নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাগজের খেয়া

হিমেল হাসান কাগজের খেয়া

খুলনা লেখক শিবিরের একজনক্ষুদ্র সদস্য। গান গাইতে আমার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে রবিন্দ্র সংগীত। এখনও শিক্ষা জীবনের মাঝে আছি আমি। সাহিত্য হলো আমার ভালোলাগার যায়গা, খুব এক্টা লিখতে ভালো লাগে না। কিন্তু কি করবো বলুন চোখের সামনে এতো অসংগতি ও মানতে পারি না। আমি বাংলাকে প্রচন্ড রকমের ভালোবাসি।

হিমেল হাসান কাগজের খেয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

True love never diez

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬

সকাল হতেই রকির ফোনে একটি কল আসলো রকি ঘুমের মাঝেই ফোনটি রিসিভ করলো।

- হ্যালো।

-কি ব্যাপার তুমি এখনো ঘুম থেকে উঠোনি?

- হা? হা উঠিনি তো।

- ধুর এই মানুষ্টাকে ফোন করাই বোকামি রাখলাম।

- হু।

অনন্যা ফোন্টি কেটে দিলো। রকির তাতে কনো ভ্রুক্ষেপ নেই সে তার মতো ঘুমাচ্ছে। ১০ মিনিট পর আবার ফোন আসলো এবার রকি ঝটপট উঠে ফোন রিসিভ করলো।

- তুই এখনো উঠিসনি তাই না? সারা রাত তোর কোন গার্ল্ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলেছিস যে এখন ১০ টা পর্যন্ত ঘুমাতে হয়?

- আপ্নার রেডিও থামালে আমি কিছু কথা বলি।

- বলো।

- কাল সারা রাত ধরে আমি প্রজেক্ট তৈরি করেছি। এতো রাগ করো কেনো তুমি। আচ্ছা আমার ভুল হয়েছে আমার বুচি বউটা রাগ কমাও।

- আচ্ছা ঠিক আছে। আমি কলেজে যাচ্ছি। আসার পথে কল দেবো ফোন খোলা রেখো।

এই গল্পের শুরু এখানে নয়। গল্পটি পড়ার পর পাঠক কনফিউশনে পড়ে যাবেন যে আসলে তারা খুশি হবে নাকি কষ্ট পাবে। শুরুটা ছিলো এমন।

রকি কুয়েট এর ছাত্র। সে তার বাবা মায়ের সাথে থাকে। রকির খালাত ভাই নাম সুমন সে রকির সাথে একি রুমে শেয়ার করে থাকে। কারন সুমনের বাবা নেই, তাই রকির বাবা সুমনকে তাদের কাছে রেখে পড়াশুনা করাই। সুমন কনো ভার্সিটিতে চান্স না পাওয়ার কারনে খুলনা কমার্স কলেজে অনার্স পড়ে। রকি সারাদিন পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে আর সুমন সারা দিন বান্ধবী আর আড্ডাবাজী নিয়ে ব্যস্ত থাকে। দুজনের মধ্যে খুব ভাব।

হঠাৎ করে রকির সাথে ফেসবুকে একটি মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। মেয়েটির নাম অনন্যা। সে ঢাকা থাকে। আর রকি থাকে খুলনা। রকির একটি বিশেষ গুন সে সবসময় সত্য কথা বলে। নিজের ব্যাপারে বাড়িয়ে বলা সে মটেও পছন্দ করে না। অন্যদিকে সুমন মারাত্মক চাপাবাজ। তার ভাবসাব এমন যেন তার কোনোকিছুর অভাব নেই। সে প্রিন্স।

সুমন ও রকি যেহুতু সমবয়সী তাই তারা একে অন্যের ব্যাপারে সব খবর রাখে। রকি অনন্যাকে সময়ের সাথে সাথে অনেক বেশি ভালবেসে ফেলে। রঙ্গিন স্বপ্নের ডানা মেলে সে উড়ে যেতে চায় তার অনন্যার কাছে। ওর স্বপ্নের সিমানায় , যেখানে থাকে সে , থাকে তার অস্তিত্বের বাসিন্দা , ওর স্বপ্নের রাজকুমারী। ওর ঘুমের দেশের নিলপরি। সে একবার পিছন ফিরে চায় কখনো বৃষ্টির প্রতিটি ফোটায় খুজে পেতে চায় তার অনন্যাকে। কখনো বা মেঘের পালক হয়ে উড়ে যেতে চায়। কখনোবা বিরহীনি সেই মনের দুয়ারে ভালোবাসার প্রজাপতিকে উড়িয়ে দেয় তার নিবেদিত ভালোবাসার দুয়ারে।

অনন্যা অনেক ভালো একটি মেয়ে। সে রকিকে তার হৃদয়ের জানালায়, প্রতিটি আলোক রাশির তিব্রতায় পরিমজ্বিত প্রদিপ শিখার মতো ভালোবাসে। সময় পেলেই অনন্যা রকিকে ফোন দেয়। কিন্তু আজও ওদের সামনা সামনি দেখা হয়নি। তবুও প্রবল ভালোবাসার টানে তারা যেন প্রতি মূহুর্ত থাকে একে অন্যের হাত ধরে। সুমন ইদানীং ব্যাপারটা লক্ষ করে। এবং মনে মনে জেলাস ফিল করে। সুমনের ও একটি ফেসবুক প্রফাইল আছে, নাম পার্ট টাইম রাজ। সুমন মাঝে মাঝে রকির ল্যাপটপ থেকে রকির আইডি দেখত, কারন রকি কখনওও লগ আউট দিতো না। হঠাৎ সুমন রকিকে বলল।

সুমন - আচ্ছা তুই কি মেয়েটাকে সত্যি ভালোবাসিস?

