![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা কোন ঘটনার উদ্দেশ্য হয়না,বিধেয় হয়না; সকলের অগোচরে মেঠো ইদুরের মত নিজেকে লুকিয়ে বেচে থাকে; এরা শুধুই অবজারভার- কোন অনুভূতি তাদের স্পর্শ করেনা....আমিও নেপথ্য চরিত্র হয়ে যাচ্ছি বহুকাল ধরে। এইতো আমি; বেঁচে আছি নিজের নিয়মে: কাউকে ধরে রাখা বা কোথাও ধরা পড়া_ দুটো সম্ভাবনাই যার পরম শূন্য
কিছু একটা বলা উচিৎ, যেহেতু অভিশপ্ত এক মহাপাপ করতে যাচ্ছি আর মাত্র ৪৭মিনট পর। সত্যি বলতে কি,পাপ-পুণ্য আমার কাছে প-বর্গীয় দুটি ভিন্ন শব্দ বৈ অন্য কিছু নয়। তাইতো এই গল্পটির সরলীকরণে তিনটি বিশেষ বিভাজন রয়েছে: প্রধান চরিত্র, দ্বন্দ্ব বা টানাপোড়েন, এবং অপ্রধান চরিত্র। প্রধান চরিত্রকে মূখ্যচরিত্র বললে কি অন্ধ হার্মিসন দৃষ্টি ফিরে পাবে?না পেলে, মুখ্য চরিত্র সাড়ে তিনটি: চুমকি, চমক, এবং তন্ময় অথবা শিবলি। তন্ময় আর শিবলি মিলে দুটির বদলে দেড়টি চরিত্র কিভাবে হল, কথা দিচ্ছি পাপ করার আগে অবশ্যই তা জানানো হবে।গল্প-উপন্যাসে চরিত্রগুলোর নামকরণে লেখকেরা যথেষ্ট মুন্সিয়ানা দেখান, তাই জয়দীপ-জয়িতা, সৌমিক-সুমিত্রা, কিংবা অমিত-লাবণ্য কখনো কখনো চরিত্রকেও ছাপিয়ে নাম হয়ে উঠে, কিন্তু এই গল্পের নামগুলোতে কোন আহামরিত্ব নেই, কারণ বাস্তবে কোন শিশুর জন্মের সময় যখন “আকাশ” নাম রাখা হয়, তখন মা-বাবা নিশ্চয়ই এটা ভেবে রাখেননা যে ২০-২৫বছর পরে “নদী” নামের কোন মেয়েকেই সে“143” সাংকেতিক সংখ্যার আড়ালে সেই আপ্তবাক্যটি শোনাবে;আমি গল্পকে বাস্তবতার বন্ধু না হোক, যে কোন প্রকারে অন্তত প্রতিবেশী হিসেবে দেখতে চাই। টানাপোড়েন বা দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে আসা যাক। প্রায় প্রতিলাইনেই এমন আবহ থাকলেও একেবারে “দ্বন্দ্বযুদ্ধ” বলতে যা বোঝায় সেটি সম্ভবত বাস্তবতা বনাম ফ্যান্টাসির।বাকিগুলোর পূর্বাভাস অনিবার্য কারণবশত এখন দেয়া নিষেধ। এরপর, অপ্রধান চরিত্র; যদিও এরা কেবলই কয়েকটি নাম হয়ে থাকে সাধারণত, অথবা কাহিনীর প্রয়োজনে নিষ্প্রভ উপস্থিতি বাড়ানো ব্যতিরেকে বিশেষ কোন ভূমিকা রাখেনা গল্পে, কিন্তু কখনও কি এমন হতে পারে যে কোন একটি অপ্রধান চরিত্রই গল্পের নিয়ন্তা হয়ে উঠল?উত্তর যদি “না” হয়, সেক্ষেত্রে “হ্যা” যে কখনই হবেনা এটি কি নিশ্চিত? সবশেষে, গল্পটি কোন্ ধরনের?সেটাই তো বলতে চাইছি_
পৃথিবীর গোলার্ধের ব্যাসার্ধ মাপতে মাপতেই ঢাকা নামের শহরটিতে ভোর হয় রোজ, আর সেইসাথে এখানকার বিমানবন্দরে বিমানের আসা-যাওয়া চলে পরিসংখ্যানিক জ্যামিতিকগড়-তরঙ্গ গড়ের ব্যবধান খুঁজতে খুঁজতে।এই ফ্লাইটের হিসাব রাখাটা নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় ছিল যদিনা গল্পের অন্যতম মুখ্যচরিত্র চুমকি আজ ভোরের ফ্লাইটে লণ্ডন থেকে ঢাকা ফিরতো। ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত “Connecting Future program” এ লণ্ডন সফর করা বাংলাদেশের ৪সদস্যের ছাত্রপ্রতিনিধি দলের দলনেত্রীর নাম ফারহানা হক চুমকি, এই গল্পের ঠাকুরমা, যার ঝুলিতে ভরা আছে গল্পের প্রাণভোমরা। গত ৭দিনকে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হিসেবে মনোনয়ন দেয়া যায় নির্দ্বিধায়: ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এর অধিবেশন দেখা, পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে প্রশ্ন করার সুযোগ পাওয়ার সঙ্গে বাড়তি প্রাপ্তি বিভৎস সুন্দর দেশটির অনেক জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগ, এবং অতি অবশ্যই বিশ্বের ১২২টি দেশের ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের সাথে পরিচিত হওয়া_ এই বয়সে এর চেয়ে সুন্দর সময় কী-ই বা হতে পারে!
