নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিতালপুরী থাকি আমি,নিয়নপুরে আমার ঘর..

মি রুমি

জন্ম থেকে টিমটিম করে জ্বলছি।

মি রুমি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাসে আরেকদিন

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৫০

'নেই কাজ তো খই ভাজ'। বাসস্ট্যান্ডে দড়িয়ে আছি। বাসের খবর নাই। এক জায়গায় খই ভাজা হচ্ছে, বিদেশি খই, পপকর্ন। অপেক্ষা করা ছাড়া কাজ নাই এখন, বিদেশি খই কিনলাম।

জরুরি একটা ফোন করা দরকার। মোবাইলের ব্যালান্স জিরো। একজনের কাছে এগিয়ে গেলাম 'ভাই মোবাইলটা দেয়া যাবে? জরুরি একটা ফোন করতাম'। লোকটা কোন কথা না বলে পকেটে হাত দিয়ে সরে গেল। আমাকে ছিনতাইকারি ভেবেছে কিনা কে জানে। এ শহরের মানুষ কাউকে বিশ্বাস করে না। কয়েকজনের কাছে চাওয়ার পর তিন নাম্বার ব্যাক্তির কাছে মোবাইল পাওয়া গেল।

কথা শেষ করতে কর‍তে বাস চলে এসেছে।

মারামারি করে বাসে উঠলাম। কনূই এর গুতা দিয়ে যে লোকটাকে ফেলে বাসে উঠলাম, সে নিশ্চয়ই এখন আমাকে গালাগালি করছে। কিছু করার নাই। অফিস ফেরত এমন সময় বাসে ওঠা যুদ্ধ করার সমান। ভালোবাসা এবং যুদ্ধে সবকিছু করা যায়। Everything is fair in love & war. সে হিসাবে কনুই মারা কোন ব্যাপার না।

শাহবাগ থেকে ক্যান্টনমেন্ট হয়ে মিরপুর যাচ্ছি। বাসে বসার ছিট নাই, অগত্যা রড ধরে দাঁড়িয়ে থাকা।

বাস ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ঢুকে পড়েছে। সামনে কঠিন চেক আপ। কন্ডাকটর বললো, "যারা দাঁড়ায় আছেন, সবাই মাথা নামাইয়া বসে পড়েন, দাঁড়ায় থাকলে আর্মি ধইরা নামায় দিব"। আমরা যারা দাড়ায় ছিলাম মাথা নিচু করে বসে পড়লাম আমার পিছনের লোক জিজ্ঞেস করলো "ভাই ঘটনা কি?" আমি বললাম "বিরাট গন্ডগোল লাগছে, একটু পরপর চেকাপ হবে, এরপর হামাগুড়ি দেয়া লাগবে রেডি থাকেন!" লোকটা রসিকতা বুঝলো না বিরক্ত হয়ে বললো "হামাগুড়ি দিব কেন?!" আমি বললাম "হামাগুড়ি না দিলে আপনারে আর্মি হেভি প্যাদানি দিবে!"

চেকিং পার হয়েছে। কন্ডাক্টর বললো "আপনারা এইবার উইঠে খাড়ান, চেকিং শেষ"। আমি পাশের লোকটাকে বললাম "ভাই, উইঠেন না! গুলি্টুলি করতে পারে!" ভদ্রলোক "ধুর মিয়া!" বলে বাসের পিছনের দিকে চলে গেল। আর্মি থেকে সে আমাকে বেশি বিপদজনক মনে করছে!

বসার একটা সিট পেয়েছি। জানালার পাশে। রাতের ঢাকা। ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ভিতরে কোন জ্যাম নাই। বাস সাই সাই করে যাচ্ছে। জানালা দিয়ে বেশ হুহু বাতাস। মাথায় চুল না থাকার অভাব বোধ করছি। এলোমেলো বাতাসে শাড়ির আচল কিংবা চুল কোন একটা উড়িয়ে যাওয়াত নিয়ম। উদাস উদাস লাগছে। গৌতম বুদ্ধ টাইপ উদাসিনতা। "বধূ শুয়ে ছিল পাশে, শিশুটিও ছিল..." তাদের রেখে গৌতম বুদ্ধ ঘর ছাড়ল। এমন হুহু বাতাস ছিল সেদিন, বুদ্ধ উদাসীন হয়ে ঘর ছাড়ল।

আমার উল্টো অনুভূতি হচ্ছে। ঘরেই ফিরতে ইচ্ছে করছে। বধূর পাশে বস থাকতে ইচ্ছে করছে, শিশুদের ঘাড়ে নিতে ইচ্ছে করছে।

আমি সাধারণ মানুষ, আমি গৃহত্যাগি কেউ না।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০৬

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: খুবই হাসলাম, যথেস্ট ভাললাগলো আপনার লেখার ধরন

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৪

মি রুমি বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:১০

আজীব ০০৭ বলেছেন: আমি সাধারণ মানুষ, আমি গৃহত্যাগি কেউ না।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৪

মি রুমি বলেছেন: গৃহত্যাগী হওয়া সহজ না, অনেক পিছুটান, অনেক...

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:১৭

সুমন কর বলেছেন: লেখা পড়ে ভালো লাগল। সাধারণ মানুষ হয়ে থাকাটাও আজ কঠিন।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৭

মি রুমি বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমার মনে হয় সাধারণ হওয়া সহজ, ভালো মানুষ হওয়াটা বড় কঠিন।

৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২৮

গারোপাহাড় বলেছেন: আপনার লিখার স্টাইলটা হুমায়ূন আহমেদের মতো। হিমু প্যাটার্নের। অদ্ভুত। বড়ই অদ্ভুত!!

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১০

মি রুমি বলেছেন: বেশি বেশি হুমায়ূন পড়ার সুফল কিংবা কুফল আরকি ;)

৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৯

ওমেরা বলেছেন: ভালই লাগল ধন্যবাদ ।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৫

মি রুমি বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫৩

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: বেশ মজা পাইলাম । সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ। কাওকে হাসাতে পারাটাও বিরাট গুণ।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১

মি রুমি বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.