নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকরো কথা

হিসলা সিবা

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।

হিসলা সিবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকে জন্ম নেয়া পাকি শিশুকে কেন ঘৃণা করবো ? একাত্তরের সাথে তার সম্পর্ক কি ?

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২০

পাকিস্তানকে আপনি ঘৃণা করেন ভালো কথা, কিন্তু আজকে সকালেই পাকিস্তানের যে শিশুটি আলোর মুখ দেখলো ১৯৭১ সালের গনহত্যার সাথে তার সম্পর্ক কি ? কিংবা যেই শিশুটি এখনও জন্ম নেয়নি, হয়ত কাল জন্ম নেবে পাকিস্তানের মাটিতে তার অপরাধ কি। পাকিস্তানে জন্ম নেয়া নিশ্চয়ই অপরাধ না। তাহলে ৭১ এর পরবর্তী প্রজন্মকে কেন আমাদের ঘৃণা করতেই হবে?



খুব স্বাভাবিক একটা প্রশ্ন, এই প্রশ্ন আপনার মনে আসতেই পারে। এবার আমি একটা প্রশ্ন করি।



ইহুদীদের হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে অনেকেই ঘৃণা করেন। কিন্তু আজকে সকালে যে ইহুদী শিশুটি জন্ম নিলো তার অপরাধ কি ? কিংবা যেই শিশুটি এখনও জন্ম নেয়নি, হয়ত কাল জন্ম নেবে কোন ইহুদী ঘরে তার অপরাধ কি। নিশ্চয়ই ভাগ্যক্রমে কোন ইহুদী পরিবারে জন্ম নেয় অপরাধ না। তাহলে কেন সকল ইহুদীদের ঘৃণা করতেই হবে?



ইহুদীদের ঘৃণা করতে হবে এটা একটা অবান্তর কথা। অনেক ইহুদী মানবাধিকার কর্মী আছেন, অনেক ইহুদী ডাক্তার বিজ্ঞানী আছেন যারা পৃথিবীকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করে চলছেন।



ঠিক একই ভাবে প্রত্যেকটা পাকিস্তানীকে ঘৃণা করতে হবে এটাও অবান্তর। অনেক পাকিস্তানী নাগরিক বাংলাদেশে সংগঠিত অপরাধের জন্য ক্ষমা চায়। কিন্তু সেই দেশের বড় অংশের মানুষ ভুল ইতিহাস জানে। ভুল জানা মানুষদের ঠিকটা জানিয়ে দিলেও যদি তারা অস্বীকার করে তাহলে তারা অবশ্যই তাদের পূর্বপুরুষদের মত ঘৃণার পাত্র। অন্যায়কারী আর অন্যায় সহ্যকারী দুজনই অপরাধী। এ দায় যেমন তাদের ইতিহাস প্রণেতাদের ঠিক তেমনি সেই মানুষদেরও বটে। একটু ব্যাখ্যা করি,



ধরেন আমি সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে আপনাকে একগাদা ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে তাঁকে খুন করতে পাঠালাম, আপনি খুন করেও আসলেন এবং একসময় ধরাও পড়লেন। আদালতে গিয়ে বললেন খুনটা আপনি করেছেন আমার প্ররোচনায়। এখন কোর্ট কি আমাকে ধরে ফাঁসি দিয়ে দেবে আর আপনাকে বেকসুর খালাস? কোর্ট হয়ত আমাকে ফাঁসি ঠিকই দেবে কিন্তু আপনাকেও ছেড়ে দেবে না। ভুল জেনে আপনি যাচাই বাছাই না করে একটা খুন করে ফেলবেন আর তারপর দোষ চাপিয়ে কেটে পড়বেন সেটা হবে না।



একই ভাবে ভুল ইতিহাস জেনে পাকিস্তানে যে নির্বোধ প্রজন্ম জন্ম নিচ্ছে যারা প্রতিনিয়ত মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করছে তাদের সবচেয়ে বড় দায় সেইসব ইতিহাসবীদদের এবং সাথে সাথে সেই সব ভুল জানা মানুষদেরও।

কথা না বাড়িয়ে আসুন দেখি পাকিস্তানের পাঠ্য পুস্তকে ৭১ নিয়ে কি লেখা আছে...