বিমানে অধিকাংশ সময় ঘুমিয়ে কাটলেও ৭দিনের খণ্ড স্মৃতিগুলো স্বপ্নহয়ে সেই ঘুমকেও শৈল্পিক ঘুমে রুপ দিয়েছিল যেন_ আবুধাবি এয়ারপোর্টে ওর লাগেজ সাময়িক লাপাত্তা হওয়া, হোটেলে খাবারের সব অপরিচিত মেনু দেখে উপয়ান্তর না পেয়ে সরাসরি “Halal Food” লিখে অর্ডার দেয়া, জনৈক ফিলিস্তিনি ছাত্রের প্রশ্নবাণে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাজেহাল হওয়া থেকে শুরু করে ওদের সঙ্গে গাইড হিসেবে থাকা স্থানীয় এক ছাত্রের “এদেশে প্রথমবারের মত এসে কেমন লাগছে” প্রশ্নের বিপরীতে ওর সেই কিংবদন্তীতুল্য জবাব_ “ তোমার দেশের দালানকোঠায় আমার পূর্বপুরুষের রক্ত লেগে আছে। তাই প্রথম আসলেও এদেশ আমার মোটেই অপরিচিত নয়”, সবকিছু ওকে ঘুমন্ত রেখিছিল চিরঘুমের অনিঃশেষতায়।
৭দিনের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবিজয়ীকে(!) রিসিভ করতে বিমানবন্দরে আগত পরিজনের সংখ্যা ৪: মা, রুমকি, চমক,এবং জাফর।ভার্সিটিতে সবমিলিয়ে হাজারখানেক বন্ধু-বান্ধব থাকলেও চুমকির যে কোন প্রয়োজন-অপ্রয়োজনের একমাত্র সময়নিরপেক্ষ বন্ধু জাফরকে “ও” নিকনেম দিয়েছে “কাসেম ভাই”(হাতেম তাঈ এর অনুকরণে), কারণ বন্ধুদের জন্য নিজের খেয়ে বনের মহিষ-হাতি-ঘোড়া-ভাল্লুকসহ সবকিছুই তাড়াতে গিয়ে প্রায় সময়ই নিজের ঘরের বেড়া উন্মুক্ত ফেলে সে।এই যেমন, চুমকির প্লেন সকালে আসবে বলে ওর মা-ভাই-বোন গতকালকেই মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকায় চলে এসেছে; রাতে ছিল বাসাবো, ওর মামার শ্বশুরবাড়িতে।এত সকালে এই দুটি কিশোর বয়সের ছেলে-মেয়েকে নিয়ে চুমকির মা একা মানুষ কিভাবে এয়ারপোর্ট যাবেন, সেই দুশ্চিন্তায় জাফর টিউটোরিয়াল পরীক্ষা বাদ দিয়ে ভোরবেলা ট্যাক্সিক্যাব নিয়ে বাসাবোতে চলে গেছে, অথচ এর আগেও বেশ কয়েকটি টিউটোরিয়াল না দেয়ায় পাশ করা নিয়েই টানাটানি চলছে তার।একে উদারতা নাকি মুর্খতামি বলা উচিৎ? এমন মনে হওয়ার কারণ হচ্ছে বন্ধুরাও মুফতে একটা কলুর বলদ পেয়ে তাকে ব্যবহার করতে সঙ্কোচিত হয়না। চুমকি তেমন বন্ধুদের দলভুক্ত কিনা এই মুহূর্তে বলা মুশকিল।
চুমকির মা নুরুন্নাহার হক, জীবনের পরম অনিশ্চয়তা তত্ত্বের শিকার হয়ে বিধবা হয়েছেন দশ-এগারো মাস হল; কিন্তু এই পরিণতিকে তিনি মেনে নিয়েছেন, আবার নেননি। একজন সুস্থ মানুষ বাথরুমে গোসল করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে মাথার পিছন দিকে আঘাত পেল, আর তাতেই স্ট্রোক করে হাসপাতালে নেয়ার আধঘণ্টার মধ্যে বেনজীর ভুট্টোর সঙ্গে দেখা করতে রওয়ানা হয়ে গেলো? এ তো যমদুতের জোর করে জানকবচ করার খামখেয়াল, এর বিরুদ্ধে মানব বন্ধন করতে হবে!শুরুর কয়েকমাস এরকম উদ্ভট চিন্তা-ভাবনা করতে করতে প্রায় উন্মাদদশা হয়ে গিয়েছিলো তার, এরপর সন্তানদের জন্যই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছেন।স্বামী-স্ত্রী দুজনই ছিলেন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক ।স্বামী বিজ্ঞানের শিক্ষক হওয়ায় টিউশনির টাকায় মফঃস্বলে বেশ স্বচ্ছল সংসার ছিল তাদের, কিন্তু নিজে আর্টসের হওয়ায় স্কুলের বেতনটাই সম্বল এখন। তাই দারিদ্র্যের সঙ্গে বেশ চেনা-জানা গড়ে উঠেছে গত কয়েকমাস থেকে।কিছুদিন হলো,স্কুলের এক বিপত্মীক শিক্ষকের সঙ্গে তার বিয়ের সম্বন্ধ করতে চাইছে শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকে; কেউ কেউ আকারে ইঙ্গিতে বললেও বিষয়টাকে এখনো সেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। বয়স ৩৭ চলছে; রবিঠাকুর ১৩-১৪বছরের কিশোরদের যেমন “বালাই” বলেছেন,এই বয়সের নারীকে বালাই না হলেও “পালাই” বলা যেতে পারে - তরুণী-প্রৌঢ়া-মাঝ বয়সী কোন শ্রেণীতেই ফেলা যায়না। তবুও এই বয়সে বিয়ে করাই যায়; তার যে খুব অনীহা তাও নয়, কিন্তু অনেকগুলো পিছুটান কাজ করছে ভাবনাজুড়ে। মফঃস্বল শহরে এই বয়সী একজন মহিলার ২য় বিয়েকে খুবই নিন্দার দৃষ্টিতে দেখা হয়, মেয়ে দুটি বড় হয়েছে, এ সময় এমন একটি কাজ করলে ওদের বিয়ে দিতে সমস্যা হবে, ওই লোকেরও আগের পক্ষের ছেলে-মেয়ে আছে; এতসব সমস্যার বিপরীতে এভাবে থাকাই অনেক ভালো মনে হচ্ছে এখনো পর্যন্ত।
তাছাড়া জীবনের একটি পর্যায়ে এসে জায়া সত্তা জননী সত্তার মাঝে লীন হয়ে যায়; স্বাভাবিকের চেয়ে একটু আগে হলেও তার জীবনে সেই পর্যায় চলেএসেছে ধরে নিয়ে সন্তানদেরকেই আকড়ে ধরবেন কিনা, দোলাচলে আছেন।তার দোলনা চলতে থাকুক, সেক্ষণে সন্তাদের বৃত্তান্ত বয়ান করি। চুমকির পরিচয় দেয়া হয়েছে, বাকি রইল রুমকি-চমক। রুমকির ব্যাপারে বলার কিছু নেই; পাঠে অমনোযোগী, ইচড়ে পাকা কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা যেমন হয় সে-ও তাই। এবার, গল্পের অপর মূখ্যচরিত্র চমকের পালা; বয়ৰসন্ধির শেষ বা মাঝামাঝি সময়ের এক কিশোর হয়ে ক্লাস টেনে পড়ছে বিজ্ঞান বিভাগে। ছাত্র হিসেবে পৌনে মেধাবী, সব ব্যাপারেই কম-বেশি আগ্রহ থাকলেও আগ্রহগুলো বরাবরই ভীষণ ক্ষণস্থায়ী, শুধু গানের ক্ষেত্রটি এক আশ্চর্য ব্যতিক্রম।গানটা বাসা থেকে সেভাবে সিরিয়াসলি না শেখালেও শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে গাইলে মানুষ ততটা খারাপ বলেনা।রুমকি মাত্রই দেড় বছরের বড় হওয়ায় এখনো সময় পেলেই পিঠে কিল বসায় চুলের মুঠি ধরে, পক্ষান্তরে চুমকির সামনে একেবারে আরবি বর্ণ “আলিফ” এর মত স্থির থাকে ভয়ে।বলতে গেলে চুমকি-ই ওকে বড় করেছে ছোট থেকে, কারণ স্কুলের চাকরি করে এত কাছাকাছি বয়সের দুটি বাচ্চাকে ঠিকমত দেখভাল করা মা’র পক্ষে মোটেই সম্ভব ছিলনা। যদিও চমকের জন্মের সময় ওর নিজের বয়সই ছিল মাত্র ৬বছর, তবুও একটি শিশুর যত্নেই বেড়ে উঠেছে আর এক নবজাতক। সেই হিসেবে চুমকি বোনের চেয়েও চমকের কাছে মা বোধহয়।
