নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকরো কথা

হিসলা সিবা

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।

হিসলা সিবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুণ দার জন্মদিনে, দাদাকে নিয়ে ...............

২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৫২

আর খানিকক্ষণ পরেই আমার প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণের ৬৯তম জন্মদিন, এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কোন মানুষ তার মত করে ভালোবাসার কথা বলতে পারেননি।

Nirmalendu Goon দাদা জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা।



আমার এ পর্বের লেখাটা দাদাকে উৎসর্গ করলাম



"রাস্তা, টিউশনি, ওয়েভ ফাংশন আর বরুনা কিংবা নীলাঞ্জনার হাত (কাব্যপর্ব)"



তার সাথে পরিচয় হওয়ার অনেক আগে থেকেই তাকে আমি চিনি। সামনে দিয়ে হেঁটে গেলে হার্টবিট ১৪৫। কথা বলতে হয়নি শুধু হেঁটে গেছে তাতেই এই অবস্থা । অনেকটুকু সময় একসাথে চলে গেলেও একবার সাহস করে কথা বলা হয়নি।

নিরমুলেন্দু গুনের একটা কবিতা আছে



"আজ সাহস করে আঙুল ছোঁব . . . ।



আঙুল ছোঁয়ার সাহস আমার কোন কালেও হবে না। ভালোবাসা বোকাদের সাহসী করে। সর্বোচ্চ সাহস নিয়ে তার সাথে প্রথম কথা বলতে যাই। সেই শুরু



এরপর সাহসী হয়ে উঠি আমি। বিশ্ববিদ্যালয়য়ে পুলিশের লাঠি, রাত দুটোয় অচেনা শহরের মহাসড়ক ধরে হাঁটা কিংবা দুরাত বাসায় না ফেরার মত (যে বাসায় কিনা সন্ধ্যা সাতটার পর সান্ধ্য আইন জারী থাকে, দেরী হলে পায়ের নিচে গুলি করা যাবে!) মধ্যবিত্তের দুর্ধর্ষ সাহসিক কাজ গুলো বোকা ছেলেটা একে একে করে ফেলল।

নিজের কাছেই নিজে বড় হয়ে উঠতে থাকি ধীরে ধীরে।



সেই ভালোবাসা কিভাবে বোকা এবং ভীতু ছেলেটাকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে গেল সেই গল্প অন্য কোনদিন শোনাবো।



পড়ালেখার বাইরের পড়ালেখায় আগ্রহ ছিল বহু আগে থেকেই, ভাল ছাত্র ছিলাম না কোন কালেও । জাফর ইকবাল, হুমায়ূন আহমেদ চলত গগ্রাসে আর সুনীল, সমরেশ, শরৎ কিংবা রবীন্দ্র চলত টুকটাক । মনে আছে প্রথম টিউশনির পুরো টাকাটা দিয়েই শুধু বই ই কিনেছিলাম, কোন ঈদ হয়ত এমন গেছে নতুন পাঞ্জাবী কেনা হয়নি কিন্তু কোন বইমেলায় এমন হয়নি যে বই কেনা হয়নি । তবে কবিতা পড়া হয়নি কখনও, পাশ করার জন্য হয়ত পড়তে বাধ্য হয়েছি কিন্তু পড়ার জন্য কবিতা; তাও আবার ছন্দ ছাড়া !! অসম্ভব !!!



কবিতা পড়া শুরু হল। আমার দ্বিতীয় প্রেম, প্রেমিকার নাম কবিতা। গুণ, নজরুল, সুনীল, হুমায়ূন আজাদ, পুনেন্দু পত্রী, হেলাল হাফিজ এমনকি হালের আনিসুল হক পর্যন্ত। এক একটা কবিতা পড়ি আমার বায়ো-কোপট্রিন দিয়ে শীতল রক্তের স্রোত বয়ে যায়।



“তুমি এই যে বসে আছো, আঙুলে ছোঁয়ানো থুতনি

কপালে পড়েছে চূর্ণ চুল

পাড়ের নক্সায় ঢাকা পা

ওষ্ঠাগ্রে আসন্ন হাসি-

এই দৃশ্যে অমরত্ব

তুমি তো জানো না, নীরা,

আমার মৃত্যুর পরও এই ছবি থেকে যাবে ।‘’



কি আশ্চর্য !!! সারা জীবনে কত বই পড়লাম ! ভাবে মাটিতে পা পড়ে না। আর এই কবিতার চারটা লাইনের অমরত্ব, আকুতি কি ভয়ংকর!!!

