![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দূর ঐ নীল আকাশে, তারা-নক্ষত্রের মতই হাজার হাজার গল্প ঝুলে রয়েছে, আমি সেই গল্পগুলোই বলতে চাই।
সেদিন আমি বারান্দায় বসে বসে একটা পেপারের প্রথম পাতায় চোখ ভুলাচ্ছি। এমন সময় দেখি লোকজনের হাঙ্গামা। কেন, কি হচ্ছে? জানি না। মাকে ডেকে বললাম, কিছু জানো?
মা মাথা উপর নিচ করলেন। কিছু না বলে তার কাজে চলে গেলেন। আমি আবার বসে বসে পেপার পড়ায় মনোযোগ দিলাম। কিন্তু একটু পর লক্ষ্য করলাম, সোরগোল বেড়ে গেছে। মানুষজনের এমন অবস্থা দেখে আমার কৌতুহল হল। তাই পেপারটা ঘরে রেখে মাকে বলে বের হয়ে গেলাম।
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে দেখলাম এই বিল্ডিংয়ের আরো অনেকে আমার মত কৌতুহলে নিচে নামছে। এক পরিচিত বড় ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম, ভাই কিছু জানেন। সে কিছু জানে না বলল। বুঝলাম সবাই জানার জন্যে উৎসুক হয়ে আছে। গেট দিয়ে বের হয়ে প্রথমে অনেক লোককে দেখতে পেলাম। যারা কি বলে যেন চেচাচ্ছে? একটু একটু বোঝা যাচ্ছে। কাছে যেতেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হল।
বুঝলাম কেউ নতুন শহরের খোজ পেয়েছে। যেখানে এই শহর থেকে অর্ধেক লোক গিয়ে আরামে বসবাস করতে পারবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সেখানেও আদিম যুগের কিছু মানুষ বসবাস করে। কেউ কেউ তাই তাদের জন্যে দরদ ভরা কন্ঠে বলল, আদি মানুষদের বিতারিত করে সেখানে বসবাস আমাদের উচিত হবে না। কিন্তু কেউ কেউ এর ঘোর বিরোধিতা করছে। তাই নিয়ে এই সোরগোল।
আমি আবার বাসায় ফিরে এলাম। এইসব নিয়ে কখনই আমার মাথা ব্যাথা ছিল না। তবে ঘরে বসে বসে খোজ-খবর নিতে তো দোষ নেই।
ডাইনিং রুমে বসে বসে টিভিতে খবর দেখছি। মা এসে কফি দিয়ে গেলেন। মাকে বাবা'র কথা জিজ্ঞাসা করতে বললেন, আজ তার আসতে দেরি হবে। কি এক কাজের চাপ যাচ্ছে এখন।
আমি কফিতে চুমুক দিয়ে শরীরটা সোফার উপর এলিয়ে দিয়ে বসে পড়লাম। টিভিতে এখন সেই সংবাদ দেখাচ্ছে। রিপোটারের কথা শুনে মনে হল সেও সেই শহরের যাওয়ার ঘোর বিরোধী।
কিছুক্ষণ পর জনগণের উপর পুলিশের লাঠি চার্চ আড়ম্ভ হল। সবাই যার যার মত ছুটে যাচ্ছে এদিক-সেদিক। যে ভিডিও করছে সেও ছুটছে। তাই ভালো মত দেখতে কষ্ট হচ্ছে। একটু পর গরম পানি দেওয়া হল। মূলত যারা এর বিরোধীতা করছে তাদের উপর এই হামলা।
সেদিনটা খুবই বাজে ভাবে গেল। রাতের বাবার সাথে খেতে খেতে বললাম, তুমি কি এইসবের পক্ষে না বিপক্ষে?
আমি পক্ষে। বাবা তার চেহাড়াটা ধীর করে বললেন।
আমি অবাক হলাম। কারণ আমার বাবা কখনই কোন অন্যায়ের পক্ষে কথা বলেন না। কিন্তু আজ বললেন।
কিন্তু এটা তো অন্যায়।
কিসের অন্যায়? তুই এটা বুঝবি না। সেখানে আমাদের শহর থেকে লোকজনকে পাঠাতে পারলে কত ভালো হবে চিন্তা ও করতে পারবি না।
কিন্তু তুমি মনে কর, আমাদের পরিবারের লোক সংখ্যা ১০। এখন ৫ জন কম হলে আমাদের জন্যে ভালো। ১০জনকে নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। অন্য আরেক পরিবারে ২ জন। কিন্তু তারা অনেক সুখি। তাই বলে কি তাদের ওখানে আমরা ৫কে পাঠিয়ে দিয়ে তাদের সুখ নষ্ট করব? বা তাদের সেই বাড়ি থেকে বের করে সেখানে বসবাস শুরু করব? এটা অন্যায়।
তুই বড্ড বেশি বুঝিস। বলে বাবা উঠে পড়লেন। আমি চুপচাপ খেতে থাকলাম।
রাতের খবরে দেখলাম, সরকার সেখানে যাবে। প্রথমে সেই শহরের অবস্থা বুঝে তারপর ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু আমি জানি সেখানে যাওয়া মানেই কি? যারা এর বিরোধিতা করে আসছে তারাও জানে। কি হবে?
