নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন ভ্রমনকারী মানুষ। ভ্রমন করতে এবং করাতে ভালবাসি। ফেসবুকে আমিঃ https://web.facebook.com/IAbuMuhammad

আবু মুহাম্মদ

কাউকে অতিক্রম করতে চাইনা, ব্যতিক্রম হতে চাই।

আবু মুহাম্মদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দরবন পর্ব-০৬ ( কুমিরঃ জলের রাজত্ব যার দখলে)

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৪৫

সুন্দরবন পর্ব-০৬ ( কুমিরঃ জলের রাজত্ব যার দখলে)


কুমির ভয়ঙ্কর এক সরীসৃপ প্রাণী। এদের উৎপত্তি অতি প্রাচীন কালে। ধারণা করা হয় ডাইনোসর যুগের পর এরা অল্পই পরিবর্তিত হয়েছে। বৈজ্ঞানিকদের মতে, এরা প্রায় ২০ কোটি বছর আগের প্রাণী। অথচ, ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছে ৬.৫ কোটি বছর আগে। অর্থাৎ কুমির বড় বড় বিলুপ্তির পর্যায়গুলো পার হয়ে এসেছে।

ভিজিট সুন্দরবন- সুন্দরবনের স্বর্গ রাজ্যে আপনাদের স্বাগতম
সুন্দরবনের যে সব বন্যপ্রাণী ভ্রমনকারীদের মন আকর্ষণ করে, ভ্রমনকে সার্থক ও আনন্দময় করে তুলে তার মধ্যে কুমির উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখে। পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমনের সময় কুমির দেখার জন্য খুব ব্যস্ত হয়ে যায়। তারা চলার পথে ট্রলার, লঞ্চ থেকে অবলোকন করতে থাকে। চলতে চলতে হঠাৎ যখন দেখলো যে একটা কুমির নদীর পাড়ের চরে বিশ্রাম নিচ্ছে, রোদ পোহাচ্ছে তখন তারা সংগীদের দেখানো ও ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। হাকা হাকি, লঞ্চ ও ট্রলার এর বিকট শব্দে ক্ষনিকের জন্য প্রাকৃতিক নির্জনতা হারিয়ে কুমিরের তন্ময় ভাবকে আঘাত করা মাত্র লাফ দিয়ে নদীর অতলে হারিয়ে যায়। এ বিরল দৃশ্য উপভোগ করা সৌভাগ্যের বিষয়।

সুন্দরবনে সর্বত্র কুমির আছে। তবে বিশেষ বিশেষ স্থানে এদের বেশী চলাফেরা করতে দেখা যায়। সুন্দরবনের যে সব স্থানে প্রতিনিয়ত কুমির দেখা যায় সে গুলো হল নন্দবালা খাল, পশুর নদীর চর, শেলা গাং, ঝোংড়া খাল, শাফলা খাল, ভদ্র্ গাং, মরাভোলা নদী, পাথরিয়া গাং, আরাইবেকি খাল প্রভৃতি। সুন্দরবনে কতটি কুমির আঝে তার কোন হিসেব এখনও পাওয়া যায়নি। সুন্দরবনের জলভাগের পরিমান হল ১৭০০ বর্গ কিলোমিটা। এর মধ্যে অনেক কুমির আছে তা বলা যায়। সুন্দরবনে কুমির দেখার উপযুক্ত সময় হলো শীত মৌসুম। এ সময় রোদ পোয়ানোর জন্য কুমির নদীর চর বা খালের পাড়ে উঠে মাটিতে শুয়ে থাকে। সাধারণতঃ সকালের দিকে ভাটার সময় কুমির নদী বা খালের পাড়ে রোদ পোয়ায়। বিকেলেও ভাটা থাকলে কুমিরকে নদী বা খালের পাড়ে বিশ্রামরত অবস্থায় দেখা যায়।
সুন্দরবনে সাধারণত লোনা পানির কুমির দেখা যায়। এ কুমির প্রায় ১৫-২০ ফুট লম্বা হয়। দেখতে কালো বা হলুদা ভাব। কুমিরের দুটি হাত, ২টি পা, একটি চোয়াল ও একটি লেজ আছে। কুমিরের মাথা খুব লম্বা। চোয়ালের অগ্রভাগের উপরে নাসারন্ধ্র, মাথার উপর দু’ পাশে দু’ টি চোখ ও চোখের পিছনে ঢাকনা যুক্ত কানের ঝিল্লি। কুমিরের শরীর কাটা যুক্ত। কাটা গুলো বর্মের ন্যায় কাজ করে। কমির যেমন পানিতে বাস করতে পারে তেমনি ডাংগায়ও বাস করতে পারে। কুমির দু’ হাত ও দু’ পা ভর দিয়ে বুক ও পেট উঁচু করে ডাংগায় চলাফেরা করে।

