নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অখাদ্য ব্লগে স্বাগতম

হৃদয়ের স্পন্দন

লেখা টা আমার মনের খাদ্য, আপনার নিকট আমার লেখা মানেই অখাদ্য, আমন্ত্রণ অখাদ্য ব্লগে, ধন্যবাদ অখাদ্য পড়ার জন্য

হৃদয়ের স্পন্দন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিপ্রাকৃত অথবা মহাপুরুষ পর্ব এক

১০ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:৫২

রিমঝিম বৃষ্টি পড়ছে, বারান্দায়

হয়তো কোনো মেয়ে দাড়িয়ে আছে, দু হাত

বাড়িয়ে দিয়েছে সে। বারান্দার দেয়ালের

সাথে কঠিন লৌহ

দিয়ে গড়া কিছুটা ফাকা দিয়ে বৃষ্টি ধরার অনন্ত

চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে...হয়তো কোনো বেকার

অভিমানী বালক

বৃষ্টি পেয়ে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।

কিংবা কোনো বালিকা প্রেমিকের সাথে ঝগড়ায়

ব্যাস্ত বৃষ্টির ছন্দে,নয়তো মিষ্টি প্রেম

আলাপনে বৃষ্টি উপভোগ করছে মিথ্যাবাদী বালক

আর বোকা বালিকা। এখনকার বালিকারা নাকি আর

বোকা হয়না,সেদিন মেসের কর্পোরেট

ছেলেটা বলছিল যখন বালক

বালিকাকে নিয়ে সুখের স্বপ্ন গড়ায় ব্যাস্ত

বালিকা নাকি তখন একাধিক সিম কার্ড

নিয়ে একইসাথে একাধিক প্রেম চালিয়ে যাচ্ছে.।

বালক দের ভাবছে সুইস ব্যাঙ্কের চেক

বই........বালক রাও কম যাচ্ছেন না কোনো দিক

থেকে.. অবোধ সহজ সরল

বালিকাটি কে নিয়ে যাচ্ছে লিটনের ফ্লাটে যৌন

কর্ম সেরে তার ভিডিও ক্লিপ

ছড়িয়ে দিচ্ছে ইন্টারনেটে।

এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। কত কিছুই

হচ্ছে ..কোনো দিকেই ভ্রুক্ষেপ নেই

এই লিটন

টা কে সে সমন্ধে কোনো ধারনা নেই

প্রীতলের। তার মহাপুরুষ হতে হবে, বাবার স্বপ্ন

ধুলোয় মেশানো যাবেনা

নারী আর বাড়ি থেকে যত দূর থাকা যায়,তত দ্রুতই

মহাপুরুষ হওয়া যায়।

বাবার এই আদর্শে প্রীতল পথ চলে....এ

ছাড়া প্রীতলের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই

কোনোদিকেই..যেমন এই প্রেমময়

আবহাওয়ায় সময় কে কোথায়

কি কিরছে সেদিকে তাকানোর অবসর ও

তার,নেই।

প্রীতলকে এ সময়

দেখলে মনে হবে সে কোনো দরকারি কাজে কোনো এক

গন্তব্য,উদ্দেশ্য করে এই ঝিরঝির

বৃষ্টি তে ছুটে চলেছে...আসলে সেরকম

কিছু ও নয়....প্রীতলের কোনো কাজ

নেই...মহাপুরুষ দের কাজের কোনো সময়

থাকেনা...এরা কখনোই ব্যাস্ত

থাকেনা..কোনো এক সময় নিজের অজান্তেই

কাজ পড়ে যায় ...তখন খুব ব্যাস্ত থাকে তারা।

প্রীতল অবশ্য নিজেকে মহাপুরুষ

দাবি করেনা..প্রীতল এখনো মহাপুরুষ

হতে পারেনি

মহাপুরুষ হতে প্রীতলের অনেক সময়

লাগবে...প্রীতল এখনো মহাপুরুষ দের

কোনো যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি..।

এই ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মাঝে এতো দ্রুত প্রীতল

হাটছে কারণ বাবা বলেছে বৃষ্টি আর চৈত্রের কাঠ

ফাটা রোদ্দুরে দ্রুত হাটবা

বৃষ্টিধোয়া হতে পারলে মহাপুরুষ হতে বাধা খুব

অল্পই আসে...আর

রোদ্দুরে পুড়তে পারলে অনেক সহজেই

মহাপুরুষ হতে পারা যায়...এতে মহাপুরুষ

হতে যে বাধা আসে তার কষ্ট কষ্ট

বলে মনে হয়না..।

বাবা শুধু বলেন নি বৃষ্টি তে কতটা পথ

হাটলে বৃষ্টিধোয়া হওয়া যায়!!!!