রকি - হা ১০০%।

সুমন - আমার মনে হয় মেয়েটা ফেক।

রকি - তবুও ভালোবাসি।

সুমন - তুইনা প্রেম ট্রেম বিশ্বাস করতিস না?

রকি - তখন অনন্যা ছিলোনা তাই বিশ্বাস করতাম না। এখন সে আছে তাই বিশ্বাস করি

সুমন : ধুর আজকের যুগে এইসব হয় নাকি? দুই একবার খেয়ে ছেড়ে দে।

রকি : মেয়েরা চুইনগাম না। আমি সব মেয়েকে সম্মান করি।

দেখ সুমন, সেক্স সবার আছে। কিন্তু সেটা করারও একটি

নিদিষ্ট সময় আছে। আমার কাছে ভালোবাসাটাই আসল

কথা। সেক্স থার্ড পার্টি একটি ব্যাপার। তাছাড়া ওটা।

ন্যাচারালি হয়ে যায়। এর জন্য তারাহুড়া করা উচিত

না আমি কখনো তোর মতো হতে পারবো না। এটা

আমার লজ্জা না বরং আমার অহংকার। স্মার্টনেস এর নামে

তোরা যা করিস সেটাকে আমার দৃষ্টিতে আমি বেহায়াপনা

বলি। আমি তো সব সমাজেই চলছি তাহলে আমি কোথায়

আন্সম্মার্ট?

সুমন : তোকে কে আন্সম্মার্ট বলল? তুই যেভাবে কথা বলিস তুই যেভাবে সবকিছু ম্যানেজ করিস। সব ব্যাপেরেই ফার্স্ট হস তোকে আন্সম্মার্ট বলাটা বোকামি।

রকি : বললে ও আমার কিছু আসে যায় না।

সুমন : আচ্ছা আমি তো ডজন খানেক প্রেম করেছি কিন্তু আমাকে কেউ পিওর ভালোবাসেনা কেনো?

রকি : কারন কিছুদিন পর তোর চরিত্র তারা বুঝতে পারে। তোর উপর ভরসা করতে পারে না। তুই প্লে বয় হয়ে গেছিস।

সুমন : আচ্ছা রকি তোকে তো ফেসবুকে অনেকেই লাইক করে

তারপর রিক্সানার মতো কিউট একটি মেয়ে তোকে পাগলের

মতো ভালোবাসে তুই তাকে বাদ দিয়ে কোথাকার কোন

অনন্যা কে নিয়ে কেনো পড়ে আছিস?

রকি : আমি জানিনা রে। শুধু জানি আমি আমার অনন্যাকে অনেক ভালোবাসি। আমার আকাশে ও এক টুকরো নিল।

আমার জীবনে ও আশার প্রদিপ।

সুমন : আমি যাকেই ধরি সেই কেনো ঘাই খাওয়া মাল হয় বল তো?

রকি : কারন তুই মেয়েদেরকে মেয়ে নয় মাল ভাবিস। ভালোবাসাকে তুই মজা ভাবিস তোর কাছে সেক্সটাই বেশি জরুরি দুই একদিন পরিচয় হলেই সেক্স অফার করিস। মেয়েরা সম্মান চাই। নির্ভরতা চাই। একটি ভরসার যায়গা খোজে, যার উপর নির্ভর করে একটি জীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়। অনন্যাকে আমার লাভ ইউ বলতে এক মাস লেগেছিলো, তুই হলে এক মাসে কি করতিস একবার ভেবে দেখ। অনন্যা আমাকে কেনো এতো ভালোবাসে জানিস?

সুমন : কেনো?

রকি : করন ও আমাকে ভরসা করে। ও জানে রকি ওকে কখনো কাঁদাবে না।

সুমন : শোন তুই এতো পাগল হস্না ওসব মেয়েদের এতো বিশ্বাস করা ঠিক না। ঐ মেয়ে তোকে একদিন কাদাবে। তখন তোকে রিক্সানার কাছেই ফিরতে হবে।

রকি : অনন্যা ওমন মেয়ে না আমার শত অন্যায় হলেও সে আমাকে পাশে রাখবে।

সুমন : দেখা যাবে।

হঠাৎ অনন্যার কল আসলো। রকি কথা বলতে বলতে বাইরের দিকে চলে গেলো। সুমন রকির ল্যাপটপ নিয়ে দেখল রকি ফেসবুকে লগিন অবস্থায় আছে। সুমন দেখল ইনবক্সে বেশ কিছু মেসেজ। তার মধ্যে এক্টি মেসেজ ছিলো নজর কাড়ার মতো।

( কিরে হনুমান টুনটুনি তোকে খুব মিস করছে কই তুই )

মেসেজটি লিখেছে রিয়া নামের একটি মেয়ে। সুমন ব্যাপারটা দেখে খুব মজা পেলো। সুমন তখন রিয়ার সাথে চ্যাট শুরু করলো। রিয়া ভাবছে যে সে রকির সাথে চ্যাট করছে কিন্তু সে আসলে রকির সাথে চ্যাট করছে। সুমন সবসময় চাপা মারে। তাই সে রিয়ার সাথেও চাপা মারা শুরু করলো। তার বাইক আছে। এটা আছে ওটা আছে। আর সুমনের এক্টি বিশেষ গুন সে চাপা মারলে কেউ সজে বুঝতে পারেনা যে সে চাপা মরছে।

সুমন রিয়াকে তার আম্মুরকে ফটো দেখিয়েছে তার আম্মু অকে অনেক পছন্দ করেছে এসব নানারকম কথা বলে পটাতে থাকে। এবং বিবিন্ন আর্টিফিশিয়াল কথাবার্তা বলে ফ্লার্টিং করার চেস্টা করে। কিন্তু সুমন তখন জানতো না যে রিয়া অনন্যার ঘনিষ্ট বান্ধবী। সুমন ভেবেছিলো রিয়া রকির জাস্ট ফেসবুকে ফ্রেন্ড।