গল্পের ভ্রাম্যমাণ গাড়িটি বর্তমানে টিএসসি’র বারান্দায় অবস্থান করছে, যেখানে বসে ডিবেটিং সোসাইটির সদস্যরা একসাথে লেবু চা পান করছে পড়ন্ত বিকেলে।এই বসে থাকাদের একজনের নাম চুমকি, এছাড়া এই বসার দলের মধ্যে একটি দীর্ঘাকায় ছেলেকে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে সবার সঙ্গে: তার একহাতে ধরা চায়ের কাপ, অন্যটাতে সিগারেট। সব আড্ডায়ই একজন সঞ্চালক বা চিয়ার লিডার থাকে, ভাবদৃষ্টে এই ছেলেটিকেও তাই মনে হচ্ছে।সুতরাং গল্পের মজলিসে ছেলেটিকে পরিচয় করিয়ে দেবার সময় হয়েছে এবার; নাম তন্ময় রেজওয়ান, ভার্সিটিতে Public administration বিষয়ে পড়তে ভর্তি হলেও পড়াকে ছাগলের ৭নম্বর ছানা বানিয়ে বিতর্ককে ঘিরেই তার সবচিন্তা আবর্তিত হয়। বিতর্কও তাকে প্রতিদান দিবে এটাই স্বাভাবিক_ তাই গল্পের মূখ্যচরিত্র তন্ময়কে ডিবেটিং সোসাইটির বর্তমান সভাপতি করা হলে কারো আপত্তি থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।একজন মানুষকে আকর্ষণীয করতে যে বিষয়গুলো ভূমিকা রাখে তন্মধ্যে চেহারা, ব্যক্তিত্ব, communication skill,প্রতিভা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ধরা যাক, এই সবকটি উপাদানই তন্ময়ের মধ্যে অত্যধিক পরিমাণে বিদ্যমান।আসলে, ভার্সিটিতে এধরনের ছেলে অনেক থাকে।সুতরাং তন্ময়কে তাদের দলভুক্ত করে ভার্সিটিতে তার ইমেজকে সাপলুডুর “পুট” এর সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।
ইচ্ছা সত্ত্বেও এই আড্ডায় চুমকিকে সপ্রতিভ রাখা যায়নি, বরং সে কিছুটা আড়ষ্ট; চায়ের কাপে ছোট ছোট চুমুকে গতরাতে ঘটে যাওয়া আকস্মিক অথচ ভীষণ প্রত্যাশিত ঘটনাটি মেলানোর চেষ্টা করছে আড়চোখে তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে। দীর্ঘসময় ফোনালাপের প্রাক্তন রেকর্ডটি কাল ভঙ্গ হয়েছে তন্ময়ের সাথে কথা বলার মাধ্যমে_ এই ব্যাপারটিই তাকে বিচলিত করছে, কারণ আগ বাড়িয়ে কথা না বললে তন্ময় কখনই ওকে সেভাবে প্রাধান্য দেয়নি, বরং সবসময় আচরণে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে “ক্যাম্পাসে আমার গুণগ্রাহী বিশাল রমণীকুলের মধ্যে তুমিও একজনমাত্র; বিশেষ কিছু নও”। তাই সে-ও পারতপক্ষে তন্ময়কে এড়িয়ে চলে; নিজেকে একেবারে দুর্লভ না হোক, সহজলভ্য ভাবতে তার তীব্র আপত্তি_ এটা আত্মসম্মান এবং ইগোগত একটা ইস্যু হয়ে উঠেছিল তার জন্য। সেই তন্ময়ই কিনা নিজে থেকে ফোন করে ২ঘণ্টা১৭মিনিট কথা বলল তার সাথে!
তবে চুমকির জন্য ব্যাপারটা আকস্মিক হলেও অপ্রত্যাশিত হয়নি_ লণ্ডন থেকে ফেরার পরই তন্ময়ের পরিবর্তিত আচরণের যে সূক্ষকৌণিক পরিবর্তনগুলো নজরে পড়ছিল এতদিন, কালকের ফোনটিকে বলা চলে তার স্থূল বহিপ্রকাশ। ব্যক্তি চুমকির চেয়ে তার ৭দিনের লণ্ডন সফরটাই তন্ময়ের কাছে তার নতুন গ্রহণযোগ্যতা তেরি করে দিল কিনা এটাই ভাবাচ্ছে তাকে।
চতুর ও বুদ্ধিমানের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার দুরত্ব আছে। তন্ময়কে যদি উভয়ই ধরি, তাহলে চুমকির এই আড়ষ্টতা এবং সকলের আপাত অলক্ষণীয় আড়চোখ দৃষ্টি তার লক্ষ্য করাটাই যৌক্তক হবে।সেক্ষেত্রে চুমকির দিকে তার চাহনিটা অন্যদের থেকে আলাদারকম হবে।আমাদের স্বীকার করতেই হবে মানুষের চাহনি শ্রেষ্ঠ দোভাষি।তাই তন্ময়ের চাহনিই চুমকিকে বলে দিচ্ছে -”তুমি কী ভাবছো আমি জানি”, আর তন্ময়ও এই ভাবুক রমনীর চাহনির ভাষা পড়ে বুঝে নিচ্ছে “তোমার মতলবটা বল তো বাপু; হঠাৎ আমাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছো যে”। অথচ এই আড্ডার বাকি মানুষগুলো জানতেও পারছেনা, কী ভীষণ মার্কিন-ইরাক যুদ্ধ চলছে তাদেরই উপস্থিতিতে এইটুকু জায়গায়।
এই গল্পে চুমকির হল বা রুমের কোনই ভুমিকা নেই, তবুও কাহিনীতে নতুন রেলগাড়ির আগমন ঘটাতে একে অস্থায়ী প্লাটফরম হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে; গল্পের অনাবশ্যক দৈর্ঘ্যবৃদ্ধির কোন অভিলিপ্সা নেই এর নেপথ্যে।ওর রুমমেট ৪জন- মুক্তি, কোয়েল, জুই, শুভ্রা।জুই বাদে সবাই সিনিয়র; এদের মধ্যে মুক্তি আর কোয়েল সহোদরা, ওদের বিষয় সমাজকল্যাণ। শুভ্রার সাথে বলতে গেলে মুখ দেখাদেখি বন্ধু সম্পর্ক ওর; এই মেয়েটা সিনিয়র বলে dominate করতে চায় চুমকি-জুইকে।
রুমমেটদের পরিচয় দেবার মাহাত্ম্য এবার বুঝা যাবে। সমাজকল্যাণের শিক্ষার্থীরা সারাবছরই বিভিন্ন ধরনের সামাজিক প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত থাকে, বিশেষত ভার্সিটির ছুটির সময়গুলোকে এই ধরনের কাজের জন্য পয়মন্ত বলা যায়।
