নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ দর্পণ

হাফিজুর রহমান মাসুম

পৃথিবীর সমান বয়সের সাম্যবাদের স্বপ্ন আমি আজও দেখি

হাফিজুর রহমান মাসুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুষ খাওয়ার জন্য সহকারী সচিব দিলীপ কুমার দেবনাথ চেয়েছিলেন ছুটির সদ্ব্যবহার করতে!

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৮

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের (২ ও ৩ শাখা) সহকারী সচিব দিলীপ কুমার দেবনাথ ছুটিতে থাকাবস্থায় নাটোর ও রাজশাহীর ১৯টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনের নামে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও উৎকোচ নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েকজন জনপ্রতিনিধির অভিযোগের ভিত্তিতে ওই কর্মকর্তাকে গতকাল বুধবার বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।



প্রশ্ন হচ্ছে শেষ পর্যন্ত এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে উপরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আরও বেশি করে ঘুষ নিয়ে তাদের পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে দেন অথবা আরও পদোন্নতির ব্যবস্থা করেন। দেখা যাক এক্ষেত্রে কী হয়।



স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু আলম মো. শহিদ বলেন, জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। এর পরই বুধবার তাঁকে ওএসডি করা হয়েছে। জানা গেছে, গত মাসে দিলীপ কুমার একটি ভ্রমণসূচি পাঠান। সূচি অনুযায়ী গত ১৯ অক্টোবর তিনি রাজশাহীতে আসেন। ওই দিন রাতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ডাকবাংলোয় ছিলেন। ২০-২২ অক্টোবর তিনি জেলার পবা উপজেলা পরিষদ, নওহাটা পৌরসভা, কেশরহাট পৌরসভা, মোহনপুর উপজেলা পরিষদ, বাগমারা উপজেলা পরিষদ, ভবানীগঞ্জ পৌরসভা, কাটাখালী পৌরসভা, আড়ানী পৌরসভা, দুর্গাপুর পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত বা বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন ও নথিপত্র পর্যালোচনা করেন। পরে ২৩-২৮ অক্টোবর পর্যন্ত দিলীপ কুমার নাটোরের বিভিন্ন পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ পরিদর্শনের ভ্রমণসূচি পাঠান।



মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ম্যাব) মহাসচিব ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র শামীম আল রাজি বলেন, ‘আমরা ২৪ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, দিলীপ কুমারের ওই সফরসূচি অনুমোদিত ছিল না। তিনি তখন ছুটিতে ছিলেন। তিনি ব্যক্তিগত লাভে এই এলাকার পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ পরিদর্শনে আসেন।’ তিনি জানান, কয়েকজন মেয়র তাঁকে বিষয়টি জানালে তিনি নাটোরে আর কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন না করে ২৪ অক্টোবর বনপাড়া পৌরসভা থেকে ঢাকায় ফিরে যান।



ম্যাবের মহাসচিব ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র শামীম বলেন, ‘ওই কর্মকর্তার পরিদর্শনের বিষয়টি বুঝতে না পেরে অনেকে তাঁকে খুশি করতে কিছু উপঢৌকন দিয়েছেন। আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আবুল কাশেমকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।’ যুগ্ম সচিব আবুল কাশেম মুঠোফোনে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিলীপ কুমার রাজশাহীর কয়েকটি উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা পরিদর্শনকালে সরকারি আবাসন, পরিবহন ও খাওয়া-দাওয়ার সুবিধা নেন। তিনি ওই সব প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা উপঢৌকন নেন।



নাটোরের একজন মেয়র বলেন, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা খুব অল্প সময়ের জন্য আসেন। তিনি তাড়াহুড়ো করে কাগজপত্র ও প্রকল্প পরিদর্শন শেষে যাওয়ার সময় উপঢৌকন চেয়ে বসেন। তাঁরা ১০ হাজার টাকা দেন। একটি উপজেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তাঁর সফর নিয়ে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। তবে তাঁর পরিচয় সঠিক থাকায় আমরা প্রশ্ন উঠাইনি। যাওয়ার সময় তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’ রাজশাহীর একটি পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুর রউফ বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িতে করে কর্মকর্তা তাঁর দপ্তরে আসেন। তাঁকে পৌরসভার পক্ষ থেকে কিছু আপ্যায়ন করা হয়েছে।



নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের একাধিক প্রকৌশলী ও পৌরসভার সচিব জানান, ওই কর্মকর্তা তাঁদের কাছ থেকে জ্বালানি ও চালকের খরচ বাবদ কিছু টাকা চেয়ে নিয়েছেন। নিজেদের পকেট থেকে সম্মান করে তাঁকে এসব টাকা দেওয়া হয়। বাগমারা উপজেলা প্রকৌশলী হোসেন আলী মীর জানান, কোনো প্রকল্প পরিদর্শন না করলেও ওই কর্মকর্তা তাঁর দপ্তরে এসে ফাইলপত্র দেখে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। কেশরহাট পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাঁদের পৌরসভায় এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। তিনিও উপঢৌকন দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.