![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১ম অংশ
প্রচুর ভোরে উঠে নাসিরের জন্য নাস্তা বানাতে হয়,সেইসাথে নাসিরের দুপুরের খাওয়া তৈরি করে তাহমিনা।এখান থেকে অফিস বেশ দূরে,ছয়টার পরেই বের হয়ে যায় নাসির,তবু তাড়াহুড়ো করে।ঢাকা শহরে জ্যাম ঠেলতে সবাই মনে হয় সকাল-সকালই বের হয়ে পড়ে।
তাই,নয়টা-দশটার দিকে একটু ঘুমিয়ে নেয় তাহমিনা।সেই ঘুম ভাঙে বেলা গড়ালে,বারোটার দিকে।তখন নাসির একবার ফোন করে,পাঁচ-ছমিনিট কথা চলে।
আজকে ঘুমাল না তাহমিনা। মেঝেতে বসে বই পড়ছিল। বইটা হাসির না ।তবে, কিছুকিছু জায়গায় এমন হাসির কথা লিখেছে যে শব্দ করেই হেসে ফেলছিল তাহমিনা।
হঠাৎ চা খেতে ইচ্ছে করল ওর।টেবিলে বসে চা খেতে খেতে পড়তে।
কিন্তু চা বানাতে হলে দরজা খুলে রান্নাঘরে যেতে হবে।
বইয়ের পাতায় চোখ রেখেই দরজা খুলল।তারপর,বইটা সাথে নিয়েই চলল ও।
আজকে ওইরুমটা নীরব। কেউ নেই মনে হয়। রুমটার পাশ দিয়ে সন্তর্পণে হেঁটে যেতে লাগল তাহমিনা।তাকাবেনা তাকাবেনা করেও তাকালো।
ছেলেটা বসে আছে,একা। এবং ওর চোখের দিকে চোখ পড়ে গিয়েছিল। দ্রুত পায়ে এসে রান্নাঘরে ঢুকল।ছেলেটা কি চলে আসবে নাকি?ভাবতে ভাবতে তাহমিনা ইস করে উঠল।চায়ের সরঞ্জামগুলো নিজেদের ঘরেই।
ঘর থেকে চায়ের পাতা,আর টুকটাক জিনিস ইত্যাদি নিয়ে আবার রান্নাঘরে এসে ঢুকল।এবং ঢুকার সাথে সাথেই চমকে উঠে ওর হাত থেকে চাপাতার কৌটোটি পড়ে গেল। ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে কেন এখানে?কী চায়?
চায়ের পাতা কিছু বোতল খুলে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনার আকস্মিকতা কাটাতে কিছু সময় লাগল।
ছেলেটি কী কিছু বলছে তাকে?ওর দিকে কেন এগিয়ে আসছে?তাহমিনার সামনে এসেই ছেলেটি নীচু হয়ে কৌটা টা তুলে মুখবন্ধ করে তাহমিনাকে এগিয়ে দিল।ছেলেটির হাত থেকে কাঁপাকাঁপা হাতে নিল কৌটো।
ওর দিকে চেয়ে হাসল ছেলেটি।
বড়রাস্তার মোড়ে নাসিরকে নামিয়ে দিল জীপগাড়ি।গাড়ি থেকে নেমে স্যার কে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে রাস্তা পার হয়ে ওইপাশে চলে গেল নাসির।বড়স্যারের কোন এক আত্নীয়ের বাসায় যাবেন এইদিকে,আজকে তাই ওকে নামিয়ে দিয়ে গেলেন।লোকাল বাসের ঠেলাঠেলি করা লাগলো না।
গেইটের ভিতর মাথা নামিয়ে ঢুকে গেল।
ওদের রুমে আলো জ্বলছে।তাহমিনার অবয়ব হালকা টের পাওয়া যাচ্ছে।
ঠকঠক করে দুটো টোকা দিল।
‘ওহ’-জানলা দিয়ে মুখ দেখা গেল তাহমিনার।
নাসিরের মনে পড়ে গেল,গতকাল থেকে মন ভার করে আছে তাহমিনা।
ঘরে ঢুকে বসে পড়ল নাসির। তাহমিনা ওর কাছে এসেই বসল। ওর মুখ দেখে মনে হচ্ছেনা গতকালের ব্যাপার মনে রেখেছে ও।যাক,মনে মনে শান্তি পেলো নাসির।কাঁহাতক আর ভালো লাগে প্রতিরাতে বাসায় ফেরে পুরনো অভিযোগ শুনতে।
তাহমিনার থুতনি ধরে নাড়ালো। ওর ঠোঁটে হাত বুলালো। আজকে তাড়াতাড়ি ফিরেছে।বাসে ফেরার ক্লান্তি নেই।তাহমিনাকে প্রতিরাতের মতন মনভার লাগছে না।বরং হাল্কা মেজাজ। অনেকক্ষণের জন্যই ডুবে যাবে দুজন নিজেদের মাঝে।সেইজন্য নাসির উঠে ফ্রেশ হয়ে আসল।
নাসিরের বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে তাহমিনা।তাহমিনার অজস্র চুলে হাত সঞ্চালন করছিল নাসির। দ্রুত উঠানামা করছে ওর বুক।
তাহমিনা ওর বুকে হাত বোলাল-‘যাও,গোসল সেরে আস তুমি।আমি খাবার নিয়ে আসছি।’
‘রান্না করে ফেলেছ আজকে?’