রোযা চলে এসেছে, পূর্বপরিকল্পনানুযায়ী মুক্তি-কোয়েলরা রোযার প্রথম ১৫দিন কাটাবে ঝালকাঠিতে; ‘Arsenic mitigation’ শীর্ষক একটি ১৫দিন ব্যাপী একটি প্রকল্পের কাজ করবে সেখানে। প্রকল্পটি তত্ত্বাবধায়ন করছেন ওদেরই একজন সিনিয়র শিক্ষক। দলে মোট সদস্যসংখ্যা ১০জন, কিন্তু মেয়ে বলতে ওরা ২ বোনই শুধু।
মুক্তি-কোয়েলের এই প্রকল্পের গল্প বলারও একটা কারণ আছে। হ্যা, অনুমান সত্যি_ চুমকিও ওদের সতীর্থ হয়েছে। এবার সেই কাহিনীতে আসছি। ঝালকাঠি যাত্রার ২দিন আগে শাপেবর হয় 'পলাশ' নামে ওদের এক বন্ধু দাদা মারা যাওয়ার কারণে গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা ফিরে গেলে।কোয়েল এই সুযোগে ২য় চিন্তা না করেই চুমকির নাম প্রস্তাব করে স্যারের কাছে। স্যার শুরুতে নিমরাজি থাকলেও পরে “ডালিম-রাজি” হন, কারণ গত ২বছরে “ও” বিভিন্ন এনজিওর হয়ে “Acid victim”, “পথশিশু”, ভাসমান মানুষ, পতিতা সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক ইস্যুতে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।পাশাপাশি, ৬মাস আগের লণ্ডন সফর স্যারের কাছে ওর যোগ্যতাকে প্রশ্নাতীত করেছে।
অন্য ডিপার্টমেণ্টের এত জুনিয়র একটা মেয়ের অন্তর্ভুক্তিকে দলের অনেকেই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে পারবেনা, এটা অনুমিতই ছিল।দেখতে না পারাদের সমস্ত আক্রোশ তখন স্বভাবতই কোয়েলের ওপর গিয়ে পড়বে, এমনকি কেউ কেউ সেই ক্ষোভ প্রকাশও করে ফেলতে পারে। তিরিক্ষি মেজাজের মানুষ সব দলেই থাকে দু-একজন।
“কোয়েল, তোর মাথার বুদ্ধির সাইজ কোয়েল পাখির ডিমের চেয়েও ছোট হয়ে গেছে। আবার সেএণ্ড ইয়ারে ভর্তি হ, বুদ্ধি বাড়বে”...এই কথাটি কোয়েল শুনেছিল বাসে উঠার সময়, কোন কথা না বলে হো হো করে হেসেছিল, এতে বক্তা দ্বিগুণ মেজাজ খারাপ করে পিছনের সিটে গিয়ে বসলো।মানুষ এখন অনেক স্মার্ট, তাই বলার অপেক্ষা রাখেনা এই মেজাজী বক্তাই হচ্ছে গল্পের অবশিষ্ট মূখ্যচরিত্র শিবলি।
শিবলির পুরো পরিচয় দিতে গেলে গল্পের গতি মন্থর হয়ে যাবে, আবার না দিলে কাহিনীতে অস্পষ্টতা রয়ে যাবে। সুতরাং, দুকুল রক্ষা করতে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করাই শ্রেয়তর। সব মানুষের মত সে-ও খায়-ঘুমায়-গোসল করে,পরীক্ষা দেয়, পড়াশোনা করে, এই তো। দশজনের মধ্য থেকে সহজেই চোখে পড়বে এমন কোন আকর্ষণীয় গুণ তার মধ্যে নেই।গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর, ৬বোনের ১মাত্র ভাই, বাবা জজকোর্টের সেরেস্তাদার_ এই হচ্ছে পারিবারিক অবস্থান।সেখান থেকে এ পর্যন্ত উঠে আসার পেছনে রয়েছে অনেক নদী-ঝিল-সাগর সাতরে মহাসাগরে পৌছনোর ইতিহাস। সেসব এই গল্পে অপ্রাসঙ্গিক, প্রাসঙ্গিক হলে হতে পারে চুমকির সাথে তার প্রথম কথোপকোথন। অনেকেরই অনেকরকম কল্পনা থাকতে পারে, তবুও শিবলির প্রথম কথাটি নিশ্চয়ই কারো কল্পনার সাথেই মিলেনি_ “এই পিচ্চি মেয়ে, শোনো, তোমার জন্য এটা একটা নিছক ট্যুর, কিন্তু আমাদের জন্য project; তাই তুমি তোমার ইচ্ছামত ঘুরতে পারো, সমস্যা নেই; শুধু কখন কোথায় থাক তা জানালেই হবে”।
যতই সেকেণ্ড ইয়ার-ফাইনাল ইয়ার ব্যবধান হোক, ভার্সিটি পড়ুয়া কোন আধুনিক তরুণী কোন সিনিয়র ভাইয়ের মুখ “পিচ্চি” সম্বোধন শুনে খুশি হতে পারবেনা নিশ্চিত।সেক্ষেত্র তারও একটা জবাব থাকা চাই, যেটা আলপিনের কাজ করবে, অথচ যাকে জবাব দেয়া হচ্ছে তিনি সেটা হজমে বাধ্য হন। আগেই বলা হয়েছে, চুমকি একজন বিতার্কিক, শিবলির সম্বন্ধেও ঈষৎ ধারণা পাওয়া গেল দুইয়ের যোগফলে চুমকির জবাবটা এমন হলে কেমন হয়-
“মানে, বলছিলাম কি দাদুভাই, আমি পিচ্চি একটা মেয়ে, একা অচেনা শহরে ঘুরতে গেলে যদি ছেলেধরা ধরে!তারচেয়ে বরং আপনাদের লাঠি-চশমা টানার জন্য হলেও নাহয় আপনাদের সাথে সাথেই ঘুরি।কথা দিচ্ছি, একটুও কান্না-কাটি করবোনা; মাঝে মাঝে শুধু চকলেট কিনে দিলেই চলবে”। এই জবাব শুনে দলের সবাই হাসবে, আর বেচারা শিবলি বিব্রত হবে, এই তো?ঠিক আছে, প্রকল্পের কাজ চলুক।প্রয়োজন হলে পরে বলা যাবে এ ব্যাপারে।
অনুমান করুন, তন্ময় এখন কোথায় থাকতে পারে, না পারলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অডিটরিয়ামে চলুন। সেখানে চলছে জমজমাট প্রীতি বিতর্ক। অনুষ্ঠানস্থল হিসেবে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অডিটরিয়াম পাওয়াটা যতগুলো যদি-তবে’ র উপর নির্ভর করে তার কোনটির সম্মুখীনই তাকে হতে হয়নি; চুমকির বদৌলতে এটা শেষপর্যন্ত চারুকলা থেকে হেটে শাহবাগ মোড়ে যাওয়ার মত পরিশ্রমের কাজে পরিণত হয়েছে ওর জন্য।এইটুকু সুবিধা পাওয়ার জ্বালানী হিসেবে তাকে প্রতিরাতে চুমকির সাথে বলতে গেলে ঘণ্টাচুক্তিতে ফোনে কথা বলতে হয়েছে, প্রায় বিকেলেই ওর হল গিয়ে সারাসন্ধ্যা একসাথে কাটাতে হয়েছে, ওর বিতর্কের স্ক্রিপ্ট পর্যন্ত লিখে দিতে হয়েছে উপযাজক হয়ে....তবেই না কার্যসিদ্ধ হল আজ। তাই “মুখের কথায় চিড়ে ভিজেনা” জাতীয় প্রবচনকে সে প্রহসনে রূপ দিয়ে কথা দিয়ে রীতিমত দুধকুলি পিঠা পাকিয়ে ছেড়েছে, নইলে কি আর চুমকির মত মেয়ে বিভ্রান্ত হয়!
