নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসীম শূন্যতা

ইখতামিন

এই ব্লগের সকল পোস্ট লেখক নিজে সরিয়ে ফেলেছেন

ইখতামিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ মহান প্রাণ প্রয়াত ঋষি ব্লগার ইমন জুবায়ের এর ৪৯তম জন্মবার্ষিকী : আমি ভাবছি – জ্যোৎস্না রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন?

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৯



ইমন জুবায়ের
জন্ম: ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭ – মৃত্যু: ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১
শুরুতেই বলে রাখা ভালো- বাংলা ব্লগের অন্যতম নক্ষত্র ইমন জুবায়ের ভাইকে নিয়ে ইতোপূর্বে অনেক লেখা হয়েছে। তবু তাঁকে নিয়ে লেখার সামান্য প্রয়াস পেতে আমাকেকিংকর্তব্যবৈমূঢ়ে ভুগতে হয়েছে। যতোটুকু লিখতে পেরেছি, তা তাঁর স্মারক হিসেবেই থাকুক।

পুরো নাম- জুবায়ের হোসেন ইমন। ‘ইমন’ তাঁর মেজোমামার দেয়া ডাকনাম। পরবর্তীতে ইমন জুবায়ের নামেই তিনি পরিচিত। তাঁর বাবা আবদুল মালেক পাটোয়ারী একজন আইনজীবী ছিলেন। মা- নুরুন্নেসা হামিদা বেগম, তিনি ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা।চার বোন ও এক ভাই হলেও ইমন ভাই আর স্বাতী দু’জন পিঠাপিঠি ছিলেন।
শৈশব কাটে তাঁর নানাবাড়িতে। তিনি অবশ্য নানীর বাড়ি বলতে ভালোবাসতেন। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন খুব চঞ্চল প্রকৃতির। জলপাই গাছ বেয়ে বাড়ির ছাদে ওঠা, হরবরি গাছে উঠে দেয়াল টপকানো আর বন্ধুদের নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানো ছিলো তার নিত্যদিনের ব্যাপার। ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র তাঁর নজর কাঁড়তো। ফুটবল তাঁর প্রিয় খেলা। তিনি ছিলেন একজন সফল গোলরক্ষক। শূন্যে উড়ে বল গ্রিপ করার নৈপুণ্যে তাঁর খুব নাম ডাক ছিলো। বল ছিঁটকে বেরিয়ে আসার আগেই বুঝতে পারতেন বল কোন দিকে যাবে। তিনি মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাপোর্টার ছিলেন। এছাড়া ক্রিকেটও ভালো খেলতেন তিনি। তিনি স্পিন বলার হলেও অনায়াসেই বল তালুবন্দি (ক্যাচ) করতে পারতেন। প্রিয় দল বাংলাদেশ, তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছেলেবেলার বন্ধু পাড়ার গৌতম, শাকিল ও পার্থ। শৈশব থেকেই তিনি গান শনতে পছন্দ করতেন।

এতো কিছুর পরও তিনি প্রচুর বই পড়তেন। বইয়ের পোকা যাকে বলে। এই অভ্যেসটা তিনি মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তাঁর প্রিয় সিরিজ ছিলো ‘কুয়াশা’, ‘দস্যু বনহুর’, ও ‘দস্যু পাঞ্জা’। তাঁর কোনও এক লেখায় তিনি লিখেছেন- “ছেলেবেলায় আমার চারপাশে ছিল বইয়ের অফুরন্ত সম্ভার। রাস্তার ওপারে ‘সবুজ লাইব্রেরি’ নামে বইয়ের একটা দোকান ছিল। আজও আছে। বিকেলের দিকে যেতাম দোকানটায়। এক টাকা কি দুই টাকায় ‘কুয়াশা’ সিরিজ পাওয়া যেত। অবশ্য কেনার মতো পয়সা ছিল না। আমার মুখ দেখেই হয়তো দোকানের লোকটার দয়া হত। বইয়ের পাতা ভাঁজ না করার শর্তে আমাকে ‘কুয়াশা’ সিরিজের বই পড়তে দিতেন। ফাঁকা ফুটপাতের ওপরই পড়তে বসে যেতাম। কী নির্জন রাস্তা; জনশূন্য শান্তিনগর মোড়। দশ/পনেরো মিনিট পর পর একটা রিকশা কি একটা মাজদা গাড়ি কি রামপুরা- গুলিস্তান রুটে সবুজ রঙের ধ্যাড়ধ্যাড়া মুড়ির টিন যেত। সেই ১৯৭৭/৭৮ সালের কথা ... পড়তে পড়তে সন্ধ্যা নেমে আসত। আমিনবাগ জামে মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসত। দোকানে বই ফেরৎ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে বাড়ি ফিরতাম ...”।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, নীহার রঞ্জন ও নিমাই ভট্টাচার্য এর বই তার প্রিয় ছিলো। আশুতোষের ‘সোনার হরিণ নেই’ পড়ার পর অনেক দিন তাঁর মন খারাপ থাকে। সেই সময়ে তিনি তাঁর ক্লাসের (সম্ভবত সিক্স কি সেভেন) শ্যামলা এক মেয়ের প্রেমে পড়েন। মেয়েটির নাম জানা জায়নি। কিন্তু কখনও মেয়েটিকে তার বলা-ই হয়নি- তোমাকে আমার ভালো লাগে। এমনকি কথা-ও হয়নি কখনও।

প্রিয় এই মানুষটি ছেলেবেলায় শুধু গল্পের বই-ই পড়েন নি। অন্যদের তুলনায় তার জ্ঞান আহরণ প্রক্রিয়া ছিলো ভিন্ন। ক্লাসের পড়ার বাইরেও তিনি মৌলিক ও বৈষয়িক শিক্ষা লাভ করেন (যদিও সেসবের পুরোটা তাঁর অপরিণত মাথায় ধরতো না)। তাঁর লেখায় তিনি বলেছেন- “ইডেনে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময়ই আমার আম্মার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল । ভীষণ জেদি মহিলা ছিলেন। এম . এ পাস করবেনই । একটা মেয়েদের স্কুলে পড়াতেন। তারপরও জগন্নাথ কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে নাইট শিফটে এম.এ ক্লাসে ভর্তি হলেন । সন্ধ্যার আগে-আগে আম্মার সঙ্গে মালিবাগ মোড় থেকে ঠেলাঠেলি করে মুড়ির টিনে উঠতাম । গন্তব্য বাংলাবাজার। বড় একটা হল ঘরে বাতি জ্বলত, বেঞ্চর ওপর বসে থাকা ছাত্রছাত্রীরা কেমন শান্ত, জীবনহীন, ছায়া-ছায়া; বুড়োমতন একজন স্যার কীসব বলে যেতেন। পরে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পড়েছি । অথচ শৈশবেই ইতিহাসের অধ্যাপকের ক্লাস আমার করা হয়ে গেছে। আম্মা পড়তেন রান্না করার সময় । আব্বা আইনজীবি। মামলা-মোকদ্দমার জন্য গ্রামের বাড়ির থেকে লোকজন আসতেই থাকত। এ ভাত খাবে তো ও রুটি খাবে; এর অজুর জন্য গরম পানি চাই তো ওর জন্য তরকারি গরম কর। আম্মা পড়তেন এসবই সামলে ...

