নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমার চোখের তারায় আমার হাজার মৃত্যু!

অতন্দ্র সাখাওয়াত

তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!

অতন্দ্র সাখাওয়াত › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোন পথে বাংলাদেশ?

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



আমাদের জন্মটা এক রহস্য। কোন্ পিতামাতার সন্তান আমরা হবো, তা নিজেরা ঠিক করার কোন এখতিয়ার নেই। আমরা পুরুষ হবো নাকি নারী হবো নাকি হিজড়া হবো সে বিষয়ে আমাদের করণীয় কিছু নেই। আমাদের গায়ের রঙ কেমন হবে, সে ব্যাপারে আমাদের কোন ভূমিকা নেই। অথচ এসব জন্মচিহ্ন আজীবন আমাদের বহন করতে হয়। এসব নিয়ামক আমাদের মধ্যেই ধীরে ধীরে একটি স্বতন্ত্র রূপ লাভ করে। পরম যত্নে আমরা নিজেদের লালন করি। পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে প্রচেষ্টা চালাই। একসময় আমাদের মধ্যে জাতিগত চেতনার আবির্ভাব হয়। আমরা একটি সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হই। আমাদের মধ্যে চিন্তা চেতনার ধারা-উপধারা নির্দিষ্ট নিয়মে প্রবাহিত হয়। আমাদের শিক্ষকগণ নিজস্ব জীবনবোধের আলোকে নয় বরং রাজনীতিতাড়িত শিক্ষাক্রমের আলোকে আমাদের জ্ঞান দান করেন। সেসব পড়ালেখায় ভাল ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে এমন সব জিনিসের জন্য আমরা পুরষ্কৃত বা তিরষ্কৃত হই, যার জন্য বহুলাংশে আমাদের কোন দায় নেই। আমাদের জন্য ইতিমধ্যে লিখিত হয়ে আছে, আমাদের ভবিষ্যৎ। আমরা শুধু সেই অবশ্যম্ভাবী ঘটনাচক্রের সাথে তাল মেলাই। আমাদের কর্মজীবনও অনেকটা পূর্ব নির্ধারিত। কারণ আমাদের পূর্ব পুরুষদের দেখানো পথেই আমরা চলতে থাকি। খুব কম মানুষই বিদ্যমান সিস্টেমের সাথে লড়াই করার মত সাহস ও মেধাসম্পন্ন হয়। এই সিস্টেমের মধ্যেই আমাদের অবিরাম প্রবাহ। আমাদের ভাল লাগা, খারাপ লাগাও এই সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি আমাদের বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং ভালবাসাকেও নিয়ন্ত্রণ করছে এক সম্মিলিত শক্তি। মাঝে মধ্যেতো এমন মনে হয় যে, আমাদের ভাগ্যও নিয়ন্ত্রণ করছে এই শক্তি। এই শক্তি পার্থিব পৃথিবীর মধ্যেই বিদ্যমান যা আমাদের জীবনের পরিধি ঠিক করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ ব্যাংকিং খাতের হাতেই আমাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ। এখানে কিছু পরিবর্তন করা, সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব না। আমরা মনে করি আমরা কি ক্রয় করব তা নিজেরা নির্ধারণ করি। প্রকৃতপক্ষে ব্যাংক যেভাবে বিনিয়োগ করে, সেভাবেই আমাদের বাণিজ্য কাঠামো নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এখানে বিশুদ্ধ সবজি, ফল, মাছ, মাংস দুর্লভ বস্তু। কৃষিভিত্তিক এই দেশে কৃষির বিপ্লব না হয়ে পোশাক শিল্পের বিপ্লব কেন হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের বোধ করি আর অজানা নয়। আমরা মূলত দাস। দাসত্ব আমাদের রক্তে। আমাদের ইতিহাস তাই বলে। আমাদের জীবন যাপনের মধ্যে কোন নতুন ভাবাদর্শ নেই। সুন্দর জীবনবোধ নেই। কিছু চোর-বাটপার আমাদেরকে তাদের চিন্তা চেতনার দাস হতে বাধ্য করে। আমরা সাহস করে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে চাই না। আমরা স্বাধীনতার স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকি।

