নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কেই জানতে চাই। সমালোচনা করি বলেই তো সমালোচিত!

ইব্‌রাহীম আই কে

লিখতে পারিনা। মাঝে মাঝে একটু চেষ্টা করি। বন্ধুবান্ধব সবার অভিযোগ আমি গল্প লিখতে পারিনা আমার লেখা গুলো প্রবন্ধ টাইপের হয় আর খুব বড় হয় তাই কারোর পড়ার ইচ্ছে হয়না।

ইব্‌রাহীম আই কে › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বেচ্ছাসেবা ও ত্রাণের নাটক বন্ধ হবে কবে?

২০ শে জুন, ২০২২ রাত ১২:৫৪

আরে মিয়া রাখেন আপনার ত্রাণ। দুই টাকা দান কইরা নিজেকে খুব দানশীল, মানবপ্রেমী জাহির করতেছেন? দু' চার পাঁচ কেজি মুড়ি চিড়া কিনে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সাজতে চাচ্ছেন। শর্টকাট পদ্ধতিতে ফেমাস হতে চাওয়া, দু' টাকা দান করে হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হতে চাওয়া, একদিনের মানবসেবায় মাদার তেরেসা হতে চাওয়ার বৃথা চেষ্টা করে কি লাভ ভাই বলেন?

সিলেটসহ দুর্যোগ প্রবণ এলাকাগুলোতে কখনো দুর্যোগ আসলে ত্রাণ আর স্বেচ্ছাসেবার নামে আমরা যে নাটক করি সেটা বন্ধ হওয়া উচিৎ, নচেৎ অচীরেই আরো ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরতে হবে। ত্রাণ দেওয়া আর স্বেচ্ছাসেবা মানায় প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ আসলে, কিন্তু এটা তো আমাদের কর্মফল।

কিভাবে?

সিলেটে এই বছরে এটা তৃতীয় বন্যা, এবারের বন্যা শত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। আজকে ত্রাণ দিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করলাম, কালকে যখন আবার বন্যা হবে তখন কি আবার ত্রাণ দিবো? পরশু আবার? সিলেটের মতো বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রবণ এলাকাগুলো কি ত্রাণের উপর চলবে?


প্রশ্ন করা দরকার কেন এসব হচ্ছে?


বন্যা/জোয়ারের পানি থেকে লোকালয় রক্ষার জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হয়, কিন্তু সেইসব যত্রতত্র বাঁধের কারণেই যদি পানি সরতে না পারে তখন? ঝড়ের বাতাসেই যদি বাঁধ উড়ে যায় সেই বাঁধ কিভাবে বন্যার পানি আটকাবে? বাঁধ কখনো একাকী বন্যা থেকে মুক্তি দিতে পারবে না, বর্ধিত পানি সরানোর বন্দোবস্ত করা না হলে জলীয়বাষ্প হয়ে সেই পানি মেঘে রুপান্তরিত হতে শত বৎসর লেগে যাবে।

এটা কি আমার আপনার গোসলখানার বাথটাবের উপচানো পানি যে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলবো? শূন্য থেকে দেখলে সাগরের আয়তনের তুলনায় লোকালয় খুবই নগণ্য। সাগর যখন কাঁসি দিবে কিংবা মেঘ যখন হিসু করে দিবে পুরো লোকালয় ভেসে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সেখানে বুদ্ধি খাটিয়ে শত বছরের পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে একটা বাঁধ নির্মাণ করতে হবে, লোকালয় গড়ে তুলতে হবে। যদি আগামীর কথা ভাবতে না পারেন তাহলে সেসব দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে জনমানুষের অন্য ধ্বংস করছেন কেন?

হঠাৎ বর্ধিত পানি সরানোর জন্য নদীর নাব্যতা ঠিক রাখতে হয়, লোকালয়ের পানি নদীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য খাল খনন করতে হয়। লোকালয়ে প্রচুর পুকুর, ডোবা খনন করতে হয়। কিন্তু গত ২০/৩০ বছরে কি কোনো খাল খনন করা হয়েছে? নদীর নাব্যতা বাড়ানো হয়েছে? তাহলে এই পানি সাগরে যাবে কিভাবে?