ছেলেবেলায় যে ইতিহাস বিষয়ে হাতে খড়ি হয়েছিলো মায়ের কাছে, সেই একই বিভাগে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

তিনি নি:স্বার্থভাবে লিখতে পছন্দ করতেন। তার সব লেখা-ই বলতে গেলে ব্লগে প্রকাশিত। সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মতত্ব, চিত্রকলা, সঙ্গীত ও মিথোলজিসহ নানান বিষয়ে তার লেখনীর পদচারণা আজও বিদ্যমান। তাঁর বেশকিছু লেখা নারীর অধিকার বিষয়ক। এর মাঝে ‘ অ্যাসিড রেইন’, ‘আরও একজন ’ ও ‘তাক ’ অন্যতম। একটা সময় যখন ব্লগে সৃজনশীল সাহিত্যের অভাব বিরাজ করছিলো- ঠিক সেই সময়ে নিরলসভাবে তিনি দিনের পর দিন সাজিয়ে গেছেন জ্ঞানগর্ভ মূল্যবান লেখাগুলো। পনেরোশত পোস্ট। কম নয়। আবার এর একটাও ফেলে দেবার নয়। বরং তাঁর একেকটা লেখা অনেক ধরণের তথ্যপূর্ণ হতো।

তিনি ছোটকাগজেও লিখতেন। ‘অনুপ্রাণন’ এর কোনও এক সংখ্যায় ‘একদিন গৌতম বুদ্ধ’ ছাপা হয়েছিলো। ‘শিরদাঁড়া’-তে প্রকাশিত হয় ‘আমার তো কপিলে বিশ্বাস’, ‘পূর্বাহ্নের আগুন’, ‘অন্ধকারে সব মুছে যাবার আগে’ ও ‘আগুনের গলি’।


লেখালেখির পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’ এর গীতিকার ছিলেন। বলতে গেলে ব্ল্যাক এর যাত্রা ইমন ভাইয়ের বাসা থেকেই। তিনি প্রায় ত্রিশটির মতো গানের কথা লিখেছেন। তাঁর লেখা কিছু গীতি এখান থেকে পাওয়া যাবে। তবে (আমি যতোটুকু জানি) তিনি কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। পেশাজীবী বলতে যা বোঝায়, ইমন ভাই তা নন।

রাগ পূরবীর প্র্যাক্টিসে ইমন ভাই

তিনি ছিলেন ২০১১ সালের সেরা ব্লগার। সে বছর “দ্য বব্স” এর আন্তর্জাতিক সেরা ব্লগার প্রতিযোগিতায় ডয়েচে ভ্যালে’তে “বেস্ট বাংলা ব্লগ” ক্যাটাগরিতে তিনি মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু নিজে থেকেই তিনি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।

তাঁর সর্বশেষ লেখা ছিলো অতিপ্রাকৃত গল্প: সতরই জুলাইকিন্তু আজ সতরই ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্মবার্ষিকী। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয়- তাঁর শেষ লেখার শিরোনামের সাথে তাঁর জন্ম তারিখের কোথাও কোনও মিল আছে।

গান আর লেখনী। লেখনী আর গান। এই দু’টোর পরে কর্মজীবনকে তিনি বৈবাহিক জীবনে রূপান্তর করতে চান নি। অধ্যবসায়ে ব্যাঘাত ঘটবে সেই সঙ্কায় তিনি বিয়ে করেন নি। কিন্তু লেখালেখিতে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রেমের ফলে তিনি ব্যক্তিজীবনে শরীরের প্রতি যত্ন নিতে পারতেন না। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও নেয়া হয়। কিন্তু ২০১৩ ৩রা জানুয়ারি হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কথা ছিলো পরদিন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। কিন্তু তার আর হয়নি। মাঝরাতে (৪ঠা জানুয়ারি) তিনি এই পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে ওপারে পাড়ি জমান। আনুমানিক ২.৩০ মিনিটে। ভালো মানুষগুলো মনে হয় এইভাবেই পৃথিবীকে ছেড়ে যায়। :(

এলাকার আমিনবাগ জামে মসজিদে জুম্মা নামাজের পর তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকাল প্রায় চারটার দিকে তাকে সমাহিত করা হয়। তিনি এখন শুয়ে আছেন আজিমপুর সমাধিক্ষেত্রে। কিন্তু আমার একটা বিষয় বুঝে আসে না। তাঁকে আজিমপুর কেন শায়িত করা হলো!

আজ তাঁর ৪৯তম জন্মবার্ষিকী ছিলো। কিন্তু তিনি যেখানেই থাকুন, তাঁর আত্মা পরম শান্তিতে থাকুক, প্রভুর কাছে এ-ই আমি প্রার্থণা করি।

====================================================
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিঃ
আগে ব্লগের প্রথম পাতায় ডান পাশে “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” এর একটি বক্স রাখা হয়েছিলো। প্রায় বছর খানেক আগেও ছিলো। এখন তা নেই। ব্লগ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আবেদন, যদি সম্ভব হয়- “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” ডায়লগ বক্সটি ফিরিয়ে আনুন।

====================================================

তাঁকে নিয়ে ব্লগারদের কিছু লেখা:
আন্তর্জাতিক ব্লগ প্রতিযোগীতায় সামহোয়ারইন এর ব্লগার ইমন জুবায়ের কে ভোট দিন

বেচারা ইমন জুবায়ের.................ব্যাপারনা

দু:খজনক সংবাদ: ব্লগার ইমন জুবায়ের আর নেই

বাংলা ব্লগিং জগতের অন্যতম নক্ষত্র, আমাদের প্রিয় ইমন জুবায়ের ভাই আর আমাদের মাঝে নেই........
ছিন্নস্মৃতিঃ ছেলেটির নাম ইমন জুবায়ের !

প্রিয় ইমন ভাইকে নিয়ে লেখা !! (আমার ও অন্য সকলের)

ইমন ভাইয়ের সাথে কথোপকথন !

ইমন জুবায়ের এক ব্লগ কিংবদন্তীর নাম।

ইমন জুবায়ের ভাই, আপনার সাথে একবার দেখা করার ইচ্ছে ছিলো

ইমন মাঝির তিন তক্তার নৌকা আমার ভরসা, আমাদের ভরসা

ডাচম্যানের জবানবন্দিঃ ইমন জুবায়ের

স্মৃতিতে অমলিন নগর ঋষি শ্রদ্ধেয় ইমন জুবায়ের

আমার ইমন জুবায়ের ভাইয়া

মিথ্যা - ইমন জুবায়ের ভাইয়ের সেই গান...


আজও আমি তাঁর যে কথার কূল-কিনারা ছুঁতে পারি নি-
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন,
জ্যোৎস্না রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন?

ইমন জুবায়ের
জন্ম: ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭ – মৃত্যু: ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৩

শুরুতেই বলে রাখা ভালো- বাংলা ব্লগের অন্যতম নক্ষত্র ইমন জুবায়ের ভাইকে নিয়ে ইতোপূর্বে অনেক লেখা হয়েছে। তবু তাঁকে নিয়ে লেখার সামান্য প্রয়াস পেতে আমাকেকিংকর্তব্যবৈমূঢ়ে ভুগতে হয়েছে। যতোটুকু লিখতে পেরেছি, তা তাঁর স্মারক হিসেবেই থাকুক।

পুরো নাম- জুবায়ের হোসেন ইমন। ‘ইমন’ তাঁর মেজোমামার দেয়া ডাকনাম। পরবর্তীতে ইমন জুবায়ের নামেই তিনি পরিচিত। তাঁর বাবা আবদুল মালেক পাটোয়ারী একজন আইনজীবী ছিলেন। মা- নুরুন্নেসা হামিদা বেগম, তিনি ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা।চার বোন ও এক ভাই হলেও ইমন ভাই আর স্বাতী দু’জন পিঠাপিঠি ছিলেন।
শৈশব কাটে তাঁর নানাবাড়িতে। তিনি অবশ্য নানীর বাড়ি বলতে ভালোবাসতেন। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন খুব চঞ্চল প্রকৃতির। জলপাই গাছ বেয়ে বাড়ির ছাদে ওঠা, হরবরি গাছে উঠে দেয়াল টপকানো আর বন্ধুদের নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানো ছিলো তার নিত্যদিনের ব্যাপার। ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র তাঁর নজর কাঁড়তো। ফুটবল তাঁর প্রিয় খেলা। তিনি ছিলেন একজন সফল গোলরক্ষক। শূন্যে উড়ে বল গ্রিপ করার নৈপুণ্যে তাঁর খুব নাম ডাক ছিলো। বল ছিঁটকে বেরিয়ে আসার আগেই বুঝতে পারতেন বল কোন দিকে যাবে। তিনি মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাপোর্টার ছিলেন। এছাড়া ক্রিকেটও ভালো খেলতেন তিনি। তিনি স্পিন বলার হলেও অনায়াসেই বল তালুবন্দি (ক্যাচ) করতে পারতেন। প্রিয় দল বাংলাদেশ, তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছেলেবেলার বন্ধু পাড়ার গৌতম, শাকিল ও পার্থ। শৈশব থেকেই তিনি গান শনতে পছন্দ করতেন।