শিবলি আর তন্ময় গল্পের সমান্তরাল চরিত্র, অথচ তন্ময়ের দিকেই যেন লেখকের পক্ষপাতটা পিসার হেলানো টাওয়ার হয়ে ঝুকে আছে। এই দুর্নীতির জন্য অবশ্যই জবাবদিহিতা থাকা উচিৎ, কিন্তু শিবলিকে নিয়ে লেখার মত যথেষ্ট রসদ তো সে রাখেনি। তন্ময়ের মত অসাধারণ প্রতিভার সাথে তাকে তুলনা করতে গেলে তো লজ্জায় পড়তে হবে নির্ঘাৎ। বিবেক অবশ্য চুপিসারে বলছে, মূখ্যচরিত্রকে প্রতিভার ডিপো হতে হবে, এমন বিধান কে রচনা করেছে?সাদাদৃষ্টিতে যাদেরকে অসাধারণ ভাবি, এর বাইরে সবাই কি অধর্তব্য?আরে, সাধারণ আর অসাধারণের মধ্যে দুরত্ব তো মাত্র একটি বর্ণ-“অ”।
বিবেক ভুল বলেনি; গল্পের খাতিরে “অ” বর্ণটিকে খারিজ করা হল।শিবলি আর তন্ময়ের মাঝে এখন অনায়াসে ‘=’ চিহ্নটি লেখা যেতে পারে।
গল্পের চরকা খুব ধীর গতিতে ঘুরছে, বিরক্তিতে অনেকে আসরভঙ্গের প্রস্ত্ততিও নিচ্ছে হয়ত। তাই সময়টা কয়েকমাস এগিয়ে দিয়ে শিবলির অফিস থেকে ঘুরে আসা যাক।
শিবলি একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানীতে চাকরি পেয়েছে; সৌভাগ্যবশত বেকার জীবনটি অন্য বন্ধুদের মত দীর্ঘ হয়নি তার।অন্য বন্ধুরা সবেমাত্র CV লিখতে শুরু করেছে, তাই প্রত্যাশাতীত চাকরিপ্রাপ্তির আনন্দের সাথে তার অভ্যস্ত হতে সময় লাগছে কিছুদিন।অফিসে কাজের ব্যস্ততা থাকলেও ফাকফোকরে অবসর কাটানোর মত সময় পাওয়া যায় অনেক। এই অবসরটা ইদানীং অনেকেই ফেসবুক-ব্লগিং করে কাটালেও এর কোনটিকেই কার্যকরী কিছু মনে হয়না তার; তার পছন্দ বরংএডাল্ট সাইট,ইউটিউব, আর প্রতিরক্ষা বর্ম হিসেবে new tab এ বই পাওয়া যায় এমন কোন সাইট, যাতে তার ডেস্কের কাছাকাছি কেউ চলে আসলে বই খোজার চাতুরী করতে পারে।
তবে এগুলোকেও কেন যেন ভালো লাগেনা সবসময়, তাই লাঞ্চের পর বস্ কোনদিন বের হলেই টুপ করে ক্যাম্পাসে চলে আসে মাঝে মাঝে। মূল ক্যাম্পাস বিডিআর গেটে হলেও কলাভবনেই তার বেশি সময় কাটত ছাত্রজীবনে, কারণ স্কুল-কলেজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা সব কলা অনুষদেই আবাস গেড়েছিল।এজন্য, ডিপার্টমেন্টেও তার তেমন কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধুমহল গড়ে উঠেনি।
এই তথ্যকণিকাটুকু গল্পের নিরিখে প্রয়োজনীয়। অপর চরিত্র চুমকিও যে এই কলাভবনেরই প্রোডাক্ট্।এইবার ১+১.১ কে ২ এর equivalent লিখে কলাভবনে চুমকির সাথে হঠাৎ ২-১ দিন তার সাক্ষাৎ ঘটিয়ে দেয়া যেতে পারে। তবে দেখা হলেও তাদের মধ্যে ৬-৭ মিনিটের বেশি কুশল বিনিময়সূচক কথা বলানোটা বিশ্বাসযোগ্য হবেনা_ চুমকির ক্লাস থাকতে পারে, সঙ্গে বন্ধু-বান্ধব থাকতে পারে, সর্বোপরি শিবলি নিজেও তো দেখা করার উদ্দেশ্যে সেখানে যায়না। দেখা হয়ে যাওয়াটা নিতান্তই অনভিপ্রেত কাকতাল মাত্র! সেক্ষেত্রে চুমকির প্রতি তার মনোভাবটা জানতে অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন। মনোভাবটা লেখক নিজেও বুঝতে হিমশিম খাচ্ছে, সুতরাং কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার উদাহরণ দিলে কিছুটা অনুমান করা যেতে পারে।
মুঠোফোন যন্ত্রটির প্রতি একটাসময় যারপরনাই বিরক্ত ছিল শিবলি_ বিশেষ প্রয়োজন না পড়লে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেটি পকেটেই ভরা থাকত। তবু নিয়ম করে সপ্তাহে ১দিন হলেও যে কয়েকজন জন মানুষকে ফোন করা হয় মা, বড়বোন, বন্ধু হিল্লোল, ঝর্ণার সাথে এই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন চুমকি। সবার জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দকৃত সময় ২ মিনিট হলেও কোন একজনের ক্ষেত্রে সময়টি অনির্দিষ্ট থাকে_ তাকে ফোন করা হয় অফিসের ফোন থেকে, ইদানীং মুঠোফোনের প্রতি ভালোলাগাও তৈরি হচ্ছে তার বদৌলতেই....কে সে?উত্তরটি কোনভাবেই চুমকি নয়, হবে ঝর্ণা। ঝর্ণা তার খালাতো বোন_ অনার্স সেকণ্ড ইয়ার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইডেন মহিলা কলেজ, সম্ভবত চুমকির year এরই হবে;তার সম্পর্কে আর কিছু বলবোনা।
সেই আর্সেনিক প্রকল্পে চুমকির পারফরমেন্স ছিল ওদের সবার চেয়ে ভালো। দেখা গেছে, বিষয়টি ভালোমত বুঝুক বা না বাচনিক দক্ষতাতেই সে গ্রামাঞ্চলের মানুষকে একটা ন্যুনতম একটা ধারণা দিতে পেরেছে এ সম্পর্কে, অথচ সে বিষয়টি শিবলিরা অনেক ভালোভাবে বুঝেও বুঝাতে ব্যর্থ হয়েছে ঐ গুণটিরই অভাবে। তাছাড়া ১৫দিনে আরও অনেক ঘটনা ঘটতে পারে যেগুলো শিবলিকে ওর বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে উচ্চধারণা তৈরিতে প্রভাবিত করেছিল। তাই ট্যুরের শেষের দিনগুলোতে সিনিয়রটির খোলস ভেঙ্গে যৎসামান্য রসিকতা হতেই পারে দুজনের মধ্যে।সেই প্রক্ষিতে শিবলির মুখে একটি রসিকতাপূর্ণ বক্তব্য যোগ করা যায় এমন: "আরে, বুদ্ধিতে তো আমি তোমার নাতির বয়সী। আমাদের next project করবো সেরা “intelligence appreciation” এর উপর, কী বল! স্যালুট ম্যাডাম।“
