নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মুসলীম । সবার প্রতি আহ্ববান জেনে, বুঝে এবং আনুগত্যের মাধ্যমে মুসলীম হোন ।

হুমায়ুন কবির (সুমন)

আমি একজন মুসলীম । সবার প্রতি আহ্ববান জেনে, বুঝে এবং আনুগত্যের মাধ্যমে মুসলীম হোন ।

হুমায়ুন কবির (সুমন) › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন বদলে গেল জহুরা খাতুন ?? হুমায়ুন কবির (সুমন)

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১২

একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েটি । পাশের দুই গ্রাম পরের কলেজটিতে সেই এবার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী । বাড়ি থেকে কিছুটা পায়ে হেটে তারপর অটো করে প্রতিদিন কলেজে যেতে হয় তাকে । কলেজে আছে তার বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বান্ধুবী । মেয়েটির নাম হল জহুরা খাতুন, অপর দিকে বান্ধুবীদের মধ্যে টিনা , মিনা, সুজানা, প্রেয়সী, সুলতানা একটু ঘনিষ্ঠ বেশী । তারা সবাই দেখতে মোটামুটি সুন্দর তবে জহুরা ও সুজানা একটু বেশী সুন্দরী । জহুরা সহ তার সব বান্ধুবীরাই আধুনিক পরিবেশে চলাটাই পছন্দ করে, তার জন্য অবশ্যই প্রতিদিনই তারা কলেজে কিছু না কিছু খরাপ মন্তব্য শুনে আর শুনতে শুনতে এখন তাদের অভ্যস্থ হয়ে গেছে । আজকে ১৪ই ফেব্রুয়ারী তাই কলেজে আসার সময় তার বান্ধুবী সুজানাকে স্থানীয় এক ছেলে প্রেম নিবেদন করল, এই খবরই সুজানা অত্যান্ত নাজেহাল অবস্থায় বলতেছে জহুরাকে । জহুরা শুনে বলল, কোন ভয় নেই আমাদের দেশের সরকার মেয়েদের অধিকার নিয়ে বড়ই তৎপর তাইতো আমাদের নিরাপত্তার জন্য প্রনয়ন করেছে অনেক কঠিন কঠিন আইন । এই কথা শেষ না হতেই সুজানা রেগে গিয়ে বলতে শুরু করল, জহুরা তুই কি ভুলে গেছিস, বেশ কয়েক মাস আগে আমাদের কলেজের এক ছাত্রীকে একটা বখাটে ছেলে প্রেম নিবেদন করার পরে মেয়েটি তাতে সাড়া না দেওয়ায় গত মাসে ঐ মেয়েটিকে এসিড নিহ্মেপ করেছে বখাটেরা, এখন সেই মুত্যুর দ্বার প্রান্তে । এরপর গত বছর আমাদের কলেজের লেকচারার হাছিনা আপাকে নিয়ে তারই ছাত্ররা কিছু খারাপ মন্তব্য করেছিল আর আপা তার প্রতিবাদ করার কারনে হাছিনা আপাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ঐ বখাটে ছাত্ররা ধর্ষন করেছে, এমনকি ঐ ধর্ষনের ভিডিও পর্যন্ত করেছে তারা, যাতে ঐ ধর্ষনের কথা আপা কাউকে বলতে না পারে, তাইতো আপা সেই অপমান সইতে না পেরে তিনি আত্নহত্যা করেছিল । এরপরেও প্রতিদিনের পত্রিকা খুললেই আর টেলিভিশনের খবর দেখলেই দেখতে পাই অসংখ্য ধর্ষন আর হত্যার খবর । জহুরা শুন ! তুই যে আইনের কথা বলছিস, সেই আইন কি পেরেছে ঐ ছাত্রীকে নিরাপত্তা দিতে এসিড থেকে, সেই আইন কি পেরেছে হাছিনা আপাকে আত্নহত্যা থেকে ফেরাতে, সেই আইন কি