সুনীলের মৃত্যুর পরেও নীরার আঙুলে ছোঁয়ানো থুতনি কিংবা ওষ্ঠাগ্রের হাসি নীরাকে অমরত্ব দান করল । সুনীল চলে গেছেন সুনীলের নীরা অমর . . . ।



নির্মলেন্দু গুণ, লোকটাকে আগে মনে হত বেটার ভাব দেখ । শুধু রবিন্দ্রনাথের মত দাড়ি রাখলেই কবি হওয়া যায় না । তারপর যখন তাকে জানলাম তখন বুঝলাম অসীম শূন্যতার অনুভূতিকে সসীম বর্ণমালা দিয়ে তার মত করে আর কেউ প্রকাশ করতে পারে নি ।



“আমি বলছি না ভালবাসতেই হবে,আমি চাই

কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের দরোজা

খুলে দিক।কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক।

কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক,কেউ অন্তত আমাকে

জিজ্ঞেস করুক : 'তোমার চোখ এতো লাল কেন?”



আমার ভালোবাসা যখন আমাকে মাঝপথে ছেড়ে চলে গেল তখন আমার দুঃষহ নিঃসঙ্গতার একমাত্র সঙ্গী ছিলেন সৌম্য দর্শন এই মানুষটা ।



“তুমি যেখানেই হাত রাখো

আমার উদগ্রীব চিত্র থাকে সেখানেই৷

আমি যেখানেই হাত পাতি সেখানেই অসীম শূন্যতা,

তুমি নেই”



আমার কবিতা শোনানোর মানুষ আজ হয়তো আমার কবিতা আর শোনেনা , হয়ত ভিন্ন গ্রহে সুখেই আছে। মেয়েটাকে দারুণ অনুভব করি আজও ,

শোনো মেয়ে এবার তোমায় বলি



"কি ভেবেছিলে তুমি;

তুমি চলে গেলে বুঝি ভুলে যাব সব ?

অন্তরে তোমার যে মন্দির গড়েছি তাতে পূজোর অর্ঘ্য

কিংবা ফুলের অভাব হবেনা কোন দিনও ।

তোমাকে ছাড়াই ঠিক বেঁচে থাকব আরও অনেক গুলো শরৎ ,

শুধু দুঃখ একটাই তুমি বুঝলে না . . ."

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৮:৫৭

রানা০৯ বলেছেন:

২| ২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৪৫

মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: অদ্ভুত এক শব্দ খেলোয়ার! হৃদয়ের অলিগলিতে যা জমা হয়ে আছে তার সব সবই তো তিনি সানন্দে প্রকাশ করে দিয়েছেন কত কত আগে।

তার প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।

ফ্রান্সের এক জাদুঘরে গেছেন নির্মলেন্দু গুণ। সেখানে রবীন্দ্রনাথের একটা পোট্রেট ঝোলানো আছে। গুণ ঢুকে এগোতেই রিসিপ্সনের মেয়ে তাকে দেখে তো অবাক! স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এসেছেন! কিন্তু তিনি মারা গেছেন অনেক আগে! পরে গুণ নিজের পরিচয় দেন। জানান তিনিও একজন কবি, সেই ভাষারই কবি। পরে মেয়েটি তার সাথে ছবি তোলে। কত স্মৃতি তার! কত ব্যাক্তির সাথে উঠা বসা। কত দেশ ঘোরা, কত বর্ণিল জীবন!

৩| ২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১৬

সায়েম মুন বলেছেন: চমৎকার একটা পোস্ট। প্রিয় কবিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.