রকি অনন্যার সাথে কথা বলা শেষ করে দ্রুত ভার্সিটিতে চলে গেলো। এদিকে সুমন রিয়ার সাথে চ্যাট করতে থাকলো। চ্যাট শেষে সুমন চ্যাট হিস্টি ডিলিট করে দিলো।

রকি বাসায় এসে ল্যাপটপ অন করে। চ্যাট হিস্ট্রি না থাকায় সে কিছুই জানতে পারে না। রকি রাতের ব্যালা ফোন থেকে চ্যাট করে এবং সে শুধু অনন্যার পেজটিতে ব্যাস্ত থাকে। এদিকে সুমন ল্যাপটপ নিয়ে রিয়ার সাথে চ্যাট করতে থাকে। এভাবে চলে। হঠাৎ করে রিয়া সুমনের কাছে নাম্বাএ চেয়ে বসলো। তখন সুমন বিপাকে পড়ে গেলো। কারন সে যদি নিজের নাম্বার দেয় তাহলে ধরা খেয়ে যাবে। সে ভেবে পায়না কি করবে। তখন সে রকিকে সব ঘটনা খুলে বলল। সব শোনার পর রকি প্রায় কেদে ফেলার মতো অবস্থা।

রকি : তুই কেনো এইটা করলি?

সুমন : দেখ আমি বুঝতে পারিনি।

রকি : তুইকি সেক্সুয়াল কথা বলেছিস?

সুমন : একটু একটু ।

রকি : ছিহ তুই এইটা কি করলি? তুই জানিস রিয়ে কে?

সুমন : না। কে ও?

রকি : রিয়া অনন্যার ঘনিষ্ট বান্ধবী । একি কলেজে পড়ে ওরা।এখন রিয়া ভাববে আমি চরিত্রহীন একটা ছেলে। ছি ছি সুমন তুই কেনো আমার জীবন্টা নিয়ে এভাবে খেলা করলি? এখন আমি কি করবো? আজ হোক বা কাল আসল সত্যিটা রিয়স অনন্যাকে বলে দেবে। আর তখন অনন্যা আমাকে ভুল বুঝে চলে যাবে। সব দোষ পড়বে আমার কাধে। তুই আজ থেকে আমার কনো জিনষে হাত দিব না।

সুমন : দেখ রকি মাথা ঠান্ডা কর। এখন যদি নাম্বারটা না দিস তাহলে রিয়া অনন্যাকে সব বলে দেবে। তুই আমার কথা শোন তোর নাম্বারটা দে। ও ফোন দিলে জাস্ট একটু ম্যানেজ করে নিস।

রকি : আমি কিছু ভাবতে পারছি না। আমি খুব সুখে ছিলাম কেনো তুই এভাবে আমার ক্ষতি করলি? অনন্যা আমাকে কতো বিশ্বাষ করে। আমার সব শেষ হয়ে গেলো।

সুমন : দেখ আমি রিয়ার সাথে অনেক চ্যাট করেছি। ও অনেক স্মার্ট মেয়ে। ও কাউকে কিছু বলবে না তুই একটু ম্যানেজ করে নে প্লিজ। আরে রিলাক্স হ আমি আছি না, এসব ব্যাপার হান্ডেল করা আমার কাছে কনো ব্যাপারি না।

রকি : ওকে কিন্তু আমি দুই একমিনিটের বেশি কথা বলতে পারব না। আর আমি কখনো অকে কল দিতে পারবোনা। তুই প্রমিস কর সব ঠিক হয়ে যাবে?

সুমন : আরে আমি আছিনা। তুই ভাবিস্না। চল সিগারেট খেয়ে আসি।

রকি : তুই ভালো করেই জানিস অনন্যা নিষেধ করার পরথেকে আমি সিগারেট খাই না। তুই যা।

এরপর থেকে রিয়া মাঝে মাঝে কল দেয়। রকি কনোভাবে ম্যানেজ করে চলতে থাকে। সুমন রকিকে ভুলভাল বুঝিয়ে রিয়ার সাথে চ্যাট করতে থাকে।

সুমন হঠাৎ রকিকে জিঞ্জাসা করলো। তোর কি আজ অনন্যার সাথে কথা হয়েছে?

রকি : কেনো?

সুমন : না মানে রিয়া আস্ক করলো।

রকি : হা হয়েছে অনেক বার এবং এখনও হচ্ছে। বলে দে

সুমন লিখল না আমার অনন্যার সাথে কথা হয়নি

রিয়া লিখলো তুই অনন্যার সাথে কথা বলবি না। সুমন লিখলো ঠিক আছে।

সকাল হয়ে গেলো। রকির ঘুম ভাংলো অনন্যার ফোনে। অনন্যা ও রকি একে অন্যকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু সামনে অনেক বড় ঝড় আসছে। যখন রিয়া সব ঘটনা অনন্যাকে খুলে বলবে তখন অনন্যা নিশ্চিত রকিকেই ভুল বুঝবে। করান সে কখনো বুঝতেই পারবে না যে সুমন নামের কেউ তার ভালোবাসার শত্রু। কিভাবে রকি সবাইকে বোঝাবে যে রিয়া রকির সাথে নয় সুমনের সাথে চ্যাট করে। রকি না পারে সুমনকে কিছু বলতে, না পারে রিয়াকে কিছু বলতে, না পারে অনন্যাকে কিছু বলতে।

সে পড়ে যায় উভয় সংকটে। নিজের ভালোবাসা হারানোর ভয়ে সে চুপচাপ সুমনের অত্যাচার সহ্য করতে থাকে। রকির জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো হয়ত অনন্যা কখনো জানতে পারবে না। আর এই গল্প শুনলে কেউ তো বিশ্বাষ করবে না। তাই রকি চুপ থাকে।

হঠাৎ সুমন এসে রকিকে বলে চল মার্কেটিং করে আসি।

রকি : চল আমার ও কিছু কেনাকাটা আছে। তাছাড়া অনন্যার জন্য ফুল কিনতে হবে। আগের ফুলগুলো শুকিয়ে গেছে।

সুমন : ওকে চল। আচ্ছা আমি কি কিনব বলে দে?

