নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হৃদয়ের স্পন্দন

হৃদয় এর স্পন্দন

সুখে থাকার অভিনয়

হৃদয় এর স্পন্দন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিহান

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৮

রিহান কে কোলে নিয়ে হাটছে হৃদয়, রিহান ঘভির ঘুমে মগ্ন খুব সন্তপরনে হাটছে হৃদয় যেন রিহান এর ঘুম না ভাঙ্গে, ওউ শব্দে পিছন ফিরে তাকায় হৃদয় কানিজ পড়ে আছে মাটিতে সম্ভবত পা পিছলে পড়ে গিয়েছে, যা কাদা মাটি। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হৃদয় কত সুন্দর তার বউ বাহ কি চমৎকার কাদাপানি ভরে তার সাদা জামা টা কেমন ধূসর রঙ পেয়েছে, কি সুন্দর বিধাতা কানিজ কে হৃদয়ের জন্যই তৈরি করেছেন মনে হচ্ছে, সত্যি কত সুন্দর এমন বউ কয় জনের কপালে থাকে, কি হল ধরবে? কানিজ এর কথায় সম্বিত ফিরে পায় হৃদয়, সরি আমি কিছু ভাবছিলাম।

লজ্জা করেনা নিজের বউ রাস্তায় কাদায় পড়ে আছে, আর উনি অন্যদের মত ডেবডেব করে চেয়ে আছে, কানিজ এর এই কথায় সত্যি লজ্জা পায় হৃদয় পাশে গ্রামের কিছু লেংটা ছেলে খিলখিলিয়ে হাসছে, কানিজ এর আবার বাচ্চা খুব পছন্দের, ওদের ভেংচি কেটে হৃদয় এর হাত ধরে বাড়ির উদ্দেশ্যে যেতে থাকে কানিজ।



ও মা কে আইছে মা মাগো দেহ তোমার নাতি আইছে লগে জামাই ও আইছে, মা ও মা কানিজ দের দেখেই কানিজ এর চাচি চিল্লিয়ে উঠে।

কানিজ এর বয়স্ক দাদি ঘর থেকে বের হয়, আরে কানিজ আইছস, কতদিন তোরে দেহিনা, হেই যে গেলি সতিনের কথা এখন মনে পরল নাকিরে?

নাগো সতিন তোমার জামাই সময় পায়না, কেমনে আহি কউ?

হ্যা তোর মত জুয়ান বউ পাইলে নাগরের কি আর আমারে দেখতে মন চায়?

কিছুটা লজ্জা পায় হৃদয়।...............।।

৭ বছরের রিহান এদিক সেদিক তাকাতে থাকে, কিছুই বুঝতে পারেনা সে কোথায়, বাবা এটা কোন জায়গা? বাবা উনি কে?

বাবা এটা তোমার মায়ের দাদা বাড়ি, তুমি যেমন তোমার দাদার কাছে যাও এটা তোমার মায়ের দাদার বউ, তোমার বড় মা, হয়ত বুঝতে পারেনা রিহান, ডেবডেব করে চেয়ে থাকে সে, রিহান বুঝতে পারত যদি তার দাদি বেচে থাকত

লম্বা একটা দ্বীরঘশ্বাশ ছাড়ে হৃদয় ।

হটাথ খিলখিলিয়ে হেসে উঠে রিহান, উপস্থিত কেউ বুঝতে পারেনি রিহান কেন হাসছে কিন্তু রিহান এর চোখের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে হৃদয় মায়ের এই অবস্থা দেখেই হাসছে রিহান।



এর ভিতর কানিজ কাপড় বদলাতে যায়, রিহান তার বড় মায়ের কাছে একটা বিড়ি খাবার শখে রাস্তায় বের হয় হৃদয়, সিগেরেট খেতে খেতে কানিজ এর ফোন সন্ধ্যা হয়ে এলো, কই তুমি? তাড়াতাড়ি বাসায় আস।

কেন আমায় কি কেউ নিয়ে যাবে?