এতো কিছুর পরও তিনি প্রচুর বই পড়তেন। বইয়ের পোকা যাকে বলে। এই অভ্যেসটা তিনি মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তাঁর প্রিয় সিরিজ ছিলো ‘কুয়াশা’, ‘দস্যু বনহুর’, ও ‘দস্যু পাঞ্জা’। তাঁর কোনও এক লেখায় তিনি লিখেছেন- “ছেলেবেলায় আমার চারপাশে ছিল বইয়ের অফুরন্ত সম্ভার। রাস্তার ওপারে ‘সবুজ লাইব্রেরি’ নামে বইয়ের একটা দোকান ছিল। আজও আছে। বিকেলের দিকে যেতাম দোকানটায়। এক টাকা কি দুই টাকায় ‘কুয়াশা’ সিরিজ পাওয়া যেত। অবশ্য কেনার মতো পয়সা ছিল না। আমার মুখ দেখেই হয়তো দোকানের লোকটার দয়া হত। বইয়ের পাতা ভাঁজ না করার শর্তে আমাকে ‘কুয়াশা’ সিরিজের বই পড়তে দিতেন। ফাঁকা ফুটপাতের ওপরই পড়তে বসে যেতাম। কী নির্জন রাস্তা; জনশূন্য শান্তিনগর মোড়। দশ/পনেরো মিনিট পর পর একটা রিকশা কি একটা মাজদা গাড়ি কি রামপুরা- গুলিস্তান রুটে সবুজ রঙের ধ্যাড়ধ্যাড়া মুড়ির টিন যেত। সেই ১৯৭৭/৭৮ সালের কথা ... পড়তে পড়তে সন্ধ্যা নেমে আসত। আমিনবাগ জামে মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসত। দোকানে বই ফেরৎ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে বাড়ি ফিরতাম ...”।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, নীহার রঞ্জন ও নিমাই ভট্টাচার্য এর বই তার প্রিয় ছিলো। আশুতোষের ‘সোনার হরিণ নেই’ পড়ার পর অনেক দিন তাঁর মন খারাপ থাকে। সেই সময়ে তিনি তাঁর ক্লাসের (সম্ভবত সিক্স কি সেভেন) শ্যামলা এক মেয়ের প্রেমে পড়েন। মেয়েটির নাম জানা জায়নি। কিন্তু কখনও মেয়েটিকে তার বলা-ই হয়নি- তোমাকে আমার ভালো লাগে। এমনকি কথা-ও হয়নি কখনও।

প্রিয় এই মানুষটি ছেলেবেলায় শুধু গল্পের বই-ই পড়েন নি। অন্যদের তুলনায় তার জ্ঞান আহরণ প্রক্রিয়া ছিলো ভিন্ন। ক্লাসের পড়ার বাইরেও তিনি মৌলিক ও বৈষয়িক শিক্ষা লাভ করেন (যদিও সেসবের পুরোটা তাঁর অপরিণত মাথায় ধরতো না)। তাঁর লেখায় তিনি বলেছেন- “ইডেনে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময়ই আমার আম্মার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল । ভীষণ জেদি মহিলা ছিলেন। এম . এ পাস করবেনই । একটা মেয়েদের স্কুলে পড়াতেন। তারপরও জগন্নাথ কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে নাইট শিফটে এম.এ ক্লাসে ভর্তি হলেন । সন্ধ্যার আগে-আগে আম্মার সঙ্গে মালিবাগ মোড় থেকে ঠেলাঠেলি করে মুড়ির টিনে উঠতাম । গন্তব্য বাংলাবাজার। বড় একটা হল ঘরে বাতি জ্বলত, বেঞ্চর ওপর বসে থাকা ছাত্রছাত্রীরা কেমন শান্ত, জীবনহীন, ছায়া-ছায়া; বুড়োমতন একজন স্যার কীসব বলে যেতেন। পরে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পড়েছি । অথচ শৈশবেই ইতিহাসের অধ্যাপকের ক্লাস আমার করা হয়ে গেছে। আম্মা পড়তেন রান্না করার সময় । আব্বা আইনজীবি। মামলা-মোকদ্দমার জন্য গ্রামের বাড়ির থেকে লোকজন আসতেই থাকত। এ ভাত খাবে তো ও রুটি খাবে; এর অজুর জন্য গরম পানি চাই তো ওর জন্য তরকারি গরম কর। আম্মা পড়তেন এসবই সামলে ...

ছেলেবেলায় যে ইতিহাস বিষয়ে হাতে খড়ি হয়েছিলো মায়ের কাছে, সেই একই বিভাগে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

তিনি নি:স্বার্থভাবে লিখতে পছন্দ করতেন। তার সব লেখা-ই বলতে গেলে ব্লগে প্রকাশিত। সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মতত্ব, চিত্রকলা, সঙ্গীত ও মিথোলজিসহ নানান বিষয়ে তার লেখনীর পদচারণা আজও বিদ্যমান। তাঁর বেশকিছু লেখা নারীর অধিকার বিষয়ক। এর মাঝে ‘ অ্যাসিড রেইন’, ‘আরও একজন ’ ও ‘তাক ’ অন্যতম। একটা সময় যখন ব্লগে সৃজনশীল সাহিত্যের অভাব বিরাজ করছিলো- ঠিক সেই সময়ে নিরলসভাবে তিনি দিনের পর দিন সাজিয়ে গেছেন জ্ঞানগর্ভ মূল্যবান লেখাগুলো। পনেরোশত পোস্ট। কম নয়। আবার এর একটাও ফেলে দেবার নয়। বরং তাঁর একেকটা লেখা অনেক ধরণের তথ্যপূর্ণ হতো।

তিনি ছোটকাগজেও লিখতেন। ‘অনুপ্রাণন’ এর কোনও এক সংখ্যায় ‘একদিন গৌতম বুদ্ধ’ ছাপা হয়েছিলো। ‘শিরদাঁড়া’-তে প্রকাশিত হয় ‘আমার তো কপিলে বিশ্বাস’, ‘পূর্বাহ্নের আগুন’, ‘অন্ধকারে সব মুছে যাবার আগে’ ও ‘আগুনের গলি’।


লেখালেখির পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’ এর গীতিকার ছিলেন। বলতে গেলে ব্ল্যাক এর যাত্রা ইমন ভাইয়ের বাসা থেকেই। তিনি প্রায় ত্রিশটির মতো গানের কথা লিখেছেন। তাঁর লেখা কিছু গীতি এখান থেকে পাওয়া যাবে। তবে (আমি যতোটুকু জানি) তিনি কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। পেশাজীবী বলতে যা বোঝায়, ইমন ভাই তা নন।

রাগ পূরবীর প্র্যাক্টিসে ইমন ভাই

তিনি ছিলেন ২০১১ সালের সেরা ব্লগার। সে বছর “দ্য বব্স” এর আন্তর্জাতিক সেরা ব্লগার প্রতিযোগিতায় ডয়েচে ভ্যালে’তে “বেস্ট বাংলা ব্লগ” ক্যাটাগরিতে তিনি মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু নিজে থেকেই তিনি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।

