![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক কিছুই বলতে আর লিখতে ইচ্ছে করে কিন্তু যখন মাথায় আসে তখন লেখার সুযোগ থাকেনা, আবার যখন লেখতে যাই তখন মাথায় আসেনা গোছানো কিছু!! তাই ব্লগ শুধুই পড়ি। শুধুই পড়ি।। শুধুই পড়ি।।।
আমি প্রায়ই আমার অতীত স্মৃতিগুলো রোমন্থন করি। শৈশবের গ্রামে ফেলে আসা সেই দুরন্ত দিনগুলোর কথা এখনো আমার স্পষ্ট মনে পড়ে। মনে পড়ে আমরা দুই ভাই কত মারামারি করতাম। অবশ্য আমার সুবিধা ছিল আমি ছোট ছিলাম। ভাইটা আমার সারাজীবনই আমার হাতে মার খেয়েছে। শুধু আমি না, আম্মু আর আব্বুও তাকেই মারত। যদিও তখন মজা পেতাম, কিন্তু এখন মনে করলে মনে হয় বেচারা সর্বদা লঘু পাপে গুরু দন্ড ভোগ করত।কারন, সে আমাকে তার একমাত্র ছোট ভাই হিসাবে একটু আদর করতে চাইত মাত্র।কিন্তু আমি তখন এতই sensitive ছিলাম যে, চাইতাম না কেউ আমার গাল ধরে টিপাটিপি করুক কিংবা আদর করুক। এমন কি কেউ আমার গালে পাপ্পি দিলে আমি সাথে সাথেই সেই জায়গা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতাম। কি-সব হাস্যকর কাজ-কারবার!!! যাই হোক, তো এভাবে আরো অনেক অযুহাতে আমি আমার একমাত্র ভাইটাকে আব্বু-আম্মু’র হাতে মার খাওয়াতাম। তবুও সে সবসময় আমার সাথে খুনসুটি করবেই। এভাবে অনেক সময় সিরিয়াস মারামারিও হয়ে যেত। সিরিয়াস মারামারিতে আবার উলটো ঘটত! আমি তখন বেশুমার মার খেয়ে মায়ের আঁচলে লুকাতাম। আস্তে আস্তে সে স্কুল পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হয়ে শহরে চলে আসে। আমি তখন ক্লাস সেভেন পার হয়ে এইটে উঠি। দেখলাম সে শহরে চলে যাওয়ার আগে তার মার্বেল, ঘুড়ি, ফুটবল, ক্রিকেট ব্যাট ইত্যাদি আমাকে ডেকে দিয়ে দেয়। আমিতো অবাক!! আবার খুশিতে বগলও দাবাচ্ছি। সে তখন শহরে বড় মামার বাসায় থেকে কলেজে পড়ে। এদিকে দিন যায়, মাস যায়…… দেখি আমি একটু একটু ফিল করা শুরু করছি তার শূন্যতা। বুঝতে পারি আমার ভাই আমার কেমন সাথি ছিল। বছর ঘুরতেই আমি ক্লাস নাইনে উঠি আর তখন থেকে তো রবীঠাকুরের “ছুটি” পড়া শুরু এটা সবাই জানেন। প্রথমবারের মত ফিল করলাম, আমার প্রানের প্রিয় ফটিক রূপী বড় ভাইকে। পড়ছি আর অবাক হয়ে চিন্তা করছি, আমার আর ফটিক চক্রবর্তী’র ছোট ভাই মাখনলালের মধ্যে কত মিল!!! আমার চোখ ভিজে উঠল। আমি এরপর থেকে নিজেকে বদলাতে শুরু করলাম। ভাইয়ার সাথে আগের মত তুই-তুকারী করিনা, তাকে সম্মান করতে শুরু করি। আগের মত মারামারির তো প্রশ্নই উঠেনা। বছর দুয়েক পর আমিও শহরে চলে আসি। কলেজে ভর্তি হই। ধীরে ধীরে অনেক কিছু বুঝতে শুরু করি। নিজেকে সংযত করি। আগের মত আর ধুমধাম রাগিনা।
আজ এতদিন পর আমার উপলব্ধি, রবীঠাকুর আসলে বাঙ্গালীর মানষে কতটুক গভীরভাবে মিশে আছে। যে কথা বা ঘটনা কিংবা চিন্তার উপর তিনি “ছুটি” রচনা করেন তার ১০০ বছরেরও পরে কিভাবে সেই একই ঘটনা আমার মত একজন অতিসাধারণ বাঙ্গালীর জীবনে আবারো তার লেখনীর মত করে ফিরে আসে??? আমি সত্যই অভিভূত। জয়তু রবীঠাকুর।
কয়েকদিন আগে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর একটা লেখায় তিনি লিখেছিলেন- বাঙ্গালী জাতি তিনটা জিনিস ছাড়া অসম্পূর্ণ। যথা-
() বাংলা ভাষা।
() রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
() বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তাই কেউ স্বীকার করুক আর না করুক, আমি অন্তত মনে প্রানে বিশ্বাস করি- রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাঙ্গালীর অস্তিত্ত্ব কল্পনা করা যায় না। সে প্রতিটি বাঙ্গালীর চেতনা, বিশ্বাস, ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ-বেদনা’র প্রতিটি নিঃশ্বাসের বায়ু প্রবাহে মিশে আছে।
বিঃদ্রঃ আমার ভাইয়া আল্লাহ’র অসীম রহমতে সুস্থ-সবল আছেন। আমরা জানিনা মাখনলাল ফটিকের মৃত্যুর পর কি করেছিল। তবে আমি জানি আমার সেই ভাইটা আমাকে আর আম্মুকে আব্বু মারা যাওয়ার পর থেকে গত সাড়ে ৫ বছর ধরে কিভাবে ফ্যামিলি’র অভিভাবক হয়ে চালিয়ে নিচ্ছে। জয়তু ভাইয়া। অনেক অনেক অনেক দিন বেঁচে থাকো আর অনেক বেশি ভাল থাকো। সামনের বছরে ভাইয়ার শুভ বিবাহ। আপনারা সবাই দোয়া করবেন।
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪১
আমি অপার হয়ে বসে আছি বলেছেন: ব্লগটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৭
গোর্কি বলেছেন:
স্মৃতিচারণ পড়ে মুগ্ধ।
কবিগুরু তাঁর রচনায় বাঙালির যাপিতজীবন, ইতিহাস-ঐতিহ্য-সাংস্কৃতিকে যেমন মেলে ধরেছেন, তেমনি বাঙালির চিরদিনের হাসিকান্না আনন্দ-বেদনারও রূপকার তিনি। মানুষের এমন কোন মানবিক অনুভূতি নেই, যা রবীন্দ্রনাথের লেখায় পাওয়া যায় না। জীবনের এমন কোন দিক নেই, যেখানে তিনি আলো ফেলেননি।
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৩
আমি অপার হয়ে বসে আছি বলেছেন: মনের কথাগুলোই বললেন গোর্কি ভাই। ধন্যবাদ ব্লগটি পড়ার জন্য।
৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:২৮
শ্যামল জাহির বলেছেন: লিখা পড়ে মুগ্ধ!
ভাইয়ার পরেই কিন্তু আপনার পালা!
তৈরী থাকুন শেকলে আবদ্ধ হতে।
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১১
আমি অপার হয়ে বসে আছি বলেছেন: হাহাহা.........ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:২৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাঙ্গালীর অস্তিত্ত্ব কল্পনা করা যায় না। সহমত। না প্রেমে না গানে না কবিতায় না ছন্দে ,না জীবনে চলার পথে।গুরুদেব অবশ্যম্ভাবী