সুন্দরবনের কুমির প্রধানত মাছ খেয়ে জীবণ যাপণ করে। মাছের মধ্যে ভেটকি, পাংগাস, দাতিনা প্রভৃতি উল্লেখ্য যোগ্য মাছ তারা ধরে খায়। ডাংগায় সুবিধামত বন মোরগ, বাঘ, হরিণ, বানর ইত্যাদি পেলে শিকার করে খায়। তা ছাড়া গরু মহিষ মরাও খায়। নদীতে সাতার কাটার সময় এরা লেজ ব্যবহার করে। এবং হাত ও পা গুটিয়ে রাখে। পানির নিচে ডুব দিয়ে এক স্থান হতে অন্য স্থানে যেতে পারে। পানিতে ভাসার সময় হাত পা ছাড়িয়ে ভেসে থাকে। কুমিরের সব দাত সমান। শিকারের সময় দাত দিয়ে শিকারকে মেরে ফেলে। কুমির লেজ এবং দাঁত যুক্ত চোয়াল দিয়ে আক্রমন করে। লেজ দিয়ে আঘাত করে শিকারকে ধরে ফেলে। শিকার বড় হলে পানির উপর ছুড়ে আবার হা করে গিলে ফেলে। এ দৃশ্য উপভোগ করার মত।
সুন্দরবনের কুমির ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে ডিম পাড়ে। নদীর পাড়ের পার্শ্ববতী বালুর চর অথবা বনের মধ্যে গর্ত করে ডিম পাড়ে। অনেক সময় গর্ত না করে গোলপাতা দিয়ে বাসা তৈরী করে ডিম পাডে। ডিম পাড়ার পর গর্ত মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়। গর্ত ২-৩ ফুট গভীর হয়। গোলপাতার বাসায় ডিম পাড়লে আবার পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়। একবারে ২০-৩০ টি ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার পর মা কুমির একটু দুরে থেকে ডিমের দিকে দৃষ্টি রাখে। এভারে প্রায় ৫০-৬০ দিন হলে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। গর্তে ডিম পাড়লে মা কুমির খুব সতর্ক অবস্থায় থাকে। ডিম ফোটার সময় হলে কুমিরের বাচ্চার প্রথমে চোয়াল হয়। সেই চোয়াল দিয়ে ডিমের প্রাচীর ভাঙ্গার জন্য ঠুকুর দিলে টুন টুন আওয়াজ হয়। গর্তের ভিতরে যখন মা কুমির টুক টুক আওয়াজ শুনতে পায় তখন মাটি খুড়ে বাচ্চা বের করে।

