![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অধিকাংশ ফেসবুক ইউজাররা সালমান মুক্তাদেরকে চিনে। তাকে চেনানোর জন্য বেশি কিছু বলার দরকার নাই। সে বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউবার। অনেক নাটক, বিজ্ঞাপন করেছে। অনেক পুরস্কার জিতেছে।
.
সাধারণ একটা ধারণা হচ্ছে সে নিশ্চয়ই অনেক ধনী লোকের সন্তান। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ছে। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইছে। ওর জন্য ওগুলো করা ব্যাপার না। বাপের টাকা থাকলে করা যায়। তার ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট দেখলেই আরো অনেক কথা দেখতে পাবেন। কোনটাই যুক্তিসংগত না। বাস্তবে সে বাংলা মিডিয়ামে পড়েছে এবং ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ার জন্য পরিবার তাকে এফোর্ট করতে পারে নি। বাবা আর্মিতে চাকরি করত। ফলে রেশনের মোটা চাল খেয়ে বড় হয়েছে। সবাই ধরে নেয় সে নিশ্চয়ই নামীদামী ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করা শুরু করছিল। বাস্তবে সাধারণ মোবাইল দিয়েই ভিডিও শুট করত। বন্ধুর কাছে হ্যান্ডিক্যাম ধার নিত। পরে নিজের উপার্জিত টাকা দিয়েই DSLR কিনেছে।
.
কিন্তু এই দিকগুলো নিয়ে আমি কোন ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখি নাই। সব পোস্ট তাকে পচানিমূলক। এবং সেই পোস্টগুলোতে লাইক কমেন্টের সংখ্যা অনেক বেশি। আমি কতগুলো কারণ বের করলাম। সালমান আমাদের বয়সী। আমরা যে সময়ে পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সিনেমা দেখার চুক্তি নিয়েছি, সে সময়ে সে নিজে ভিডিও বানায়। আমরা যখন লাইকের জন্য অগা মগা সবাইকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে ব্যস্ত, তখন তার ফেসবুকে ভ্যারিফাইয়েড পেজ। আমরা যখন চাকরি খোঁজার ধান্ধায় ব্যস্ত, তখন সে পড়ালেখা চলাকালীন লাখ লাখ টাকা আয় করছে। এরকম আরো অনেক কিছুর উদাহরণ দেওয়া যায়। সবচেয়ে নিষ্ঠুর সত্য কথা হল, আমাদের সহ্য হয় না! আমরা সবার দু:খে দু:খী ঠিকই, কিন্তু সবার সুখে সুখী না--অনেকক্ষেত্রে হিংসুক। এক্কেবারে সোজা বাংলা কথা।
.
তো এরকম আমাদের বয়সীই একটা ছেলে, আমাদের মত জীবনযাপন করে আমাদের চেয়ে ওপরে গেলে সহ্য হবে কেন? সুতরাং তার কিছু লেইম জিনিস নিয়ে পচানি আরম্ভ হল এবং আমরা ফেসবুকে সে পোস্টগুলোতে দলে দলে লাইক কমেন্ট করিতে লাগিলাম।
.
সালমানের ভিডিও দেখার সময় ভাবি, আচ্ছা, আমিও তো ওর মত এসব করতে পারি। কিন্তু আমি তো অলস। ধরাবাঁধা নিয়মের বাইরে বের হতে পারি না। তখন নিজেকে লুকাতে কিছু যুক্তি দরকার।
-ওর মতো ধনী তো আর আমি না। ওসব ধনীর দুলাল এসব ছাইফাই ভিডিও বানাতে পারবে। আমার মতো টিউশনি করে চলতে হলে বুঝত ঠ্যালা!
-- বাপে একখান ক্যামেরা কিনে দিছে। তার ঢং কত?! আমার মতো গরীব ঘরের ছেলে হলে বুঝতা মজা!
.
আমার থিংকিং সাপোর্ট দিতে আছে সালমানকে পচানিমূলক পোস্ট। সালমানের কাজ দেখে প্রথমে মাথায় যে কিছু একটা করার উত্তেজনা আসছিল, তা দ্রুতই উড়ে যায়। নিজেকে নিজে সান্ত্বনা দেই। ধুর! এসব আজাইরা কাজকর্ম কে করে? যেমন আছি সেটাই বেটার! চলছে, চলুক। পড়ছি ভাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ভাল একটা চাকরি পাব। বিয়ে করবো। বাচ্চাকাচ্চা হবে। নাতি-নাতনী হবে। জীবন শেষ।
.
আসলে আমাদের জীবনে কোন প্যাশন নাই। থাকলেও কেয়ার করি না। নাই নতুন কিছু করার আকাংখা। শুধু নিজেকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে রাখা।
.
একসময় দেখা যাবে অন্যের ভুল ধরতে ধরতে নিজের ভুল শুধরাতে পারি নাই। অন্যকে পচাইতে গিয়ে ভুলেই গেছি, আমি নিজেই পচে আছি!
.
অন্যের সমালোচনা করে যেমন তাকে নিচে নামানো যায় না, তেমনি নিজে কাজ না করে উপরে ওঠা যায় না। নিজের জন্য কাজ করতে হবে নিজেকে।
Writer: Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:১৯
চার্বাক চ্যাওলা বলেছেন: এখন চোখ খুলুন