রহ্মা করতে পারতেছে প্রতিদিনের ধর্ষন আর হত্যা থেকে সাধারন মা বোনদেরকে ?? এই সব চিত্রই আজ আমাকে জিম্মি করে রেখেছে । আমি প্রস্তাবে না বললেই ঐ ছেলেটি কিছু না কিছু করার জন্য উৎ পেতে বসে থাকবে । আর সেই থেকে আমাকে রহ্মা করার জন্য সরকারতো প্রতি একটা মেয়ের জন্য একটা পুলিশ নিয়োগ দেয়নি । আর পুলিশতো এখন আরেক ধর্ষকের ভূমিকাই আছে । এমন ভাবে কথা গুলো সুজানা বলল মনে হয় এখনি সেই কেদেঁ ফেলবে । তাহলে এখন কি করবি সুজানা ?? আর কি করব কলেজে আসা বন্ধ করে দিব । এরপর থেকে সুজানা আর কলেজে আসে না । কিছুদিন যাওয়ার পর স্থানীয় এক নেতার ছেলে এবার জহুরাকেই প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বলল কাল যেন ছেলেটি উত্তর পায়, প্রস্তাব শুনেতো জহুরা অবাক ! পরের দিন জহুরা কলেজে যাওয়ার পথে ঐ ছেলের সাথে দেখা, ছেলেটি বলল কি হলো কিছু বললে না যে ?? জহুরা সাহসিকতার সহিত তার বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে ডেকে কাছে নিয়ে ছেলেটিকে বলল প্রেম করতে পারব না তবে আপনি রাজী হলে আমি বিয়ে করব আপনাকে, রাজী আছেনতো ?? কথাটি শুনে ছেলেতো অবাক বলল না, না, আমার পরিবারতো আমাকে এখন বিয়ে কোন মতেই দিবে না কারন এখনো আমার বড় ভাই ও ছোট বোন বিয়ে করে নাই বরং এই কথা শুনলে আমাকে ঘর থেকে বের করে দিবে । তাহলে আজ থেকে আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না দয়া করে । এরপর জহুরা ভাবতে লাগল ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বাচবঁ ? ভাবতে ভাবতে একটা উপায়ও বের করল, কাল থেকে সেই বোরকা গায়ে দিয়ে আসবে, তাহলে কোন ছেলে তার চেহারা দেখবেও না প্রস্তাবও দিবে না । কথামত আজ প্রথম জহুরা তার ভাবীর বোরকা পরে কলেজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হল কিছু দূর যেতেই তাকে পাশ কাটানো কিছু মাদ্রাসার মেয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে সালাম দিল এই প্রথম সেই একসাথে এত সালাম পেল । এরপর টেম্পুতে উঠে এখনতো সেই আরো অবাক হলো যে, আজ বোরকা পরিহিত জহুরার পাশে কোন পুরুষই বসেনি যদিও দুজন পুরুষ দাড়িয়ে ছিল অথচ আগে প্রতিদিই থ্রি-পিজ ও আধুনিক পোশাক পরিহিত জহুরার পাশে ছেলে বুড়ো বসার জন্য লাফালাফি করত, কারন মেয়েদের পাশে বসলেইতো অন্য রকম লাগে । আজই প্রথম জহুরা বখাটে ছেলেদের কোন বাজে মন্তব্য ছাড়াই কলেজে এসে পৌছেছে । আর পৌছা মাত্রই এই প্রথম বোরকা পরিহিত জহুরাকে কলেজে দেখেতো তার বান্ধুবীদের মাঝে রিতীমত হইচই পড়ে গেল, তার মধ্যে অনেক ধরনের মন্তব্যতো আছেই । দুপরের বিরতীর সময় জহুরা চিন্তিত মনে ক্যান্টিনের পাশে বসে আছে আর তা দেখেই দুজন হিজাব পরিহিত প্রথম বর্ষের ছাত্রী তাকে ডেকে বলল আপা আসুন এক সাথে খানা খাই । এই