কুমির ছানা গর্ত হতে বের হওয়ার পর দৌডিয়ে পাশ্ববর্তী পানিতে লাফিয়ে পড়ে। অথবা মায়ের পিঠে চড়ে পানিতে আসে। এভাবে ৫-৭ সপ্তাহ মা কুমির তার বাচ্চা চিনতে পারে। পরবর্তীতে আর চিনতে পারে না। তখন পুরুষ অথবা স্ত্রী কুমির বাচ্চা খেয়ে ফেলে। কুমির ৫০-৬০ বছর বেঁচে থাকে। সুন্দরবনের কুমির খুব ভয়ংকর প্রাণী। সময় ও সুযোগ পেলে এরা মানুষ এমনকি বাঘও খেয়ে ফেলে। কুমিরের মুখ ও পেট অনের বড়। এরা ইচ্ছে করলে একটা আস্ত মানুষ বা বাঘ একেবারে গিলে পেটে ভরে রাখতে পারে।
এক নজরে কুমির:
• কুমিরের পিঠের চামড়ার ভেতর হাড়ের মতো শক্ত পাত (osteoderms) থাকে।
• বড় তুণ্ড, চোয়াল সজোরে বন্ধ হয় কিন্তু খোলার পেশি তত জোরালো নয়।
• এরা ঘাড় বিশেষ বাঁকাতে পারেনা।
• জিহ্বা মুখের বাইরে বের করতে পারেনা। জিভের নিচে প্রধান লবণ রেচন গ্রন্থি।
• বিশাল লেজ পাশাপাশি চ্যাপ্টা- সাঁতারের প্রধান অঙ্গ, ও লড়াইয়ের অস্ত্র। পিঠে দুইসারি কাঁটা পায়ুর কাছাকাছি এসে একটি সারিতে পরিণত হয়।
• চার পা, হাঁসের মত লিপ্তপদ (web footed)
• ডুব দেওয়ার সময় কান বন্ধ করতে পারে।
• মুখবিবর ও নাসিকাপথ আলাদা করার জন্য দ্বিতীয় তালু (টাকরা/ secondary palate)- তাই মুখে খাবার নিয়েও সহজে শ্বাস নিতে পারে।
• একমাত্র সরীসৃপ যার চারকক্ষ হৃৎপিণ্ড (ভ্রণাবস্থায় পুরো পৃথক হবার পর অলিন্দদ্বয়ের মধ্যের দেওয়ালে আবার সামান্য ফাঁক তৈরি হয়- ফোরামেন অফ প্যানিজ্জা। জলে ডুব দেবার সময় এটি খোলা হয়- তখন রক্ত ফুসফুসে যায়না।
• একমাত্র সরীসৃপ যার দাঁত স্তন্যপায়ীদের মতো হাড়ে শেকড়-গাথা
সুন্দরবনের কুমির প্রজনন কেন্দ্র
এক কথায় ‘জলে কুমির-ডাঙ্গায় বাঘ, এর নাম সুন্দরবন’। বিশ্ব ঐতিহ্যের (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ জীববৈচিত্র্যে ভরপুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি। সুন্দরবন রাত-দিন ২৪ ঘন্টায় ৬ বার তার রূপ পাল্টায়। সুন্দরবন দেশের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৫১ ভাগ। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে সরকারের পদক্ষেপের অভাবে ইতিমধ্যেই সুন্দরবন থেকে বিলুপ্তি হয়েছে মিঠা পানির প্রজাতির কুমির ও ঘড়িয়ালসহ অনেক প্রজাতির বন্যপ্রাণি। কুমির সরীসৃপজাতীয় প্রাণী। ইউরোপ ছাড়া পৃথিবীর সব মহাদেশেই প্রায় ১৭.৫ কোটি বছর পূর্বে ডাইনোসরের সমকালীন কুমিরের উদ্ভব ঘটলেও ডাইনোসরের বিলুপ্তির পর অদ্যবিধি এরা প্রথিবীর বিভিন্ন ভৌগলিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে আসছে।

এ অবস্থায় সুন্দরবন থেকে কুমিরের বিলুপ্তি ঠেকাতে সুন্দরবন বিভাগের উদ্যোগে বিগত ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনের দুবলারচরে জেলেদের জালে একটি ‘লবণ পানি প্রজাতি’র কুমির ধরা পড়ার পরই কুমিরের বংশ বৃদ্ধির প্রাথমিক কাজ শুরু করে বন বিভাগ। এরপর ২০০২ সালে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে ৮ একর বন নিয়ে ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারি ভাবে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে দেশের একমাত্র কুমির প্রজনন কেন্দ্রেটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। শুরু হয় লবন পানি প্রজাতির কুমির প্রজননের মাধ্যমে কুমিরের বংশ বৃদ্ধির কাজ। কুমির বাচ্চা দেয় ৩ বছর পর ২০০৫ সালে। বিগত ২০০৬ সালের ১৫ই নভেম্বর সুপার সাইক্লোন সিডরে এই কেন্দ্রের ৭৫টি কুমিরকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যে ৭২টি বড় কুমিরের বাচ্চা সুন্দুরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৫টি কুমির চট্টগ্রামের ডুলহাজরা সাফারি পার্কে ও ৩টি পাঠানো হয় ভোলায়।
করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে বর্তমানে রমিয়েট নামে ১টি পুরুষ, জুলিয়েট ও পিলপিল নামের ২টি মা কুমির ও ২০৬টি বাচ্চা কুমির রয়েছে। রোমিও-জুলিয়েটের বয়স এখন ২৫ বছর। এই প্রজাতির লবণ পানির কুমির ৮০ থেকে ১০০ বছর বাঁচে থাকে। এই প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেয়া কুমিরই সুন্দরবনে কুমিরের বিলুপ্তি ঠেকাতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে ।

