নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা আমার, আমি বাংলার

মস্টার মাইন্ড

আশাবাদী মানুষ আমি, মৃত্যুর সাথে সাক্ষাত না হউয়া পর্যন্ত আশা ছাড়ব না। একটা সুন্দর, সাজানো গোছানো নিরাপদ দেশ.....

মস্টার মাইন্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাসদার হোসেন মামলা ও বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৫


প্রথম ধাপ
সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে মাজদার হোসেন মামলার রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা । জনাব মাজদার হোসেনসহ বেশ কতিপয় বিচার বিভাগীয় অফিসার ১৯৯৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং ২৪২৪ /৯৫ দায়ের করেছিলেন বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের জন্য । তাঁদের যুক্তি ছিলো -

(১) জুডিসিয়াল সার্ভিসকে ১৯৮০ সালের বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস আদেশ এর অধীনে অন্তর্ভুক্তিকরন সংবিধান বহির্ভূত ।
(২) সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগের দ্বিতীয় অধ্যায়ে অধস্তন বিচার আদালত সম্পর্কিত বিধান আছে সেখানে সংবিধানের দ্বারাই অধস্তন আদালতগুলো পৃথক হয়েছে ।শুধুমাত্র সংবিধানের ১১৫ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিধি প্রণয়ন করে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ কার্যকর করা সাংবিধানিকভাবে আবশ্যক ।
(৩) অধস্তন আদালতের বিচারকগণ বিচারক থাকাবস্থায় তাঁরা কোন ট্রাইবুনালের অধীন হতে পারেনা এবং এই ধরনের বিচার বিভাগীয় অফিসারগন প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের এখতিয়ারভুক্ত নহেন ।

দ্বিতীয় ধাপ
বিষয়টির উপর ১৯৯৬ সালের ১৩ ই জুন থেকে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় । দীর্ঘ শুনানির পর হাইকোর্ট বিভাগ ১৯৯৭ সালের ৭ মে রায় দেন । এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপীল করে ( দেওয়ানী আপীল নং ৭৯/ ১৯৯৯ ) এবং আপীল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত রায় নিরীক্ষণ করে ২ ডিসেম্বর ,১৯৯৯ তারিখে রায় প্রদান করে ( ৫২ ডি এল আর ,৮২ ) । রায়ে অন্যান্যের মধ্যে সরকারকে নিচের পাঁচটি নির্দেশনা (direction ) প্রদান করা হয় ;
(১) সরকার অবিলম্ভে সংবিধানের ১১৫ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে বিধিমালা প্রনয়নের জন্য ব্যাবস্থা গ্রহন করে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য হিসাবে পরিচিত এবং সুপ্রিমকোর্ট এবং নিম্ন আদালতের বিচারকদের সমন্বয়ে জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।
(২) সংবিধানের ১৩৩ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের পোস্টিং, পদোন্নতি ছুটি ,শৃঙ্খলা ,ছুটি ভাতা এবং সার্ভিসের অন্যান্য যেসব শর্ত থাকে সে সংক্রান্তে আইন বা বিধিমালা সংবিধানের ১১৫ ও ১১৬ অনুচ্ছেদ প্রণয়ন করতে হবে ।
(৩) সংবিধানের ১১৫ নং অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে জুডিদিয়াল পে কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।
(৪) ১১৬ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচারবিভাগীয় স্বাধীনতার শর্তাবলী যেমন ,চাকুরীর মেয়াদের নিরাপত্তা ,বেতন,রবং অন্যান্য সুবিধাদি এবং পেনশনের নিরাপত্তা পার্লামেন্ট ও নির্বাহী বিভাগ হতে সাংবিধানিক স্বাধীনতা নিরসচিত করে সংবিধানের ১৩ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে আইন বা বিধিমালা প্রনয়ন করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে ।
(৫) সুপ্রিমকোর্টের ফান্ডে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা থেকে খরচ করতে হলে সুপ্রিমকোর্টকে নির্বাহী সরকার হতে সে বিষয়ে কোন অনুমোদন নেয়ার আবশ্যক নেই ।

