নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলিতিসের গান Songs of Bilitis(ধারাবাহিক)

২৭ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১:৩৯

প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে,গ্রীসের নামকরা কবি,সাপ্পোর সমসাময়িক,বিলিতিস নামের কোন এক কবির অনুবাদ হিসাবে,ফরাসী লেখক পিয়ের লুইসের অনুবাদ।বিরাট এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে লেখাটা অনুরাগীদের মনে-খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ সালের এ ধরনের সর্ম্পূন লেখা খুঁজে পাওয়া ছিল অনেকটা অবিশ্বাস্য।আর প্রকাশ্য ভাবে সমকামিতা নিয়ে প্রকাশনা সেটা তো আরও অভাবনীয়।পরে অবশ্য জানা যায়-বিলিতিস বলে কোন কবির অস্তিত্বই ছিল না,ঐ সময়।ওটা আর কিছু না পিয়ের লুইসের তৈরী করা একটা অভাবনীয় ফেরেপবাজী।সাজানো হলেও, তবুওএক পুরুষের লেখা মেয়েদের সমকামিতা নিয়ে বেশ সাহসী এক প্রকাশনা,লেখার মর্যাদাটা আজও কমে যায়নি।



(২) বৃষ্টি

এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে ক্ষন কিছু আগে-ঝিরঝির সুরের বৃষ্টি ফোঁটায় ফোঁটায় স্যাতস্যাতে চারপাশটা।ক ফোঁটা বৃষ্টি আছে,এখনও।খালি পায়ে হেঁটে যাব গাছের নীচে,স্যান্ডেলটা যেন কাদামাটিতে নষ্ট না হয়ে যায় কোনভাবে।

বসন্ত বৃষ্টিতে আছে মাতাল এক সুর,ভেজা ফুলের ডালটাও যেন ভঁরে থাকে মাদকতায়-অচেনার সে সুবাস মাতাল করে আমাকে।বদলায় চেহারা গাছের বাকলেরও-সূর্যের আলোয়,অজানা পৃথিবীর নতুন এক মুখ সে।

হায়!কত ফুল যে ঝরে গেছে মাঠিতে।দুঃখ হয় ঝরে যাওয়া ফুলের জন্যে।
ঝাড়ু দিয়ে শুধু ফেলে দিও না একপাশে তাদের,ছুঁড়ে ফেল না শুধু কাদামাটিতে, প্রার্থনা করো সবাই।রেখেই দিলে না হয় কিছুটা সময়,ছুটে আসা মৌমাছির জন্যে।

সারি সারি গুবরে পোকা আর শামুক আরাম করছে জমে থাকা পানিতে।চাই না হেঁটে তছনছ করে দিতে তাদের,চাই না ভঁয় পাক টিকটিকিটা,লম্বা হয়ে যে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।




ফুলের গোছা

ঝর্নার পরীর দল,তোমরা তো আমার উপকারী বন্ধু!এই যে আমি এখানে,
কেন যে লুকিয়ে আছ তোমরা,একটু সাহায্য করলেই না হয়, আমি যে নত হয়ে গেছি তুলে আনা ফুলের ভারে।

খুঁজে নেব বনপরীদের একজনকে-গুজেঁ দিব বড় গোলাপ একটা চুলের গোছায়, তার।

দেখ!এনেছি কত ফুল আমি বাগান থেকে,কি ভাবে নিয়ে যাবো সব বাড়ীতে,
যদি না বিরাট একটা তোড়া তৈরী করে দাও আমাকে।আর রাজী যদি না হও,বলো কিইবা আছে আমার বলার,দেখা হবে আবার,ভাল থেক তোমরা সবাইঃ

দেখা হলো গতকাল এক পরীর সাথে,চুলের রংটা হলুদ তার,যেন বনদেবতা লাম্প্রোসাথেস,একেবারেই অপচ্ছন্দ যাকে আমার।