যেতেও পারে, বাসায় আস, আজ পূর্ণিমা, আমরা আজ পূর্ণিমা দেখব, কুইক জলদি কর জলদি, হৃদয় কিছু বলার আগেই ফোন রেখে দেয় কানিজ।



সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, নিরালায় বসে আছে হৃদয় আর কানিজ, গ্রামে সাধারনত দুই তালা কাঠের বাড়ি হয়, দুই তালার ছাদে ঝিম ঝিম আড্ডা দিচ্ছে হৃদয় আর কানিজ





হৃদয়ের বা হাতে কানিজ ডান হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে রেখেছে যেন হৃদয় এক্ষনি তাকে ছেড়ে পালিয়ে যাবে, সে যেন পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্যই এ ব্যাবস্থা।



নিচে উঠানে পাটি পেতে বসে আছে রিহান আর তার বড় মা, হয়ত এর রাক্কস খোক্কশ কিংবা রুপকথার রাজপুতের গল্প শুনছে সে, আফসোস হতে থাকে রিহান এর জন্য, রিহান এর দাদি নেই রিহান এর বাবার কৈশোর কালে উনি চলে গিয়েছেন না ফিরার দেশে।



হয়তো কিছুটা অভাব কমছে রিহানের কিন্তু রিহান কখনোই বন্ধুদের সাথে তার দাদির মুখে শুনা গল্প বলতে পারবেনা /////............

একটা দ্বিরঘশ্বাশ ছাড়ে হৃদয়......

কি হল হটাথ?

না মায়ের কথা মনে পড়ছে

ধুর বোকা মা কি কারো সারা জীবন থাকে? থাকেনা.........।

হুম জানি।।



কানিজ এই কানিজ জামাই রে নিয়া খেতে আয়,

চল ডাকছে খাবার খেয়ে আসি

ধুর পরে খাব আরো কিসুক্ষন বসি তোমার সাথে, আবার কবে না কবে এমন বৈদুত্যিক আলো ছাড়া দুজন জোছনা দেখব তার কি ঠিক আছে?

আচ্ছা তাহলে বস আরো কিছুক্ষন জবাব দেই হৃদয়।



রাতের খাবের শেষ করে বিছানায় যায় কানিজ আর হৃদয় রিহান তার বড় মার ঘরে শুবে, কিছুতেই তাকে আনা গেলনা সত্যি গ্রামের মহিলারা পাড়ে, এরা জানে কি করে বাচ্চাদের হাতে আনতে হয়, রিহান একটু দুষ্টামি করলেই কানিজের গা জ্বলে যায়, সেদিন সিরিজে করে পাশের বাসার ছেলে কে পানি দিয়েছিল বলে কি মেড়েছিল ছেলেটাকে, হৃদয় কিছু বলেনি, শুধু বলেছিল যন্ত্রনা যদি সহ্য করতে না পাড় তাহলে ওকে দুনিয়ায় আনতে এতো পাগল হয়েছিলা কেন?

অমনি কান্না শুরু হল কানিজের, আমি বুঝি রিহান কে ভালোবাসিনা, ওকে আদর করিনা, তুমি একাই কর সব, উ উ উ কান্না, সেদিন আর কথা বাড়ায়নি হৃদয়, শুধু আজ বলতে ইচ্ছা করছে রিহান কেনো একা ঘুমাতে চায়? আমি ডাকলে না করেনা, তোমার সাথে কেন শুধু ঘুমাতে চায়না? না কিছুই বলেনি হৃদয়।

বিছানায় শুয়ে এসব শুধু ভাবছিল, এর মাঝেই

ঘুম নেমে আসে হৃদয়ের চোখে

কানিজ হৃদয়ের বুকে মাথা রাখতেই ঘুম ভেঙ্গে যায় হৃদয়ের, কি হল ? জানতে চায় হৃদয়

না কিছুনা, হৃদয়ের ঠোটে কানিজ এর ঠোট নেমে আসে, একবার শারিরিক মিলন শেষ করে ঘুমিয়ে পরে দুজন.........।

সকালে ঘুম ভেঙ্গেই গোসল শেষ করে নেয় তারা, ঘুরতে যাবে, রিহান কে সাথে নিতে চেয়েছিলো ওরা কিন্তু রিহান যাবেনা, সে তার বড় মার কাছে থাকবে

নদির পাড়ে হাটতে যায় হৃদয় আর কানিজ

আচ্ছা আমি যদি মারা যাই কি করবে তুমি? জানতে চায় কানিজ..........