তাঁর সর্বশেষ লেখা ছিলো অতিপ্রাকৃত গল্প: সতরই জুলাইকিন্তু আজ সতরই ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্মবার্ষিকী। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয়- তাঁর শেষ লেখার শিরোনামের সাথে তাঁর জন্ম তারিখের কোথাও কোনও মিল আছে।

গান আর লেখনী। লেখনী আর গান। এই দু’টোর পরে কর্মজীবনকে তিনি বৈবাহিক জীবনে রূপান্তর করতে চান নি। অধ্যবসায়ে ব্যাঘাত ঘটবে সেই সঙ্কায় তিনি বিয়ে করেন নি। কিন্তু লেখালেখিতে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রেমের ফলে তিনি ব্যক্তিজীবনে শরীরের প্রতি যত্ন নিতে পারতেন না। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও নেয়া হয়। কিন্তু ২০১৩ ৩রা জানুয়ারি হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কথা ছিলো পরদিন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। কিন্তু তার আর হয়নি। মাঝরাতে (৪ঠা জানুয়ারি) তিনি এই পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে ওপারে পাড়ি জমান। আনুমানিক ২.৩০ মিনিটে। ভালো মানুষগুলো মনে হয় এইভাবেই পৃথিবীকে ছেড়ে যায়। :(

এলাকার আমিনবাগ জামে মসজিদে জুম্মা নামাজের পর তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকাল প্রায় চারটার দিকে তাকে সমাহিত করা হয়। তিনি এখন শুয়ে আছেন আজিমপুর সমাধিক্ষেত্রে। কিন্তু আমার একটা বিষয় বুঝে আসে না। তাঁকে আজিমপুর কেন শায়িত করা হলো!

আজ তাঁর ৪৯তম জন্মবার্ষিকী ছিলো। কিন্তু তিনি যেখানেই থাকুন, তাঁর আত্মা পরম শান্তিতে থাকুক, প্রভুর কাছে এ-ই আমি প্রার্থণা করি।

====================================================
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিঃ
আগে ব্লগের প্রথম পাতায় ডান পাশে “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” এর একটি বক্স রাখা হয়েছিলো। প্রায় বছর খানেক আগেও ছিলো। এখন তা নেই। ব্লগ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আবেদন, যদি সম্ভব হয়- “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” ডায়লগ বক্সটি ফিরিয়ে আনুন।

====================================================

তাঁকে নিয়ে ব্লগারদের কিছু লেখা:
আন্তর্জাতিক ব্লগ প্রতিযোগীতায় সামহোয়ারইন এর ব্লগার ইমন জুবায়ের কে ভোট দিন

বেচারা ইমন জুবায়ের.................ব্যাপারনা

দু:খজনক সংবাদ: ব্লগার ইমন জুবায়ের আর নেই

বাংলা ব্লগিং জগতের অন্যতম নক্ষত্র, আমাদের প্রিয় ইমন জুবায়ের ভাই আর আমাদের মাঝে নেই........
ছিন্নস্মৃতিঃ ছেলেটির নাম ইমন জুবায়ের !

প্রিয় ইমন ভাইকে নিয়ে লেখা !! (আমার ও অন্য সকলের)

ইমন ভাইয়ের সাথে কথোপকথন !

ইমন জুবায়ের এক ব্লগ কিংবদন্তীর নাম।

ইমন জুবায়ের ভাই, আপনার সাথে একবার দেখা করার ইচ্ছে ছিলো

ইমন মাঝির তিন তক্তার নৌকা আমার ভরসা, আমাদের ভরসা

ডাচম্যানের জবানবন্দিঃ ইমন জুবায়ের

স্মৃতিতে অমলিন নগর ঋষি শ্রদ্ধেয় ইমন জুবায়ের

আমার ইমন জুবায়ের ভাইয়া

মিথ্যা - ইমন জুবায়ের ভাইয়ের সেই গান...





আজও আমি তাঁর যে কথার কূল-কিনারা ছুঁতে পারি নি-
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন,
জ্যোৎস্না রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন?

ইমন জুবায়ের
জন্ম: ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭ – মৃত্যু: ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৩

শুরুতেই বলে রাখা ভালো- বাংলা ব্লগের অন্যতম নক্ষত্র ইমন জুবায়ের ভাইকে নিয়ে ইতোপূর্বে অনেক লেখা হয়েছে। তবু তাঁকে নিয়ে লেখার সামান্য প্রয়াস পেতে আমাকেকিংকর্তব্যবৈমূঢ়ে ভুগতে হয়েছে। যতোটুকু লিখতে পেরেছি, তা তাঁর স্মারক হিসেবেই থাকুক।

পুরো নাম- জুবায়ের হোসেন ইমন। ‘ইমন’ তাঁর মেজোমামার দেয়া ডাকনাম। পরবর্তীতে ইমন জুবায়ের নামেই তিনি পরিচিত। তাঁর বাবা আবদুল মালেক পাটোয়ারী একজন আইনজীবী ছিলেন। মা- নুরুন্নেসা হামিদা বেগম, তিনি ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা।চার বোন ও এক ভাই হলেও ইমন ভাই আর স্বাতী দু’জন পিঠাপিঠি ছিলেন।
শৈশব কাটে তাঁর নানাবাড়িতে। তিনি অবশ্য নানীর বাড়ি বলতে ভালোবাসতেন। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন খুব চঞ্চল প্রকৃতির। জলপাই গাছ বেয়ে বাড়ির ছাদে ওঠা, হরবরি গাছে উঠে দেয়াল টপকানো আর বন্ধুদের নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানো ছিলো তার নিত্যদিনের ব্যাপার। ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র তাঁর নজর কাঁড়তো। ফুটবল তাঁর প্রিয় খেলা। তিনি ছিলেন একজন সফল গোলরক্ষক। শূন্যে উড়ে বল গ্রিপ করার নৈপুণ্যে তাঁর খুব নাম ডাক ছিলো। বল ছিঁটকে বেরিয়ে আসার আগেই বুঝতে পারতেন বল কোন দিকে যাবে। তিনি মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাপোর্টার ছিলেন। এছাড়া ক্রিকেটও ভালো খেলতেন তিনি। তিনি স্পিন বলার হলেও অনায়াসেই বল তালুবন্দি (ক্যাচ) করতে পারতেন। প্রিয় দল বাংলাদেশ, তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছেলেবেলার বন্ধু পাড়ার গৌতম, শাকিল ও পার্থ। শৈশব থেকেই তিনি গান শনতে পছন্দ করতেন।

এতো কিছুর পরও তিনি প্রচুর বই পড়তেন। বইয়ের পোকা যাকে বলে। এই অভ্যেসটা তিনি মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তাঁর প্রিয় সিরিজ ছিলো ‘কুয়াশা’, ‘দস্যু বনহুর’, ও ‘দস্যু পাঞ্জা’। তাঁর কোনও এক লেখায় তিনি লিখেছেন- “ছেলেবেলায় আমার চারপাশে ছিল বইয়ের অফুরন্ত সম্ভার। রাস্তার ওপারে ‘সবুজ লাইব্রেরি’ নামে বইয়ের একটা দোকান ছিল। আজও আছে। বিকেলের দিকে যেতাম দোকানটায়। এক টাকা কি দুই টাকায় ‘কুয়াশা’ সিরিজ পাওয়া যেত। অবশ্য কেনার মতো পয়সা ছিল না। আমার মুখ দেখেই হয়তো দোকানের লোকটার দয়া হত। বইয়ের পাতা ভাঁজ না করার শর্তে আমাকে ‘কুয়াশা’ সিরিজের বই পড়তে দিতেন। ফাঁকা ফুটপাতের ওপরই পড়তে বসে যেতাম। কী নির্জন রাস্তা; জনশূন্য শান্তিনগর মোড়। দশ/পনেরো মিনিট পর পর একটা রিকশা কি একটা মাজদা গাড়ি কি রামপুরা- গুলিস্তান রুটে সবুজ রঙের ধ্যাড়ধ্যাড়া মুড়ির টিন যেত। সেই ১৯৭৭/৭৮ সালের কথা ... পড়তে পড়তে সন্ধ্যা নেমে আসত। আমিনবাগ জামে মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসত। দোকানে বই ফেরৎ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে বাড়ি ফিরতাম ...”।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, নীহার রঞ্জন ও নিমাই ভট্টাচার্য এর বই তার প্রিয় ছিলো। আশুতোষের ‘সোনার হরিণ নেই’ পড়ার পর অনেক দিন তাঁর মন খারাপ থাকে। সেই সময়ে তিনি তাঁর ক্লাসের (সম্ভবত সিক্স কি সেভেন) শ্যামলা এক মেয়ের প্রেমে পড়েন। মেয়েটির নাম জানা জায়নি। কিন্তু কখনও মেয়েটিকে তার বলা-ই হয়নি- তোমাকে আমার ভালো লাগে। এমনকি কথা-ও হয়নি কখনও।