গা গরম লাগছে। চোখের

সামনে ভেসে উঠেছে শকুন্তলা..একদল শকুন

একটা মৃত গরু খুবলে খাচ্ছে। ব্যাপারটা এই পর্যন্ত

হলে সহ্য করা যেত কিন্তু সেই বছর এর

থেকে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেছে প্রীতল,

শকুন্তলার পাশের আমবাগানে গাছে উঠে আম

খাচ্ছে প্রীতল। হইচই শুনে এদিক সেদিক তাকায়

প্রীতল কিছুই দেখতে পাচ্ছেনা সে। গাছের

উচুডালে উঠে প্রীতল। এবার চোখ যায়

শকুন্তলা মাঠে...একদল মানুষ খুব

জোড়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করছে।

হয়তো রোগাক্রান্ত কোনো গরু। সে সময়

গরুর খুব কঠিন রোগ হত। গ্রামবাসী গরু

পিটিয়ে মেরে ফেলত এই শকুন্তলায়।যেন

মাঠে অন্য গরুর সংস্পর্শে কোনো গরু নতুন

করে রোগে আক্রান্ত না হয়

প্রীতল আম খাওয়ায় মনোযোগ দিল।

সন্ধ্যা ছুইছুই বাড়ি যেতে হবে...সন্ধ্যার আগেই

বাড়ি ফিরতে হবে প্রীতলের।

যেতে হবে শকুন্তলার উপর দিয়ে। রাতের

আধারে শকুনের দল নাকি মানুষ পেলে চড়াও হয়।

তাই মায়ের কড়া নিষেধ ছিল অইদিকে যাবার। দুরন্ত

প্রীতল তবু যেত। হাটতে হাটতে শকুন্তলায়

প্রীতল। যেখানে গরু

পিটিয়ে মারা হয়েছে সেখানে একটু গরু

টা দেখে যাবার স্বাধ জাগে প্রীতলের।

প্রীতল সেখানে যায় না গরু নয় একটা মানুষ

পড়ে আছে ...মানুষ টা অদ্ভুত

স্বরে গোঙ্গাচ্ছে

ছোট একটা বাচ্চা শকুন মানুষ টাকে ঠোকর

দিচ্ছে..হতবম্ব প্রীতল

বুঝতে পারেনা কি করা দরকার, বাচ্চা প্রীতল শকুন

টাকে তারিয়ে দেবার চেষ্টা করে,শকুন

সরে যায় মানুষ টার পায়ের নিকট

থেকে সরে মাথার কাছে চলে যায়, মানুষ টার

চোখে ঠোকর দেয় শকুন ...প্রীতল

একটা লাঠি দিয়ে তারাতে গেলে বিকট আর,অদ্ভুত

একটা আওয়াজ করে বাচ্চা শকুন, মুহুর্তেই

হাজারো শকুন যেন ঝাকে ঝাকে শকুন্তলায়

আসতে থাকে। দৌড়ে পালায়

প্রীতল ...শরীরের সব টুকু

শক্তি দিয়ে দৌড়াচ্ছে প্রীতল

বাসায় এসে চুপ করে ঘুমিয়ে যায় সে, সেদিন

রাতে একটু গা গরম হয়েছিল প্রিতলের ..।

সে রাত থেকেই যেদিন প্রীতলের জ্বর

আসে সেদিন চোখের

সামনে ভেসে উঠে ঘটনাটি... প্রীতলের প্রায়

ইচ্ছা হয় যেন তার জ্বর আসে..জ্বর

আসলে সে মানুষ টির

সাথে কথা বলতে পারে প্রীতল

মানুষ টা বলেছিলেন তার নাম আদৃতা ,আর

তিনি ছেলে নন তিনি মেয়ে ছিলেন..আজ

চাচ্ছেনা প্রীতলের জ্বর আসুক.।আজ আদৃতার

সাথে কথা বলার ইচ্ছা নেই প্রীতলের।

আদৃতা খুব অদ্ভুত করে কথা বলে। ফিসফিস

করে কথা বলে। তার কন্ঠ,শুনে বুঝার,উপায় নেই

সে ছেলে না মেয়ে

আদৃতা প্রীতলকে মহাপুরুষ হবার পথে সাহায্য

করে, সেদিন রাতে আদৃতা এসেছিল প্রীতল

কে বলেছে তাদের মেস ম্যানেজার

মারা যাবে..প্রীতল বিকাল বেলা রুমমেটদের

বলেছে তার মনে হচ্ছে কেউ মারা,যাবে এই

ভবনে তার আধঘণ্টা বাদে খবর এল মেস

ম্যানেজার অসুস্থ তাকে ঢাকা মেডিকেল

নিয়ে যাওয়া হয়েছে ....তার এক ঘন্টা পর খবর

এসেছে রহিম বিষক্রিয়ায় মারা গেছে....প্রীতল

কে সবাই সন্দেহের

চোখে দেখতে লাগল..বেটা চাল চুলুহীন

চলাফেরা করে..ভন্ড ফকিরামি করার জন্য আবার

ম্যানেজার এর খাবারদাবার এর ভিতর বিষ

দিয়ে আসেনি তো?