তৃতীয় ধাপ - মামলার রায় বাস্তবায়ন
১) ১৯৯৯ সালে ,মামলার রায় হওয়ার পর ২০০০ সাল পর্যন্ত উহা বাস্তবায়িত হয়নি ।২০০১ সালে সরকার তিনটি আইন ও বিধিমালার খসড়া তৈরি করলেও উহা বাস্তবায়িত হয়নি । বাংলাদেশে সর্বোচ্চ আদালতের রায় হিসাবে মাজদার হোসেন মামলার রায় বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য আইনগত বাধ্যতামুলক ছিল ।কিন্তু উহা বাস্তবায়ন করা হয়নি ।সুপ্রিমকোর্টের বার বার চাপের মুখে সরকার চারটি বিধিমালা তৈরি করে ।
(১) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা ,২০০৪ ।
(২) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস ( পে- কমিশন ) বিধিমালা ,২০০৬ ।
(৩) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (গঠন ,প্রবেশ পদে নিয়োগ এবং সাময়িক বরখাস্তকরন ,বরখাস্তকরণ ও অপসারণ ) বিধিমালা ,২০০৬ ।
(৪) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস ( কর্মস্থল নির্ধারণ ,পদোন্নতি ,ছুটি মঞ্জুরী ,নিয়ন্ত্রণ ,শৃঙ্খলা বিধান এবং চাকুরীর অন্যান্য শর্তাবলী ) বিধিমালা ,২০০৬ ।
২) উপরোক্ত বিধিমালা সমুহ আপীল বিভাগের মতে ত্রুটিপূর্ণ ছিল ।ফলে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার উপরোক্ত ৪টি বিধিমালা বাতিল করে ২০০৭ সালে নতুন করে জারী করে ।
যেগুলো হলো ;
(১) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা ,২০০৭;
(২) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস পে- কমিশন বিধিমালা ,২০০৭;
(৩) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (গঠন ,প্রবেশ পদে নিয়োগ এবং সাময়িক বরখাস্তকরন ,বরখাস্তকরণ ও অপসারণ ) বিধিমালা ,২০০৭;
(৪) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস ( কর্মস্থল নির্ধারণ ,পদোন্নতি ,ছুটি মঞ্জুরী ,নিয়ন্ত্রণ ,শৃঙ্খলা বিধান এবং চাকুরীর অন্যান্য শর্তাবলী ) বিধিমালা ,২০০৭।

বাস্তবায়নের শেষ ধাপ
উপরোক্ত বিধিমালা সমুহ জারীর পরপরই ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের কাঠামোগত পরিবরতনের লক্ষে The Code of Criminal Procedure ( Amendment) Ordinance ,2007 জারী করা হয় ।এর ফলে ফৌজদারি কার্যবিধির মৌলিক পরিবর্তন সাধিত হয় । ফৌজদারি আদালত ব্যাবস্তাকে নতুন করে পুনর্গঠন পূর্বক বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করার পর্যায়ক্রমিক ব্যাবস্তা করা হয় । উপরোক্ত বিধিমালা সমূহ গেজেটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে । ২০০৯ নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে ২০০৭ সালের অধ্যাদেশের আলোকে ফৌজদারি কার্যবিধি ( সংশোধনী ) আইন ,২০০৯ পাশ করে । এর মাধ্যমে মাজদার হোসেন মামলার রায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে ধরা হয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: আবেগ আমার নেই এমনও না তবে,যত্রতত্র ঢেলে দেওয়া মানুষগুলো থেকে দূরে থাকি।কারণ তারা আবেগের মত মূল্যবান অনুভুতিকে শ্রদ্ধা করতে জানেনা।

২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৩১

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: সরাসরি প্রিয়তে।

স্বাধীন বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো এই মাসদার হোসেন মামলা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.