![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার নিজস্ব ব্লগ - ikrupam.blogspot.com
সে দিন দোকানটায় বসে আছি । হঠাত্ দশ বার হাত দূরে মানুষেয জটলা চোখেঁ পরলো । ইচ্ছা না থাকা শর্তেও উঠে গেলাম , ঘটনা কি যাচাই করতে । গিয়ে দেখি একটা বার তের বছরের ছেলে মাটিতে গড়াগড়ী দিচ্ছে ! ঘটনা কি আসে পাসে জিগাইলাম ? কেউ কেউ বল্লো ছেলেটার মির্গি রোগ উঠছে ! কেউ কেউ আবার ধমক দিয়ে বল্লো , কি হচ্ছে দেখতে পাচ্ছিস না ? তাদের কথায় কান দিলাম না । সবাই দেখছি ছেলেটি কে ঘিরে ধরে তার মজা দেখছে ! কেউ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসলো না ! আমার এখন কি করনিয় কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না ! ইতোমধ্যে আর ও অনেক মানুষ জড়ো হতে লাললো । মনে করলাম ছেলেটার একটু বাতাস দরকার , তাই সবাইকে দূরে সরে যেতে বল্লাম কেউ কেউ গেল তবে অনেকে যায়নি । যায়া দূরে গেল আর যারা যায়নি দু দলেই আমাকে বির বির করে গিলিদিল । এবার আমি কি করবো । হঠাত্ মনে পরলো এই রোগ উঠলে চামের স্যান্ডেল শুকাইতে হয় । আমি জানি এটা কুসংস্কার । কিন্তু এখন আমার কি বা করার আছে । নিজেকেও একটু লজ্জা লজ্জা লাগছে , কেউ এগিয়ে আসলো না আমি কেন আসলাম ? যাই হোক লজ্জা সরম তা করে রাখলাম । সংশয় নিয়ে ছেলেটার নাকের কাছে কয়েক বার স্যান্ডেল শুকালাম । আশ্চর্য কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ছেলেটা মাটি থেকে উঠে দাড়াল ! নিজে কে তখন যে কতো গর্বিত মনে হলো তা বলে বুঝাতে পারবো না । আচ্ছা মানুষের বিবেক নৈতিকতা মানবতা মূল্যবোধ কি এতোটাই নিচে নেমে গেছে । হবেই না কেন কিছু দিন আগে চিনের ঘটনাতো সবাই টিভিতে দেখেছেন ? তাই না ?
সে দিন ও দোকানের কাছা কাছি ছিলাম । সময়টা সম্ভবত রমজান মাস বিকেল বেলা । এ সময় সাধারণত বাজারে মানুষজন খুব কম থাকে । একটা রোগা পাতলা হ্যাংলা লোক জ্বর নিয়ে তার ছোট মেয়েকে সাথে নিয়ে ঔষধ নিতে আসছে । কিন্তু তার গায়ে এতো জ্বর ছিলো যে , ঠিক মত দাড়াতেই পারছে না । ছোট্ট মেয়ে টিও তাকে ধরে রাখতে পারছে না । এবার ও এগিয়ে গেলাম , মনেপরে গেল আমার বাবাও একদিন এমন জ্বর নিয়ে ডা. কাছে এসেছিল , সে দিন আমি বাবার সাথে আসতে পারিনি , একাই ঔষুধ নিয়ে বাড়ী ফিরছে , কিন্তু পরের দিন থেকে বাবা আর ঘুম থেকে উঠে নি ! আজ অবধি উঠেনি । সেটাই মনে পরেগেল । যাইহোক সাহায্য করার জন্য লোকটার বগলের নিচ দিয়ে হাত ঢুকে দিয়ে ভাসিয়ে একটা বসার জায়গায় নিয়ে যাব , কেমন করেযে তার পকেটে হাত পরলো বুঝতেই পারলাম না , অনুভব করলাম পকেটে অনেক টাকা আছে ? লোকটি ঠিক মত কথায় বলতে পারছিল না , তারপর ও যখন তার টাকার হাত পরলো রাগ করে অতি কষ্টে বল্লো ছেরে দে ! লোকটি সম্ভবত ভাবছিল তার টাকা আমি মেরে দেব । কিন্তু যখন তাকে ডাঃ কাছে নিয়ে গেলাম ঔষুধ প্রত্র নিয়ে দিয়ে ভ্যানে করে বাড়ী পাঠিয়ে দিলাম , তখন মনে হয় তার ভূল ভেঙ্গেছে । কয়েক দিন পর যখন তিনি সুস্থ হলেন তখন সোজা আমার কাছে ছুটে এলেন ! বলতে লাগলেন সে দিন তোমরা না থাকলে যে কি হতো ! তাকে শান্তনা দিতে গিয়ে নিজেই কেদে ফেল্লাম । মজার ঘটনা কি জানেন , সে দিনের পর থেকে লোকটা আমায় যেখানে দেখে দেখুক সালাম দেয় , কুশলাদি বিনিময় করে । বলেন আমি একটা ২৪ বছরের বালক এখনো বিয়েই করিনি , আর উনি ৩৫ বছরের মানুষ ৩ টা সন্তান আছে । তিনি যদি আমাকে সালাম দেয় , তা হলে এর থেকে বেশী সম্মান কি আর আছে । আমি এটাকে পুরস্কার হিসেবে নেই । আতঃএব ভাল কাজের পুরস্কার অপনা অপনি পাওয়া যায় । কার কাছ থেকে জোড় করে নেয়া যায় না ।
©somewhere in net ltd.