সন্ধ্যার কিছুবাদে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেল

প্রীতল কে। প্রীতল যাবার সময় তার রুমমেট

সুমন কে,বলেছিল অযথা রিপোর্ট করেছেন

ভাই, আপনার ধারনা ভুল..আর আপনার বউ

একসাথে দুইটা মৃত বাচ্চার জন্ম দিবেন আগামিকাল

সকাল পাচটায়

আপনি এখনি গ্রামে চলে যান...আপনার

স্ত্রী ব্যাথামুক্ত আর নিজের অজান্তে প্রসব

করবে

আমি এক সপ্তাহ বাদে আসব আর হ্যা আপনার

স্ত্রী পরদিন আবার প্রসব বেদনায় অস্থির

হবে...তাকে,মেডিকেল ভর্তি করবেন

সে একটা ফুটফুটে মেয়ে সন্তানের জন্ম

দিবে তার নাম রাখবেন আদৃতা

সুমন সে সন্ধ্যায় গ্রামের

উদ্দেশ্যে রউনা দেয়, কিছুটা ভীত সে,

পুলিশের নিকট সুমন যা বলেছে তাও

মিথ্যা বলেছে, প্রীতল বলেছিল তার

ধারনা ম্যানেজার মারা যাবে, কিন্তু সুমন

পুলিশকে বলেছে যে প্রীতল

বলেছে ম্যানেজার দুই ঘন্টার মাঝে বিষক্রিয়ায়

আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে, এসব

ভাবতে ভাবতে সুমন অস্থির হয়ে আছে,

সুমনের গ্রামের বাড়ি কালিগঞ্জে, রাত বারোটার

মাঝেই সুমন বাড়ি পৌঁছায়, সব কিছু ঠিকঠাক

আছে দেখেই সুমন শান্ত হয়

বউকে ঘুমাতে বলে সুমন, চালাক শ্রেণীর

মাঝে দু ধরনের চালাক আছে, একদল খুব সহজ,

এদের চালাক হবার প্রয়োজন পড়েনা,

এরা এমনিতেই পাড় পেয়ে যায়, অন্যদল সুমনের

মত, এরা খুব খুতখুতে হয়, সুমনের ধারনা আজ

রাতে কেউ একজন তার বউ এর পায়ের

কাছে দুটো মৃত বাচ্চা রেখে যাবে, সুমন

সত্যের ব্যাপারে আপোষহীন, অই

ব্যাটা প্রীতল বলল ম্যানেজার মারা যাবে, আর

ম্যানেজার মারা গেল, একটা খুনিকে কিছুতেই

ছাড়া যায়না, আজ রাতে যাই হোক সুমন

ঢাকা ফিরে আদালতে জবানবন্দি দিবে প্রীতল

বলেছে খুন টা সে করেছে, ঘরের

দরজা জানালা ভাল করে আটকিয়ে খাটের

নিচে আলমারিতে চেক করে নিল সে, নাহ

কোথাও কেউ নেই।

সুমন নিশ্চিত আজ রাতে কিছুই ঘটবেনা

দরজার পাশে একটা চেয়ার

টেনে বসে আছে সুমন, রাত তিন টার সময়

তন্দ্রা লেগে যায় তার, মোবাইলে এলার্ম

দিয়ে রাখে সুমন, কিসের একটা ভয়

তাকে তাড়া করে ফিরছে বুঝেও বুঝেনা সুমন,

আজানের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে সুমনের, লাইট

জ্বালিয়ে দেখতে পায় তার বউ এর শাড়ির ভিতর

কি যেন,উচু হয়ে আছে, দৃঢ় চিত্তে এগিয়ে যায়

সুমন, একটা মৃত বাচ্চা, আর একটি বাচ্চা তার স্ত্রীর

যোনিপথে দিরে দিরে বের হচ্ছে, হতবাক

সুমন, তার স্ত্রী কে নাম ধরে ডাক দেয়, নাহ

কোনো জ্ঞান নেই, মেডিকেল ছাত্র সুমন

পালস চেক করে, তার বউ

বেচে আছে এখনো,

পকেটে থাকা মোবাইল বের করে সুমন পাচ

টা পনের মিনিট, সময় দেখে একসময়

রাশিচক্রে আগ্রহী সুমন সময়,মেলাতে ব্যাস্ত.

দুই এর ঘরে সকল কিছু, পাচ যোগ পাচ যোগ এক

সমান এগারো, এক যোগ এক সমান দুই, মেস

ম্যানেজার আজ. 20 ফেব্রুয়ারি 2014

সালে মারা গিয়েছেন, এখানে ও দুই, বিকাল চার

টা সাত এ মারা গিয়েছেন এখানেও দুই, নাহ

ঘাবরালে হবেনা, প্রেমের বিয়ে তাদের, সুমন

আগেই বস্তা এনে রেখেছিল, চুপচাপ

বাচ্চা দুটুকে বস্তায় ভরে সাথে ইট বেধে দেয়

সুমন, বাড়ির পাশের নালায় ফেলে দেয় সে,

দ্বিতীয় বাচ্চা টা দেখতে হুবুহু মেস ম্যানেজার

এর মত

দ্বিতীয় বাচ্চাটা সুমনের মনে দাগ

কাটে এখানে ও দুই এর অস্ত্বিত্ব ভড়কে দেয়

সুমনকে

চলবে

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.