নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অখাদ্য ব্লগে স্বাগতম

হৃদয়ের স্পন্দন

লেখা টা আমার মনের খাদ্য, আপনার নিকট আমার লেখা মানেই অখাদ্য, আমন্ত্রণ অখাদ্য ব্লগে, ধন্যবাদ অখাদ্য পড়ার জন্য

হৃদয়ের স্পন্দন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিপ্রাকৃত অথবা মহাপুরুষ

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭

তৃতীয় পর্ব

সুমনের একটি ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে, সুমন

তার নাম রেখেছে আদৃতা, অসম্ভব সুন্দর

মেয়েটা, ঢাকার চাকরী ছেড়ে শুধু মেয়েটার

জন্যই গ্রামে রয়ে গেছে সুমন, আগে এত

টাকা বেতন পেয়েও সংসার

সচ্ছলতা ফিরাতে পারেনি সুমন, কিন্তু মেয়েটার

জন্মের পর দিন যেন অলৌকিক ভাবে দিন

বদলে গেল সুমনের, গ্রামের মীরের

বাজারে ছোটো একটা দোকান দিয়ে ভালই দিন

চলছে সুমনের।

প্রীতলের কথা মনে নেই আর,

মনে,নেই,মৃত দুই বাচ্চা অথবা ম্যানেজারের

মৃত্যুর কথা, বউ এর সাথে আগে পারস্পরিক

সম্পর্ক ও খারাপ ছিল, বোঝাপড়া হতনা একদম,

আদৃতার বয়স দুই বছর হতে চলল, এবারের

জন্মদিন টা পালন করবে সুমন,

আদৃতা বাবা মা কে ডাকতে শিখেছে, খুব শান্ত আর

মিষ্টি মেয়ে আদৃতা। আদৃতার জন্য অনেক

খেলনা কিনেছে সুমন, তার মাঝে বেশ

কয়েকটি পাখি ও আছে, একটি দেখতে শকুনের

মত, আদৃতার সারাদিন শকুন সাদৃশ্য পাখিটার

সাথে কথা বলে, মেয়ের এমন

কাজকর্মে বেশ অবাক সুমন, সংসার যখন সুখ আর

উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, আদৃতাও

এতদিনে বছর পাচ এ পা দিয়েছে। মনে প্রবল

শান্তি নিয়ে দিন কাটাচ্ছে সুমন, ঠিক তখন ই

ঘটে গেল ঘটনা

আদৃতা ওর মাকে বলেছে দাদু বেশিদিন বাচবে না,

সেদিন রাতেই সুমনের বাবা মারা যায়, সুমন

দুপুরে বাসায় ঘুমাচ্ছিল, তখন আদৃতা ওর

মাকে বলেছে মা জানো আমার

শকুনি বলেছে দাদু না চলে যাবে, আর ফিরবেনা,

মা দাদু কই যাবে?