প্রিয় এই মানুষটি ছেলেবেলায় শুধু গল্পের বই-ই পড়েন নি। অন্যদের তুলনায় তার জ্ঞান আহরণ প্রক্রিয়া ছিলো ভিন্ন। ক্লাসের পড়ার বাইরেও তিনি মৌলিক ও বৈষয়িক শিক্ষা লাভ করেন (যদিও সেসবের পুরোটা তাঁর অপরিণত মাথায় ধরতো না)। তাঁর লেখায় তিনি বলেছেন- “ইডেনে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময়ই আমার আম্মার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল । ভীষণ জেদি মহিলা ছিলেন। এম . এ পাস করবেনই । একটা মেয়েদের স্কুলে পড়াতেন। তারপরও জগন্নাথ কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে নাইট শিফটে এম.এ ক্লাসে ভর্তি হলেন । সন্ধ্যার আগে-আগে আম্মার সঙ্গে মালিবাগ মোড় থেকে ঠেলাঠেলি করে মুড়ির টিনে উঠতাম । গন্তব্য বাংলাবাজার। বড় একটা হল ঘরে বাতি জ্বলত, বেঞ্চর ওপর বসে থাকা ছাত্রছাত্রীরা কেমন শান্ত, জীবনহীন, ছায়া-ছায়া; বুড়োমতন একজন স্যার কীসব বলে যেতেন। পরে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পড়েছি । অথচ শৈশবেই ইতিহাসের অধ্যাপকের ক্লাস আমার করা হয়ে গেছে। আম্মা পড়তেন রান্না করার সময় । আব্বা আইনজীবি। মামলা-মোকদ্দমার জন্য গ্রামের বাড়ির থেকে লোকজন আসতেই থাকত। এ ভাত খাবে তো ও রুটি খাবে; এর অজুর জন্য গরম পানি চাই তো ওর জন্য তরকারি গরম কর। আম্মা পড়তেন এসবই সামলে ...

ছেলেবেলায় যে ইতিহাস বিষয়ে হাতে খড়ি হয়েছিলো মায়ের কাছে, সেই একই বিভাগে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

তিনি নি:স্বার্থভাবে লিখতে পছন্দ করতেন। তার সব লেখা-ই বলতে গেলে ব্লগে প্রকাশিত। সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মতত্ব, চিত্রকলা, সঙ্গীত ও মিথোলজিসহ নানান বিষয়ে তার লেখনীর পদচারণা আজও বিদ্যমান। তাঁর বেশকিছু লেখা নারীর অধিকার বিষয়ক। এর মাঝে ‘ অ্যাসিড রেইন’, ‘আরও একজন ’ ও ‘তাক ’ অন্যতম। একটা সময় যখন ব্লগে সৃজনশীল সাহিত্যের অভাব বিরাজ করছিলো- ঠিক সেই সময়ে নিরলসভাবে তিনি দিনের পর দিন সাজিয়ে গেছেন জ্ঞানগর্ভ মূল্যবান লেখাগুলো। পনেরোশত পোস্ট। কম নয়। আবার এর একটাও ফেলে দেবার নয়। বরং তাঁর একেকটা লেখা অনেক ধরণের তথ্যপূর্ণ হতো।

তিনি ছোটকাগজেও লিখতেন। ‘অনুপ্রাণন’ এর কোনও এক সংখ্যায় ‘একদিন গৌতম বুদ্ধ’ ছাপা হয়েছিলো। ‘শিরদাঁড়া’-তে প্রকাশিত হয় ‘আমার তো কপিলে বিশ্বাস’, ‘পূর্বাহ্নের আগুন’, ‘অন্ধকারে সব মুছে যাবার আগে’ ও ‘আগুনের গলি’।


লেখালেখির পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’ এর গীতিকার ছিলেন। বলতে গেলে ব্ল্যাক এর যাত্রা ইমন ভাইয়ের বাসা থেকেই। তিনি প্রায় ত্রিশটির মতো গানের কথা লিখেছেন। তাঁর লেখা কিছু গীতি এখান থেকে পাওয়া যাবে। তবে (আমি যতোটুকু জানি) তিনি কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। পেশাজীবী বলতে যা বোঝায়, ইমন ভাই তা নন।

রাগ পূরবীর প্র্যাক্টিসে ইমন ভাই

তিনি ছিলেন ২০১১ সালের সেরা ব্লগার। সে বছর “দ্য বব্স” এর আন্তর্জাতিক সেরা ব্লগার প্রতিযোগিতায় ডয়েচে ভ্যালে’তে “বেস্ট বাংলা ব্লগ” ক্যাটাগরিতে তিনি মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু নিজে থেকেই তিনি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।

তাঁর সর্বশেষ লেখা ছিলো অতিপ্রাকৃত গল্প: সতরই জুলাইকিন্তু আজ সতরই ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্মবার্ষিকী। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয়- তাঁর শেষ লেখার শিরোনামের সাথে তাঁর জন্ম তারিখের কোথাও কোনও মিল আছে।

গান আর লেখনী। লেখনী আর গান। এই দু’টোর পরে কর্মজীবনকে তিনি বৈবাহিক জীবনে রূপান্তর করতে চান নি। অধ্যবসায়ে ব্যাঘাত ঘটবে সেই সঙ্কায় তিনি বিয়ে করেন নি। কিন্তু লেখালেখিতে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রেমের ফলে তিনি ব্যক্তিজীবনে শরীরের প্রতি যত্ন নিতে পারতেন না। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও নেয়া হয়। কিন্তু ২০১৩ ৩রা জানুয়ারি হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কথা ছিলো পরদিন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। কিন্তু তার আর হয়নি। মাঝরাতে (৪ঠা জানুয়ারি) তিনি এই পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে ওপারে পাড়ি জমান। আনুমানিক ২.৩০ মিনিটে। ভালো মানুষগুলো মনে হয় এইভাবেই পৃথিবীকে ছেড়ে যায়। :(

এলাকার আমিনবাগ জামে মসজিদে জুম্মা নামাজের পর তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকাল প্রায় চারটার দিকে তাকে সমাহিত করা হয়। তিনি এখন শুয়ে আছেন আজিমপুর সমাধিক্ষেত্রে। কিন্তু আমার একটা বিষয় বুঝে আসে না। তাঁকে আজিমপুর কেন শায়িত করা হলো!