প্রথম জহুরাকে কোন অপরিচিত মেয়ে এমন বিনয়ের সহিত খেতে ডাকল তাই জহুরা মেয়েগুলোকে জিজ্ঞেস করল আচ্ছা, কলেজে এত মেয়ে থাকতে আমাকে ডাকলে কেন ?? আপা আপনি ধার্মীক ও ভাল তাই আপনাকে খাওয়ালে আমাদের সওয়াব হবে । কিভাবে বুঝলে আমি ধার্মীক ?? এই যে আপনি কলেজের মধ্যেও পর্দা করেন । কথা শুনে জহুরা থমকে গেল আর মনে মনে বলতে লাগল আমিতো ইসলামের তেমন কিছুই জানি না বিপদে পড়ে মাত্র একটা বোরকা পরাতেই এত সম্মান চমৎকার ব্যাপারতো ! কি আজব, ইসলামের একটা বিধান মানাতেই এত সম্মান ও নিরাপত্তা, তাই জহুরা খুব আগ্রহ নিয়ে ইসলাম সম্বন্ধে বিস্তারীত জানার জন্য পরের দিন পাশের বাড়ির আলেম পড়ুয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে বলল, বলতো আমি ইসলামকে কিভাবে জানব ?? বলল আপা আপনি কুরআন পড়েন আরবীসহ বাংলাতে, কোথায়ও না বুঝলে আমাকে জানাবেন আমি যতটুকু জানি আপনাকে বলব, আর কোন বিষয়ে আমিও যদি না বুঝি তা আমাদের মাদ্রাসার শিহ্মকদের কাছ থেকে জেনে আপনাকে জানাব । আর হা আপনি বিশ্ব বিখ্যাত রাসূলের জীবন গ্রন্থ “আর রাহেকুল মাখতুম” বইটি পড়ুন আপাতত । এরপর থেকে বদলে গেল জহুরা খাতুনের জীবন । এই জহুরা খাতুন আর আগের জহুরা নেই, তার আচার আচরনে ও চাল চলনে এমন পরিবর্তন আসল যে, যা দেখে বুঝতে বেশীদিন লাগেনি তার পরিবারসহ পাড়া প্রতিবেশীর, যদিও তার পরিবার এখনও আধুনিক । এখন ছোট বড় সবাই জহুরাকে সম্মান করে, আগে যেই তুই তুমি বলত এখন সবাই আপনি বলে সম্বোধন করে । এরপর থেকে কলেজে না গিয়ে পাশের এলাকার মাদ্রাসায় ভর্তি হল জহুরা খাতুন । বেশ কিছুদিন পর এক দ্বীনদার পরিবার থেকে জহুরার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসল তারপর সেখানে তার বিয়েও হল । বাসর রাতেই ঘটল এক অবাক কান্ড , তার স্বামী তাকে স্পর্শ করার আগেই তার হাতে কাবিনের (মোহরানা ) পুরো টাকা দিয়ে দিল, পরে অবশ্য জহুরা সামান্য কিছু রেখে বাকীগুলো তার স্বামীকে ফিরিয়ে দিল তখন সেই মনে মনে বলতে লাগল আমার বংশের মধ্যে মনে হয় আমি প্রথম মেয়ে, যে কাবিনের পুরো টাকা বাসর রাতেই পেল । অথচ বতর্মান সমাজের ছেলেরা কাবিন দেওয়া তো দূরের কথা বরং উল্টো যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেছে মেয়েদেরকে, এমনকি হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করতেছে না । আজ আমি জহুরা খাতুন উপলব্দি করতে পেরেছি যে কঠিন আইন নয়, ইসলামের শিহ্মা এবং তার বাস্তবায়নই একমাত্র দিতে পারে একটি শান্তিপূর্ন পরিবার, সমাজ ও দেশ । তাই আসুন ইসলামকে জানি কুরআন সুন্নাহর মাধ্যমে এবং আনুগত্যের মাধ্যমে মুসলীম হবার চেষ্টা করি, আল্লাহ যেন আমাদের সবাই সেই তওফিক দান করেন । আমীন

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.