![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Miles to go before I sleep...
ভারতের পশ্চিম বাংলায় জন্ম নেয়া আত্রাই বাংলাদেশে প্রবেশ করে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বুক চিরে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করে। পশ্চিম বাংলার দক্ষিন দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ এবং কালুঘাটের উপর দিয়ে ভারত অংশে ১১২ কি.মি প্রবাহিত হয়। মোট ৩৯০ কিমি দৈর্ঘ্য। মজার ব্যাপার হল এটি আবার বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায় প্রবেশ করে। নওগাঁ জেলার একটি উপজেলার নামকরণ করা হয় আত্রাই নদীর নামে। এরপর বিখ্যাত চলনবিলের উপর দিয়ে সগর্বে প্রবাহিত হয়ে যমুনায় গিয়ে পতিত হয়। কি বিচিত্র আমাদের আত্রাই! সে মানে না মনুষ্য গড়া সীমানা বিভক্তি, চলেছে আপন ধারায়।
মহাভারতের বনপর্বে আত্রাই নদীকে পবিত্র নদী বলা হয়েছে। এছাড়া দেবী পূরানে দুর্গোৎসবের দেবীদুর্গার মহাস্নান মন্ত্রে আত্রাই নদীকে "আত্রেয়ী ভারতী গঙ্গা যমুনা সরস্বতী" নামকরণ উল্লেখও রয়েছে৷
এবার শুনি আত্রাই নদীর উৎপত্তির কাহিনীঃ
হিমালয়ের পাদদেশে অত্রিমুনির আশ্রম। তার স্ত্রী কর্দ্দম মুনির, তাদের কন্যা অনুশুয়া। তারা কায়ক্লেশ উপেক্ষা করে ধর্ম সাধন করতেন। একদিন ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব তিনজন মিলে অনুশুয়া দেবীর সতীত্ব পরিক্ষা করার জন্য গোপনে ঐ দেবীর কাছে ভিক্ষা চান। সতী অনুশুয়া ভিক্ষা পাত্র হাতে নিয়ে ভিক্ষা দিতে এলে অতিথিগণ নানাভাবে ছল করে তাদের ইচ্ছানুরূপ ভিক্ষা দিতে শপথ করান। অতিথি বিমুখ হলে ধর্ম যাবে এই ভেবে সতী অনুশুয়া প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হন৷ তখন দেবত্রয় সতীর স্তন পান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সতী মহাবিপদ দেখে এবং এতো বড় মানুষকে স্তন দান অসম্ভব জেনে বিনয় সহকারে অন্য কোন কিছু চাইতে বলেন। কিন্তু দেবগণ অনঢ়। বহু মিনতির পর যখন অতিথিগণ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছে না তখন দেবী চন্দ্র, সুর্য ও দেবগণকে সতীত্বের সাক্ষী রেখে অভিশাপ দেন যে, হে অতিথিগণ আমি যদি স্বামী ভিন্ন অন্য কোন কল্পনা করে না থাকি তবে আমার সতীত্বের প্রভাবে তোমরা শিশু হয়ে যাও। সঙ্গে সঙ্গে দেবত্রয় শিশু হয়ে যায় এবং সতী তাদের স্তন পান করান। এদিকে দুর্গা, লক্ষী ও সাবিত্রী তাদের পতিদের খোঁজ না পেয়ে নারদের সাহায্যে ঐ আশ্রমে যান এবং পতিগণের মুক্তি কামনায় কান্না শুরু করেন৷ তাদের কান্না শুনে ঐ তিনজন দেবতা তিনটি দোলনায় কান্না শুরু করে দেয়। কিন্তু সতীর অভিশাপে নিজ মুর্তি ধারণে অসমর্থ হয়ে তিন দেবতা ও দেবীর অশ্রু আশ্রমে পড়ে একটি নদীর ধারা সৃষ্টি হয়৷ লোকমুখে পরিচিত এই কাহিনীর সেই স্রোতধারাই আজকের আত্রাই নদী। অত্রিমুনির আশ্রম থেকে অশ্রু দিয়ে তৈরি বলে এই নদীর নাম আত্রাই৷
এবার শুনি হতাশার বাণীঃ
কাহিনী যাই হোক আত্রাই একসময় আপন যৌবনে পরিপূর্ণ ছিল। দিনাজপুরের বিখ্যাত লেখক শওকত আলীর "প্রদোষে প্রাকৃতজন" বইয়ে আত্রাই নদীর জৌলুশ সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই সময়ে এই নদীতে তিমি, বোয়াল, চীতল, এমনকি ইলিশ মাছও বেশ ভালই পাওয়া যেতো।
