নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন ঘনিষ্ট বিষয় নিয়ে লেখালেখি করি। চেতন ভগতের মতো বাংলাদেশেও পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি। সেই পরিবর্তন শুরু হবে আমার নিজ জেলা কুমিল্লা থেকে, পরে ছড়িয়ে পড়বে সারা বাংলাদেশে-এই আমার বিশ্বাস।

বিপ্লব৯৮৪২

কিছুই বলার নাই।

বিপ্লব৯৮৪২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাষ্ট্র ও সমাজ পরিবর্তনে তথ্য অধিকার আইন

২৭ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৫৭

আইনের উতপত্তি: তথ্য অধিকার আইন প্রথম চালু হয় সুইডেনে ১৭৬৬ সালে। আমরা তখন বৃটিশদের কাছে পরাধীন।বৃটিশ ভারতে এই আইনের ঠিক উল্টো একটা আইন অফিসিয়াল সিক্রেচি এক্ট চালু হয়। তাই একটি দেশ স্বাধীন হলেও জনগণের অংশীদারিত্ব ও নজরদারি সরকারের উপর কতখানি আছে তার মাপকাঠি হল এই আইন চালু থাকা না থাকা। সরকারে জনগনের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে চালু হওয়া এই আইন বর্তমানে পৃথিবীর ৭২ টি দেশে প্রচলিত আছে। এর মাঝে দক্ষিন আফ্রিকা, নেপাল ও চিনে তথ্যের অধিকার সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তথ্য অধিকার আইনঃ যে ৭২ টি দেশে তথ্য অধিকার আইন চালু আছে সেগুলো হল-
Albania, Armenia, Australia, Azerbaijan, Bangladesh, Belgium, Belize, Bosnia and Herzegovina,
Brazil, Bulgaria, Canada, Cayman, Chile, China, Colombia, Cook Islands, Croatia, Czech, Denmark, Dominican, Ecuador, Estonia, Europe Council_of_Europe, European_Union, Finland, France, Georgia, Germany, Greece, Hong_Kong, Hungary, Iceland, India, Ireland, Israel, Italy, Jamaica, Japan, Latvia, Malta, Liberia, Macedonia, Malaysia, Maldives, Mexico, Montenegro, Netherlands, New Zealand, Nigeria, Norway, Pakistan, Paraguay, Poland, Republic of Moldova, Romania, Rwanda, Serbia, Slovakia, Slovenia, South Africa, South Korea, Sweden, Switzerland, Thailand, Trinidad and Tobago, Turkey, Uganda, Ukraine, United Kingdom ,United States, Uruguay, Zimbabwe. (১)
এই তালিকার দিকে তাকালে দেখা যাবে যে, কয়েকটি দেশ শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসছে বা দুর্নীতির সুচকে তারা ভাল করছে। দুর্নীতির শীর্ষে থাকা দেশগুলোতে এই আইন ব্যাপকভাবে প্রচলিত নয়।

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইনঃ জার্মানী্র শিক্ষাবিদরা মনে করেন যে, একটি ছেলে পরীক্ষায় যদি ভুল উত্তর দেয় তাহলে স্বভাবতই শিক্ষক সেই উত্তরে নম্বর দেন না। কিন্তু ভুল উত্তর দেয়া ছাত্রটির কোনদিনও সঠিক উত্তর আর জানা হয় না। এজন্য সে দেশে শিক্ষকরা ছাত্র চাইলে ছাত্রের সামনেই তার লেখা উত্তরপত্র মেলে ধরেন, ভুলগুলো ধরিয়ে দেন। ফলে একজন ছাত্র সারাজীবনের জন্য সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। বহুদিন আগে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চক্ষু বিশেষজ্ঞ পত্রিকায় কলাম লিখে জানিয়েছিলেন, সেখানকার গ্র্যাজুয়েটরা ফেল করে না, তাদের ফেল করানো হয়। সেখানে ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু হয় অনিয়ম। বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালের প্রতিষ্টাতা ও শিল্পপতিদের জামাইদের ভর্তি পরীক্ষায় পাশ এবং এফসিপিএস ডিগ্রি নেয়ার জন্য শুরু হয় লবিং, সেই সাথে অগ্রহনযোগ্য লেনদেন। ঠিক এই কারনেই গ্রহনযোগ্যতায় শুন্যে নেমে যাওয়া তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা নেয় বুয়েট। ভারতে শিক্ষাক্ষেত্রে নজিরবিহীন স্বচ্ছতার উদাহরনের একটি মামলা আছে- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বনাম প্রীতম রাজ । এ মামলার রায়ে প্রীতম রাজের উত্তরপত্র সঠিকভাবে মুল্যায়ন হয়েছে কিনা তা প্রীতম রাজকে দেখতে দিতে বলা হয়।

