| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরজু আহমাদ
মাধ্যমিকের গণ্ডি কোনও রকমে পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছি। ছুটো গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ লিখতে ভালোবাসি। 'ইচ্ছেপুরণ ফাউন্ডেশন' এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছি বর্তমানে।উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছি। ছুটো গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ লিখতে ভালোবাসি। 'ইচ্ছেপুরণ ফাউন্ডেশন' এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছি বর্তমানে।
বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকে দুই মাথার আজব দেশ অসভ্য পাকিস্তান আর তার সাহায্যকারী পরাশক্তি আমেরিকা ও চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও সংগ্রাম করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন নিঃসন্দেহে পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অনন্য যুদ্ধ বিজয়ের ঘটনা। সাধারণত দেখা গেছে একেকটি দেশের স্বাধীনতা লাভ হয়েছে সরাসরি বিপ্লব বা ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে পাস্পরিক বোঝাবুঝির মাধ্যমে; যেমন বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়া, চীন, কিউবা, ভিয়েতনামে যথাক্রমে লেনিন, মাও সে তুং, ফিদেল কাস্ট্রো, হোচি মিন প্রমুখ কালজয়ী বিপ্লবী দেশনায়কের দক্ষ ও সংগ্রামী পরিচালনা ও যুদ্ধজনিত প্রভূত রক্তক্ষয়ের বিনিময়ে; আর ভারত-পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বহু দেশে পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শাসকদের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা-সমঝোতার ভিত্তিতে স্বাধীনতার লাল সূর্য উদিত হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী এবং অনন্য উপায়ে অর্জিত এবং তা হচ্ছে প্রচলিত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কাঠামোর গ-ীতে থেকে এর চর্চা করতে করতে ধীরে ধীরে আপন গতিতে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনে ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। এর পেছনে ছিল বিভিন্ন সময়ের জোর গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জনতার নিরঙ্কুশ সমর্থন, দেশের ভাষা, কৃষ্টি, ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতি, ধর্ম, লোকাচারের প্রতি অভিন্ন মনোযোগ এবং সর্বোপরি, সাধারণ মানুষের নিজস্ব স্বপ্নের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সুচারু ও বুদ্ধিদীপ্ত উপস্থাপনা। এ কথা সত্যি যে, বাংলাদেশ নামক ভূভাগ অতীতকালে বহুদিন যাবৎ বিদেশি শাসকদের অধীনে যুগ যুগ ধরে শাসিত হয়ে আসছিল। এসবের প্রেক্ষিতে তাই ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে স্বাধীনতা লাভের জন্য ঘোষণা এবং পরবর্তী সময়ে তার অর্জন এদেশের মানুষের জন্য বিশাল প্রাপ্তি ও বিরাট রাজনৈতিক সফল ঘটনা। এর পেছনে কাজ করেছে শত শত মানুষের আত্মোৎসর্গের ঘটনা ও মূল লক্ষ্যের প্রতি অবিচল ও একতাবদ্ধ থাকার অব্যাহত প্রচেষ্টা। এই সঙ্গে আরো একটি উপাদান মূলধারা হিসাবে কাজ করেছে তাহলো আপামর জনসাধারণের উদ্দীপ্ত সাংস্কৃতিক চেতনা, যা ছাড়া স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা কোনদিন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারতো না। তাই বলা যায় 'স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা' ও প্রাপ্তির ঐকান্তিক ইচ্ছা সাংস্কৃতিক চেতনা থেকেই উৎসারিত। যেহেতু সংস্কৃতি গড়ে ওঠে সাধারণ মানুষের লোকায়ত জীবনাচার, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গণতান্ত্রিক মানসিকতা, মানবিক মূল্যবোধ, দেশ, মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা, শিল্প ও ঐতিহ্যের প্রতি মমত্ববোধ, আপন ধর্ম, ভাষা, লৌকিক আচার ও স্বরূপের প্রতি সচেতনতা ও ক্রমাগত চর্চা_ এ সবের সমভিব্যহারে আপনা-আপনি স্বতস্ফূর্তভাবে জন্ম নেয় স্বাধীন হওয়ার স্পৃহা। আমাদের স্বাধীন হওয়ার আকাঙ্ক্ষা এভাবেই সংস্কৃতি চেতনার সচেতন চর্চার মধ্য দিয়েই জন্ম লাভ করেছে এবং সঠিক নেতৃত্বে ও আপামর জনগণের প্রাণঢালা সমর্থনে তার বাস্তবায়ন হয় চুয়ালি্লশ বছর আগে। কিন্তু এখনও কি স্বাধীনতার স্বাদ পুরোপুরি পেয়েছি। তাই বলতে হয় -
জাতি পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে
জয়বাদ্য বাজায় অরুণোদয় আলোকে।
স্বপ্ন সাধের স্বাধীনতার কতটুকু সাধন
মিলিয়ে দেখা শুধু হৃদয়নিভৃতে এখন ।
আজ বিশ্বসভায় আমাদের কোথায় অবস্থান
হিসাব মেলাবার দিন এখন আবর্তন।
কেন অগণিত মানুষ সমদুঃখ ভার
ব্যর্থতা হতাশা দুর্দিন ঘিরে অক্টোপাস।
যাচ্ছে অনন্তে হারিয়ে স্বাধীনতার সুফলগুলো
মুষ্টিমেয় সুবিধাবাদী গণবিরোধী চক্রের কাছে।
শোষণহীন সমাজপ্রতিষ্ঠা যায় নির্বাসন
হতভাগ্য মানুষের অন্তরে গতিশক্তিহীন,
সজল নয়নে বিব্রত হতাশায় বহুজন।
উচ্ছ্বসিত শিক্ষা সংস্কৃতি সমৃদ্ধি অর্জনে
স্বাধীন স্বনির্ভর জাতীয় অগ্রগতি সাধনে
সামাজিক শৃঙ্খলা বিপন্ন হচ্ছে নিদারুণ।
সঙ্গে সর্বব্যাপী দৈন্য অনাচার জনজীবন
এনেছে নৈরাজ্য হতাশা অনটন অন্তঃপুরে,
শোকাতুর নরনারী করে রোদন অনুক্ষণ।
©somewhere in net ltd.