নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি 'হিটাকাঙ্ক্ষী' নই 'হিতাকাঙ্খী'

হিতাকাঙ্খী

আমার অনুর্ভর মস্তিষ্কে তেমন কোন লেখাই আসেনা যাহা আদৌতে প্রকাশ যোগ্য তাই বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগ্রহ করে সবার জন্য উপকারী লেখাগুলো তথ্যসূত্র সহ \'কপি-পেষ্ট\' করি। পোষ্ট \'হিট\'- হলো কি-না হলো এতেও আমার কিছু যায়-আসে না, এককথায় আমি, \'হিটাকাঙ্ক্ষী\' নই, তবে নিঃসন্দেহে সবার \'হিতাকাঙ্খী\'। (তথ্য অথবা তথ্যসুত্রগুলো যদি কারো কাছে নির্ভরযোগ্য মনে না হয়, তবে এড়িয়ে যাবার বিনীত অনুরোধ রইল। পোষ্টগুলোতে আপনার বিরক্তি সাদরেই গৃহীত হবে)

হিতাকাঙ্খী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঋতু পরিবর্তন ও রোগবালাই!

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৫



আমার নিজেরই ঠান্ডা-কাশি। সারছে না। অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছি। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে দেশজুড়ে সবাই কমবেশি ঠান্ডা, জ্বর, কাশিতে ভুগি। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা একটু বেশি। কাশিতে ভুগছি বেশি। কাশি হওয়া মানেই যে গুরুতর অসুস্থ, তা নয়। আবার সচেতন থাকাও জরুরি। সুস্থ-স্বাভাবিক শিশু ঠান্ডায় আক্রান্ত হলে কাশি হতে পারে। দিনে এক থেকে ৩০ বার পর্যন্ত শিশু কাশতে পারে। চলতে পারে সপ্তাহ দুয়েক। তবে রাতে ঘুমের মাঝে কাশি হলে ধরতে হবে অস্বাভাবিক কাশি। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।





ভাইরাল কাশি, জ্বর

হঠাৎ এক-দুই সপ্তাহের কাশিকে বলি একিউট কাশি; মূলত ভাইরাল। এগুলো সাধারণ প্রি-স্কুল শিশুদের বেশি হয়। বাতাসে ঠান্ডা হাওয়ায় ভাইরাস ঢুকে পড়ে চট করে। গরম পানিতে মধু আর তুলসী পাতা মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠলে যেন ঠান্ডা না লাগে। হালকা গরম কাপড় গায়ে পরাতে হবে।





দীর্ঘস্থায়ী কাশি

হাঁপানি বা অ্যাজমায় আক্রান্ত হলে বিশেষ ধরনের শব্দযুক্ত কাশি হতে পারে। এটা থাকবে কয়েক সপ্তাহ। অন্তত মাস খানেক ভোগাবে। খেলাধুলা, ধুলাবালি ও ঠান্ডা বাতাস হাঁপানিজনিত কাশিকে উসকে দেয়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ইনহেলার ও মুখে খাওয়ার ওষুধ দিতে হবে।





নাক ও সাইনাসের সমস্যা

নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ও সাইনাসের সমস্যা এই সময়ে খুবই ঘন ঘন হয়। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস হলে সারাক্ষণ নাক দিয়ে পানি-সর্দি ঝরবে; সঙ্গে কাশিও। এর জন্য বয়সভেদে সাইনাসের এক্স-রে দরকার হতে পারে। নাকে গরম পানিতে বাষ্প টানলে, একটু ম্যানথোল মিশিয়ে নিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।





পাকস্থলী ও খাদ্যনালির অসুখ

খাবার খাচ্ছি। যাচ্ছে কোথায়? খাদ্যনালি দিয়ে পাকস্থলীতে। ঠিকঠাক না থাকলে, যে হারে খাদ্যে ভেজাল, পাকস্থলী সইবে কী করে। বুকজ্বালা, এসিডিটি, সংক্রমণ—সবই ভোগায়। শিশুদের এ ধরনের সমস্যা থেকে হতে পারে গ্যাস্ট্রো-ইসেফেজিয়াল রিফ্লাক্স। গলার স্বর বসে যায়, কর্কশ হয়ে যায়। উসকে দেয় দীর্ঘমেয়াদি কাশি। ঢেঁকুর তোলা বা খাবার গিলতে অসুবিধার কারণে শিশুদের কাশির উদ্রেক হতে পারে খুব।