বাংলাদেশে তথ্য অধিকার আইনঃ সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনেক খারাপ কাজের মধ্যে কিছু ভালো কাজও করেছে- যা আমাদের বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে। তাদের অন্যতম ভালো একটা কাজ হল- তথ্য কমিশন গঠন করা। পরবর্তী গনতান্ত্রিক সরকার সংসদে আইন পাশ করে এই কমিশনকে স্থায়ী রুপ দেয় ২০০৯ সালে।


প্রতিষ্ঠার প্রথমদিকে জনগনের মাঝে এই কমিশন বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। কিন্তু আজ যে কোন কারনেই হোক অর্ধযুগ পার করা এই প্রতিষ্টান তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যথারীতি অন্য আর দশটা অনিয়মে ভরপুর প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। অবশ্য সেটাতথ্য অধিকার আইন বা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা নয়,এর পেছনের মানুষের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা এর মুল কারন । ,


রাস্ট্র ও সমাজ পরিবর্তনে এই আইনঃ আমাদের রাস্ট্রপ্রধানরা বিদেশি কোম্পানীর সাথে তেলগ্যাস উত্তোলন চুক্তি করে, সেই চুক্তিতে কী লেখা থাকে আমরা জানি না। শুধু কয়েক বছর পর দেখতে পাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বাসায় ওই বিদেশি কোম্পানীর উপহার দেয়া পাজেরো গাড়ি, আর গ্যাসক্ষেত্রে আগুন। জনরোষ থেকে রক্ষা পেতে সেই আগুনের ক্ষতি পুরন আদায়ে লোকদেখানো মামলা, আবার একই মামলায় সংশ্লিষ্ট দায়ী কোম্পানী যাতে রক্ষা পায় তার জন্য দুর্বল প্রমানাদি। কিন্তু চুক্তির প্রথমেই দেশের মালিক জনগনকে জানালে সমস্যা কী? প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে বহু কোটি টাকা জমা হয় এবং খরচও হয়। তার হিসাব কি জনগন জানতে পারে? পৃথিবীর কোন দেশে সেনাবাহিনী ব্যবসা-বানিজ্যে জড়িত নয়, কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ব্যবসা-বানিজ্যসহ বহু কাজে জড়িয়ে গেছে “জনগনের সেবা” করার নামে। বেসামরিক প্রশাসন বিশেষ করে সরকারী মেডিকেল কলেজগুলোর পরিচালক পদসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়মবহির্ভুতভাবে অবস্থান করছে। পুলিশ র্যােব বিভিন্ন সময়ে ক্রসফায়ারে বিনাবিচারে মানুষ হত্যা করছে। পুলিশ বিভিন্ন মহাসড়কে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে যে কারনে শাকসব্জির দাম ঢাকায় দ্বিগুন। কোন কোন আদালতে মানুষ ন্যায় বিচার পায় না। উচ্চ আদালতে কিছু কিছু মামলা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে চলে, কিছু মামলার আদৌ কোনদিন রায় হবে কি না তা কেউ বলতে পারে না। জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী আত্মস্বীকৃত যে দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করেছে তার বেশির ভাগই হল সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা। তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছে শুধু পত্রিকায় খবর আসে ঈদের সময় রাস্তার অবস্থা খারাপ বলে যান চলাচল বন্ধ, মানুষ ঈদে বাড়ি যেতে পারবে না। সড়ক মেরামতের জন্য কত টাকা বরাদ্ধ করা হয়, কত সময়ের মধ্যে কি কোয়ালিটি বজায় রেখে কাজ শেষ করতে হবে তা জনগনের জানা উচিত।

বাংলাদেশের তথ্য কমিশনঃ বেশ কিছু দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তাকে সাজা দেয়ায় এবং দুর্নীতিসংক্রান্ত তথ্য উন্মুক্ত করতে পারায় প্রতিষ্টার প্রথম দিকে এই কমিশন বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে দুর্নীতিবাজ অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের তথ্য কমিশনার নিয়োগ প্রদান করায় এই কমিশনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে, যা এখনো বহাল। এর কারন জনগনের সচেতনতার অভাব। একটি গনতান্ত্রিক দেশের সরকারের ব্যর্থতা মানে আপামর জনগনের ব্যর্থতা। তাই রাস্ট্র ও সমাজ পরিবর্তনে জনগনকেই এগিয়ে আসতে হবে। তবে তথ্য আধিকার আইন এই দেশে পাশ হওয়া যেমন একটা মাইলফলক তেমনি যেদিন অবসরপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ সরকারী আমলদের বাইরে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বা জেলাজজ নিয়োগ পাবে সেদিনও হবে এদেশের জন্য একটা মাইলফলক।