আজ তাঁর ৪৯তম জন্মবার্ষিকী ছিলো। কিন্তু তিনি যেখানেই থাকুন, তাঁর আত্মা পরম শান্তিতে থাকুক, প্রভুর কাছে এ-ই আমি প্রার্থণা করি।

====================================================
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিঃ
আগে ব্লগের প্রথম পাতায় ডান পাশে “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” এর একটি বক্স রাখা হয়েছিলো। প্রায় বছর খানেক আগেও ছিলো। এখন তা নেই। ব্লগ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আবেদন, যদি সম্ভব হয়- “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” ডায়লগ বক্সটি ফিরিয়ে আনুন।

====================================================

তাঁকে নিয়ে ব্লগারদের কিছু লেখা:
আন্তর্জাতিক ব্লগ প্রতিযোগীতায় সামহোয়ারইন এর ব্লগার ইমন জুবায়ের কে ভোট দিন

বেচারা ইমন জুবায়ের.................ব্যাপারনা

দু:খজনক সংবাদ: ব্লগার ইমন জুবায়ের আর নেই

বাংলা ব্লগিং জগতের অন্যতম নক্ষত্র, আমাদের প্রিয় ইমন জুবায়ের ভাই আর আমাদের মাঝে নেই........
ছিন্নস্মৃতিঃ ছেলেটির নাম ইমন জুবায়ের !

প্রিয় ইমন ভাইকে নিয়ে লেখা !! (আমার ও অন্য সকলের)

ইমন ভাইয়ের সাথে কথোপকথন !

ইমন জুবায়ের এক ব্লগ কিংবদন্তীর নাম।

ইমন জুবায়ের ভাই, আপনার সাথে একবার দেখা করার ইচ্ছে ছিলো

ইমন মাঝির তিন তক্তার নৌকা আমার ভরসা, আমাদের ভরসা

ডাচম্যানের জবানবন্দিঃ ইমন জুবায়ের

স্মৃতিতে অমলিন নগর ঋষি শ্রদ্ধেয় ইমন জুবায়ের

আমার ইমন জুবায়ের ভাইয়া

মিথ্যা - ইমন জুবায়ের ভাইয়ের সেই গান...


আজও আমি তাঁর যে কথার কূল-কিনারা ছুঁতে পারি নি-
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন,
জ্যোৎস্না রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন?

ইমন জুবায়ের
জন্ম: ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭ – মৃত্যু: ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৩

শুরুতেই বলে রাখা ভালো- বাংলা ব্লগের অন্যতম নক্ষত্র ইমন জুবায়ের ভাইকে নিয়ে ইতোপূর্বে অনেক লেখা হয়েছে। তবু তাঁকে নিয়ে লেখার সামান্য প্রয়াস পেতে আমাকেকিংকর্তব্যবৈমূঢ়ে ভুগতে হয়েছে। যতোটুকু লিখতে পেরেছি, তা তাঁর স্মারক হিসেবেই থাকুক।

পুরো নাম- জুবায়ের হোসেন ইমন। ‘ইমন’ তাঁর মেজোমামার দেয়া ডাকনাম। পরবর্তীতে ইমন জুবায়ের নামেই তিনি পরিচিত। তাঁর বাবা আবদুল মালেক পাটোয়ারী একজন আইনজীবী ছিলেন। মা- নুরুন্নেসা হামিদা বেগম, তিনি ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা।চার বোন ও এক ভাই হলেও ইমন ভাই আর স্বাতী দু’জন পিঠাপিঠি ছিলেন।
শৈশব কাটে তাঁর নানাবাড়িতে। তিনি অবশ্য নানীর বাড়ি বলতে ভালোবাসতেন। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন খুব চঞ্চল প্রকৃতির। জলপাই গাছ বেয়ে বাড়ির ছাদে ওঠা, হরবরি গাছে উঠে দেয়াল টপকানো আর বন্ধুদের নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানো ছিলো তার নিত্যদিনের ব্যাপার। ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র তাঁর নজর কাঁড়তো। ফুটবল তাঁর প্রিয় খেলা। তিনি ছিলেন একজন সফল গোলরক্ষক। শূন্যে উড়ে বল গ্রিপ করার নৈপুণ্যে তাঁর খুব নাম ডাক ছিলো। বল ছিঁটকে বেরিয়ে আসার আগেই বুঝতে পারতেন বল কোন দিকে যাবে। তিনি মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাপোর্টার ছিলেন। এছাড়া ক্রিকেটও ভালো খেলতেন তিনি। তিনি স্পিন বলার হলেও অনায়াসেই বল তালুবন্দি (ক্যাচ) করতে পারতেন। প্রিয় দল বাংলাদেশ, তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছেলেবেলার বন্ধু পাড়ার গৌতম, শাকিল ও পার্থ। শৈশব থেকেই তিনি গান শনতে পছন্দ করতেন।

এতো কিছুর পরও তিনি প্রচুর বই পড়তেন। বইয়ের পোকা যাকে বলে। এই অভ্যেসটা তিনি মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তাঁর প্রিয় সিরিজ ছিলো ‘কুয়াশা’, ‘দস্যু বনহুর’, ও ‘দস্যু পাঞ্জা’। তাঁর কোনও এক লেখায় তিনি লিখেছেন- “ছেলেবেলায় আমার চারপাশে ছিল বইয়ের অফুরন্ত সম্ভার। রাস্তার ওপারে ‘সবুজ লাইব্রেরি’ নামে বইয়ের একটা দোকান ছিল। আজও আছে। বিকেলের দিকে যেতাম দোকানটায়। এক টাকা কি দুই টাকায় ‘কুয়াশা’ সিরিজ পাওয়া যেত। অবশ্য কেনার মতো পয়সা ছিল না। আমার মুখ দেখেই হয়তো দোকানের লোকটার দয়া হত। বইয়ের পাতা ভাঁজ না করার শর্তে আমাকে ‘কুয়াশা’ সিরিজের বই পড়তে দিতেন। ফাঁকা ফুটপাতের ওপরই পড়তে বসে যেতাম। কী নির্জন রাস্তা; জনশূন্য শান্তিনগর মোড়। দশ/পনেরো মিনিট পর পর একটা রিকশা কি একটা মাজদা গাড়ি কি রামপুরা- গুলিস্তান রুটে সবুজ রঙের ধ্যাড়ধ্যাড়া মুড়ির টিন যেত। সেই ১৯৭৭/৭৮ সালের কথা ... পড়তে পড়তে সন্ধ্যা নেমে আসত। আমিনবাগ জামে মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসত। দোকানে বই ফেরৎ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে বাড়ি ফিরতাম ...”।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, নীহার রঞ্জন ও নিমাই ভট্টাচার্য এর বই তার প্রিয় ছিলো। আশুতোষের ‘সোনার হরিণ নেই’ পড়ার পর অনেক দিন তাঁর মন খারাপ থাকে। সেই সময়ে তিনি তাঁর ক্লাসের (সম্ভবত সিক্স কি সেভেন) শ্যামলা এক মেয়ের প্রেমে পড়েন। মেয়েটির নাম জানা জায়নি। কিন্তু কখনও মেয়েটিকে তার বলা-ই হয়নি- তোমাকে আমার ভালো লাগে। এমনকি কথা-ও হয়নি কখনও।

প্রিয় এই মানুষটি ছেলেবেলায় শুধু গল্পের বই-ই পড়েন নি। অন্যদের তুলনায় তার জ্ঞান আহরণ প্রক্রিয়া ছিলো ভিন্ন। ক্লাসের পড়ার বাইরেও তিনি মৌলিক ও বৈষয়িক শিক্ষা লাভ করেন (যদিও সেসবের পুরোটা তাঁর অপরিণত মাথায় ধরতো না)। তাঁর লেখায় তিনি বলেছেন- “ইডেনে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময়ই আমার আম্মার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল । ভীষণ জেদি মহিলা ছিলেন। এম . এ পাস করবেনই । একটা মেয়েদের স্কুলে পড়াতেন। তারপরও জগন্নাথ কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে নাইট শিফটে এম.এ ক্লাসে ভর্তি হলেন । সন্ধ্যার আগে-আগে আম্মার সঙ্গে মালিবাগ মোড় থেকে ঠেলাঠেলি করে মুড়ির টিনে উঠতাম । গন্তব্য বাংলাবাজার। বড় একটা হল ঘরে বাতি জ্বলত, বেঞ্চর ওপর বসে থাকা ছাত্রছাত্রীরা কেমন শান্ত, জীবনহীন, ছায়া-ছায়া; বুড়োমতন একজন স্যার কীসব বলে যেতেন। পরে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পড়েছি । অথচ শৈশবেই ইতিহাসের অধ্যাপকের ক্লাস আমার করা হয়ে গেছে। আম্মা পড়তেন রান্না করার সময় । আব্বা আইনজীবি। মামলা-মোকদ্দমার জন্য গ্রামের বাড়ির থেকে লোকজন আসতেই থাকত। এ ভাত খাবে তো ও রুটি খাবে; এর অজুর জন্য গরম পানি চাই তো ওর জন্য তরকারি গরম কর। আম্মা পড়তেন এসবই সামলে ...