হ্যাঁ।
খুশি হল নাসির-‘আজকে ভয় পাওনি?’
মাথা নাড়ল তাহমিনা।পায়নি।
তাহমিনার মুখটা চেপে ধরে আদর করল আবার-‘এইতো বুঝেছো। এই না হলে আমার লক্ষী বউ।ভয় পাওয়ার কী আছে?’
মিষ্টি করে হাসল তাহমিনা।তারপর,উঠে যাচ্ছিল বিছানা থেকে।
নাসির আবার ওর হাতধরে টানল।তাহমিনা বলল-‘আবার কী?’-বলে খিলখিল করে হাসল।তারপর বলল-‘এতক্ষণ তো ভালমতই দেখলে।আর দেখা লাগবে না!ছাড়ো’
‘দেখছি।কেমন শাড়ী মানাবে আমার বউকে’
‘মানে?’
‘নতুন শাড়ী কিনব। আগামীকাল,কেমন শাড়ীতে মানাবে তাই দেখছি’
‘ও!স্যালারি দিয়ে দিয়েছে না?’
‘হুম।শুক্রবার বের হব।অনেকদিন ঘোরাঘুরি করা হয় না। আমার পাঞ্জাবি টা ধুয়ে দিও তো বউ’-বলে তাহমিনাকে ছেড়ে দিল নাসির।
অনেকদিন পর তাহমিনার হালকা মেজাজ,নাসিরের বেতন পাওয়া সবমিলিয়ে ছোট্ট এইঘরটাতে সুখ উড়ে বেড়াতে লাগল যেন।
####
শুক্রবার সারা বিকেল ঘুরে বেড়াল ওরা দুজনে। ফুচকা খেল।আইসক্রিম খেলো।নতুন প্রেমিক-প্রেমিকার মত হাত ধরে হেঁটে বেড়ালো।
তারপর ,নাসির একটা সুন্দর দেখে শাড়ি কিনে দিল তাহমিনাকে।দাম টা নিয়ে একটু বিব্রত ছিল তাহমিনা।নাসির জোর করেই কিনে দিয়েছে।
কোনকোন দিন অকারণেই হাসি পায়।এই যেমন আজকে,সারাবিকেল ওরা একে অপরের দিকে চেয়ে শুধুই হাসছিল,কথা বলছিল কম।বাসার ভিতর ঢুকে ওদের মনে হল আরো কিছুক্ষণ ঘুরে এলেই পারতো।
দরজার সামনে এসে তাহমিনা ওর ধরা হাত ছাড়িয়ে নিল নাসিরের কাছ থেকে।
দরজা নাড়ালো।বেলটা নষ্ট।
দুয়েকবার নাড়ানোর পরে দরজা টা খুলল।বাড়িওলার ছেলে।
‘ও নাসির ভাই! বেড়াতে গিয়েছিলেন মনে হয়’
‘হ্যাঁ।এই আপনার ভাবীকে নিয়ে একটু’-বলে নাসির ভিতরে ঢুকে গেল।
‘কি ভাবী?খুব বেড়ালেন?কেনাকাটা করলেন কিছু?’
‘হ্যাঁ,একটা শাড়ি দিল ও’
তাহমিনার গলাটা কানে গেল নাসিরের।কথার শেষে ও একটু হাসল যেন।
নাসির ভিতরে চলে গিয়েছিল ওদের নিজেদের দরজার তালা খুলছিল চাবি দিয়ে।চাবি টা তালার ভিতরেই কট করে আটকে থেমে রইল।ওইটা আর ঘুরছিল না। একটু যেন কষ্ট হচ্ছে ,মুখে বিরক্তি শব্দ করে তালাটা খুলার চেষ্টা করতে লাগল নাসির।
শাড়িটা পরে দেখাবো?
-'দেখাও' -খুব আলগাভাবে কথাটা বলল নাসির।তাহমিনার হাসির শব্দটা এখনো কানে বাজছে যেন।
নাসিরের গম্ভীরভাব নজর এড়ালো না তাহমিনার।ওর কাছে এসে বলল-‘কি ব্যাপার ?তোমার শরীর খারাপ করছে নাকি?’
নাসির একটু সময় নিয়ে বলল –‘না’
তারপর,নাসিরকে একটু অপেক্ষা করতে বলে তাহমিনা চেঞ্জ করে নতুন শাড়ি পরে আসতে গেল।(চলবে)
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:০৯
হাতপা বলেছেন: হা হা,নাহ।শেষ হয়ে যাবে।ধন্যবাদ
২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২৪
আমি সৈকত বলছি বলেছেন: ভালোই তো লাগছিলো।
শেষ না করে চালিয়ে যান
আমি ভাই গল্প পড়ুয়া।
বেশ লাগে গল্প পড়তে
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৪
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: একি কান্ড| উপন্যাস লিখবেন নাকি? লিখুন| পড়ে যাব