![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষের মুখ নিঃসৃত শব্দই কথা। কথার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করা হয়। অঙ্গভঙ্গি বা ইঙ্গিত দিয়েও ভাব প্রকাশ করা যায় কিন্তু তাতে মনের অভিলাষ পূর্ণ হয় না। কথার মূল মাধ্যম ভাষা। পৃথিবীতে উচ্চারিত শব্দের মধ্যে মানুষের মুখ নিঃসৃত কথার পরিধি সর্বাধিক। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আমরা প্রচুর কথা বলে থাকি। কিছু কথা আছে যা মানুষ শুনলে দুঃখ পায়, ব্যথিত হয়। যা অনাকাঙ্খিত এবং অপ্রিয়। অন্যদিকে সুভাষী মানুষকে সকলেই পছন্দ করে। কেউ কম কথা বলে অন্যকে সন্তুষ্ট করতে পারে আবার কারো দীর্ঘ কথায়ও প্রিয়জনের মন ভরে না।
কথা কেমন হওয়া উচিৎ, কেমন কথা শ্রোতার মনে আস্থা সৃষ্টি করবে, কোন কথাটি হবে গ্রহনীয়? আসুন আমরা জেনে নিই কথা বলার কিছু টিপ্স।
১) কথা তখনই বলবেন যখন তা বলা প্রয়োজন। উদ্দেশ্যহীন এবং অপ্রয়োজনীয় আলাপচারিতা সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। মনে রাখবেন আপনার প্রতিটি কথা স্রষ্টা রেকর্ড করার ব্যবস্থা রেখেছেন, অতএব হিসাব করে কথা বলুন।
২) সব সময় সত্য কথা বলুন। মিথ্যা ভাষন, মিথ্যা সাক্ষ্য, মিথ্যা ওয়াদা কখনো কল্যানকর নয়। আপনি মিথ্যাবাদী এ কথা একবার প্রমানিত হলে কেউ আপনাকে আর বিশ্বাস করবে না। তখন ১০০ টি সত্য কথা বললেও আপনার সত্যবাদিতা নিয়ে সকলের সন্দেহ থাকবেই। জীবন হুমকির সম্মুখীন হলেও সত্য বলা থেকে বিচ্যুত হবেন না।
৩) কথা বলার সময় মার্জিত ও শোভন হোন। মধুর শব্দ প্রয়োগে অনুচ্চ স্বরে কথা বলুন। শব্দ উচ্চারণে স্বর এত নিচু হওয়া উচিৎ নয় যাতে শুনতে কষ্ট হয়, আবার এত উচ্চ হওয়া উচিৎ নয় যা গাধার ডাকের মত শুনায়।
৪) কথা বলার সময় অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করা উচিৎ নয়। বিদ্রুপ বা ঠাট্টা করার উদ্দেশ্য মন্দ নামে ডাকবেন না। কাউকে তুচ্ছ জ্ঞান করা, সম্মানে আঘাত দিয়ে কোন কথা বলা অমার্জনীয় অপরাধ।
৫) অন্যায় ও অনায্য কথা বলা দোষনীয়। কোন নিকট জনকে আহত করবে ভেবে ন্যায্য কথা থেকে বিরত থাকা সততার পরিপন্থী। রসুলুল্লাহ (স) বলেছন - 'জালেম শাসকের সামনে ন্যায্য কথা বলা উত্তম জিহাদ'। কথা হবে অসংকোচ প্রকশের সাহসী উচ্চারণ।
৬) কথা বলার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে শ্রোতার প্রতি যেন অশ্রদ্ধা প্রকাশ না পায়। যথাযথ সম্মান ও বীনিত ভাব বজায় রাখুন।
৭) শব্দ প্রয়োগে মার্জিত হোন। বাক্যালাপের কোন পর্যায়েই উত্তেজিত হওয়া উচিৎ নয়। রাগ, ক্ষোভ, অভিমান, প্রতিবাদ ও ক্ষুদ্ধতা প্রকাশে নেতিবাচক শব্দ ব্যবহার করবেন না। ধমকের সুর বা কর্কষ ভাষা মানুষকে কাছে টানতে পারে না।
৮) কথা বিনিময় সর্বদাই স্বতঃস্ফূর্ত বিষয়। কেউ কাউকে জোর করে কিছু শুনেয়ে দিতে পারে না, এতে চেচামচি হয় কথা হয় না। যার সাথে কথা বলবেন তার মনস্তত্ব বুঝা প্রোয়োজন সে সত্যি মনোযোগ দিয়ে শুনছে কিনা। অর্নগল না বলে শ্রোতার মনমানসিকতা বুঝে ধীরে বলা অনেক ভাল। কথা সংক্ষিপ্ত হওয়া বাঞ্চনীয়।
৯) শিক্ষা ও উপদেশ সংক্রান্ত বিষয় হলে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করুন। সুন্দর উপস্থাপন যে কোন কঠিন বিষয়কেও সহজ কর তোলে। আকর্ষণীয় বচন, অতুলনীয় উপমা ও বলিষ্ঠ যুক্তি প্রয়োগে কথাকে অলংকারমন্ডিত করুন। এতে শ্রোতার মনে দাগ কাটবে এবং বিষয়বস্তুর স্থায়িত্ব থাকবে।
