নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

১৯৭১-

ক্ষণ-পূর্বক্ষণ

হুমায়ূন কবীর মুজিব (হুমায়ূন মুজিব),সাংবাদিক

ক্ষণ-পূর্বক্ষণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র এই খেলা-খেলা কবে শেষ হবে

১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১২

আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র এই খেলা-খেলা কবে শেষ হবে
হুমায়ূন মুজিব
জাতীয় নির্বাচনেরআরও প্রায় এক বছরের বেশি সময় থাকলেও দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ হয়ে গেল। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে ছিল টান টান উত্তেজনা। রাজনৈতিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি যে ঘোলাটে হওয়ার অবস্থা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত কোনরকম বড় ধরনের অঘটন ছাড়াই গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে। তাতে সন্দেহ নেই। নয়া পল্টন না সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কোথায় হবে সমাবেশ এ কিছুদিন চলেছে উত্তেজনাপূর্ণ বাক্য বিনিময় এর মধ্যে ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে পুলিশী হামলায় মকবুল আহমেদ নামে একজন বিএনপি কর্মী নিহত হলে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতার করা হয়।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপি ‘বাড়াবাড়ি’ করলে তাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আবার জেলে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, মানবিক কারণে তাকে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই মানবতার বিপরীতে বিএনপি এখন সরকারকে হুমকি দিচ্ছে বলে সরকার থেকে বলা হয়েছে। যদিও আইনমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে আর জেলে নেয়া হবে না।
বিএনপি সরকার পতনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশ করেছে। দলটির নেতাদের এক দাবী, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। সরকারকে পদত্যাগ করে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বিভাগীয় সমাবেশ করার পর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন করেছে। দলটির এক নেতা বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এবং তারেক রহমানের কথায়। কিন্তু বাস্তবে বিএনপি ১০ দফা কর্মসূচি ছাড়া তেমন কোন বড় উদ্যোগ নিতে পারেনি। কর্মসূচির অন্যতম অংশ হিসেবে সংসদ থেকে বিএনপি’র সাতজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা আদালতে নয়, রাজপথে সমাধান করবে, এমনকি আগামী নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন মর্মে ঘোষণা দিয়েছেন তার এক আইনজীবী। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। অবশ্য টানা প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে নানা মাত্রা যোগ হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে তারা বড় জমায়েতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মনোবলে ধাক্কা দেয়ার কৌশল নিয়েছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে বলে দেশে-বিদেশে প্রমাণ করতে চাইছে। এ জন্য আওয়ামী লীগও রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পাল্টা বক্তব্য দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার হুমকিসহ ‘খেলা হবে’ বলে হুঙ্কার দিয়েছে। এসব পাল্টাপাল্টি হুঙ্কারের মধ্যে দেশ বা জনগণের স্বার্থ আছে কিনা তা বিবেচনার বিষয়। বলা হয়, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। আবার রাজনীতিকে কৌশলের খেলাও বলা হয়। সবই কি কথার কথা নাকি অন্য কিছু?

সামনে যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে, তার আলামত এখনই দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল ও বিএনপির সংঘর্ষ হলে তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। রাজনীতির খেলার মাঠে জামায়াতে ইসলামী বিএনপি জোটে আর নেই ঘোষণার পর নতুন নামে নিবন্ধন পাওয়ার আবেদন এবং ফিরে আসার চেষ্টা খেলার অংশ হলে নির্ভয়ে থাকা যায় না। বরাবরই জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে ভাঙাগড়া ও নানা মেরুকরণের খেলা হয়। পর্দার আড়ালের খেলাও জমজমাট হয়।
১০ ডিসেম্বরের পরে কি হবে, এমন কথা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। কথার কথা, মেঠো কথা-যা ই হোক, হুমকি-ধমকিমূলক কথা নানা প্রশ্নের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি করছে জনমনে। অনেকে মনে করছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে যে পাল্টাপাল্টি ব্যক্তব্য চলছে, তাতে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, তাতে সন্দেহ নেই। বলা বাহুল্য, দেশের অর্থনৈতিক সার্বিক পরিস্থিতি ভালো যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষের শঙ্কার কথা বলেছেন। নিত্যপণ্যের উচ্চদাম মারাত্মক পর্যায়ে। জ্বালানি ও বিদ্যুত সংকট, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন টানাপড়েনের মধ্যে, দিন দিন রিজার্ভ কমছে, এমন এক নাজুক পরিস্থিতি বিরাজমান। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে সরকারের হিমশিম অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাবে।



সময়টা এখন এমন যে, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ তিক্ততার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। হুমকি পাল্টা হুমকিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের এই অপচেষ্টা বছরের পর বছর ধরে চলছে। সুস্থ্য রাজনীতি নেই বললেই চলে। রাজনীতির নামে চলছে, পারস্পরিক বিরোধিতা ও সংঘাত। গণতন্ত্রের প্রতি যাদের শ্রদ্ধাবোধ ও দায়িত্ববোধ থাকে, তারা এমন আচরণ আর খেলাধুলার হুমকি দিতে পারে না। বর্তমানে দেশে কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যতার সঙ্গে যুদ্ধ করছে, দিন দিন মধ্যবিত্ত হয়ে যাচ্ছে নিম্নবিত্ত, বেকারের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে, মানুষের আয় কমে গেছে, সমাজে নানা অস্থিরতা চলছে, এসব সমস্যা সমাধানের কার্যকর উদ্যোগ যেখানে দ্রুত নেয়া দরকার, সেখানে চলছে রাজনৈতিক হুমকি-ধমকি। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.