দুটি মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল প্রজনন মওসুমে মাটি গর্ত করে বা ওই পুকুরে পাড়ের ঝোপ ঝাড়ে তৈরি করা তাদের নিজেদের ঘাসের বাসায় ডিম দেয়। সুযোগ বুঝে কুমিরের ওই ডিমগুলো তুলে এনে মেশিনের সাহায্যে নির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো হয়। মজার ব্যাপার মেশিনে নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী ছেলে বা মেয়ে কুমিরের বাচ্চা ফুটানো যায়। ডিম থেকে ফোটা ওই বাচ্চাগুলোকে প্রজনন কেন্দ্রের তৈরি করা খাঁচায় নির্দিষ্ট একটা সময় রেখে বড় করার জন্য লালন পালন করা হয়। খাবার হিসেবে দেয়া হয় মাছ ও মাংস। বাচ্চাগুলো ২ মিটার বা সাড়ে ৬ ফুট দৈর্ঘ্যের হলে এবং সাথে সাথে শারীরিক কাঠামো প্রকৃতির সাথে মিলে নিজেরা টিকতে পারবে এমন অবস্থার পর তাদের অবমুক্ত করা হয় সুন্দরবনের খালে। সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য এ পর্যন্ত ৭০টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছে বলে রব জানান। বন্য কুমিরের প্রধান খাবার হচ্ছে মাছ ও কার্কাস বা মৃত দেহ। করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে সব সময় কুমিরছানার দেখা মেলে। এক রাতে এই প্রজনন কেন্দ্রটিরর সেডের নেট ভেঙ্গে একটি ‘চিতা বিড়াল’ ৬২টি কুমিরের বাচ্চা মেরে ও খেয়ে ফেলে। পরে ওই চিতা বিড়ালটিকে গুলি করে মেরে ফেলে বনরক্ষিরা। ঘটনায় করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে বনকর্মী (লস্কার) মাহাবুব হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত ও জাকির হোসেন নামে এক অস্থায়ী কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। আবার কেন্দ্র দুটি মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিলের ৯১টি ডিম পাড়লেও তা থেকে একটিও বাচ্চা ফোটেনি।
সুন্দরবনের নদ-নদী ও খালে প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠা লবণ পানির কুমিরও সাধারণত মে থেকে জুন মাসের মধ্যে ডিম পাড়ে। আগস্ট সেপ্টম্বরে সুন্দরবনে পানি বৃদ্ধি পেলে অধিকাংশ ডিম নস্ট হয়ে গেলে তা থেকে আর বাচ্চা ফোটে না। এছাড়া প্রকৃতিগত ভাবেই বড় কুমির ছোট কুমিরকে খেয়ে ফেলা। পুরুষ কুমির মা কুমিরের ডিম খেয়ে ফেলার স্বভাবগত আচরণ কুমিরের সংখ্যা কমে যাবার অন্যতম কারণ। চোরা শিকারি ও সুন্দরবনের মাছ আহরনের সময়ে অনেক সময় জেলেদের জালে কুমির আটকা পড়ে। কুমির মাছ খায় তাই জেলেদের কাছে কুমির শত্রু হিসেবে পরিচিত হওয়ায় জালে কুমির আটকা পড়লে পিটিয়ে মেরে ফেলে জেলেরা।