রকি : যা খুশি।

সুমন : ওকে সাদা বা কালো শার্ট। পাঞ্জাবী আর কনভার্স।

রকি : তুই কবে থেকে সাদা কালোর ভক্ত হলি রে? তুইতো সবসময় কালারফুল পছন্দ করিস। হঠাৎ তোর এই চৈতন্যের কারন কি?

সুমন : আরে বয়স হচ্ছে না। তাছাড়া রিয়ার পছন্দ।

রকি : ওহ তাই। ভালো।

সুমন আর রকি মার্কেটিং করে আসল। এভাবে ঈদ হয়ে গেলো। রকির ফর্স্ট লেভেলের স্কলারশিপ এর রেজাল্ট দিলো। তাতে রকি ৫ম স্থান অধিকার করলো। সেখানে অনেক টাকার প্রয়োজন ছিলো। প্রাথমিক ধাপের কিছু করনিয় কাজ অ ফরম পুরনের জন্য এই টাকা লাগবে। রকির বাবা মোটামুটি মেনেজ করে দেয় কিন্তু ৫০০০ হাজার টাকা কম পড়ে যায়। রকি তখন সিদ্ধান্ত নেয় তার মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে টাকা ম্যানেজ করবে। রকি তার জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সাথে অনন্যাকে রাখে তাই সে এই ব্যাপারটা ও অনন্যার সাথে শেয়ার করলো। অনন্যা রকিকে ফোন বিক্রি না করার পরামর্শ দিলো এবং সে শাহায্য করার কথা জানালো। এরি মাঝে রিয়া ও মাঝে মধ্যে রকিকে কল দেয় কিন্তু রকি কনোভাবে ম্যানেজ করে কথা বলে। কারন সে নিরুপায়। তাছাড়া রকি সহজ সরল ছেলে বলে সবাই তাকে ব্যাবহার করে এভাবে। রিয়া সব যদি অনন্যাকে বলে দেয় তাহলে অনন্যা রকিকেই ভুল বুঝবে কারন রিয়া এবং অনন্যা তো জানেই না সুমন নামের কেউ আছে। তারা জানেই না তাদের মধ্যে তিনজন নয় চারজন মানুষ। রিয়া, সুমক।, অনন্যা, রকি।

রকি এদিকে টাকা ম্যানেজ করায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। অনন্যা জানালো টাকা ম্যানেজ হয়েছে ঢাকা এসে নিয়ে যাও। রাতের ব্যালা রকি ও অনন্যা অল্প কিছুক্ষণ চ্যাট করে তারপর রকি ডিজাইন নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। পরদিন ফোনে কথা বলতে বলতে রকি ও অনন্যা বেশ ঘনিষ্টতা অনুভব করে। এবং রকি বপ্লে আজ রাতে আমি তোমাকে কিছু সারপ্রাইজ দিবো। সুমন সেদিন গ্রামের বাড়ি চলে যায় কিছু জরুরি কাজে। তাই রকির ঘরে সেদিন রকি একাই থাকে বলে সে আরো বেশি সুযোগ পায় অনন্যার ঘনিষ্ট হওয়ার। এবং রকি তার ব্যাক্তিগত কিছু মূহুর্তের ছবি পাঠায়। তারপর ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে উঠে রকি চলেযায় ভার্সিটিতে। সুমন বাসায় এসে রকি ও অনন্যার চ্যাট দেখে। সে রিয়াকে সেক্সুয়ালি ইম্প্রস্ট করার জন্যা রকির লেখা সুন্দর সুন্দর ম্যাসেজ ফরয়ার্ড করে রিয়াকে পাঠাও এবং সাথে রকির সেই ব্যাক্তিগত ছবি। সুমন ভাবে এসব ছবি রিয়া কাউকে দেখাবে না। রিয়া ব্যাপারটা সহজে নিতা পারে না। কারন সে জানে যে তার বান্ধবী রকিকে অনেক ভালোবাসে। রিয়া নিজেকে যেমন অনুতপ্ত ভাবে তেমনি রকিকে এই ঘৃণীত কাজ করার জন্যা শাস্তি দেওয়াত সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তারপও রিয়া কিছুতে হিসাব মিলাতে পারে না। কারন সে তো জানেই না তাকে এসব রকি নয় সুমন পাঠায়। রিয়া তাই মনে মনে রকিকেই খারাপ ভাবে। পরদিন রিয়ার সাথে অনন্যার দেখা হলো। অনন্যা জানালো যে সে তার নাকের সোনা বিক্রি করে রকির জন্য টাকা ম্যানেজ করছে। রিয়া তখন আর নিজেকে চুপ রাখতে পারে না।

রিয়া : তুই কার জন্য কি করছিস? রকি একটা ফ্রট। সে আমার সাথে ও ভালোবাসার নাটক করেছে।

অনন্যা : আমি বিশ্বাষ করিনা।

রিয়া : আমার কাছে প্রমাণ আছে। দেখ।

তারপর রিয়া তার ফেসবুকের ইনবক্সে রকির সাথে তার সব চ্যাট দেখালো। সব দেখার পর অনন্যা খুব কষ্ট পেলো। নিজের সবকিছু বিসর্জন দিয়ে সে যে রকিকে ভালোবাসে সেই রকি তার সাথে এতো বড়ো প্রতারনা করলো?

রিয়া : আচ্ছা রকির কি বাইক আছে?