পৃথিবীতে মুসলমান সংখ্যা প্রায় ১৬০ কোটি। এদের মধ্যে বেশীভাগেই সুন্নী। মোট মুসলিম জনসখ্যার ১০-১৫% এর মতো শিয়া মুসলমান এই পৃথিবীতে বিদ্যমান। ইরাক, ইরান, বাহরাইন, ইয়েমেন, আজারবাইজান, লেবানন ইত্যাদি মুসলিম দেশে প্রচুর সংখ্যক শিয়া মুসলমান বসবাস করেন। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সুন্নী মুসলিম। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, দিন দিন এখানে ধর্ম চর্চা কমে আসছে। মনের অজান্তেই মুসলিমদের মধ্যে লালিত হচ্ছে স্বার্থপরতা, দুর্নীতি, অশ্লীলতা আর লোভ-লালসার বীজ। পিতামাতাগণ ছোট বেলাতেই সন্তানদের মধ্যে এসবের বীজ রোপন করে দেন। আমাদের সোশ্যাল মিডায়াও আমাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে সেই দিকে। সারা জীবন পাপ কাজে লিপ্ত থেকে একজন মানুষ যখন বৃদ্ধ হয়, কেবলমাত্র তখনই তাদের মধ্যে দেখা দেয় ধর্ম আসক্তি। যার ফল আমরা ভোগ করছি অর্হনিশি। দিন দিন পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে। ডিভোর্সের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। যুবকদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে নানাবিধ হতাশা। বিপদে কেউ কাউকে পাশে পাচ্ছে না। বিশেষ করে নারীর প্রতি অবমাননা যে কি পরিমাণ বেড়েছে, তা কারোই অজানা নয়। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, অব্যবস্থাপনার স্টিম রোলারে পিষ্ট হয়ে জাতি আজ দিশেহারা। দেশপ্রেমের কোন বালাই নেই কারও মধ্যে। কেউ কেউ আবার মডারেট মুসলিম হবার নামে ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বেড়াচ্ছে। ধর্মের নামে হচ্ছে ব্যবসা, সেবার নামে হচ্ছে ধাপ্পাবাজি। বিশুদ্ধ খাবার পাচ্ছে না ভোক্তারা। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে নাভিশ্বাস ফেলছে মানুষ। কিছুদিন পর পর একেকটি ব্যাপারে মানুষের মনোযোগ আকর্ষিত হলেও, সময়ের আবর্তে তা ভুলে যাচ্ছে মানুষ। কোনকিছুতেই কোন প্রকার দায়িত্বশীলতা নেই কারো। এর মধ্যে আবার যুক্ত হয়েছে ধর্মীয় অস্থিতিশীলতা। সম্প্রতি এক শ্রেণির মুসলিম পরিবারের সন্তানেরা নাস্তিকের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। এব বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন বা প্রতিবাদ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অপরদিকে শিয়া ও সুন্নী মুসলিমদের দ্বন্দ্বও একটি অমিমাংসিত বিষয়। অথচ আমরা মুসলমানরা ভাবি মৃত্যুর পর আমাদের জন্য আপেক্ষা করছে চির শান্তি। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা মুসলমান সমাজে অনুপস্থিত! যেন বেহেশত লাভ করতে বুদ্ধির কোন দরকার নেই। ধর্মগুরুরাও কোন সঠিক সমাজ বিনির্মানে ভূমিকা রাখতে পারছে না।

সব মিলিয়ে পার্থিব এবং অপার্থিব দুই দিক দিয়েই আমাদের সিংহভাগ মানুষ বন্দী। এই বন্ধিত্বের শেষ কোথায়। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষেরা কি কোন দিন পৃথিবীর বুকে একটি গর্বিত জাতি হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারবে?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: দরিদ্র হাভাতে দুটো পয়সার মুখ দেখলে উশৃংখল বেপরোয়া হয়ে যায়। বাংলাদেশও দরিদ্র থেকে উত্তরনের পথে আছে তাই দেশে সকল ক্ষেত্রে কিছুটা উশৃংখলতা বিরাজ করছে। ঠিক হতে সময় লাগবে।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৪৫

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: সময় লাগুক। কিন্তু ঠিক হওয়ার লক্ষণগুলো দ্রুত প্রকাশিত হোক। মাঝে মাঝে আশায় বুক বাঁধতে খুব ইচ্ছা হয়।

২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

বিজন রয় বলেছেন: আপাতত বাংলাদেশ সঠিক পথে নাই।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: বাংলাদেশের জন্য একরাশ শুভ কামনা রইলো। ভালো থাকবেন।

৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:১১

রাজীব নুর বলেছেন: সব মিলিয়ে দেশ ভালো ও মন্দের সমান সমান।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৫১

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: ভালো-মন্দ নিয়েই বাস করতে হবে, তা মানছি। কিন্তু মন্দ নিয়ে কথা বলছি না; কথা বলছি পরাধীনতা নিয়ে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.