ছেলেবেলায় যে ইতিহাস বিষয়ে হাতে খড়ি হয়েছিলো মায়ের কাছে, সেই একই বিভাগে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

তিনি নি:স্বার্থভাবে লিখতে পছন্দ করতেন। তার সব লেখা-ই বলতে গেলে ব্লগে প্রকাশিত। সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মতত্ব, চিত্রকলা, সঙ্গীত ও মিথোলজিসহ নানান বিষয়ে তার লেখনীর পদচারণা আজও বিদ্যমান। তাঁর বেশকিছু লেখা নারীর অধিকার বিষয়ক। এর মাঝে ‘ অ্যাসিড রেইন’, ‘আরও একজন ’ ও ‘তাক ’ অন্যতম। একটা সময় যখন ব্লগে সৃজনশীল সাহিত্যের অভাব বিরাজ করছিলো- ঠিক সেই সময়ে নিরলসভাবে তিনি দিনের পর দিন সাজিয়ে গেছেন জ্ঞানগর্ভ মূল্যবান লেখাগুলো। পনেরোশত পোস্ট। কম নয়। আবার এর একটাও ফেলে দেবার নয়। বরং তাঁর একেকটা লেখা অনেক ধরণের তথ্যপূর্ণ হতো।

তিনি ছোটকাগজেও লিখতেন। ‘অনুপ্রাণন’ এর কোনও এক সংখ্যায় ‘একদিন গৌতম বুদ্ধ’ ছাপা হয়েছিলো। ‘শিরদাঁড়া’-তে প্রকাশিত হয় ‘আমার তো কপিলে বিশ্বাস’, ‘পূর্বাহ্নের আগুন’, ‘অন্ধকারে সব মুছে যাবার আগে’ ও ‘আগুনের গলি’।


লেখালেখির পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’ এর গীতিকার ছিলেন। বলতে গেলে ব্ল্যাক এর যাত্রা ইমন ভাইয়ের বাসা থেকেই। তিনি প্রায় ত্রিশটির মতো গানের কথা লিখেছেন। তাঁর লেখা কিছু গীতি এখান থেকে পাওয়া যাবে। তবে (আমি যতোটুকু জানি) তিনি কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। পেশাজীবী বলতে যা বোঝায়, ইমন ভাই তা নন।

রাগ পূরবীর প্র্যাক্টিসে ইমন ভাই

তিনি ছিলেন ২০১১ সালের সেরা ব্লগার। সে বছর “দ্য বব্স” এর আন্তর্জাতিক সেরা ব্লগার প্রতিযোগিতায় ডয়েচে ভ্যালে’তে “বেস্ট বাংলা ব্লগ” ক্যাটাগরিতে তিনি মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু নিজে থেকেই তিনি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।

তাঁর সর্বশেষ লেখা ছিলো অতিপ্রাকৃত গল্প: সতরই জুলাইকিন্তু আজ সতরই ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্মবার্ষিকী। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয়- তাঁর শেষ লেখার শিরোনামের সাথে তাঁর জন্ম তারিখের কোথাও কোনও মিল আছে।

গান আর লেখনী। লেখনী আর গান। এই দু’টোর পরে কর্মজীবনকে তিনি বৈবাহিক জীবনে রূপান্তর করতে চান নি। অধ্যবসায়ে ব্যাঘাত ঘটবে সেই সঙ্কায় তিনি বিয়ে করেন নি। কিন্তু লেখালেখিতে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রেমের ফলে তিনি ব্যক্তিজীবনে শরীরের প্রতি যত্ন নিতে পারতেন না। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও নেয়া হয়। কিন্তু ২০১৩ ৩রা জানুয়ারি হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কথা ছিলো পরদিন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। কিন্তু তার আর হয়নি। মাঝরাতে (৪ঠা জানুয়ারি) তিনি এই পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে ওপারে পাড়ি জমান। আনুমানিক ২.৩০ মিনিটে। ভালো মানুষগুলো মনে হয় এইভাবেই পৃথিবীকে ছেড়ে যায়। :(

এলাকার আমিনবাগ জামে মসজিদে জুম্মা নামাজের পর তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকাল প্রায় চারটার দিকে তাকে সমাহিত করা হয়। তিনি এখন শুয়ে আছেন আজিমপুর সমাধিক্ষেত্রে। কিন্তু আমার একটা বিষয় বুঝে আসে না। তাঁকে আজিমপুর কেন শায়িত করা হলো!

আজ তাঁর ৪৯তম জন্মবার্ষিকী ছিলো। কিন্তু তিনি যেখানেই থাকুন, তাঁর আত্মা পরম শান্তিতে থাকুক, প্রভুর কাছে এ-ই আমি প্রার্থণা করি।

====================================================
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিঃ
আগে ব্লগের প্রথম পাতায় ডান পাশে “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” এর একটি বক্স রাখা হয়েছিলো। প্রায় বছর খানেক আগেও ছিলো। এখন তা নেই। ব্লগ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আবেদন, যদি সম্ভব হয়- “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” ডায়লগ বক্সটি ফিরিয়ে আনুন।

====================================================

তাঁকে নিয়ে ব্লগারদের কিছু লেখা:
আন্তর্জাতিক ব্লগ প্রতিযোগীতায় সামহোয়ারইন এর ব্লগার ইমন জুবায়ের কে ভোট দিন

বেচারা ইমন জুবায়ের.................ব্যাপারনা

দু:খজনক সংবাদ: ব্লগার ইমন জুবায়ের আর নেই

বাংলা ব্লগিং জগতের অন্যতম নক্ষত্র, আমাদের প্রিয় ইমন জুবায়ের ভাই আর আমাদের মাঝে নেই........
ছিন্নস্মৃতিঃ ছেলেটির নাম ইমন জুবায়ের !

প্রিয় ইমন ভাইকে নিয়ে লেখা !! (আমার ও অন্য সকলের)

ইমন ভাইয়ের সাথে কথোপকথন !

ইমন জুবায়ের এক ব্লগ কিংবদন্তীর নাম।

ইমন জুবায়ের ভাই, আপনার সাথে একবার দেখা করার ইচ্ছে ছিলো

ইমন মাঝির তিন তক্তার নৌকা আমার ভরসা, আমাদের ভরসা

ডাচম্যানের জবানবন্দিঃ ইমন জুবায়ের

স্মৃতিতে অমলিন নগর ঋষি শ্রদ্ধেয় ইমন জুবায়ের

আমার ইমন জুবায়ের ভাইয়া

মিথ্যা - ইমন জুবায়ের ভাইয়ের সেই গান...





আজও আমি তাঁর যে কথার কূল-কিনারা ছুঁতে পারি নি-
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন,
জ্যোৎস্না রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন?