হাওড়ের মানুষের যাতায়াতের জন্য রাস্তা হচ্ছে ভালো কথা কিন্তু সেই একই রাস্তা যদি তাদের গলার কাঁটা হয় তাহলে সেটা রাখার কি দরকার? হাওড়ের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার খবর অহরহ পাওয়া যায়। অপরিকল্পিত রাস্তা, বাঁধ সেখানে আবার স্লুইচগেট নির্মাণ, একটা দেশের আর্বান & রিজিওনাল প্লানিং ম্যানেজমেন্ট এতো নিম্নমানের কিভাবে হয়!!! যত্রতত্র রাস্তাঘাট দিয়ে কিসব উন্নয়ন করছেন আপনারা? পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে কি এমন উন্নয়ন দেখা যায়? হাওড়ের পানি পূর্ব থেকে পশ্চিমে যাবে, দক্ষিণ থেকে উত্তরে। যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করতে হলে আধা কিলো পর পর ব্রিজ দিতে হবে অন্যথায় সমগ্র হাওড়ে উড়াল সড়ক বানাতে হবে। প্রকৃতির স্বাভাবিকতা নষ্ট করে যে উন্নয়ন হয়েছে/হচ্ছে সেটার ধ্বংস অনিবার্য।

আমাদের যুবসমাজের অনেকের কাছে পাঙ্গাস খুব প্রিয়, কারণ পাঙ্গাসে কাটা কম। তাদের যেহেতু কাঁটা বেছে খাওয়ার হিম্মত নাই তারা ভালো করে জানে পাঙ্গাস ছাড়া অন্য মাছ খাওয়া নিরাপদ নয়। অথচ কি অভাগা জাতি আমরা আমাদের ম্যানেজমেন্টের লোকেরা এটাও জানে না যে কোন মাছে কাঁটা বিঁধে আর কোনটায় নয়। প্রোটিনের জন্য মাছ খায় কিন্তু সেটা পরবর্তীতে জীবননাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সেতু আছে রাস্তা নাই, রাস্তা আছে সেতু নাই। আগুন নিভানোর প্রযুক্তি নেই। খরার কোনো পূর্বাভাস নাই, থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নাই। ভূমিধসের প্রতিকার নাই, অতিবৃষ্টির সতর্কবার্তা নাই। বার্তা থাকলেও প্রচারণা নাই। এভাবে তো একটা দেশ চলতে পারে না ভাই।

দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে গা*ধা পালা হচ্ছে কেন সেই প্রশ্ন আসা দরকার। ওদের কাজটা কি? বসে বসে পাবলিকের টাকা নষ্ট করতেছে। বন্যার পানি আসাটাই স্বাভাবিক, কিন্তু সেটা নেমে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত খাল খনন করা হয় নাই কেন? নদীর নাব্যতা গত ২০ বছরে বৃদ্ধি করা হয় নাই কেন? সম্ভাব্য দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় নাই কেন? আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার মজুদ করা নাই কেন? অতিবৃষ্টির সতর্কবার্তা প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে কেন জনগণকে জানানো হলো না?


দুর্যোগ মন্ত্রণালয় কেন ঢাকাতে থাকতে হবে?

দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থাকবে যে এলাকা বেশি দুর্যোগপ্রবণ সেখানে। মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অফিসের বড় বড় কর্মকর্তারা যখন তাদের বউ বাচ্চাসহ সেই এলাকায় থাকবে তখন সাধারণ মানুষের জন্য না হোক নিজের বউ বাচ্চার চিন্তায় হলেও সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিবে। মাথা খাটিয়ে কাজ করবে কিভাবে পদক্ষেপ নিলে দুর্যোগ মোকাবেলা করা যাবে। আর যদি সেটা না পারে তাহলে সাধারণ জনগণের মতো উনাদেরও বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া উচিৎ। এমন অফিসার দেশ ও জাতির শত্রু, উন্নতির পথে এনারা প্রধান অন্তরায়।


আপনি ভাই নায়ক গায়ক, কবি সাহিত্যিক, শিক্ষক আপনার তো দরকার নাই দুর্যোগে মানুষকে সাহায্য করার জন্য ভিক্ষা করার। নিজের জীবন রিস্কে ফেলে মানবসেবা করার ভণ্ডামি বাদ দেন। এগুলো যাদের দায়িত্ব, যাদের অবহেলার কারণে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলোন। দুর্যোগ মন্ত্রণালয় কেন দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যর্থ সেই প্রশ্ন আগে তুলোন, যে যার জায়গা থেকে দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে একবার করে গলার স্বর উঁচু করলে দেখবেন পরের বার দুর্যোগ আসলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এতো নগন্য হবে যে সেটাকে দুর্যোগ বলে মনেই হবে না।


বনানী কিংবা পুরান ঢাকার অগ্নিকাণ্ডে মায়া কান্না করেছিলাম, লোকদেখানো উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছিলাম কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে পারিনাই। তখন যদি পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে আর সীতাকুণ্ডে এতজনের প্রাণহানি হতো না।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০২২ রাত ১:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষের বিপদে মানুষ এগিয়ে আসবে না?