অসহিষ্ণুতা

কাঁদছিলাম তার দুই হাতের মধ্যে,উষ্ণ চোখের জল আমার নেমে আলতো সুরে ছুটে যাওয়া বেশ কিছু সময় ধরে,তার কাঁধ ভর দিয়ে,বাধ্য করলো,যন্ত্রনা আমাকে বলারঃ

‘হায়!বয়সে এখনও কত ছোট আমি,কোন ছেলেই তাকাবে না,আমার দিকে। আসবে কখন যে সময়টা,স্তন দুটো সুডৌল আমারও হয়ে উঠবে-ঠিক তোমার মত, ছিঁড়ে বেরোবে কাপড় ছেড়ে,ছুটবে সবাই দেখে-ছোট্ট একটা চুমুর আশায়?

‘কাপড়টা সরে গেলেও,তাকায় না এখন কেউ কামুক চোখে আমার দিকে।তুলেও নেয় না কেউ,কখনও,পড়ে যাওয়া খোঁপার ফুলটা।মাতাল প্রেমে বলে না কেউ-ঈর্ষায়, ‘চুমু খেলে অন্য কাউকে-খুন করবে আমাকে’।

স্নেহের সুরে বললো-সে,‘বিলিতিস, তুমি তো ছোট্ট একটা মেয়ে,-কাদছো কেন চাঁদের আলোয় বিড়ালের মত,কেন অস্থির তুমি,অযথার চিন্তায়?জান,অধীর মেয়েদের বড়ই কষ্ট-প্রেমিক খুঁজে পেতে’।



তুলনা


‘চড়ুই পাখী,চড়ুই পাখী-সঙ্গী তুমি দেবী কাইপ্রিসের,দোহাই তোমার-চাওয়ার কান্না আমাদের তুলে ধরো গানে,সুরে।কিশোরীর শরীর কলি-বদলায় ভরাট মাতাল করা ফুলে,ছুটে আসে পৃথিবী চুমুর আশায়,একটুকু ছোঁয়ার,ভালবাসার।
আসে দিনগুলো স্বপ্নের,আনন্দে গান গেয়ে উঠি-আমরা তখন।

কখনও কখনও তুলনা করি আমরা,আমাদের রুপের বহর,লম্বা চুল নিয়ে কোন এক সময়,কখনও আবার ফুলের কড়ির মত স্তন,কথাও হয় কোয়েল পাখীর মত ফুলে ওঠা যোনীদ্বার নিয়ে,ছুটে গেছে যা শরীরের নীচের দিকে।

বেশ ঝগড়া হলো গতকাল মিলানথোর সাথে-ও কথাগুলো নিয়েই।বড়ই গর্ব তার স্তনের,এই মাসখানেক হলো যা ভরাট হলো,আর আমার ছোট্ট বুক দেখে ঠাট্টা করে বললো,সে,‘স্তন নেই তোমার,তুমি আর কি,ছোট্ট একটা বাচ্চা মেয়ে’।

দেখেনি কোন পুরুষ আমাদের,কোনদিন।নগ্ন হয়ে আমরা এঁকে অন্যকে দেখছিলাম,তুলনায় যদি সে জেতে,ঠেলে দিতাম তবে আমি তাকে হেরে যাওয়া মেয়েদের দলে।চড়ুই পাখী,চড়ুই পাখী-সঙ্গী দেবী কাইপ্রিসের,মনের ইচ্ছাটা আমাদের সুর করে নিয়ে যাও তোমার সাথে।


জঙ্গলে লুকোনো নদী

গোসল করলাম জঙ্গলের নদীতে।ভঁয় পেয়ে গেছে হয়তো জলপরীরা,দেখতে পাইনি তাদের,দেখা কি আর সম্ভব ঐ কালো জলের গভীরতায়।

ডাকলাম,তাদের।গেঁথে নিলাম চন্দ্রমল্লিকার মালা একটা,যেন লম্বা চুলগুলো আমার,গলায়,সাথে কটা হলুদ ফুল,আরও।