অনন্যা : না।

রিয়া : আমাকে বলেছে আছে। তাছাড়া আমি কথা বলে কখনো আমার মনে হয়নি যে ওদের কনো অভাব আছে।

অনন্যা : কিন্তু আমি যতদুর জানি ওরা মধ্যবিত্ত।

রিয়া : আচ্ছা রকির মা কি তকির সাথে অনেক ফ্রি?

অনন্যা : একদম না। ও ওর ফ্যামিলির সবাইকে অনেক ভ্য পায় আর সম্মান ও করে।

রিয়া : আজব রকি আমাকে মিথ্যা বলে নাকি তোকে মিথ্যা বলে তাইতো বুঝছি না।

আসলে রকি স্পষ্টবাদী সে নিজের ব্যাপারে মিথ্যা বলেনা কিন্তু সুমন চরম চপাবাই তাই ওদের দুজনের কথার মিল নেই। এখানে অনন্যার বোঝা উচিত ছিলো। কারন রকির যদি সত্যি বাইক বা অনেক টাকা পয়সা থাকতো তাহলে সে এতোদিনের পরিচয়ে ভুলকরে হলেও একবার বলতো।

সবকিছু দেখার পর অনন্যা রাকে খোভে আর দুক্ষে রকিকে চরম শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে অনন্যার কোনো ভুল নেই কারন ওর যায়গায় অন্য কেউ হলে সেও একি কাজ করতো। কিন্তু রকিও এখানে নিস্পাপ। তারপর রিয়া আর অনন্যা মিলে তার বন্ধু ও বান্ধবীদের সাথে নিয়ে রকিকে চরম শিক্ষা দেওয়ার প্লান করল। অনন্যা রকিকে অনেক চাপের মধ্যে ফেলে মিষ্টি কথা বলে ''' ১৫০০ টাকা পাঠিয়ে ঢাকা আসতে বলে। এবং এসে বাকী টাকাটা নিয়ে যেতে বলে।

রকি নিস্পাপ মনে ভাবল ঢাকায় গিয়ে সে প্রথমে অনন্যাকে এবং পরে রিয়াকে সব সত্যি ঘটনা বলবে। তারপর যা হওয়ার হবে। এদিকে সুমন রকিকে বার বার নিষেধ করলো কারন সে বুঝতে পাতছিলো যে লাস্ট ফটো পাঠানোর পর রিয়া তার সাথে বাজে ব্যাবহার করে। কিন্তু রকি জানত না যে সুমন ওই ফটোগুলো রিয়াকে পাঠিয়েছে।

রকি আইডির পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে ঢাকার পথে রওনা হলো।

যাতে সুমন আর নতুন করে কনো ঘটনা ঘটাতে না পারে। সুতারং রিয়ার সাথে সুমনের সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলো। রকি আসার পথে অনেক বার বমি করলো কারন সে বাস জার্নিতে ভীষণ ভয় পায়। অনেক কষ্টের পর সে ঢাকায় এসে পৌছালো। শুক্রবার সকাল ৬ টায় রকি অনন্যার নির্ধারিত যায়গায় পৌছালো তখনও রকি জান্ত না তার সামনে কি বিপদ ঘটতে চলেছে। সে সকল বাধা অতিক্রম করে তার নিস্পাপ ভালোবাসার টানে চলে গেলো তার প্রিয় মানুষ্টাকে দেখতে। দির্ঘ ২ ঘন্টা অপেক্ষার পর অনন্যা আসল সে এসে রকির সাথে কুশল বিনিময়ের পর সি এন জি তে উঠল অনন্যাকে ছবিতে যতটা সুন্দর লাগত বাস্তবে সে অতটা সুন্দর না তবুও রকি তার অনন্যাকে তার জীবনের প্রদীপ হিসেবে মানার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগল। রকির খুব ইচ্ছা হচ্ছিল অনন্যার চুল্র হাত দিতে।