ভাইরাস থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি—একসঙ্গে

ভাইরাল সংক্রমণ হলে শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ হয়। অ্যালার্জি থেকেও হয়। ঋতু পরিবর্তনের কারণে এমনিতেই বতাসে ধূলিকণা বেড়ে যায়, বাড়ে ভাইরাসও। শিশু-কিশোর ও সদ্য তরুণদের মধ্যে প্রবণতা বেশি। কারণ, স্বাভাবিকভাবেই স্বভাবে বেপরোয়া এরা। জ্বর হলে পর্যাপ্ত পানি, সঙ্গে শুধু প্যারাসিটামল। সর্দির জন্য ঠান্ডা পানি, ঠান্ডা বাতাস ও ধুলা পরিহার করা জরুরি। কাশির ধরন বুঝে কফ-সিরাপ, গরম পানিতে মধু বা লেবু আর সম্ভব হলে তুলসী পাতার রস।

জ্বর যদি ১০২ ডিগ্রির বেশি হয়, তাহলে পানিতে কাপড় ভিজিয়ে গা মুছে দেওয়া। শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন ঘন হলে, বুক দেবে গেলে নিউমোনিয়া হতে পারে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। নিজে নিজেই ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ; বড়দের জন্য, শিশুদের জন্যও। হিতে বিপরীত হতে পারে। কজেই ঋতু পরিবর্তনকে মাথায় রেখে রোগ প্রতিরোধে সচেতন হওয়াটাই জরুরি।





চোখ ওঠা

এ সময়টাতে চোখ লালহয়ে যাওয়া রোগ—কনজাংকটিভাইটিস হতে পারে। দুই চোখ লাল দেখাবে, পানি ঝরবে। পরিষ্কার কাপড় অথবা একবার ব্যবহার্য টিস্যু পেপার দিয়ে চোখ পরিষ্কার করবেন। দুই চোখে ক্লোরামফেনিকল ড্রপ দুই ফোঁটা করে দেবে; পাঁচ-ছয়বার দিলেই সেরে যাবে।





হতে পারে জলবসন্তও

এই সময়ে আরেকটি অস্বস্তিকর রোগ হতে পারে। এটিও ভাইরাস।জলবসন্ত। প্রথমে একটু জ্বর-সর্দি। তারপর ধীরে ধীরে গায়ে ছোট ছোট দানা। অস্বস্তিকর। চুলকানি; ঢোক গিলতে অসুবিধা। টিকা আছে। জীবনে একবার হয়ে থাকলে আর হওয়ার আশঙ্কা নেই। গায়ে ব্যথা থাকতে পারে। শিশু-কিশোরদের হলেস্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে হবে। জ্বর হওয়ার সময়ই রোগটি ছড়ায়। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল আর সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শনিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন।





কীকরবেন

বইমেলায় যাবেন; নাক ঢেকে ধুলা পরিহার করুন। বাইরে বেরোবেন, খেয়াল রাখুন আবহাওয়ার। সে অনুযায়ী গরম কাপড় নিন।ঠান্ডা শীতেও লাগে, গরমেও লাগে। অতিরিক্ত কাপড়ে ঘেমে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে বাচ্চাদের। ঢাকার বাইরে ঠান্ডা বেশি, বেশি বাতাসও। ঠান্ডা বাতাস এড়িয়েচলুন। পানি পান করুন, অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি। বাচ্চারা তো খেলবেই, খেলাধুলার সময় যাতে ধূলি-বাতাস আর ধোঁয়া, সিগারেটেরও হতে পারে, যাতে আক্রান্ত না করে খেয়াল রাখুন। জ্বর যদি তিন দিনের বেশি থাকে, কাশি যদি দুই সপ্তাহের বেশিহয়, সর্দিযদি না-ই সারে, তবে নিজে নিজেই কোনো অ্যান্টিবায়োটিক শুরু না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শনিন। তরল-গরম-টাটকা খাবার সব সময়ই ভালো। এ সময়ে একটু বেশি ভালো ছোটদের জন্য গরম জলে মধু আর বড়রা গরম লেবু-চা। খুব তাজা রাখবে। শ্বাস নিন বুকভরে, যতটা বিশুদ্ধ অক্সিজেন পাওয়া যায় ততটাই সুস্থতা। ঋতু পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তন—এসব নিয়েই তো থাকতে হবে। থাকুন সুস্থ, ভালোভাবে বাঁচুন, হাসিখুশি শিশুদের নিয়ে।







ইকবাল কবীর

সহকারী অধ্যাপক, রোগতত্ত্ব বিভাগ, নিপসম, মহাখালী।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ২২, ২০১২

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.