ভেসে যাওয়া কচুরীপানায়,অর্ন্তবাস আমার,স্তন দুটোকে চেপে ধরলাম,আবার।

বললাম ডেকে, ‘জলপরী,জলপরী,খেলা কর না আমার সাথে’-জলপরীররা তো পানির মত স্বচ্ছ,যায় না ওদের দেখা,অজান্তেই আমার হয়তো ছুঁয়ে গেছি-তাদের।

ফিটা মেলিয়াই(বনপরী)

কমে গেছে দুপুর সূর্যের তাপটা,খেলতে গেলাম নদীর ধারে -আমরা।হিমসিম খাচ্ছিল দূর্বল কাঁকড়াটা উঠা নামায়,আর আমরাও টেনে আনতে পদ্মফুলটা।

পুরুষ দিয়ে গলার মালা সাজাবো আমরা,আর বুনবো বিজয়ের মালাটা হবে ছোট্ট ছোট্ট মেয়েদের নিয়ে।খেলা হবে এঁকে অন্যের হাত ধরে,পরে থাকা কাপড়টা ধরে টানাটানি করে।

ফিটা মেলিয়াই!দাও না মধু,আমাদের!ফিটা নাইডেস!চলো গোসল করতে,চলো আমাদের সাথে।ফিটা মেলিয়াই!শরীরের ঘামটা তোমার,মিষ্টি দিয়ে ভঁরে দাও।

আর আমরা তোমাকে কি দিব!উপকারী জলপরীর দল,কোন খারাপ মদ না,তেল,দূধ,আর বাঁকানো শিং ছাগলের।

আনুষ্ঠানিক আংটি

বললো পর্যটকরা আসা সারডি থেকে-গলার হারের কথা তাদের,আর মনিমুক্তা যা লীডিয়ার মেয়েরা পরে থাকে,চুলের বেনী থেকে শুরু করে ছুটে যাওয়া পায়ে।

আমাদের মেয়েদের কোন কাঁকন নাই,নাই কোন মুকুট, পরে থাকে তারা শুধু রুপার আংটি একটা,ত্রিভুজে আছে যার একজন দেবী,সাজানো।

ত্রিভুজটা যখন তুলে ধরে তারা,বোঝায় সেটা, ‘কুমারী প্রস্তত জীবনের নতুন পর্বের জন্য’।আর ত্রিভুজ যখন ধরা থাকে অন্যদিকে,বোঝায় সেটা, ‘সময় এখানে বদলে গেছে’।

বিশ্বাস করে সেটা পুরুষের দল-বিশ্বাস করে না মেয়েরা কেউ।যদি বলি আমার কথা,ত্রিভুজের গতিটায় কিই বা যায় আসে,কেন না এই কুমারী সবসময় প্রস্তত নতুন পর্বের জন্যে।


চাঁদের আলোর নাচ

বেগুনী চুলে দল বেঁধে বেঁধে মেয়েরা রাতে নাচলো,নরম সবুজ ঘাসে।বলছিল তারা প্রেমিকের কথা,একে অন্যকে-একেক বার,একেক কথায়।

দেবতাদের,বললো কুমারী দল, ‘আসিনি আমরা,তোমাদের জন্যে’,আর লজ্জায় লাল হয়ে ঢাকলো তারা কুমারীত্ব,তাদের।ছাগল চেহারার দেবতা এজিপান গাছের নীচে বসে ব্যাস্ত বাশী নিয়ে তখন।

বললো যদিও কয়েকজন, ‘এসো না হয় অন্য কোন একসময় তোমরা, খুঁজে নিতে চাও যদি আমাদের’,পোষাকটা পেঁচানো তাদের,পরা পুরুষদের মত-স্তরে স্তরে,টেনে ধরছিল,নাচের পা দুটো তাদের।

সবাই এক এক করে ভান করলো হেরে যাওয়ার,আর সে-বন্ধুর কান ধরে একপাশে টেনে লম্বা একটা চুমুতে মত্ত হলো।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.