১০) দুজনে কথা বলার সময় আপনি তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে আবির্ভূত হলে তাদের কথোপকথনে ইন্টাভেন করবেন না। অন্যের কথায় ইন্টারাপ্ট করবেন না। আবার পালা আসার আগেই অন্যদের থামিয়ে দেবেন না, প্রয়োজনে অনুমতি নিন।
১১) কোন ব্যক্তি কিছু জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রথমে তা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং এরপর তার যথাযথ জবাব দিন। সঠিক জবাবটি দেয়ার চেষ্টা করুন, যদি উত্তর আপনার জানা না থাকে তবে সংশয়পূর্ণ কোন কথা না বলে সময় চেয়ে নিন।
১২) কোন সমাবেশে হুট করেই নিজে বক্তা সেজে যাবেন না। আপনি নির্ধারিত বক্তার চেয়ে অনেক জ্ঞানী বটে তবুও নির্ধারিত বক্তার কথা শুনুন। কারো কথা বলার মাঝখানে 'আমি জানি' এরূপ মন্তব্য করবেন না, তাহলে আপনি যা জানেন না তা জানার সুযোগ হারাবেন, অন্যদেরও তা থেকে বঞ্চিত করবেন।
১৩) যখন কথা বলবেন তখন ব্যক্তির বয়স, মর্যাদা ও ব্যক্তিত্বের প্রতি খেয়াল রাখবেন। বড়দের প্রতি সম্মান ও ছোটদের প্রতি স্নেহশীল হবেন। আপনার কথা আপনার মনের অভিব্যক্তি। ব্যক্তিত্বহীন কথা দ্বারা নিজ অন্তরকে কলুষিত করবেন না।
১৪) শোনা কথা বিশ্বাস করবেন না, এতে পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্ট হয়। কারো ক্রুটি আপনার সামনে আলোচিত হলে বিনয়ের সাথে বলুন - 'এ কাজটি আমার পছন্দনীয় নয়'। একই ভাবে কথার আমানত রক্ষা করুন। কারো সামনে অন্যের গোপন কথা প্রকাশ করে দেয়া নীচতার লক্ষণ।
১৫) মহান আল্লহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন - 'লোকদের সাথে উত্তম কথা বলবে' (সুরা বাকারা - ৮৩)। সুন্দর কথা এমন একটি বিষয় যা বিনা রক্তপাতে দুনিয়া জয় করতে পারে। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, সুন্দর উপস্থাপনা আর মনকাড়া বক্তব্য এই তিনের সমন্বয় একজনকে সকলের কাছে পছন্দনীয় করতে পারে। সুন্দরভাবে কথা বলা একটা বড় শিল্পও বটে।
১৬) ভেবে চিন্তে কথা বলুন। কারণ একবার মুখ থেকে কথা বেরিয়ে গেলে তা আর ভেতরে ফেরৎ পাঠানো যায় না।
১৭) কথায় কোন জড়তা, সন্দিহানতা থাকবে না। যা বলবেন দৃঢ়তার সংগে বলবেন। জনসমাবেশে বক্তৃতা, মঞ্চে অভিনয়, আদর্শ প্রচার কথা যে উদ্দেশ্যেই হোক বক্তা যদি আত্ববিশ্বাসী না হয়, তিনি নিজ বক্তব্য বিষয়ে নজেই যদি আস্থাহিনতায় ভোগেন তাহলে তা কখনো শ্রোতার কাছে গ্রহণীয় হবে না।
(ইষৎ সংক্ষেপিত)
-------------------------------------------------------------------------------
বহুদিন আগে একটি লিফলেট পেয়েছিলাম, আজ হঠাৎ পুরনো কাগজের ভিতর লিফলেটটি চোখে পড়ল সেটিই এখানে শেয়ার করলাম। হয়তোবা কারও না কারও কাজে লাগতে পারে।
লিফলেটটি প্রচার করেছেন -
মু, শামসুজ্জামান
সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট
জিআইডি, হেড অফিস, ঢাকা।
২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৩৪
সত্যভাষী বলেছেন: মনির ভাই, চমৎকার একটা জিনিস পোস্ট করেছেন। সকল ব্লগারদের জন্য এই পোস্টটা পড়া জরুরি মনে করছি।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:০৭
আমি মনির বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৭
অর্থনীতিবিদ বলেছেন: কাজের জিনিস। প্রয়োগ করার চেষ্টা করবো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:০৫
পদ্মাচরের লাঠিয়াল বলেছেন: আপনার সন্তান নাস্তিক হলে তা মেনে নেবেন কি? (একটি জরিপ পোস্ট)