নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধর্মপুত্রযুধিষ্ঠিররা সাবধান

ইমরোজ

হমপগ্র

আমার আমি।

হমপগ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশে নারীদের অবস্থান

০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:১৮

৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সকল নারী ব্লগারদের আন্তরিক শুভেচ্ছান্তে



আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণা প্রথম জন্মে গত শতাব্দির প্রথম দিকে। তখন ইউরোপ, আমেরিকা জুড়ে চলছিল শিল্প বিপ্লব। নানা ধরণের শিল্প কারখানা ও নতুন নতুন আবিষ্কারে তখন বিশ্বজুড়ে এক আলোড়ন শুরু হলো। তেমন সময় যে জিনিসটি চোখে পড়লো তাহলো শিল্প কারখানায় নারী ও পুরুষের মধ্যে ভেদাভেদ। নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সামাজিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। কিন্তু অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে গেছেন নারীরা। এই অধিকার আদায়ের নানা উল্লেখযোগ্য ঘটনাপঞ্জি এনে দিয়েছিল ৮ই মার্চ-আন্তর্জাতিক নারী দিবস।



নিম্নে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হলো।



১৯০৯ সাল

আমেরিকান সোসিয়ালিষ্ট পার্টি এই বছর ২৮ শে ফেব্রুয়ারিকে নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সারা আমেরিকায় ২৮ শে ফেব্রুয়ারি নারী দিবস পালিত হয়। ১৯১৩ সাল পর্যন্ত ফেব্রুয়ারির শেষ রোববার নারী দিবস হিসেবে পালন করে আমেরিকানরা।



১৯১০ সাল

১৯১০ সালে একটি সমাজতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয় কোপেনহেগেন এ। এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস করার প্রস্তাবটি প্রথম গৃহিত হয়। প্রস্তাবটি বিপুল জনসমর্থন পায়। ১৭ টি দেশের ১০০ জন নারী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে ফিনল্যান্ডের তিনজন নির্বাচিত নারী প্রতিনিধির কথা উল্লেখ্য। যদিও কোন নির্দিষ্ট তারিখ চিহ্নিত করা হয়নি এই সম্মেলনে।



১৯১১ সাল

১৯১১ সালে ১৯ শে মার্চ নারী দিবস হিসেবে পালিত হয় ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং জার্মানীতে। দেশগুলোতে সব মিলিয়ে দশ লক্ষ নারী পুরুষ মিছিল করে দাবী জানায়, নারী ও পুরুষের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের ভেদাভেদ দূর করার।



তার কিছুদিন পরেই ইতিহাস প্রত্যক্ষ করে এক ভয়াবহ দৃশ্যপট। "ট্রাইএঙ্গেল ফায়ার" নামে খ্যাত এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিউয়োর্কে মৃত্যু বরণ করে ১৪০ জন নারী শ্রমিক। এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা নারী দিবস তথা আন্তর্জাতিক শ্রমিক আইনের মোড় নতুন দিকে ঘুরিয়ে দেয়।



১৯১৩-১৯১৪

এই সময়ের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে নারীদের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে। তখন প্রথম মহাবিশ্ব যুদ্ধের সূচনা। এই যুদ্ধের বিপক্ষে এবং সার্বজনীন শান্তি কামনায় রাশিয়ার নারীরা ১৯১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রোববার আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেন। ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় ৮ই মার্চ এবং তার আগের ও পরের দিনগুলোতে নানা রকম র‌্যালির আয়োজন করে নারীরা। এর উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধের বিরোধীতা করা অথবা যুদ্ধে লিপ্ত দেশগুলোর নারীদের সাথে নিজেদের সমর্থন ও সমবেদনা প্রকাশ করা।



১৯১৭

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়া ২০ লক্ষ লোক হারায়। এমনি অবস্থায় নারীরা আবারও ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রোববার অবরোধ করার ঘোষণা দেন। যেটা "Strike for Bread and Peace"-নামে খ্যাত। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এই অবরোধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কিন্তু নারীরা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যায়। তারপরে মাত্র চার দিন পর জার বাধ্য হোন নারীদের ভোটাধিকার দিতে। রাশিয়ান গভর্মেন্ট এই অধিকার গ্রাহ্য করে।



এই ঐতিহাসিক অবরোধের দিনটি জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ছিল ২৩শে ফেব্রুয়ারি। জুলিয়ান ক্যালেন্ডার রাশিয়ানরা মেনে চলত। কিন্তু সারা বিশ্বে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দিবসটি ছিল ৮ই মার্চ। সেই থেকে এই দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।



১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ সনদ স্বাক্ষরিত হয়। সেটাই ছিল প্রথম কোন আন্তর্জাতিক চুক্তি যেটা জেন্ডার ইনিকুয়ালিটির বিরুদ্ধে করা হয়। জাতিসংঘ সংস্থা সেই থেকে আজ অবধি নানা কাজ করে আসছে নারীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক নানা অধিকার রক্ষা করার জন্য।