এবং সে এক পর্যায়ে অনন্যার চুল আলতো করে ছুয়ে দিলো। রকির কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হয়। কিন্তু অনন্যা যখন বার বার এক্টি কল কেটে দিচ্ছিল তখন রকির একটু সন্দেহ হলো। রকি আস্ক করলে অনন্যা বলল এটা তার আম্মু হতে পারে তাই সে এখন কথা বলবে না। তখন রকির মনে আরো বেশি সন্দেহ হলো। কিন্তু সে অনন্যাকে অনেক বিশ্বাস করে তাই ভরসা করে কিছু বললো না। তারপর অনন্যা রকিকে নিয়ে নোনারগা চলে গেলো। এবং ওর প্লান মতো রিয়া ও তার অন্য বন্ধুরা সোনারগায়ে পৌছালো। অনন্যা রকিকে নিয়ে ভিতরে জাদুঘরে রেখে বলল তুমি একটু দেখতে থাকো আমি আসছি। তারপর অনন্যা তার বন্ধুদের নিয়ে আসলো। রিয়া এসে রকিকে চরম্ভাবে অপমান করতে থাকলো। সাথে ওর বন্ধুরাও। আর সেটাই হওয়া স্বাভাবিক ছিলো। রকি অনেক চেষ্টা করলো আসল সত্যিটা বোঝানোর। কিন্তু এটা যে কেউ বিশ্বাষ করবে না তা রকি বুঝতে পারলো তাই সে নিরবে সব অপমান সইতে লাগলো। রকি না পরছে কাদতে না পারছে সেই অপমানের জ্বালা সইতে। পৃথিবীতে নিস্পাপ মানুষগুলি বোধকরি এভাবেই কষ্ট পায়। অনন্যার সাথের বন্ধুরা তাকে সাইবার ক্রাইমের ভয় দেখায় এবং ওভার স্মার্টনেস দেখায়। অথছ রকি নিজ্র একজন ওয়েব ডেভেলপার, ও ব্লগার। সাইবার ক্রাইমের ব্যাপারে ওদের চেয়ে ভালো বোঝে সে। তার উপর রকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র,, কিছু তো সে জানে। রকি ভাবছিল যে এরা যে স্মার্টনেস দেখাচ্ছে তা ভার্সিটিতে ডাল ভাত। তারপর ও রকি চুপচাপ থাকে। হঠাৎ অনন্যার একটা ছেলে বন্ধু রকির ফোন্টা ছিনিয়ে নেই, অথছো ছেলে দুইটাকে দেখে বেশ ভদ্র মনে হচ্ছিলো, তারা যদি রকির সব ঘটনা শুনত তাহলে তারা হয়তো রকির সাথে এমন ব্যাবহার করতো না। কারন তাদের দেখে তেমন্টি মনে হয়না। এটা রকি তার বিশ্বাষ থেকে বলল। আসলে কি তা জানি না। সিমগুলো তারা ভেংগে ফেললো। রকি চুপচাপ স্লব দেখছে কারন সে যে নির্দোষ তা প্রমাণ কখনোবা করা সম্ভব নয়। পাসের ফুচকার দোকান থেকে তিন্টা ছেলে তাদের ফলো করছিলো। অনেক অপমান করার পর অনন্যা ও তার বন্ধুরা রকির ফোন্টা নিয়ে রাখল এবং বলল চলো তোমাকে পৌছে দি। রকি অনন্যার সাথে শেষবারের মতো কথা বলার সময় বলল যে তুমি একা আমাকে পৌছে দাও। কারন রকি চেয়েছিল যে যাওয়ার পথে সে অনন্যাকে সব সত্যি বলে যাবে। কিন্তু তারা কেউ রাজি হলো না। তাই রকিও তাদের সথে যেতে রাজি হলো না। ওরা সবাই রকিকে ফেলে চলে গেলো। হঠাৎ পাশ থেকে সেই তিন্টা ছেলে ওদের সাথে ফুস্কা ওয়ালার ও সম্পর্ক আছে মনে হয়, তারা এসে রকিকে পাশের কাপড়ের দোকানে নিয়ে খুব মারলো এবং ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে বলল তুই কনো কথা বলবি না আমাদের সাথে চল। যদি কনো কথা বলিস তাহলে তোকে এখানেই মেরে ফেলে দেবো। তারপর ওরা রকিকে নিয়ে অনন্যাদের সামনে নিয়ে গেলো। এবং ওদের বিশ্রিভাষায় গালি দিতে থাক্লো। এবং ফোনটি ওদের কাছ থেলে নিয়্র নিলো। তারপর অনন্যা ও তার বন্ধুদের গেটের বাইরে বের করে দিলো। তারপর ওরা রকিকে আবার মারতে শুরু করলো। এবং কাছে মানিব্যাগ টাকা ঘড়ি সব কেড়ে নিলো এবং মারতে মারতে গেটের সামনে নিয়ে ফেলে দিলো। রকি মথায় ও নাকে প্রচন্ড আঘাত পেলো। অনেক রক্ত পড়তে থাকে আশেপাশের কেউ তাকে সাহায্য করতে আসে না। ওরা পালিয়ে চলে যায়। তারপর রিক্সায় করে একজন ভদ্রলোক যাচ্ছিল বাজার করে লোকটি রকিকে তুলে নিয়ে পাশের একটি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। রকি সকাল থেকে কিছু খায়নি বলে সে বেহুস হয়ে পড়ে। ডাক্তার হালকা চিকিৎসা করার পর আস্তে আস্তে রকির এক্টু ঙ্গান ফিরল। ভদ্রলোক তাকে জিঙ্গাশা করলো কে তুমি? কি করে এসব হলো তোমার বাসা কোথায়। রকি বলল আমি খুলনা থেকে এখানে আসেছি আমি কুয়েটে পড়ি আমার কাছ থেকে আমার সকল পার্স ছিন্তাই হয়ে গেছে। ভদ্রলোক বললো এখানে কেউ আছে তোমার? রকি বললো না। তারপর ভদ্রলোক রকিকে নিয়ে গেলো উনার বাসায়। মগরাপাড়া চৌরাস্তার পাশে উনার নিজস্ব বাসা। রকিকে উনি বাসায় নিয়ে শুইয়ে দিলো। অনেকক্ষন পর রকির ঘুম ভাংলো। তখন প্রায় রাত ৮ টা বাজে।

রকি চোখ খুলে দেখে পাশে তিনজন মানুষ,ভদ্রলোক তার স্ত্রী,এবং উনার কোলে একটি ছোট মেয়ে। এবং ১৪-১৫ বছর বয়সী একটি সুন্দরী মেয়ে পাশে দাড়িয়ে আছে। সে চোখ খুলতেই মেয়েটাকে দেখল। অদ্ভুত মায়াবী চোখ মেয়েটার।

আংকেল : এখন কেমন লাগছে বাবা?