কিছুদিন আগে চুমকিরা আন্তহল বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল, সেখানে ডেইলি স্টার-প্রথম আলোর সঙ্গে স্পন্সর হিসেবে শিবলি যে ইনস্যুরেন্স কোম্পানীতে আছে সেটির নামও শোভা পাচ্ছিল ব্যানারে। এই স্পন্সরটা যোগাড় করার ব্যাপারে শিবলির জোরালো ভূমিকা থাকাটা অবধারিত।
অনেক উদাহরণ দেয়া হল, এতে করেও ধোঁয়াশা না কাটলে অপেক্ষা করতে হবে, কারণ চমককে মূখ্যচরিত্র বলায় হয়ত লেখকের মুণ্ডুর কাবাব খাওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছেন অনেকেই। অতএব, আত্মরক্ষা+সমালোচনা এড়াতে চমকের পড়ার টেবিলটা দেখে আসি।
চমক এখন অনেকটা গৃহবন্দী দশা পালন করছে, এসএসসি পরীক্ষার ৪১দিন বাকি_ প্রতিটি দিন শেষ হওয়ামাত্র সেটি লাল কালির দাগে কাটা পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে অপেক্ষার প্রহর থেকে; এই হচ্ছে অবস্থা। নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল আশানুরূপ না হওয়াতেই মূলত এই স্বেচ্ছাবন্দী জীবন চলছে_৪র্থ বিষয়সহ GPA এসেছে 4.75. মা-বুবুর কড়া নির্দেশ_ প্রয়োজনে টেবিলে খাবার দেয়া হবে তবুও টেবিল ছেড়ে উঠা চলবেনা; সে’ও তা মেনে নিয়েছে নিজের মঙ্গলের স্বার্থেই।
এসএসসি পরীক্ষার্থী যে কোন ছেলের প্রকৃত বয়স কমপক্ষে ১৬+ হবে, যতদূর শোনা যায় এই বয়সটা খুবই ভয়ানক_ ভালোলাগার খোলসে অপরিপক্ক ভাবনার মোহরূপী অজগর সাপ ফোসফোস শব্দে মনের অরণ্যে নিশিদিন চষে বেড়ায় এসময়, একটু দেখার ভুলেই অজগরের গ্রাসে পরিণত হওয়ার ঝুকি থাকে। চমক মোটেই সতর্ক কোন কিশোর নয়, ফলশ্রুতিতে অজগরের সহজ শিকার হয়েছে_ ধরা যাক, অজগরের নাম কাকলি; পার্শ্ববর্তী গার্লস স্কুলের প্রথম দিকের রোলনম্বরধারী, একই স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়াসূত্রে খাতা আদান-প্রদানের নৈমত্তিকতায় দু’একটি চিঠিও চালাচালি চলে তাদের, এরপর যা হবার তাই হল।বয়সটাই যে ফটোইলেকট্রিক_ বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণকে আলোর মত লাগবেই!
এই অংশে এসেই তো মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। আচ্ছা, অধিকাংশ নাটক-সিনেমার কাহিনী ঘুরেফিরে সেই চারঅক্ষরের চর্বিত শব্দটাকে ঘিরেই আবর্তিত হয় কেন, মানুষের দৃষ্টিসীমায় কি এর বাইরে ভিন্ন কোন আকাশ নেই দেখার? নিজেকে ধরে চাবকাইতে মন চাইছে; চমকের মত একটা কিশোরকে একটু অন্যরকম দেখানো যেতনা সমবয়সী ছেলেদের চেয়ে?আবারও সেই ‘স্টুপিড চিন্তাভাবনাতেই” তো ফিরে যাচ্ছি। নাহ, এ কিছুতেই বরদাশত করা হবেনা, তার আগেই চুমকির হাতে তুলে দেয়া হবে গল্পের নিয়ন্ত্রণভার।
ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ার পর্যন্তও চুমকি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল চিরকুমারী থাকার। এখন সেই প্রতিজ্ঞা তার নিজের বিরুদ্ধেই আইনি লড়াই যাচ্ছে মনের সুপ্রীম কোর্টে। তাই পড়াশোনা, বৃটিশ কাউন্সিল, বিতর্কের সমান্তরালে আরও একটি নিটোল স্বপ্ন চুমকির ভাবনাজুড়ে থাকে ইদানিং_ ছিমছাম সংসার, দুজন মহাব্যস্ত মানুষ নিজেদের মত করে বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা করবে, তারপর একদিন দেশের আদর্শ দম্পতির রোলমডেল হবে। চুমকির ভাবনার এই ভবিষ্যৎ বুদ্ধিজীবীটি কে, এটি একটি চরম ফালতু প্রশ্ন হয়ে যাবে গল্পের এই পর্যায়ে এসে। তারচেয়ে চলুন, চুমকি কিভাবে এমন পরম নিশ্চিন্তে ভাবনাবিলাসী হতে পারছে সেই বৃত্তান্তটাই জানি। আসলে বিয়ের ক্ষেত্রে ওকে একটি স্বাধীন ইচ্ছাপত্র দেয়া আছে মায়ের তরফ থেকে। এইবার বোধহয় ইচ্ছাপত্রটি সবাইকে খুলে দেখাবার সময় এল ।
চুমকির ২২বছরের আলোকিত জীবনের একটিই মাত্র অন্ধকার প্রকোষ্ঠ,যেটি ক্লাস এইট থেকে শুরু হয়ে তার স্কুল-কলেজ জীবনকে আচ্ছন্ন রেখেছিল। সেই অন্ধকার প্রকোষ্ঠের নাম-পরিচয় নিষ্প্রয়োজন হলেও গল্পের স্বার্থে “ক” লিখে নিলাম। এইচ, এস,সি পরীক্ষার পর এই 'ক' এর জন্য চুমকি এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে সে মা’কে রীতিমত অনুরোধ করে বসে তাকে যেন “ক” এর গলায় মালা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় যথাশীঘ্র। এইধরনের আত্মঘাতী প্রস্ত্তাবে যে কোন সুস্থ-স্বাভাবিক মায়ের মত তার মা’ও তৎক্ষণাৎ তার গালে ৪ আঙ্গুলের চিহ্ন একে দিয়েছিল। এছাড়া বিকল্প কিছু ছিল কি?এই ‘ক’ , যে কিনা স্থানীয় ডিগ্রি কলেজ থেকে কোনরকমে পাশ করে চাকরির বাজারে ঢোকার সামান্যতম যোগ্যতা না পেয়ে একটা ফোন-ফ্যাক্সের দোকান খুলে বসেছে, তার সাথে বিয়ে দিয়ে কোন্ মা তার মেধাবী সন্তানের সম্ভাবনাকে বলি দিতে রাজী হবে?