কিন্তু কালক্রমে মানুষের প্রয়োজনে এই নদীর উপর এখন ৩ টি রাবার ড্যাম।পানির প্রবাহ নেই বললেই চলে৷ যাতে খরোস্রোতা এই নদীই এখন হারাতে বসেছে তার আসল সতীত্ব৷
(পরবর্তী পর্বে আত্রাইয়ের শাখা ও উপনদী নিয়ে গল্প নিয়ে হাজির হবো, পড়ার জন্য ধন্যবাদ)।
১৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:০১
হাবিব লাবু বলেছেন: কে শোনে কার কথা। সবাই নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত।
২| ১৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: কে শোনে কার কথা। সবাই নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত।
যদি নদীকে তার আপন গতিতে চলতে না দেওয়া হয় তাহলে চরম মাশুল দিতে হবে।
৩| ১৭ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: হাবিব লাবু,
নদী নিয়ে লিখেছেন দেখে ভালো লাগলো। পৌরানিক কাহিনীতে আত্রাইয়ের উৎপত্তি রহস্য জানা গেল। নদী মরে গেলে দেশও মরে যায়।
প্রাসঙ্গিকতার কারনে এই লিংকটি দিলুম --“এখানে এক নদী ছিলো”
১৮ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:১৮
হাবিব লাবু বলেছেন: ধন্যবাদ। পড়ে ভালো লাগলো। অনেক কিছু জানলাম।
৪| ১৭ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নদী নিয়ে আমরা সবাই কথা বলি। আসল কথা কেউ বলি না।
আমাদের দখলের চেয়ে ভারতের দেয়া বাঁধে যে ৫৪টি নদী মৃতপ্রায় সবােই যেন তা জেনেও ভূলে যাই।
এই আত্রাই নদী নিয়েও মমতা দিদির কি কান্না। অথচ এর পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস ঘোড়ামারা নদীতে বাঁধ দিয়ে ভারত ইতোমধ্যেই আত্রাইকে অনেকটাই অকেজো করে ফেলেছে।
ভারতের অংশে মাত্র ২টি থানা কুমরগঞ্জ ও বালুরঘাট থানার ৩০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছে আত্রাই । তাতেই তাদের যে কান্না, আমাদের ৫৪টা নীতে বাঁধ দেয়ায় আমাদের সেই কান্না কই?
কুম্ভীরাশ্রা বইয়ে তিনি অদ্ভুত সব ফর্মুলা দেন াথচ তিস্তার পানি নিয়ে গঙ্গার ন্যায্য বন্টন নিয়ে একদম রাজি নন।
কি অদ্ভুত স্বার্থপরতা!
আমাদরে নদী সমস্যার সমাধানে আমাদের জাতীগত ঐক্যমত সৃষ্টি করতে হবে।
নদী বাঁচলে বাঁচবে দেশ এই চেতনা না জাগা পর্যন্ত দোষারুপের রাজনীতিই সার।
১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৫৩
হাবিব লাবু বলেছেন: সবাই নিজের স্বার্থ দেখে। ওরা বড় দেশ, দয়া দেখায় আমাদের তাই ওদের বেশি পানি লাগে। আমাদের শক্তি কম, আর ভাটির দেশ হওয়া আমাদের অভিশাপ দাদা। আবার আমাদের যা আছে তাই যদি ভালো মতন অব্যবস্থাপনার মধ্যে আনতে পারি তবেই অনেক নদী রক্ষা পাবে, ফিরবে বৈচিত্র। কিন্তু যোগ্য নেতৃত্ব আর সুদৃষ্টির অভাবে আমরা হারিয়ে ফেলছি অনেক নদী।
তবে উত্তর বঙ্গের নদী রক্ষায় আমি সারাজীবন আন্দোলন করে যাবো। আপনাদের পাশে চাই। ধন্যবাদ।
৫| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: কোন নদী ভালো নেই ক্ষমতাবানদের বালু উত্তলোনের কারণে
১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৫৫
হাবিব লাবু বলেছেন: নিজ নিজ এলাকায় শিক্ষিত ব্যক্তিদের নিয়ে এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। নিজেদের সম্পদ রক্ষায় আমাদের এগিয়ে আসতেই হবে ভাই।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:০১
রাজীব নুর বলেছেন: আত্রাই নদী না। বাংলাদেশের কোনো নদীই ভালো নেই।
অথচ নদী যে কত বড় সম্পদ তা কেউ বুঝতে চায় না।