সুমন ব্যাপারটা তেমন গুরুত্ব সহকারে নেয়নি,

বাবা মারা গেছে চার দিন হল, মিলাদের পর সারাদিনের

ব্যাস্ত সুমন এখন ক্লান্ত, বারান্দায় বসে সিগেরেট

টানছে সে, হটাৎ করেই মনের

অজান্তে কথা টা মনে পরল,তার, আদৃতার মাকে এই

ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছে সুমন, নাহ আদৃতা এই

ধরনের কিছু বলেছে বলে মনে পড়েনা তার।

মানুষের সিক্স সেন্স বলতে একটা জিনিস আছে,

প্রবল বিপদে হয়ত মানুষ কিছুটা আচ করতে পারে,

সুমন দিনের সাথে সাথে ভুলে গেল, যদিও

কিছুদিন ভেবেছিল ঢাকায় যাবে সে, প্রীতলের

কাছে,

যাওয়া হয়নি আর, পার হয়েছে দিন, সময়ের

সাথে বদলে গেছে জীবন,

বদলে গেছে জীবনের ধারা, একটু একটু

করে বেরে উঠা আদৃতা এখন অনেক বড়

হয়েছে, অসম্ভব বুদ্বিমান আদৃতা, স্কুলের

রোল নাম্বার এক সেই দ্বিতীয়

শ্রেণী থেকে, এইবার পঞ্চম শ্রেণীর

বৃত্তি দিয়ে তাতেও ট্যালেন্টপুলে প্রথম

হয়েছে আদৃতা

দেখতে দেখতে দশ টি বছর, নেহাত কম নয়,

কাল থেকে আদৃতা স্কুল শুরু হয়েছে,

স্কুলে যায়নি আদৃতা, বায়না ধরেছে নতুন

জামা না দিলে স্কুলে যাবেনা আদৃতা, দোকান বন্ধ

করে দর্জির

দোকানে বসে থেকে জামা বানিয়েছে সুমন,

রাত দের টা, হিসাব অনুযায়ী জানুয়ারি দুই তারিখ আজ,

শীতের রাতে মেয়ের আবদার পূরন করার

আনন্দ ভুলিয়ে দিয়েছে সুমনকে কর্মব্যস্ত

দিনের ক্লান্তি।

কিছু একটা কি পিছন পিছন আসছে? একবার

পিছনে তাকিয়ে নিশ্চিত হয় সুমন, নাহ কিছু নেই,

মাথার উপর দিয়ে কিছু একটা উড়ে গেল মনে হয়,

পাখি হবে হয়ত!!!!

হাটা শুরু করেছে সুমন, আর একটু সামনেই বাড়ি,

সুমন একটিবার দাড়াবেন? এমন কথায় হতচকিত হয়

সুমন, কন্ঠ টা বহু চেনা, কোথায় যেন শুনেছিল

সে, ও হ্যা এটা তো প্রীতলের কন্ঠ, দূর

স্মৃতিভ্রম হচ্ছে হয়তো, পথচলা শুরু করে সুমন,

কি হল ভাই একটু দাড়াতে বলেছি, আমি চাইনা আপনার

সাথে আর.....

এবার দাড়ায় সুমন. কে আপনি? আর

আমি তো আপনাকে দেখতে পাচ্ছি না?

আমাকে দেখলে আপনি ভয় পেতে পারেন,

আমি অদৃশ্য থেকে কিছু কথা বলতে চাই আপনার

সাথে.....

সেটা সম্ভব না, আপনি সামনে আসুন......

মুহুর্তেই শকুন ছানা টি সামনে আসে সুমনের, ভয়

পাবেন না, আমি আপনার ক্ষতি করতে আসিনি, আমার

কিছু কথা আছে, পুনরায় প্রশ্ন করার দরকার নাই,

আপনার সামনে যে শকুন দেখতে পাচ্ছেন

সেটাই আমি, আমি কথা বলছি, নিশ্চিত হোন, আর

আমার সাথে কথা বলুন।

কি চান আপনি?

কিছুই চাইনা, আপনার এই নতুন জামা টি বাসায় নেবার

দরকার নেই, আদৃতা আর আপনার সাথে থাকবেনা,

ওকে স্কুলে পাঠানোর প্রয়োজন নেই, ও

যথেষ্ট পরিণত, আর আজ থেকে ছয় মাস পর

আদৃতা চলে যাবে, বৃথা কষ্ট করার প্রয়োজন

নেই, আর আপনি চাইলেও

তাকে আটকাতে পারবেন না, আদৃতা আমাদের

সাথেই যাবে, আদৃতা যাবে শকুন্তলায়, নিশিথ

রাতে আদৃতা গান গাইবে গলা ছেড়ে,

শকুন টা আর নেই, হতবিহবল সুমন দাড়িয়ে আছে,

বিস্মিত ভাব কাটিয়ে যখন বাড়ির উদ্দেশ্য

রউনা দেনে তখন পুনরায় বিস্মৃত হয় সুমন,

হাতে থাকা জামার প্যাকেট টি নেই তার হাতে, তার

হাতে একটি মৃত মানুষ কে শকুন ঠোকর দিচ্ছে,

পাশে একটা বাচ্চা দৌড়াচ্ছে এমন একটা ছবি আকা বই,

সেটা নিয়েই বাসায় ফিরেছে সুমন, ঘরে,প্রবেশ

করতেই বই টি ছিনিয়ে নিয়ে গেল আদৃতা, অপর

পৃষ্ঠায় থাকা কোনো এক ছবির

দিকে তাকিয়ে কাঁদছে আদৃতা, আদৃতার মাথায় হাত

দিয়ে বই এর দিকে তাকাতেই আতঙ্কিত হয় সুমন,

সেখানে একটা বৃত্তের মাঝে তিন টা বাচ্চার ছবি,

একটা আদৃতা অপর দুইজন সেই মৃত সন্তান

যারা আদৃতার মায়ের গর্ভেই জন্ম নিয়েছিল

তবে কি আদৃতাও

জানে তাকে চলে যেতে হবে?

ভোর পাচ টা, সিগেরেট

জ্বালিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সুমন সাথে তার

সেই বই......

চলবে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: শেষ হবে কবে? একসাথে সবগুলো পর্ব পড়ার ইচ্ছে রইল।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩৭

হৃদয়ের স্পন্দন বলেছেন: শিঘ্রই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.