চড় মারলেও সেদিনই বিকেলবেলা মা-মেয়ের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা-বার্তা চলে। মেয়ের তেমন কিছু বলার না থাকলেও গল্পে মায়ের কথাটুকুর মহিমা আছে। তার কথাগুলো এরকম- “দেখ চুমকি, তুই আমাদের প্রথম সন্তান, তাই তোকে নিয়ে আমাদের স্বপ্নও অনেক।রুমকি দুষ্টু, চমক তোকে অন্ধঅনুসরণ করে; তুই এতবড় ভুল করলে আমার ছোট ছেলে-মেয়ে দুটোও নষ্ট হয়ে যাবে, সংসারটা ধ্বংস হয়ে যাবে। তুই ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শেষ কর্, তখন তুই “ক” কেন, কোন রিক্সাওয়ালাকে বিয়ে করতে চাইলেও আমি বা তোর বাবা বাধা দেবনা; কিন্তু জীবনের শুরুতেই এতবড় ভুল করতে চাইলে নিজের রাস্তা দেখ, আমি পারবোনা। হয় ‘ক’, অথবা ‘ভার্সিটি’ , তোকে যেকোন একটা বেছে নিতে হবে”।
চুমকি তখনই কিছু না বললেও রাতে চমককে মুখে তুলে খাইয়ে দেবার সময় যে কথাটি বলেছিল খাওয়ার টেবিলে তার মধ্যেই নিহিত ছিল মায়ের দেয়া option এর মধ্যে তার পছন্দটি_ “হ্যারে ভাইয়া, এখন থেকে হাত দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস কর্ ।আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে গেলে খাবি কিভাবে তখন?”
এত সহজেই চুমকি রাজী হল কেন?ধারণা করছি, সে মা’কে ধোকা দিতে চেয়েছিল, কোনভাবে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে গেলে তখন তো বিয়ে করাই যাবে , ‘ক’ তো আর কালই মারা যাচ্ছেনা। নেপথ্য কারণ যা-ই হোক, চুমকির সেই বুদ্ধিমত্তাকে সাধুবাদ জানাই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, চুমকির মত মেয়ে কী করে ‘ক’ এর মত একটি ৪র্থ পর্যায়ের প্রাণীর জন্য মা’কে ধোকা দিতে প্রবৃত্ত হয়েছিল? আরে, কাউকে “কেন ভালো লাগে” এই প্রশ্নটা যদি সবার মনে আসত আর মন তার জবাব খুজত, তাহলে পৃথিবীতে ৩-৪টার বেশি প্রেমকাহিনী রচিত হত বলে মনে হয়না। এছাড়া, ‘ক’-এর যোগ্যতা যেমনই হোক, মুন্সিগঞ্জ জেলায় সে বরাবরই সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখত সেসেময়। চুমকি ছিল জুনিয়র গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন, সে সিনিয়র গ্রুপে। অপরিণত বয়সে সংস্কৃতির ‘ং’ বর্ণটা প্রায়ই বিলুপ্ত হয়ে হংস আর কংস কে সমগোত্রীয় করে ফেলে। অপরিণত বয়সে এমকি চুমকিও পারেনি ‘ং’ এর সেই রাহুমুক্ত হতে
বর্তমান চুমকির দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক।আরও একটি বৃটিশ কাউন্সিলিয় ট্যুরে ব্রাসেলস যাওয়ার অপেক্ষায় সে এখন এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে বসে মায়ের সঙ্গে কথা বলছে।এবার তাকে বিদায় জানাতে আসা সদস্যসংখ্যা ৩, তবে এর মধ্যে মা বাদে বাকি ২ জন নতুন মানুষ। অনুমান করার দরকার নেই, খোলাসা করেই বলি। চমকের পরীক্ষা চলছে বলে রুমকির আসা হয়নি, ফরহাদের পরীক্ষা থাকায় সেও অনুপস্থিত; তবে কি শিবলি-তন্ময়ই সেই২জন?-উত্তর আংশিক সত্যি।চুমকি ভীষণভাবে একজনকে প্রত্যাশা করেছিল বিদায়বেলায়, কিন্তু জানা গেল সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিটি এখন চট্টগ্রামে একটি বিতর্ক কর্মশালায় আছেন, শুভকামনা জানিয়ে sms দিয়েই দায় এড়িয়েছেন। বাকি রইল শিবলি; হ্যা সে-ই এসেছে এক কলিগকে সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু কেন? শিবলির মুখ থেকেই শোনা যাক- 'হঠাৎ ইচ্ছা হল এয়ারপোর্টটা ঘুরে আসি। তাই চলে এলাম। তোমার ফ্লাইটের তো মনে হয় বেশি দেরি নেই; শোনো, কোনভাবে একবার যদি ব্রাসেলস পৌছতে পারো, বিন্দুমাত্র দেরি না করে হোটেল থেকে পালাবে।তারপর ফলের দোকান দিবা”।
এই পর্যায়ে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে: তন্ময় এয়ারপোর্টে আসেনি, চমক-রুমকিও আসতে পারেনি; এই মুহুর্তে শিবলির এ ধরনের হালকা রসিকতা ভালো লাগার কথা নয়। তাই, এটাই ধরে নেয়া স্বাভাবিক যে, শিবলিকে মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চুমকি লাউঞ্জে বসে থাকা দলের অন্য সদস্যদের সাথে যোগ দেবে। এরপর আরও কিছু ঘটনা ঘটবে, যেগুলো গল্পে অপ্রয়োজনীয়।সুতরাং প্রয়োজনীয় অনুসঙ্গের যোগান দেয়া যাক।
গল্পের গরু এখন ঘাসখাচ্ছে তন্ময়ের আজিমপুরের বাসায়!সম্প্রতি সে হল ছেড়ে বাসা ভাড়া নিয়েছে_”হলে নাকি ক্রিয়েটিভ কাজে মনোযোগ দেয়া যায়না” এমনটিই তার যুক্তি।রুমজুড়ে অবিন্যস্ত শেলী-বায়রন-হুইটম্যান ওকে ভেংচি কাটছে, আর ব্ল্যাক লেবেল-হুইস্কির শুণ্য বোতলগুলো দাবি জানাচ্ছে ডাস্টবিনস্থ হওয়ার- এই হচ্ছে তার নতুন বাসার ড্রইংরুম কাম বেডরুম।
তন্ময়ের সুরাসক্তিতে অবাক হওয়ার মত কিছু ঘটলো কি?