রকি : কিছুটা ভালো।

আংকেল : আমি একজন শিক্ষক, বিজ্ঞান বিভাগের। পাশে তোমার আন্টি উনি ও একজন প্রাইমারী শিক্ষিকা এইটা আমার বড় মেয়ে ওর নাম মেঘা। আর তোমার আন্টির কোলে।আমার ছোট মেয়ে, রিধা।

বুলবুল শাহেব তার স্ত্রীকে বললেন তুমি এখানে বসে থেকোনা যাও কিছু খাওয়ার ব্যাবস্থা করো।

রকি : প্লিজ আপনারা ব্যাস্ত হবেন না। আমি ঠিক আছি।

বুলবুল : না তোমার অনেক রক্ত পড়েছে। তোমার এখন খাওয়াটা অনেক জরুরি।

তারপর রকিকে খাওয়ার এনে দেওয়া হলো। রকি শুধু ভাবতে থাকলো ঢাকার শহরে কত রকম মানুষ আছে। ইনারা কতো ভালো, অথচ অনন্যারা কত খারাপ।

তারপর রাতের বেলা সবাই একসাথে বসে রকির সব ঘটনা শুনলো। কিন্তু রকি যে তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসেছে সেটা বলল না সে বলল তার খুব কাছের বন্ধুর সাথে দেখা করতে এসেছিলো।

। রকি অনন্যার জন্য ভিষন কাদতে থাকে। কারন সে অনন্যাকে তার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে পাশে কেউ নেই তবুও রকি কাদতে কাদতে এতো জোরে কেদে ফেলে যে বাসার সবাই চলে আসে। তারপর বুলবুল শাহেব বলেন তুমি শান'ত হও তোমার কিছুই হবে না আমি আছি আমরা সবাই আছি। তুমি এখন ঘুমাও। তারপর তারা চলে গেলো।

তখন রাত ১০.৩০ মিনিট। রকি বেল্কুনিতে দাড়িয়ে একা একা গাইতে থাকে।

আজি ঝরঝর মুখরও বাদল দিনে।

জানি নে জানিনে, কিছুতে কেনোজে মোন লাগে না-----

ওপাশ থেকে মিষ্টি সুরে গান ভেষে আসে।।।

এই চঞ্চলও স্বজলও পাবনও বেগে উদ্ভ্রান্ত মেঘে মনো চাই মনো চাই--------+

মুগ্ধ হয়ে রকি সেই গান শুনলো আর মেঘার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।

মেঘা একটু মুচকি হেসে লাজুক চোখে, এই নিন আপনার চা আম্মু পাঠালো।

রকি : আপনি এতো সুন্দর রবীন্দ্রসংগীত গাইতে পারেন? খুব সুন্দর লাগলো।

মেঘা : আমি আপনার বয়েসে অনেক ছোটো তাই তুমি করে বলতে পারেন।

রকি : এখনকার মেয়েরা তো রবিন্দ্রসংগীতকে ক্ষাত গান ভাবে আপনার কি মতামত এই বিষয়ে।

মেঘা : আমার কাছে রবিন্দ্রসংগীতকে মনে হয় চির আধুনিক।

রকি : কতোদিন ধরে গান শেখেন?

মেঘা : বলব না।

রকি : ওকে।

মেঘা : আরে আপনি তো আচ্ছা লোক। আপনি এখনো আমাকে আপনি করে কথা বলছেন তাই রাগ করেছি।

রকি : ও আচ্ছা। তুমি, এবার হলো?

মেঘা : এক্টু জোরে হাসতে যেয়েও আস্তে করে হেসে, হা হয়েছে আমি ছোটবেলা থেকে গান করি।

রকি : খুব মিষ্টি গানের গলা তোমার। অনেক বড় গায়িকা হতে পারবা।

মেঘা : গায়িকা হওয়ার কনো ইচ্ছা আমার নেই। আমি শুধু আমার প্রিয় মানুষ্টাকে গান শুনাবো।

রকি : ওহ তাই? তো কে সেই প্রিয় মানুষ?

মেঘা : আমার সামনে!

রকি : হট?

মেঘা : না মানে সে সবসময় আমার চোখের সামনে থাকে আমার কল্পনায়।

রকি : হা তোমার গান শুনলে সেও অনেক খুশি হবে। কারন তুমি অনেক মিষ্টি সুরে গান গাও।

মেঘা : আর আমি?

রকি : তুমি তো অনেক কিউট ।

মেঘা : থাক ভাইয়া আর চাপাবাজি করা লাগবে না। আচ্ছা আপনার সব ঘটনা আমাকে বলবেন? কারন আমার মনে হয়েছে আপনি কিছু লুকিয়েছেন।

রকি : বলবো কিন্তু প্রমিস করতে হবে তুমি কাউকে বলতে পাতবে না।

মেঘা : ঠিক আছে।

( তারপর রকি তার সব ঘটনা খুলে বলল মেঘার সাথে। মেঘা খুব অবাক হলো )

মেঘা : জানেন আপনার অনন্যা অনেক ভাগ্যবতি।

রকি : কেনো?

মেঘা : কারন আপনি তাকে অনেক ভালোবাসেন। সব মেয়েরা এমন ভালোবাসাই চাই। আপনার সৎসাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি আপনার যায়গায় অন্য কেউ হলে কখনো ঢাকায় আসতো না। আপনার সম্মান আমার কাছে আরো বেড়ে গেলো।

রকি : বাদ দাও আমি আমার অতীত ভুলতে চাই। অনন্যা টাকার পিছনে ছুটছে। তাকে একজন লাইক করে তার কোটি কোটি টাকা আমার কাছে ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। অনন্যার সুখ কামনা করি।

মেঘা : আমি আপনাকে অনন্যাকে ভোলার ব্যাপারে শাহায্য করবো।

রকি : তুমি কেনো আমাকে শাহায্য করবা?

মেঘা : কারন আপনি অনেক ভালো মনের মানুষ।

রকি : ঠিক আছে তবে মনে রেখো আমরা শুধুমাত্র বন্ধু।

মেঘা : জানি, কারন, অনন্যার মতো ভাগ্য আমার না। জানেন আপনার চোখ, মুখ, চেহারা , কথাবার্তা, অনেক মায়াবী

রকি : ওকে তুমি এখন গিয়ে ঘুমাও, অনেক রাত হয়েছে।

মেঘা : কেনো বিতক্ত লাগছে?

