে বাবা ঘরে ফিরলে পেছন পেছন ঘুরঘুর করে।মায়া লাগে।বড় মেয়ে ইরার কথাও।মেয়েটাকে একটু বেশিই অবিচার করে।কামাল অনেকদিন ধরেই ব্যাপারটা উপলব্ধি করে আসছে।
ওর বন্ধু ইকবাল তো নিজের মেয়ের জন্য পাগল,সারাক্ষণ মেয়ের এটা লাগবে,ঐটা লাগবে। মেয়েকে গান শিখাবে ,আরো ভালো স্কুলে ভর্তি করাবে এইসব আলাপ করে।কামাল ধীরে ধীরে উপলব্ধি করে এই যে সম্পর্কের ব্যপারটা মানে রক্তের সম্পর্ক এটা যে কি ভীষণ গাঢ়! নাহয়,এই একলা ঘরে অমন করে নিজের মেয়েদুটির কথা ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছে না কেন সে!
ওযূ করে জায়নামায নিয়ে বসল কামাল।নামায নিয়মিত পড়ে যে এমন নয়।
নামায শেষে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে রইল।
ফোনটা আসল সাড়ে সাতটার দিকে।
লাস্ট টিপের বাসে চড়ল কামাল। ফোন টা পাওয়ার পর এক মুহুর্ত অপেক্ষা করেনি।পরনে যা ছিল তাই পরে বের হয়ে গেছে।ইতি-ইরার নানুবাড়ি থেকে এসেছে ফোন।
জানালার পাশে বসে যেতে যেতে মনে মনে শুধু দোয়া পড়ছিল। আর চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় গড়িয়ে পড়ছিল পানি।
‘ভাই,আপনার কি হয়েছে?’-পাশের ভদ্রলোক জানতে চাইল।
‘আমার মেয়েটার খুব অসুখ ভাই’
‘কি অসুখ?আপনি এখন কাঁদছেন কেন?’
‘ওরা বলেনাই আমাকে’
স্টপেজ এ নেমে রিকশা নিবে।উদ্ভ্রান্তের মত হাঁটল কামাল।
ওরা এখানে কি করছে?
ইরার নানু বাড়ি থেকে কয়েকজন এসে দাঁড়িয়ে আছে এই রাস্তায়।কামাল কে দেখতে পেয়েই ছুটে আসল।ওকে ধরল।
‘কি হয়েছে ইরার?’
‘কিছু না ভাইজান।চলেন আপনি চলেন’
‘আমাকে ধরা লাগবে না!আমার মেয়ের কি হয়েছে বল আমাকে!’
কেউ কথা বলে না।
ওরা এমন করছে কেন?নিশ্চয়ই খারাপ কিছু।নাহলে ওরা আমাকে এইখানে নিতে আসবে কেন?
বাড়িতে ঢুকে হকচকিয়ে গেল।প্রচুর মানুষের মাথা।ভীড় হয়ে আছে।ওকে যাবার পথ করে দিল সবাই।
সিড়ি দিয়ে উঠে বারান্দার একপাশে এসে থামল কামাল।কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না।এত মানুষ কেন?ওরা কই! ইতি ,ইরা,ওদের মা!
হতভম্বের মত তাকালো সামনে।ঐ তো মনোয়ারা!মনোয়ারাকে চেনা যাচ্ছে না।পাগলের মত লাগছে দেখতে।এক মহিলার কোলে শুয়ে।
কামালকে কেউ ধরে আছে।
কামাল বার দুই ঢোক গিলল।হে আল্লাহ ! না-তুমি এটা কি করলে ,বলে মেঝেতে শোয়ানো ইরার লাশের পাশে দুইপা ছড়িয়ে বসে পড়ল কামাল।
ইরার মৃতমুখ টা কোলে নিয়ে গগনবিদারী চিৎকারে ফেটে পড়ল কামাল।
(চলবে)
২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২২
আমি সৈকত বলছি বলেছেন: সত্যিই বলছি আবেগী হয়ে পড়েছিলাম,
চোখের কোনে জলও এসে গেছে।
চালিয়ে যান কেউ না থাকলেওও আমি আছি আমি পড়বো সব পর্ব ইনশা আল্লাহ।
যতদূর পারেন নিয়ে যান এই গল্পের পর্ব।
খুব খুব ভালো লেগেছে,
ইরাকে না মরলেও পারতেন বাবার আদর পাওয়া হলো না মেয়েটার অবশ্য সবাই সবাই সব কিছু পায় না।
যাইহোক,
গল্পে +++++++++++++++++++++++++++
৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২৯
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
বাবার আদর না দিয়েই ইরাকে মেরে ফেললেন?
দারুণ লাগছে+++
পরবর্তী পর্বের আশায়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১৫
আমি সৈকত বলছি বলেছেন: কোন কথা নেই আমি এসেছি আগে পড়ি তার পর ভালো খারাপ মন্তব্য হবে। >