প্রচলিত গল্পের নায়ক হবে মহাপুরুষের মত, সিগারেটটাই যেখানে বাড়াবাড়ি সেখানে সরাসরি মদ!” আগেই তো বলেছি এইধরনের ফালতু আবেগে আমার কোন আস্থা নেই। অধিকাংশ অতিপ্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীর মত তন্ময়ের কাছেও মদ এক আভিজাত্যের প্রতীক, সপ্তাহে ২ দিন অন্তত বন্ধুরা গলা ভেজাবেই এই রঙ্গিন পানিতে।
এখন দুপুর ২টা। কিছুক্ষণ আগে ঘুম ভেঙ্গেছে তার, অধিকাংশ দিনের মত ক্লাসে যাওয়া হয়নি আজও। পার্সেন্টেজের অভাবে ভার্সিটির ছাত্রত্ব বাতিলের ঝুকির মধ্যে থাকলেও একে পরোয়া করার চেয়ে সেই সময়টুকু বিতর্কের নতুন কোন স্ক্রিপ্ট তৈরিতে দিতেই ভালো লাগে তার।
ঠোটে সিগারেট, সামনে চায়ের কাপ, আর হাতে খবরের কাগজ- এই অবস্থাতেই তন্ময়কে আবিষ্কার করা গেল ঘরের ভেতরে। বাসায় সে ছাড়া ২য় কোন প্রাণী নেই, তাহলে চা দিল কে? এধরনের অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করলে গল্পের ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হয়।চা কে দিল, এই প্রশ্নের চেয়ে চা-সিগারেটের কম্বিনেশনে তার ভাবনার জাহাজ খবরের কাগজ পেরিয়ে কোথায় নোঙ্গর করলো সেটিই প্রধান বিবেচ্য হতে পারে। এখন তার চেতনাকে গ্রাস করে আছে একটি দ্বন্দ্ব_”চুমকি মেয়েটা এত উপরে উঠে যাচ্ছে কিভাবে! লণ্ডন-ব্রাসেলস, পরপর দুটি ট্যুর করে ফেলল ৮ মাসের ব্যবধানে, এভাবে চলতে থাকলে ও’
২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:৫৪
বরুণা বলেছেন: হিমলু । সুন্দর গল্প । মনে হয় যেন কারো সত্যি কথাই লিখেছো। মানে কারো জীবনের সত্যি গল্প। আগের পর্ব গুলো পড়িনি। জানিনা এটা সত্যি গল্পই কিনা।
যাই হোক অনেক ভালো হয়েছে। অনেক ভালো থেকো হিমলু।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:২৩
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: কাকি, পুরো গল্পটা পড়ে মন্তব্য করা উচিৎ ছিল...
৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:১৭
খেজুর কাঁটা বলেছেন: মজা।
আবার দেখা হবে।
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:৪৩
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: আপনি কি 'নস্যরাজ'?........নয়তো আমি এই ব্লগে এমন কোন জনপ্রিয় ব্লগার নই যে আমার ব্লগ একজন নতুন ব্লগার খুজে পাবে।। যাইহোক, দেখা তো হবেই।।
৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২০
খেজুর কাঁটা বলেছেন: আপনাকে খুজতে যে আপনার ব্লগে আসবে তার মতো বোকা ২য় টা নাই। অন্যদের ব্লগের কমেন্টেই আপনাকে খুজে পাওয়া যায় বেশি।
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১০
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: এই কথার তাৎপর্য বোঝা গেলনা.....সবকিছু না বুঝতেই হবে এমন কোন শর্ত বা দিব্যি কেউ দিয়েছিল বলেও মনে পড়েনা।।
৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫৮
খেজুর কাঁটা বলেছেন: @আমি এই ব্লগে এমন কোন জনপ্রিয় ব্লগার নই যে আমার ব্লগ একজন নতুন ব্লগার খুজে পাবে।...
ব্লগের আনাচে-কানাচে আপনার যে কমেন্টগুলো ছড়িয়ে আছে- সেগুলোই আপনাকে মহান করেছে। তাই আপনার ব্লগে না আসলেও আপনারে চেনা যায়, আপনার কেরামতি দর্শন করা যায়। আমারতো মনে হয় - আপনার যে প্রতিভা, তা আপনার নিজের ব্লগে ঠিক মত প্রকাশ পায় না। লোকে আপনারে ভাল পায় আপনার বিশ্লেষী কমেন্টগুলার জন্যই
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:০০
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: লোকে, ভাল পায়-মন্দ পায় , সেটা লোকেদের উপরই ছেড়ে দেয়া উচিৎ। আমার লেখা আমি লিখি...সেটা কার ভাল লাগল-মন্দ লাগল এটা নিয়েও ভাবার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না। কারণ , লিখি, এবং লিখছি ...এ দুটো শব্দ যেমন ভিন্ন , তেমনি আরোপিত এবং স্বতঃস্ফূর্ততার ব্যাপারটিও ভিন্ন।
আমি মনে হয ততটা ভালো লিখিনা, সেজন্য আমার লেখায় কমেণ্টও অনেক কম। সেটা নিয়ে চিন্তিত হতে গেলে 'স্বতঃস্ফূর্ততার" ব্যাপারটি ক্ষুণ্ন হয়ে যাবে।
যাইহোক, আপনি 'নস্যরাজ না হলে আমার আগের লেখাগুলো পড়বেন, (যদি আদৌ অরুচি শেষসীমায় পৌছে না থাকে)
৬| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৯:৩৩
খেজুর কাঁটা বলেছেন: আপনার কথায় উৎসাহ পাইলাম। মানুষে পড়ে না বইলা লেখা-লেখি ছাইড়াই দিছিলাম।
৭| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:৫৫
হাল্ক বলেছেন: খেজুর কাটার পিছে পিছে আমিও আইলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:৪২
টুশকি বলেছেন: হু