রকি : আরে না বিতক্ত লাগবে কেনো। আংকেল আন্টি কি ভাববে।

মেঘা : তাই? হুম কিন্তু আপনি কি জানেন উনারাই আমাকে আপনার সাথে গল্প করে আপনার মন ভালো রাখতে বলেছে।

রকি : ওহ তাহলে প্রবেলেম নেই।

মেঘা : আব্বু আম্মুর কনো ছেলে নেই। আর ডাক্তার বলেছে উনাদের কখনো ছেলে হবে না। আব্বুর তোমাকে অনেক পছন্দ হয়েছে। বিশেষ করে আপনি কুয়েটে পড়েন বলে। আব্বুর স্বপ্ন ছিলো ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু চান্স হয়নি। তাই উনার ইছা একজন বি এস সি ইঞ্জিনিয়ার দেখে জামাই করবে।

রকি : তুমি এতোকিছু জানো কিভাবে?

মেঘা : আম্মু আব্বু গল্প করছিলো আমি চুপিচুপি শুনেছি।

রকি : অনেক পেকে গেছো তুমি যাও নিজের ঘরে যাও।

মেঘা : আমি আপনার ঘরে থাকতে আসিনি সুতারং চিন্তা করার কিছু নেই আমি যাচ্ছি।

রকি : আরে আমি ওভাবে বলিনি। তোমাকে রাগলে তো বেশ মিষ্টি দেখায়।

মেঘা :থাক হয়েছে আর পাম মারতে হবে না। আমার আব্বু ও বলে রাগলে আমাকে ভালো লাগে। ওকে ঘুমান। শুভরাত্রি।

রকি : শুভরাত্রি।

পরদিন সকালে মেঘার বাবা রকির বাসার ফোন নাম্বার নিয়ে রকির বাবার সাথে কথা বলল। এবং তাদেরকে জানালো আপনাদের কনো চিন্তা নেই ওকে সুস্থ করে বাসায় পাঠানো হবে।

রকির বড় ভাইকে মিতিঝল থেকে ফোন করে ডেকে আনল মেঘার বাবা। তারপর মেঘার বাবা বল্লেন আপনারা একজন আমাদের আত্বীয় হয়ে গেছেন এখনি আমি রকিকে পাঠাবো না আরো কয়দিন আমাদের এখানে থাক। রকির ভাই ডাক্তার খরচ বাবদ কিছু টাকা দিতে চাইল কিন্তু মেঘার বাবা নিলো না।

সন্ধা হয়ে গেলো। মেঘা তার ছোটো বোন্টাকে নিয়ে রকির ঘরে আসল।

মেঘা : হায়। এখন কেমন আছেন?

রকি : ভালো। কেমন কাটলো সারাদিন?

মেঘা : সারাদিন স্কুল কচিং বোর হয়ে গেছি। তাছাড়া মনটা পড়ে ছিলো বাসায়।

রকি : ওহ আসকে গন্তব্য মানুষকে তাড়িয়ে বেড়ায়। মানুষ যতো দুরেই যাক তার মন্টা স্কবসময় বাড়ি ফারার জন্য আকুল হয়ে থাকে।

মেঘা : হা আপনি ঠিক বলেছেন কিন্তু আমার বাসায় মন পড়ে থাকার অন্য কারন আছে।

রকি : সেটা কেমন?

মেঘা : না কিছু না। কাল আপনার গানটা অনেক সুন্দর ছিলো।

এখন কি আপনার মুখ থেকে এক্টি গান শুনতে পারি।

রকি : হা পারো কিন্তু আমার যে লজ্জা লাগছে। কারন তুমি আমার চেয়ে অনেক ভালো গাও।

মেঘা : ভেবোনাকো তুমি কতটুকু পেলে,

কতটুকু দিলে বেশি,,

এইটুকু ভেবো হয়ে আছো মোর,,

হৃদয়ের প্রতিবেশি।

রকি : বাবাহ, সত্যি দারুন ওকে আমি গাইছি তবে সাথে তুমি ও।

ভালোবাসি, ভালোবাসি,

সেই সুরে কাছে দুরে জ্বলে স্থলে বাজাই।

বাজাই বাশি ভালোবাশি।

মেঘা : সেই সুরে সাগর কুলে বাধন খুলে অতল রোদন উঠে দুলে।

রকি : সেই সুরে বাজে মনে অকারনে ভুলে যাওয়া গানের বানি।

ভোলা দিনের। কাদন।

মেঘা : কাদন হাসি ভালোবাসি।

( মেঘার মা ততক্ষনে দরজার পাশে এসে গান শুনছে।

হঠাৎ রকি মেঘার মাকে দেখে থেমে গেলো।)

আন্টি : আরে থামলে কেনো। খুব ভালো লাগছিলো। আমি কি শুন্তে পারি না তোমাদের গান?

রকি : সিউর। ভিতরে আসুন না প্লিজ।

( তারপর তারা অনেক মজা করে গান গাইল এরি মাঝে মেঘার বাবা এসেও জয়েন করলো।)

রকি ভাবতে থাকলো অনন্যার জীবনে সে আর কখনো ফিরে যাবে না। একবার ভেবেছিলো সে অনন্যাকে এই গল্পটি পাঠিয়ে তার সব ভুল ভাজ্ঞিয়ে দেবে কিন্তু না। তাতে কনো লাভ নেই। কখনো যদি সে নিজের ইচ্ছায় সব সত্য জেনে ফিরে আসে তাহলে রকি তাকে মাফ করে দেবে। তবে কখনো রকি তার জীবনে নতুন করে অনন্যাকে ফিরিয়ে নেবে না। রকি সারা জীবন দুর থেকে অনন্যাকে ভালোবেসে যেতে চাই।

এটাই ট্রুলাভ। যা বেঁচে থাকে মানুষের হৃদয় মাঝে। ট্রু লাভ নেভার ডাইজ

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২৮

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এতো এলাহি কান্ড।
ভাই পড়তে হাপ্সায় গেলাম। ;)


:)
ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.