পঞ্চম শ্রেণীঃ



-১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর ভারত পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দুদের সহযোগীতায় সেখানকার অধিবাসিদেরকে পশ্চিম পাকিস্তানের জনগনের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলে। পরে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব পাকিস্তান আক্রমন করে।ভারতের ষড়যন্ত্রে পূর্ব পাকিস্তান পৃথক হয়ে যায়।



নবম-দশম - শ্রেণীঃ



- পুর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বহু সংখ্যা হিন্দু শিক্ষক কর্মরত ছিল। হিন্দু শিক্ষকেরা বাঙ্গালীদের মনে পশ্চিম পাকিস্তানের জনগনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।



- পুর্ব পাকিস্তানে প্রায় এক কোটি হিন্দু বাস করত।ভারত তাদের স্বার্থ বাস্তবায়নে এই হিন্দুদেরকে ব্যবহার করে। ভারত পূর্ব পাকিস্তান পৃথক করতে চেয়েছিল।অনেক হিন্দুই ভারতের চর হিসেবে কাজ করে। পাকিস্তান আমেরিকাকে সামরিক ঘাটি স্থাপনের অনুমতি দেওয়ায় রাশিয়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছিল। ফলে রাশিয়া ভারতের সামরিক আগ্রাসনে সমর্থন দেয়। অন্যদিকে আমেরিকাও পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা চেয়েছিল।



- আন্ত:জাতিক ষড়যন্ত্রে পূর্ব পাকিস্তানের পতন হয়।



উচ্চ মাধ্যমিকঃ



- মার্শাল ল কর্তৃপক্ষ পুর্ব পাকিস্তানে সামরিক অভিযানের সিদ্বান্ত গ্রহন করে। অভিযানে জামায়েত- ই –ইসলামী সশস্ত্র সেচ্ছা সেবক দিয়ে অংশগ্রহন করে। সামরিক অভিযানের মূখে আওয়ামিলীগের অনেক কর্মী ভারতে পালিয়া যায় এবং শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহন করে।ভারত তাদেরকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষন প্রদান করে এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণ করে। মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যায়। ডিসেম্বর ৩, ১৯৭১ ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়। স্থানীয় জনগনের সমর্থনের অভাব, সামরিক বাহিনী ও সরঞ্জামাদি সরবরাহের দুর্বল ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারনে পাকিস্তানের সৈন্যরা ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্নসমর্পনে বাধ্য হয়।



-১৯৭১ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সাহসীকতার এক নতুন রেকর্ড স্থাপন করে।



শেষ কথা

"পাকিস্তানকে ঘৃণা করি, যখন গোলাপ নিয়ে আসে তখনও..."

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৫৬

বিদ্রোহী তূর্য্য বলেছেন: "পাকিস্তানকে ঘৃণা করি, যখন গোলাপ নিয়ে আসে তখনও..."

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:১৩

পোভ০০৭০০৭ বলেছেন: valo

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:১৩

দ্যা ফ্রীল্যান্সার বলেছেন: "পাকিস্তানকে ঘৃণা করি, যখন গোলাপ নিয়ে আসে তখনও..."

৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:১৬

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: জাতীয় উন্নয়নে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিকল্প নেই ।

৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:২৩

হাতীর ডিম বলেছেন: "পাকিস্তানকে ঘৃণা করি, যখন গোলাপ নিয়ে আসে তখনও..." :)
+ + +

৬| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৬:৩১

কুকরা বলেছেন: "পাকিস্তানকে ঘৃণা করি, যখন জাতির পিতা শেখ মুজিব ১নম্বর যুদ্ধপরাধি ভুট্টোর সাথে গলাগলি করেন তখনও..."


"পাকিস্তানকে ঘৃণা করি, যখন জাতির পিতা শেখ মুজিব কসাই টিক্কা খানের সাথে হাত মিলিয়ে আসেন তখনও..."

৭| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:১৫

দ্যা ফ্রীল্যান্সার বলেছেন: পাকিস্তান গু-য়ের চেয়েও নিকৃষ্ট।

৮| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

জেনারেশন সুপারস্টার বলেছেন: না পাকিস্তানকে ঘৃণা করিনা।ঘৃণা করি তাদের যারা এদেশে জন্ম নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল এবং এখনও নেয়।তবে ঘৃণা বা হিংসা দিয়ে শত্রুর সাথে ফাইট করার চেয়ে তার দূর্বলতা কোথায় সেদিকে নজর দিতে হবে।পাকিস্তানীদের অপছন্দ করি তাদের হিংসা-বিদ্বেষ,ছলনা,অসততা,লুইচ্চামীর জন্যে।যতদিন পাকিস্তান নামক দেশটা ক্ষতিপূরণ না দেবে ও আন্তর্জাতিকভাবে স্পষ্টভাষায় বাঙ্গালীর কাছে ক্ষমা না চাইবে ততদিন আমিও তাদের ক্ষমা করবোনা।তবে এদেশে পাকিস্তানের ভক্ত অনেক বেশী।ভক্ত হওয়া দোষের কিছুনা কিন্তু ভক্ত হয়ে যারা এদেশের নিরীহ মানুষের ক্ষতি করতে পাকিস্তানকে সহায়তা করেছিল এবং এখনও করে তাদের ক্ষমা নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.