নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূর ঐ নীল আকাশে, তারা-নক্ষত্রের মতই হাজার হাজার গল্প ঝুলে রয়েছে, আমি সেই গল্পগুলোই বলতে চাই।

সন্যাসী পিপড়া

দূর ঐ নীল আকাশে, তারা-নক্ষত্রের মতই হাজার হাজার গল্প ঝুলে রয়েছে, আমি সেই গল্পগুলোই বলতে চাই।

সন্যাসী পিপড়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিসংগ্রামের গল্প: ঈমাম সাহেব

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৬

সাত-আটজন যুবকের হাত পিছনে নিয়ে শক্ত দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেধে উপুর করে শুইয়ে রাখা হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে তাদের বলি দেওয়া হবে। হয় তাদের কপালে গুলি করা হবে, নয়তো মাথা থেকে ধর আলাদা করা হবে। এটা নির্ভর করছে ক্যাপ্টেনের ওপর। তিনি যা বলবেন তার ওপরই নির্ভর করছে ছেলেদের কীভাবে মারা হবে।

শুকুর আলী শাদা পাঞ্জাবি পরে, সুগন্ধী মেখে বাড়ি থেকে বের হল। তার মুখে শাদা দাড়ি। মসজিদের সামনে পৌঁছে ঈমামকে ডাক দিল। ভিতর থেকে তজবিহ পড়তে পড়তে ঈমাম সাহেব এসে তাকে সালাম দিল।
—চলেন, ঈমাম সাহেব ক্যাম্পে যাই।
—কোন ক্যাম্পের কথা কন?
—সেনাবাহিনীর।
ঈমাম সাহেবের মুখ শুকিয়ে গেল। তার মুখে বারবার পানি এসে ভরে যাচ্ছে সে গিলে সারতে পারছে না। কয়েকবার থুথু করে ফেলে দিল। তবু থামছে না। শুকুর আলী হল এই গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী লোক। তার কথার অগ্রাহ্য করা মানে চাকরি থেকে চ্যুত হওয়া। সে কোনোভাবে পাক-বাহিনীর ক্যাম্পে যেতে রাজি না। কিন্তু কি করবে ঠিক বুঝতে পারছে না।
—সাহেব, আমার তো হামিদ মিয়ার বাড়ি মিলাদ আছে। কেমনে যাই? জানে মিথ্যা বলে লাভ হবে না।
—দূর মিয়া মিলাদ পরে পড়বা, এখন চল।
সে শুকুর আলীর পাশাপাশি হাঁটতে থাকে। তার মুখের ভিতর এখন পানি। সে গেলার চেষ্টা করছে। কোনো কিছু খাওয়ার ফলে এমন হতে পারে। দুপুরে ফালু মুন্সির বাড়ি কৈ মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছে, অতি সু-স্বাদু সেই রান্না। একেকটা মাছ খেতে অমৃত’র মত লাগছিল। সে দুটি খেয়েছে। নিজের বাড়ি হলে আরো দু-একটি বেশি খেত। মুখে পানির আসার কারণটা আসলে বলা মুশকিল। এত সুস্বাদু খাবার খাওয়ার পর যদি কোন অসুখ-বিসুখ হয় তাহলে মানুষ খাবে কি?

ঈমাম সাহেব দেখল, সাত-আট জন যুবককে উপুর করে শুইয়ে রাখা হয়েছে, তাদের হাত বাধা। উদাম গা। কয়েকজন প্যান্ট পরে আছে, কয়েকজন লুঙ্গি। তারা বেঁচে আছে না মরে গ্যাছে বলা মুশকিল, কারণ কেউ নড়ছে না। মরার মত পরে আছে।
—ক্যাপ্টেন কাহা? শুকুর আলী জিজ্ঞেস করে এক সৈনিককে।
সৈনিকটি একটু-আধটু বাংলা জানে, তার ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলল, মজা লুটছে।
—কাহা?
—তাবু মে।
—বহুত আচ্ছা। বহুত আচ্ছা। হামারা এ্যাক দোস্ত আয়া হ্যায়।
সৈনিকটি ঈমাম সাহেবকে সালাম দেয়। সে উত্তর দিয়ে জিজ্ঞেস করে, ক্যাছে হু বাচ্চো?
—বহুত আচ্ছা। আরো কয়েকজনকে দেখা যায় আশে-পাশে ঘুরঘুর করছে। এ সময় ক্যাপ্টেন তাবু থেকে বের হয়। উড়া-মুড়ি দেয়। হেঁটে হেঁটে তাদের দিকে আসতে থাকে। পিছনে দেখা যায় সৈন্যরা একটি নারীকে টেনে-হেচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার শরীরের উপরিভাগ অনাবৃত। সবাই সেই দিকে লোভাতুর দৃষ্টি তাকিয়ে আছে। ঈমাম সাহেব দৃশ্যটি একবার দেখে চোখ নামিয়ে নিল। শুকুর আলী এক দৃষ্টিতে সেই দিকে তাকিয়ে আছে।
—কিয়া বাত, শুক্কুর সাব?
—হামারা এ্যাক দোস্ত আয়া, সাব।
—সালাম, ঈমাম সাব।
বাংলা শুনে ঈমাম একটু অবাক হলেও সামলে নিয়ে বলল, জ্বি ভাল। আপনি বাঙালি?
—জ্বি না। এইদেশে ছিলাম বহুত দিন, তাই বাংলাটা আসে।
তা বেশ। কাজকর্ম কেমন চলতেছে?
—আপনারা সাহায্য না করলে কি ভাল চলবে? সবাই শুনে শুধু মোক্তিতে যোগ দিচ্ছে। বহুত আচ্ছা, বহুত আচ্ছা। শালাদের ধরেছি, ঐ যে দেখেন।







সম্পূর্ণ পড়ুন রাইজিং বিডিতে::

http://www.risingbd.com/মুক্তিসংগ্রামের-গল্প--ঈমাম-সাহেব/217931

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১০

সুমন কর বলেছেন: ছোট কিন্তু চমৎকার লাগল। ভালো লাগা রইলো।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১৭

সন্যাসী পিপড়া বলেছেন: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ, সুমন কর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.