পাগল হয়ে যাব

মিথ্যে কথা আবার বিয়ে করবে না? হাসতে হাসতে জানতে চাই কানিজ////...।।

পাগলে কি না করে? কথা টি বলেই কানিজের চোখের দিকে তাকায় হৃদয় ছলছল চোখ দেখে বুকে টেনে নেয় কানিজ কে, ধুর বোকা কি আবোল তাবোল বকছো? আগে রিহান বড় হোক, ওকে লাল টুকটুকে একটা বউ এনে দিব তারপর দুজন একসাথে মরব এতো মরার তাড়া কিসের বলতো?

না হায়াত এর কথা কি কেউ জানে প্রতিউত্তর করে কানিজ।

হৈ হৈ করে কিছু ছেলে এসে ঘিরে ধরে তাদের কি মিয়ারা বাসা বাড়ি নাই? এই ভর দুপুরে নদির পাড়ে আকাম ..................?

শত চেষ্টা করে বুঝাতে ব্যারথ হয় হৃদয় যে তারা স্বামি স্ত্রী

কিছু ছেলে কানিজ কে লক্ষ্য করে খিস্তি কাটতে থাকে

হৃদয় রাগ সহ্য করতে না পেড়ে ছেলেটির কলার ধরে বসে>>>>>

চিল্লাচিল্লি শুনে কিছু লোক এসে ঝড়ো হয়,সৌভাগ্য ক্রমে কানিজ এর এক বন্ধু উপস্থিত হয় সেখানে, কানিজ কে চিনতে পাড়ে ব্যাপার টি কানিজের বন্ধুর সহায়তায় শেষ হয়ে যায়, বাসায় ফিরার সময় শুধু শুনতে পায় হৃদয় কানিজ এর বন্ধুটি কানিজ কে বলছে আমাদের ভালোবাসা স্বরগিয় আমরা শহুরে স্মারট না গ্রাম্য খেত তবু অশ্লিল না



পরে জানতে পারে হৃদয় ছেলেটি কানিজ কে ভালোবাসতো, কানিজ প্রোপোস পাবার পর বলেছিল তুমি তো গ্রাম্য ভুত



ঢাকা ফিরল হৃদয় ও কানিজ

সেদিনের মত আজ আর রিহানের ঘুম নেই বরং কাল থেকে তার বন্ধুদের সাথে দেখা হবে তাদের কি কি নতুন গল্প বলবে তা নিয়ে বেশ উত্তেজিত সে।



আজ বাসায় ফিরেই ঘুম দেয় হৃদয় কাল থেকে অফিস, কানিজ তার ছেলের কাপড় ধুয়ে দিচ্ছে স্কুল ড্রেস,

এই যে স্যার উঠেন ভোর ৫ টা বাজে গোসোল করেন, কানিজ ডাকে হৃদয় কে

আড়মোরা দিয়ে ঘুম ভাঙ্গে হৃদয়ের, হাতে টুথপেষ্ট আর ব্রাশ নিয়ে গোসোল খানায় যায় সে, ইশ রাত টা কেনো আর একটু দেরিতে শেষ হলনা, স্বপ্ন টা কেন আর একটু লম্বা হলনা ভাবতে ভাবতেই গোসল শেষ করে তৈরি হয় সে,

অফিছে যাবার পথে শুনতে পায় কান্না করছে কানিজ এর মেয়েটা,

না মা কাদেনা, মা কাদেনা, কান্না আর নাই হয়ত মায়ের শাল দুধ এখন মেয়েটার মুখে, কি যেনো নাম রেখেছে মেয়েটার

স্বপ্ন না স্বপ্না না স্বর্ণা, ধুর আজকাল আর কিছুই আগের মত মনে থাকেনা হৃদয়ের, এইতো মনে পরছে কানিজ এর মেয়ের নাম রি রি রি......ও হ্যা রিহান



রিহান নামটি এর আগেও যেন কোথায় শুনেছে হৃদয় কিছুই মনে পড়ছে না তার, এই ব্যাপার গুলা মৃত্যুর আগে ঘটে বলেই শুনেছিল হৃদয়,

মৃত্যু আসন্ন হয়তো

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৩

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:
ভাবছিলাম এটা মনে ভবিষ্যৎ পরিকল্পণা টাইপ কিছু । কিন্তু পরে দেখি আবার সাসপেন্সও আছে । ভালো ভালো :) :)

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০৫

হৃদয় এর স্পন্দন বলেছেন: দোয়া রাখবেন যেনো আত ভালো কিছু দিতে পারি :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.