উপসংহার:
ইউরোপে একের পর এক দেশ যখন তথ্য অধিকার আইন পাশ করছে আমাদের দেশে বৃটিশরা তখন অফিসিয়াল সিক্রেচি এক্ট চালু করে। তাদের উদ্দ্যেশ্য ছিল ভারতীয় জনগণের সম্পদ লুট করে বিলাতে পাচার। এখনও সরকারী কর্মকর্তাদের মানসিকতা হল জনগণের সম্পদ লুট করে সুইস ব্যাংকে পাচার। বৃটেনে দুর্নীতিবিরোধী আইনের নীতি কথা হল- কেউ যদি ১০ পাউন্ড মুল্যমানের সরকারী সম্পদ আত্মসাত করে সরকার ২০ পাউন্ড খরচ করে হলেও উদ্ধার করবে। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রশাসনের জন্য নীতি ছিল, সরকারী সম্পদ ভাগেবাটোয়ারা করে খাও। ভাগে না মিললে বড়জোর ট্রান্সফার। সেই নীতিই আমরা পেয়ে এসেছি এবং এখনো ধারন করছি। যে কারনে দুদকের জালে এখন কেউ আটকায় না। কিন্তু এ ব্যবস্থা আর কতদিন?
আরো বিস্তারিত জানবেন-
১। [http://en.wikipedia.org/wiki/Freedom_of_information_laws_by_country]
২।তথ্য অধিকার ও তথ্য কমিশন ঃ বাস্তবতা, সমস্যা ও সম্ভাবনা লেখকঃ ব্যরিস্টার আব্দুল হালিম।

৩। তথ্য অধিকার আইনে অভিযোগ দায়ের ও পুর্নাংগ আইন বিষয়ে বিস্তারিত
[www.infocom.gov.bd]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:১৭

শাহ আলম বাদশাহ বলেছেন: ভাল্লাগলো

১৯ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩০

বিপ্লব৯৮৪২ বলেছেন: ধন্যবাদ। এখন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি জীবন ঘনিষ্ট বিষয় নিয়ে লেখালেখি করব।

২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১১

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া প্রায় এক বছর ধরে তোমার কোনো খবর নাই!

আজ হঠাৎ একটা কারণে তোমার কথা মনে পড়লো....

টিনএজ ছেলেদের আলোচনার একটি বড় অংশ থাকে তার সদ্য প্রেম নিবেদনকারি কোন প্রেমিকাকে নিয়ে। দার্জিলিং এর এক হোস্টেলে মাধ্যমিক শ্রেনির ছাত্রদের এক আলোচনায় সবাই যথারীতি এ নিয়ে আলাপ করছিল কিন্তু আলোচনায় যোগ দিতে পারছিল না একগোবেচারা, কারন তার এখনো কোন প্রেমিকা জোটেনি। অন্যের চাপাচাপিতে সেও নিতান্ত অনিচ্ছায় মানসম্মানের ভয়ে স্বীকার করলো তারও একখান প্রেমিকা আছে নাম অন্নপুর্না।

সবাই তো খুশি, যাক সবার একটা করে আছে। এখন মোবাইলের যুগ। সবাই মোবাইল খুলে যার যার প্রেমিকার ছবি অন্যের সাথে শেয়ার করতে লাগল আর বাহাদুরি করতে লাগল কার প্রেমিকা কার চেয়ে কত সুন্দর।

হঠাত সবার খেয়াল হল সেই গোবেচারা যথারীতি চুপ, সে তার প্রেমিকার কোন ছবি দেখাচ্ছে না। সবার নজর এখন তার দিকে। সবার আক্রোসের চোখ দেখে সে ভাবল, এ থেকে নিস্তার নেই, ছবি তাদের দেখাতেই হবে।

যেহেতু তার কাছে তখন কোন ছবি ছিল না সে কথা দিল পরবর্তি হলিডেতে একেবারে চাক্ষুস দেখাবে। সে কয়দিনের অপেক্ষা কারো সইছিল না, সবাই ধরে নিয়েছিল সেই গোবেচারার প্রেমিকাটিই সবচেয়ে সুন্দরী হবে আর এই চিন্তায় সবার মাঝে একটু হতাশা ও কাজ করছিল।



যাহোক নির্ধারিত দিনে স্কুলবাস বোঝাই করে সেই ছেলেটি সবাইকে নিয়ে রওনা দিলো তার প্রেমিকাকে দেখানোর জন্য।সবার মাঝে সেই সুন্দরীকে দেখার, তার সাথে চান্স পেলে একটু কথা বলার উত্তেজনা।

শহরের একটু খোলামেলা উঁচু টিলাতে নিয়ে সবাইকে আংগুল দিয়ে একটি পর্বতের চুড়া দেখিয়ে বলল, ঐ যে আমার প্রেমিকা অন্নপুর্না। তার এই ঘোষনায় সবার মনের অবস্থা কি হয়েছিল আপনারা কল্পনা করে নেন।


এই গল্পটাও মনে পড়লো!!!!!!!

নিশ্চয় অনেক ভালো আছো ভাইয়া!

অনেক ভালো থেকো। :)

৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৩৬

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া

আজকেও তোমাকে আমার মনে পড়ে গেলো!

দেখেছো রোবোটরা আসলেও কিছুই ভোলে না!


আজকের দিনে তুমি কোথায়!

সুরঞ্জনা আপুকে দিয়ে খবর নিতে হবে !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.