বিশ্বের একক বৃহতম ম্যানগ্রোভ এই সুন্দরবনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যার জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৩ বর্গ কিলোমিটার। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, চোরা শিকারি ও লবণাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ নানা প্রতিকূলতায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির মুখে। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কুমিরসহ নানা প্রজাতির বণ্যপ্রাণি। সুন্দরবনে কত কুমির আছে সে সম্পর্কে সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই বন বিভাগের কাছে। কয়েক বছর আগেও সুন্দরবনের বিভিন্ন খাল ও নদীর তীরে কুমিরের বিচরণ চোখে পড়লেও বর্তমানে সুন্দরবনে ঘুরতে গিয়ে কুমিরের দেখা মেলা ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এই অবস্থায় গোটা সুন্দরবনে কুমিরসহ বন্যপ্রাণির সংখ্যা জানাতে ইউএসএআইডি অর্থায়ানে গত বছরের শেষার্থে শুরু হয়েছে শুমারীর কাজ।
সুন্দরনের করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে গিয়ে কেন্দ্রেটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবিরের কাছ থেকে জানা গেছে এসব তথ্য। এই বন কর্মকর্তা আরও জানান, গবেষণা হচ্ছে বিশ্বের ২৬ প্রজাতির কুমির নিয়ে। এক সময় আমাদের দেশে ৩ প্রজাতির কুমির ছিল। যার মধ্যে মার্শ ক্রোকোডাইল, ঘড়িয়াল কুমির যা পদ্মা নদীতে দেখা যেত। আর লবণ পানি প্রজাতির কুমির। উপরোক্ত দুটি প্রজাতির কুমির ইতোমধ্যেই বিলুপ্তির পথে। তিনি আরও জানান, এই কেন্দ্রে লবণ পানি প্রজাতির পাশাপাশি মিঠা পানির কুমিরের প্রজননের জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। আবকাঠামোসহ রয়েছে বিশাল-বিশাল মিঠা পানির ২টি পুকুর। এখানে এখন এক জোড়া মিঠা পানির কুমির সংগ্রহ করা গেলে আবারো বিলুপ্ত মিঠা পানির কুমিরে বংশ বৃদ্ধি করে এই প্রজাতিকে দেশে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে

১। সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য (প্রথম পর্বঃ সুন্দরবন নামকরণ ও ইতিহাস)
২। সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য (দ্বিতীয় পর্বঃ ভৌগলিক অবস্থা ও ভূ-প্রকৃতি)
৩। সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য (৩য় পর্ব: জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রানী)
৪। সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য (চতুর্থ পর্বঃ “ রয়েল বেঙ্গল টাইগার”)
৫। সুন্দরবন পর্ব-০৫ (সুন্দরবনের অনন্য নিদর্শন হরিন)

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া ও ব্লগ
ছবি সূত্রঃ গুগল।

ভিজিট সুন্দরবন- সুন্দরবনের স্বর্গ রাজ্যে আপনাদের স্বাগতম

বিস্তারিত চলবে, জানতে-পড়তে আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।

আবু মুহাম্মাদ


মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৭

আবু মুহাম্মদ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:০৩

জুন বলেছেন: অনেক তথ্য জানা হলো আপনার লেখায় সুন্দরবনের কুমির নিয়ে । কুমীরের ছবিগুলো কি আপনার তোলা ? আমরা দুতিনটা বিশাল কুমীরকে রোদ পোহাতে দেখেছিলাম । আমাদের গাইড টুরসের লোকজন খুব এক্সপার্ট । তারা দুর থেকে দেখেই ইশারায় জানালো আর লন্চটাকে নিঃশব্দে বেশ কাছে নিয়ে গেল যার জন্য আমরা তাদের কাছ থেকে দেখা ও ছবি তুলতে পেরেছিলাম ।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৭

আবু মুহাম্মদ বলেছেন: মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ। না কুমিরের ছবি গুলো আমার তোলা নয়। আমার তোলা ছবি অনেক হারিয়ে গিয়েছে। ইনশাআল্লাহ এই সিজনে সুন্দরবনের অনেক ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। সাথে থাকুন, জানুন সুন্দরবনের অজানা তথ্য।

৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দরবন আমি বেশ কয়েবার গিয়েছি- কিন্তু হরিন ছাড়া আর কিছুই দেখিনি।
খুব সুন্দর লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.