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২

কল্লোল পথিক বলেছেন: যেখানে থাকুন ভাল থাকুন।
বাংলা ব্লগের ইতিহাসে আপনার নাম চিরদিন অমলিন রবে।
স্রষ্টার কাছে এই প্রার্থনা করি যাতে পরলোকে শান্তিতে থাকেন।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৮

ইখতামিন বলেছেন:
তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।

ধন্যবাদ রইলো।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৪

নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন: প্রয়াত
আমাদের প্রাণের প্রিয় ইমন জোবায়ের ভায়ের
আত্যার মাগ ফেরাত কামনা করি
মহান আল্লাহ তা আলা তাকে জান্নাত দান করুন-আমিন

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১০

ইখতামিন বলেছেন: তিনি সব সময়েই ভালো থাকুক। তাঁর আত্মা শান্তি পাক।

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১

দ্যা রয়েল বেঙ্গল টাইগার বলেছেন: প্রয়াত ব্লগ নক্ষত্র ইবনে জোবায়ের ভাইয়ের শুভ জন্মদিনে অনেক অনেক শ্রদ্ধাঞ্জলি। এবং সেই সাথে সাথে ওনার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

পোস্টর জন্য ধন্যবাদ ভাই! ভাল থাকবেন!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

ইখতামিন বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা রইলো

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৪

গেম চেঞ্জার বলেছেন: এই গুণী'র জন্য মনটা খারাপ লাগছে। :(

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

ইখতামিন বলেছেন:
তাঁর মতো ব্যক্তিত্ব এই সময়ে খুবই কম হয়
তাঁর আত্মা পরম শান্তিতে থাকুক।

৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫১

অগ্নি সারথি বলেছেন: শতত শ্রদ্ধা হে নগর ঋষি।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

ইখতামিন বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ রইলো

৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৩

পুলহ বলেছেন: পরম করুণাময় আল্লাহ উনাকে ক্ষমা করুন... মঙ্গল যেনো ওপার জগতে তাকে ঘিরে থাকে।
আমি ব্লগে এসে উনাকে পাই নি, তার অনেক আগেই উনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। পুরাতন ব্লগারদের মুখে শুধু উনার জ্ঞান, প্রজ্ঞা আর অপূর্ব লেখনীর প্রশংসাই শুনেছি.. আপনার এই লেখা পড়ে চেতনা হোল- তার লেখা গুলো সময় করে ধীরে ধীরে পড়ে ফেলা দরকার :)
পোস্টে প্লাস। "ইমন জুবায়ের
জন্ম: ১৭ই জানুয়ারি, ১৯৬৭ – মৃত্যু: ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৩"- এ অংশটুকু সুযোগ মত এডিট করে ঠিক করে নিয়েন।
শুভকামনা রইলো আপনার জন্য...

ওহ আরেকটা কথা বলার লোভ সামলাতে পারছি না- আজ কিন্তু জীবনানন্দ দাশেরও জন্মদিন ছিলো :)

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৭

ইখতামিন বলেছেন: ভুলটা ধরিয়ে দেবার জন্য অজস্র ধন্যবাদ নিবেন।

আজ জীবনানন্দ দাশেরও জন্মদিন ছিলো। :) মনে করিয়ে দেবার জন্য আবারও ধন্যবাদ।

আমার ব্লগে স্বাগতম । পরে কথা হবে। অনেক শুভকামনা রইলো।

৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৩

আরজু নাসরিন পনি বলেছেন:

শুধুই দীর্ঘশ্বাস !

ব্লগের প্রথম পাতায় ডান পাশে “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” এর একটি বক্স রাখা হয়েছিলো।...আশা করি কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবেন সেটিকে পুনস্থাপন করা যায় কিনা ।


অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই, ইখতামিন এমন অসাধারণ পোস্ট দেবার জন্যে ।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৫

ইখতামিন বলেছেন:
কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ভেবেছে কি না অথবা ভাববে কি না তা বলা যাচ্ছে না, তবে আমিও আশা করছি, কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবেন


অশেষ ধন্যবাদ নিবেন।

ভুল বললেন, অসাধারণ করার জন্য যা যা প্রয়োজন ছিলো, তা হয়তো আমি ফুটাতে পারি নি। :)

৮| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৬

আবু শাকিল বলেছেন: ইমন জুবায়ের ভাই যেখানে থাকুক ভাল থাকুক।
ইখতামিন - পোষ্ট লেখার জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫২

ইখতামিন বলেছেন: আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

৯| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৫

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আরজু নাসরিন পনি বলেছেন:

শুধুই দীর্ঘশ্বাস !

ব্লগের প্রথম পাতায় ডান পাশে “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” এর একটি বক্স রাখা হয়েছিলো।...আশা করি কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবেন সেটিকে পুনস্থাপন করা যায় কিনা

আমারো একই কথা ।
পোষ্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ রইল ।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০২

ইখতামিন বলেছেন:
আপনাকেও অজস্র শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা রইলো


আমরা আশা করবো এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবেন

১০| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩০

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিঃ
আগে ব্লগের প্রথম পাতায় ডান পাশে “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” এর একটি বক্স রাখা হয়েছিলো। প্রায় বছর খানেক আগেও ছিলো। এখন তা নেই। ব্লগ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আবেদন, যদি সম্ভব হয়- “ইমন জুবায়ের ব্লগসমগ্র” ডায়লগ বক্সটি ফিরিয়ে আনুন


আমারও একই দাবী। আশাকরি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় আনবেন।

পোষ্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ রইল ।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪১

ইখতামিন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ নিবেন

১১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫২

হাসান মাহবুব বলেছেন: ইমন ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা সবসময়ের জন্যে। আমিও দাবী করছি উনার ব্লগ প্রোফাইল প্রথম পাতায় স্টিকি করে রাখা হোক। বেশ অনেক নতুন তথ্য জানলাম। এতসব পেলেন কোথা থেকে?

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪৪

ইখতামিন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ হাসান ভাই
ইমন ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা সতত
আপাতত মনে হয় উনার ব্লগ স্টিকি করে রাখার সম্ভাবনা নেই

আচ্ছা, এই সব তথ্য এই পোস্টের লিংকগুলিতে গেলেই পাওয়া যাবে। :)

ভালো থাকুন
শুভ সকাল

১২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ পোস্টটার জন্যে আপনাকে, ইখতামিন। উপরের কমেন্টগুলোর সাথে সহমত জানাই।




২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫

ইখতামিন বলেছেন: আপনাকেও অজস্র ধন্যবাদ রইলো।
ভালো থাকুন

১৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১০

বিজন রয় বলেছেন: হাসান মাহবুব বলেছেন: ইমন ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা সবসময়ের জন্যে। আমিও দাবী করছি উনার ব্লগ প্রোফাইল প্রথম পাতায় স্টিকি করে রাখা হোক।

সহমত।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬

ইখতামিন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ বিজন রয়।
ভালো থাকুন

১৪| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৮

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন:
প্রয়াত ইমান ভইয়ের স্মরণে পোস্ট দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। অসাধারণ এই মানুষটার সান্নিধ্য পাই নি। কিন্তু ওনার ব্লগ ঘুরে দেখেছি। লেখা পড়েছি। সাদামাটা গুণী একজন।

আপনার প্রস্তাবের সাথে একমত।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪৭

ইখতামিন বলেছেন: তিনি ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ নিবেন
ভালো থাকুন

১৫| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৫

জুন বলেছেন: সহব্লগার ইমন জুবায়ের এর অকাল মৃত্যু খুবই দু:খজনক ঘটনা ছিল। জন্মদিনে ওনার বিদেহী আত্নার প্রতি শ্রদ্ধা

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৫১

ইখতামিন বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ নিবেন।

আমার ব্লগে ইবনে বতুতাকে দেখে ভালো লাগলো :)
ভালো থাকুন

১৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪১

বিজন রয় বলেছেন: নতুন পোস্ট দিন।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৫৩

ইখতামিন বলেছেন: আপাতত মাথায় কিছু নেই :)

মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ
ভালো থাকুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.