নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ধার্মিক। আমি সব কিছু ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী বিচার বিশ্রেশণ করি। আমি সামাজিক রীতিনীতি, সমাজিক কু সংস্কার, আবেগ দিয়ে কোন কিছু বিচার করি না।
আমি আজ তিনজন প্রতিবন্ধীর কথা বলবো।
আমাদের ইউনিয়নে এক প্রতিবন্ধী থাকতো। আমি যখন ক্লাশ নাইনে পড়ি তখন স্কুলে যেতে আসতে তাকে দেখতাম। কথা বলতে পারতো না। মানুষ যা দিতো, তাই সে খেতো। বিয়ে বাড়িতে, বা কারো কূল খানি/চল্লিশার সময় সে কাছে থাকলে, তাকে কিছু খেতে দিতো। এভাবেই সে চলতো। বৃষ্টিতে ভিজতো। রৌদ্রে পুরতো। শীতে কাপতো। ২০২০ সাল অথবা ২০২১ সালে সে মারা যায়। মরার সময় তার বয়স আনুমানিক ২৫ বা ২৬ ছিলো। কিন্তু সে মরার আগেও হাপ পেন্ট পড়ে থাকতো।
আরেক জন এর নাম বলবো না। তিনি ছিলেন মহিলা। আমাদের গ্রামের মধ্যে অভিজাত বাড়ির লোক। বয়সে তিনি আমার নানীর সমান। তার দুই ভাই খুব মেধাবী। একজন ইজ্ঞিনিয়ার। আরেকজন আমেরিকা প্রবাসি।
ঐ প্রতিবন্ধী মহিলা এক সময় সুস্থ ছিলেন। কেন প্রতিবন্ধী হয়েছেন, জানি না। আর মানষিক রোগ কে পাগল বলা যায় না, আবার প্রতিবন্ধী ও বলা যায় না। তবে তিনি মানষিক ভাবে সুস্থ ছিলেন না। তাহার মরার আগে দেখতাম, তিনি ভিক্ষা করতেন। স্ট্যান্ডে ভিক্ষা করতেন। যারা তাকে চিনতো না, তারা তাকে ভিক্ষা দিতেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি সকালে রুটি ও সবজি কিনে খেতে দেখেছি। শেষ বয়সে তার পরিবার, তাকে ভোজা মনে করতো।
এখন যার কথা বলবো, সে আমার ক্লাসমেট। সে প্রতিবন্ধী ছিলো। খুব সহজ সরল। সাদা মনের মানুষ। তাকে নিয়ে সবাই মজা করতো। ক্লাসের দুষ্ট ছেলেরা তাকে নিয়ে খুব উতোক্ত্য করতো। আর সে কান্না করতো।
ক্লাশে পড়া পারতো না। কারন সে পড়া মনে রাখতে পারতো না। হুজুর স্যার, তাকে খুব মারতেন। এই মাইর, তাকে চালাক বানাতে পারে নাই। সে তার কষ্টের কথা আমার সাথে বলতো। সে তার বাসাতেও নিরাপদ ছিলো না। খারাপ রেজাল্ট এর জন্য বাসায় অনেক কথা শুনতো। তাকে তার মা, বাবা তেমন আদর করতো না। সারাদিন কটু কথা হয়তো শুনতো। তার নানা নানী থাকলে তার মন ভালো থাকতো। সারাদিন তার মন খারাপ থাকতো। আর আতঙ্কগ্রস্থ থাকতো। খুব মন খারাপ হলে সে নিরিবিলি স্থানে একা একা বসে থাকতো। আতঙ্কে থাকতো, যদি হুজুর স্যার তাকে পিটায়। বাসায় যদি তার আম্মু তাকে ধমক দেয়। স্কুল ছুটির পর ও বাসায় পৌছাবার আগ পযর্ন্ত সে হয়তো কিছুটা শান্তি অনুভব করতো। সেই ক্লাসমেট এর সাথে ছিলাম আমি জয়পুরহাটে। ক্লাশ সিক্স থেকে ক্লাশ এইট পযর্ন্ত। আর যখন ক্লাস নাইনে আমাদের মুন্সীগঞ্জ আসি তখন প্রথম দুইজন প্রতিবন্ধীর সাথে পরিচয়।
তিন জনের কিছু কমন জিনিস:
০১। তারা বাসায় বা স্কুলে নিরাপদ না। একজন তো বাসা ত্যাগ করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতো। স্কুলেও যেতো না।
০২। তারা পরিবারের কাছে ভোজা স্বরুপ।
০৩। আমার বন্ধু। স্কুলেও মানষিক ভাবে নিরাপদ বোধ করতো না। স্কুলেও নিরাপদ বোধ করতো না।
০৪। ১ম প্রতিবন্ধী ও আমার বন্ধুর সাথে সবাই বাড়াবাড়ি লেভেলে ঠাট্টা মশকরা করতো। তারা দুইজন কে প্রতিবাদ করতে দেখি নাই।
সরকার আসামীদের জন্য জেলখানা বানিয়েছে। তাদের খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবন্ধীরাও যেহেতু পরিবারের বোঝা। তাই তাদের জন্য আলাদা হোস্টেল বানানো হউক। এবং সেখানে তারা সরকারি খরচে থাকবে। যাতে তারা পরিবারের বোঝা না হয়। তাদের সাথে যেন ভালো আচরন করা হয়।
৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ ভোর ৬:৫৯
নাহল তরকারি বলেছেন: আপনার কথা ফেলনা নয়। অনেক প্রতিবন্ধী আছে যারা নিজ পিতা মাতার কাছেই নিরাপদ না। বাপ মা এর কাছে নানা রকম মানষিক হয়রানির স্বিকার হয়। নানা ধরনের কটু কথা শুনতে হয়। ঘুমানোর সময় তারা হয়তো বোবা কান্না করে। এই কান্নার শব্দ আমরা কেউ শুনি না। তাদের কান্নার ফলে চোখ থেকে পড়ে যাওয়া পানিও সহজে শুকিয়ে যায়।
২| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে প্রতিবন্ধীরা অবহেলিত।
৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৭:০০
নাহল তরকারি বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৭:৫৯
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: প্রতিবন্ধীদের মেধাকে কাজে লাগানোর সুযোগ দিলে, তারাও দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে।
৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:৩০
নাহল তরকারি বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ৮:১৩
বাকপ্রবাস বলেছেন: প্রতিবন্দীদের জন্য অন্যরা কেউ কিছু সহজে করবেনা, রাষ্ট্রও এখন তেমন কিছু করবেনা, রাষ্ট্র আছে ভোন দিবে কী দেবেনা সে চিন্তায়। আমাদের এখন যা করতে হবে তা হল পরিবার। প্রতিবন্দীর বড় আশ্রস্থল হল পরিবার। পরিবারকে একটা মেসেজ দিতে হবে সেটা হল, প্রতিবন্দীদের প্রতি সহনশীল হতে হবে। তারা পরিবারে ঠাঁই না পেলে কোথাও পাবেনা। পরিবার যেন তাদের বোঝা মনে না করে, প্রতিবন্দীদের যেসব বিচরণ স্থল আছে যেমন বিদ্যালয় হলে পরিবার বিদ্যালয়ে গিয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে আসবে, পড়া না পারলে যেন বেশী চাপ না দেয়, কারণ তার পক্ষে বেশী কিছু ধারণ করা সম্ভব নয়। এভাবে পরিবারকে সহণশীল ও সজাগ থাকতে হবে। তারপর তার চিকিৎসার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে, সাথেসাথে রাষ্ট্রকে তাগিদ দিতে হবে যেন তাদের সকলকে সমন্বয় করে চিকিৎসার ব্যাবস্থা করার জন্য