নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

" মানব ও মানবতা " Human

NOTHING IS IMPOSIBLE

যাযাবোর

আমি হিমাদ্রী। যাযাবর পথিক হিমাদ্রী। মানুষকে ভালবাসি আর মানবতার জন্য কাজ করি।

যাযাবোর › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ ভাবে আর কত দিন??

০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:১৮

[img|http://cms.somewhereinblog.net/ciu/image/197385/small/?token_id=b51603d02a95a8977da2c28791bc209e



এ ভাবে আর কত দিন??

মানুষ মানুষের জন্য!

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান যখন পৃথক হয় তখনই শুরু হয়ে যায় নতুন এক অজানা যুদ্ধের যাত্রা, যার পরবর্তী রুপ আমাদের সবার জানা।

ভারত কে মাঝখানে রেখে পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্র সৃষ্টি করা হয় এবং এর পরবর্তী ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বৃটিশদের খুব ভাল ভাবেই জানা ছিল। তাই তারা উপরে কাশ্মীর, মাঝখানে ভারত আর দুই পাশে পাকিস্তান সৃষ্টি করে, ২০০ বছর শাসন করেও যুদ্ধের বীজ বপন করে যায়। যার ফল আমরা আজও দেখছি।একটি নির্দিষ্ট ধর্মের নামে কোন রাষ্ট্র হতে পারে না কিন্তু ১৯৪৭ তা-ই হয়েছিল। হিন্দুদের জন্য হবে হিন্দুস্তান আর মুসলিমদের জন্য হবে পাকিস্তান কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই দেশ বিভাগ?? তা কী আদো হয়ে ছিল?? মুলত রাজনৈতিক উদ্দেশ হাসিল করার জন্যই এটা করা হয়েছিল কিন্তু সরলপ্রাণ জনগণ তা বুঝতে পারেনি। আর না বুঝার কারনে যুগে যুগে তাদের হতে হল নোংরা রাজনীতির খেলার পুতুল আর দিতে হল নিরীহ প্রাণ, রক্ত আর মা- বোনদের ইজ্জত। আজও কাশ্মীর নানান সমস্যায় জর্জরিত, পৃথিবীর ভূস্বর্গ থেকে আজ জাহান্নামের মত অবস্থা সেখানে। কবে পাবে শান্তির ঠিকানা আজও তারা জানে না।১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান এ ভারত থেকে অনেক মুসলিম ভারত ত্যাগ করে এই ভেবে যে, হয়ত তারা পূর্ব পাকিস্তানে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। যার ফলে ভারতের বিহার, উত্তর প্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ হায়দ্রাবাদ ,মুর্শিদাবাদ ও পশ্চিম বাংলা থেকে পূর্ব পাকিস্তান নিকট হওয়ার কারনে অনেক মুসলিম নিজেদের বাপ-দাদার ভিটে মাটি ত্যাগ করে পূর্ব পাকিসস্তান (বাংলাদেশ) চলে আসে। বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে আসা এই সব লোক কঠিন পরিশ্রম করে বেঁচে থাকার ঠিকানা গড়ে তোলে ,দেশকে উন্নত করার জন্য বিশেষ করে রেল ,টি এন্ড টি ও পোর্ট এইসব সেক্টর গড়ে তোলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে কিন্তু নিয়তির কি নির্মম পরিহাস ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্য তারা আবার ও সব কিছু হারালো ঠিকানা পেল বাংলাদেশের একশতের ও বেশী ক্যাম্পে । ভাষা উর্দু হওয়ার কারনে ভারত থেকে আসা সেই সব মানুষ হয়ে গেল দেশদ্রোহী পাকিস্তানী (বিহারি)। যেখানে দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে পশুদের মত জীবন নির্বাহও করছে।দীর্ঘ ২৩ বছর শান্তি বাহিনী সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে হাজার হাজার জোয়ান ,নিরীহ নিরঅস্ত্র বাঙ্গালীদেরকে হত্যা করে এবং সরকার ১৯৯৭ সালে শান্তি বাহিনীর সকল দাবী মেনে নিয়ে তাদের সাথে শান্তি চুক্তি করে, তাদের পুনর্বাসন করল, অর্থ দিয়েও সাহায্য করল।তাদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা প্রদান করে এই দেশে বসবাস করার সুবিধা প্রদান করল।

