নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!
মনে মনে কথা বলা আমার অভ্যাস।তবে আজকাল আর পারছি না। এই মুহূর্তে আমি খুব খারাপ সময় পার করছি। মনে মনে কিছু বললেই ধরা খেয়ে যাচ্ছি শেফালির কাছে। মেয়েটা কি থট রিডিং জানে নাকি? যখন আমি ভাবলাম ওকে খুন করব, ও কত সহজেই তা ধরে ফেলল। এমন ভংগিমায় আমার দিকে তাকালো, আমার মায়া পড়ে গেল। আমার কাছে মনে হল ও আমার ভেতরের সবকিছু দেখতে পারছে। আমি ধীরে ধীরে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম, তখন কারেন্ট চলে গেছে। রক্ত মাংসের একটা শরীর আমাকে জড়িয়ে ধরছে। বাইরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। শেফালির অশ্রুতে আমার শার্ট ভিজে যাচ্ছে। কেমন অদ্ভুত একটা পরিবেশ। আমি আর শিউলি পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেছি। আমি এই মেয়েটিকে ভালবাসি। সত্যি কি ভালবাসি? তাহলে কেন আমি ওকে মেরে ফেলতে চাইছি? ও একসময় অন্য পুরুষের মনরঞ্জন করেছে, সে জন্য? নাকি ও রেপড হয়েছিল সেজন্য? ওতো সব স্বীকার করেছে। আমি ওকে সাহায্য করতে চেয়েছি। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তবে কেন আমি ওকে আর সহ্য করতে পারছি না? আমারতো তিন কুলে কেউ নেই। কাজেই আমি যাকে খুশি তাকে বিয়ে করতে পারি। তাহলে কেন এত দ্বিধা কাজ করছে?
আমি একজন লেখক। মাঝে মাঝে আমি আমি বেশ্যালয়ে যেতাম। আমি ওদের জীবনের গল্প শুনতাম। শেফালির গল্প শুনে আমি এতটাই মুগ্ধ হয়েছি যে চিরকুমার ব্রত থেকে বেরিয়ে এসে প্রথমবার কাউকে ভালবাসার চেষ্টা করেছি। তবে কি আমার মধ্যে কামনা বাসনা কাজ করছে? এখন শেফালি আমার ফ্ল্যাটে আছে। একজন ধর্ষিতার জন্য কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীনতা কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার না। ওর মধ্যেও আছে। এখনো আমাদের মধ্যে কোন দৈহিক সম্পর্ক হয় নি, কিন্তু বেশ কয়েকবার আমি সে আকর্ষণ অনুভব করেছি, পরমুহূর্তেই নিজের প্রতি ঘেন্না হয়েছে। সবাই যদি এমন করে, তবে কিভাবে ওরা বেঁচে থাকবে ? আমিও আসলে ওকে রেপ করতে চাইছি ! আগের দিনে এ ধরণের মেয়েরা আত্মহত্যা করতো। আমি কি ওকে সেই পথেই ঠেলে দিতে চাই? আগামীকাল আমাদের বিয়ে। আমি কি আরো একটু ভেবে দেখব? কেমন যেন লাগছে। আমি সাধারণত কোন কিছু নিয়ে দ্বন্দ্বে ভুগলে টস করি। কিন্তু একটা মেয়ের জীবন নিয়ে এটা করা ঠিক হবে না। আমি কি ওর সাথে সরাসরি কথা বলব? তাহলে কি হবে ওর প্রতিক্রিয়া? ও এখন ঘুমাচ্ছে। ঘুম থেকে উঠলেই আমার বিয়ে। আমার বয়স পঁয়তাল্লিশ বছর। শেফালি বিশ বছরের তরুণী। একেবারেই মিস ম্যাচ। তবে আমি খুব আশাবাদী। আমাদের দাম্পত্য জীবন খুব ভাল কাটবে। এখন ভোর চারটা বাজে। আমি একটা উপন্যাস লেখার কাজ শেষ করলাম এই মাত্র, যেখানে গল্পের নায়ক শেষ পর্যন্ত মারা যায়।
এখন সকাল আটটা বাজে। আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি। খুব অদ্ভুত অনুভুতি হচ্ছে। আমার পাঞ্জাবির পকেটে একটা গোল্ড কয়েন। এটা দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ কাজের আগে টস করি আমি। আমি সেটা এক ভিক্ষুককে দিয়ে দিলাম। আজ আমার জীবনের অন্য রকম একটা দিন। আমি নিজেকে শিউলির জন্য উৎসর্গ করলাম। আমি বুঝতে পারছি, ও আমার সম্পর্কে সব জানে। আমার মনের কথা ও শুনতে পায়।ও একটা বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে এই পৃথিবীতে এসেছে। আমিও নিজের ভেতর কিছু একটা অনুভব করছি। আমার অন্যরকম লাগছে।
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৩
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: ভালোটা মনে রাখা উচিৎ
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: মন্দটাই মনে রাখে মানুষ। ভালোটা হাড়গোড়ের সঙ্গে মাটিতে মিশে যায়।