২০ শে জুন, ২০২২ রাত ১:৪৯

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: মানুষের বিপদে মানুষ অবশ্যই এগিয়ে আসবে, এটাই স্বাভাবিক। আর্ত মানবতার সেবা করাই মানুষের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু বাংলাদেশে স্বেচ্ছাসেবার নামে যেমন নাট্যমঞ্চ রচনা করা হয় এটা কাম্য নয়। আমাদের এইসব ত্রাণ দেওয়া আর স্বেচ্ছাসেবা করাটা দায়িত্বরতদের দায়মুক্ত করে দেয়। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে অনুৎসাহিত করে। উনাদের সাব-কনশাস মাইন্ড ধরেই নেয় যে, কোনো দুর্যোগ আসলে মানুষকে সাহায্য করার জন্য কেউ না কেউ তো এগিয়ে আসবে সুতরাং নাকে তেল দিয়ে ঘুমালে কোনো সমস্যা নাই।

সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়ার পরও যদি দুর্যোগ মোকাবেলা করা না যায় তখন প্রতিটি মানুষকেই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা উচিৎ, কাউকে অর্থ দিয়ে কাউকে বা শ্রম দিয়ে। আমার বিশ্বাস এখন যদি ৫ জন মানুষ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে তখন ৫০০ জন মানুষ এগিয়ে আসবে।

২| ২০ শে জুন, ২০২২ রাত ৩:০২

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

এখন পর্যন্ত কতজন মারা গেছে বন্যায়?

২০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:২১

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: প্রথম আলোর গতকালকের রিপোর্টে দেখেছিলাম ১০ জন মারা গিয়েছে, অন্যান্য নিউজ সোর্স অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২৫ জনের খবর পাওয়া যায়।

৩| ২০ শে জুন, ২০২২ সকাল ৯:৫১

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: লোক দেখানো সাহায্য বন্ধ হওয়ায় ভালো।

২০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:২৩

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: জ্বি, আমিও এটাই চাই। যার যেটা দায়িত্ব সে যদি সেটা ঠিক মতো পালন করে তাহলে এমন নাট্যমঞ্চ রচনার কোনো সুযোগ ই থাকবে না। আর দায়িত্ব পালন না করলে যতই স্বেচ্ছাসেবা করি না কেন আদতে কোনো লাভ হবে না।

৪| ২০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: সরকারের আশায় বসে থাকলে হবে। আপাতত সরকার পদ্মাসেতু উদ্ববোধন নিয়ে ব্যস্ত।

২০ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:২৫

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: সরকারের আশায় বসে থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকগুণ বেড়ে যাবে সেটা সত্য কিন্তু এসব কার্যক্রম অধিকার আদায়ের পথ রুদ্ধ করে দেয়।
বন্যা শেষ হবে, দেখবেন সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কেন বন্যার পানি এতোদিন আটকে থাকলে, পানি সরানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা কেন নেওয়া হলো না, উদ্ধারকাজে এতো ধীরগতি কেন, নৌবাহিনী/কোস্টগার্ডের কাছে প্লাস্টিক কিংবা ইনফ্ল্যাটেবল বোটের সংকট কেন, আশ্রয়কেন্দ্রের সংকট কেন এসব নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যখন মোটেই হবে না তখন সেসব কিসের ভিত্তিতে বাস্তবে রূপ পাবে?

৫| ২০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:৪৬

রানার ব্লগ বলেছেন: এদের সব গুলাকে বয়কট করুন !!! এদের কাছে যাওয়া বন্ধ করুন নিজের কাজ নিজে করুন দেখবেন এরা সাময়িক যন্ত্রনা করবে কিন্তু পরে সুফল আমাদেরই হবে।

২০ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:২৯

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: আসল সমস্যাটা হলো, ব্যক্তি উদ্যোগে সর্বোচ্চ ত্রাণ বা স্বেচ্ছাসেবা দেওয়া সম্ভব এর বাহিরে দুর্যোগ স্থায়ী/অস্থায়ী ভাবে মোকাবেলা করতে হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কার্যকরী বড় বড় প্রজেক্ট হাতে নিতে হবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী সুফল আশা করা সম্ভব নয়!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.