তাহলে এই ক্যাম্প এ বসবাসরত মানুষদের পুনর্বাসন করার কি সরকার এর দায়িত্তে মধ্যে পরে না ?? এক জন মানুষের নুনতম অধিকার থেকে তারা আজ বঞ্ছিত। গত ৪২ বছরে ৩টি প্রজন্ম ধ্বংস হয়েছে কেবল শিক্ষার অভাবে। একটা কথা আছে পাপীকে নয়, পাপ কে ঘৃণা কর। কিন্তু কোন পাপ না করেও আজও ক্যাম্প প্রজন্ম তার মূল্য দিচ্ছে দীর্ঘ তিন যুগের ও অধিক সময় ধরে। আর কত কাল ?? হয় তো’বা প্রশ্ন উঠতে পারে এত গুলো অর্থ কোথ থেকে আসবে?? রাবেতা ট্রাষ্টে শত শত কোটি টাকা অলস ভাবে পড়ে আছে। ৯/১১ এর পরে আমেরিকা সরকার উক্ত ট্রাস্ট এর একাউন্টকে জব্দ করে দেয়। বাংলাদেশ সরকার কুটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালে হয়ত’বা সেই অর্থ গুলো উদ্ধার করা সম্ভব। সবার উপরে মানবতা। ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, বর্ণ, যার যার কিন্তু মানবতা সবার জন্য সমান।

এই ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন কলামিস্ট এই হত্যা কান্ড প্রসঙ্গে বিভিন্ন পত্রিকায় নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন। গত ১৯ শে জুন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেন “চাইলে এই মৃত্যু এড়ানো যেতো বলে আমার বিশ্বাস। তবে এ তো জানিই, বিহারিদের পছন্দ করার লোক বাংলাদেশে খুব একটা নেই। নোংরা জেনেভা ক্যাম্পের বাড়িতে গরু, ছাগলের মতো বাস করছে, রিক্সাচালক, বাস ট্রাকের ড্রাইভার, নাপিত, কসাই, দরজি এ রকম ছোটখাটো কাজ করছে, তাদের পক্ষে কারা আর দাঁড়াবে?? আজকাল দরিদ্রর পাশে দরিদ্ররাও দাঁড়ায় না। বাঙালিরা বিহারি পুড়িয়ে মেরেছে এরকম একটা দুঃসংবাদ হাওয়ায় ভাসছে। হিংসে আর ঘৃণা বাঙালির কম নেই জানি, বাঙালি ঠান্ডায় মাথায় যে কারও গলাই কাটতে পারে। খুন ধর্ষণ তো প্রতিদিনের ঘটনা। কিন্তু বাঙালি তো ভালোও বাসতে জানে, ক্ষমাও করতে পারে। একবার ক্ষমা করে, একবার উদার হয়ে দেখাক। জগত দেখুক”।

১৯ শে জুন দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট র্পাটির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, বিহারিদের উচ্ছেদ করে বিহারি ক্যাম্পের জমি দখলের জন্য এ নির্মম হত্যাকান্ড সংগঠিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম জাতিগত শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে। অন্য জাতির ওপর নিপীড়ন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী৷

গত ১৪ জুন এর ঢাকার কুর্মিটোলার কালসি ক্যাম্প এর ১০ জনের নির্মম হত্যা ও বাড়ি ঘরে আগুন, লুটপাট তা খুবই নেক্কার জনক গোটা জাতির জন্য লজ্জা আর অপমানের । ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে ইতিপূর্বে আরও অনেক বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে কিন্তু মিডিয়াতে জোরালও ভাবে প্রচার না হওয়ার কারণে, সরকারের উদাসীন মনোভাবের কারণে ও কিছু স্বার্থবাজ নেতাদের ছত্রছায়া পেয়ে কিছু দুরবিত্তরা এমন নেক্কার জনক ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে আসছে।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.