কিন্তু কিছু বলার নাই। কলাম্বাস যেভাবে আমেরিকা দখল করেন। ঠিক সেই একই অবস্থা হবে। কিন্তু কেউ কি জানেন কলাম্বাসের সেই লোমহর্ষক কাহিনী?
''আমেরিকার ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে আমেরিকার আদিবাসী, কৃষ্ণাঙ্গ, কৃতদাস, স্থানীয় শ্রমিক এবং অভিবাসীদের জীবনে কি ঘটেছিল। কলাম্বাস নিজের নোট বইটাতে কি লিখেছিলেন, তিনি বর্ণনা করেছেন বাহামা দ্বীপে পৌছানোর পর কিভাবে সেখানকার আরোয়াক আদিবাসীরা তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। আরোয়াকরা বেলাভূমি থেকে সমুদ্রে নেমে গিয়ে কলম্বাস এবং তার সঙ্গীদের অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। আরোয়াকদের কাছে কলম্বাসদের নিশ্চয়ই অন্য কোন জগতের মানুষ বলে মনে হয়েছিল। আরোয়াকরা কলম্বাসের জন্য নানারকম উপহার এনেছিল। কলম্বাসের মনে হয়েছিল আরোয়াকরা খুবই ভদ্র, শান্তিপ্রিয় মানুষ। কলম্বাস লিখেছিলেন, তাদের হাতে কোন অস্ত্র নেই, অস্ত্র তারা চিনে না। আমি যখন ওদের হাতে একটি তলোয়ার তুলে দিলাম, ওরা তলোয়ারের ধার করা দিকটাতেই ধরল আর হাত কেটে একাকার করে ফেলল। পুরো নোটজুড়ে তিনি তাদের গুণকীর্তন করেছেন।
কলম্বাস মূলত বের হয়েছিলে সোনার খোজে। তাই তিনি যখন তাদের হাতে দেখলেন সোনার খন্ড। তখনই বুঝে গেলেন এই অঞ্চলে সোনার অভাব নাই।
কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারের দশ বছরের ভিতরই সেখান থেকে আদিবাসীদের বিতারিত করা হয়। তাদের দাসে পরিনত করা হয়। তাদের মেয়েদের ধরে ধরে ধর্ষণ করা হয়।'' ( অন্যচোখে কলম্বাস: অনুবাদ শাহাদুজ্জামান।)
আমি জানি শেষ পর্যন্ত একই ব্যাপার ঘটবে এদের ব্যাপারে। নিরীহ, নিরঅস্ত্র মানুষদের মেরে ফেলা হবে। তাদের বাচ্চাদেরও রেহাই দেওয়া হবে না।
শেষ পর্যন্ত তাদের যে পরিণতিই ঘটুক না কেন? তাদের জন্যে এ শহরের ক্ষমতাবান মানুষদের কোন মায়া হবে না। তারা সেই শহর দখল করে ছাড়বে। কিছু মানুষ তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে ঠিকই কিন্তু কোন রকম লাভ হবে বলে মনে হয় না।
রাতে আমি একটি ইতিহাসের বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেলাম। এভাবেই আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। বা আমাদের ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়ানো হয়।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৮
সন্যাসী পিপড়া বলেছেন: গল্পটা পড়ে বিষয়টা বোঝা উচিত ছিল।। ভালমত উল্লেখ করে দিয়েছি। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। তাছাড়া একটা বইয়ের উল্লেখও আছে। আর বর্তমানে এমন ঘটনা সব জায়গায়ই ঘটছে।
২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এটা কোন গল্প হয়েছে বলে আমার মনে হলো না।
ভাল কিছু আশা করছি!
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৪
সন্যাসী পিপড়া বলেছেন: ধন্যবাদ।। এটা আসলে গল্প হয় নি। আমিও বুঝেছি। তবে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২
কামরুল হাসান বলেছেন: আর যাই চিন্তার গভীরতা আছে।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫১
সন্যাসী পিপড়া বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৪
অগ্নি কল্লোল বলেছেন: লেখা পড়ে মনে হলো কোন একটা বিষয়ে প্রতিবাদ করেছেন।
বিষয়টা কি জানতে পারি??