তথ্য সূত্র : ইউনাটেড নেশন।



আন্তর্জাতিক নারী দিবস



বাংলাদেশে নারীদের অবস্থাঃ



বাংলাদেশে নারীদের উন্নতি কল্পে যদিও অনেক দেশি বিদেশি সংস্থা কাজে নেমেছে অনেক আগে থেকেই। এই ব্যাপারে অনেক এনজিও কাজ করছে। কিন্তু সার্বজনীন উন্নতি এখনও হয়নি। এখনও আমরা একটা শক্ত সামাজিক অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারিনি। এখনও আমাদের সমাজে রাহেলা, ইয়াসমিনের মত মেয়েরা অহরহ ধর্ষিত হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে তারা নানা রকম বৈষম্যের মুখে পড়ছে। শারীরিক ভাবে দুর্বল বলে পরিবারে স্বামীর অকথ্য নির্যাতনও নারীরা মুখ বুজে সহ্য করে যায় নিজের সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে। সব থেকে বড় সমস্যা হয় গ্রামে। গ্রামের বখাটে ছেলেদের উপাতে এখনও অনেক মেয়েরা লেখা পড়া করতে পারে না। মেয়েদের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত অবৈতনিক করে দেওয়া হয়েছে। তবুও শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা, পুরনো ধ্যান ধারণা ক্রমশ তাদের মস্তিষ্কের কল্পনার বীজকে নষ্ট করে দিচ্ছে।



আমাদের দেশের দুইজন প্রধানমন্ত্রী নারী ছিলেন। তারা ১৫ বছর দেশ শাসন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যে তারা শুধু নামে ছিলেন তা কিন্তু নয়। বেগম খালেদা জিয়া ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপ অনুযায়ী ৩৩তম ক্ষমতাধর নারী ছিলেন। কিন্তু তবুও আজ এদেশে নারীদের সামাজিক অবস্থান দেখে আমাদের আঁতকে উঠতে হয়।



সামাজিক কুসংস্কার, যৌতুক প্রথা, এসিড নিক্ষেপের মত নির্মম সব ঘটনার শিকার হতে হয় নারীদের। বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ এখনও আমাদের দেশে আছে। এগুলোর উচ্ছেদ ও নারীদের সঠিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা কতটা জরুরী আমরা উপলব্ধি করছি না। কোন দেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে পঙ্গু করে দিয়ে সামনে আগানো যায় না।



বেগম রোকেয়া আমাদের নারী জাগরণের পথিকৃত। নবাব ফয়জুন্নেসার অবদানও অনস্বীকার্য। তবু তাদের আদর্শের কিছুই আমরা ধারণ করতে পারিনি। সেই আদর্শে উজ্জীবিত হবার দিন আবার এসেছে। আমাদের সংকল্প হোক সকল নারীর অধিকার সুনিশ্চিত করা। তাদের সুশিক্ষিত করা। একটা শিক্ষিত মা ই পারেন একটা শিক্ষিত জাতি দিতে।



ছবি : ট্রাইয়েঙ্গেল ফায়ার ২৫শে মার্চ ১৯১১



মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৯

বড় হুজুর বলেছেন: নারি দিবস দিয়া কিছুই হবেনা। এটা প্রতিদিনের চর্চার ব্যপার।

০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:৪১

হমপগ্র বলেছেন: ধন্যবাদ! আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:৪১

হমপগ্র বলেছেন: ধন্যবাদ! আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

২| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৯

কানমলা-০৮ বলেছেন: আমাদের সংকল্প হোক সকল নারীর অধিকার সুনিশ্চিত করা। তাদের সুশিক্ষিত করা। একটা শিক্ষিত মা ই পারেন একটা শিক্ষিত জাতি দিতে।

নারী অধিকার নিশ্চিত কর। ধন্যবাদ । ভাল পোষ্ট।

০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:৪২

হমপগ্র বলেছেন: ধন্যবাদ! ভালো থাকবেন!

৩| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৫:২২

ভাস্কর চৌধুরী বলেছেন:
+
চমৎকার পোষ্ট হয়েছে।

৪| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৫:৩৯

আলী আরাফাত শান্ত বলেছেন: +

৫| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০৫

কুম্ভকর্ণ বলেছেন: ভাল লেখা। তবে নারীরা নিজেদেরকে মানুষ ভাবা শুরু করা উচিৎ, নারী নয়। তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। পিলাস।

৬| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:২৬

প্রণব আচার্য্য বলেছেন: ঐ মিয়া পুরা কবিতাটা দেওনের কথা ছিল
কৈ সেটা?

০৭ ই মার্চ, ২০০৮ রাত ৯:০৪

হমপগ্র বলেছেন: প্রণব দা মুকুল ভাই কবিতাটা পোস্ট করেছেন।

সরি দাদা দেরী করে ফেলেছি। মুকুল ভাইয়ের ব্লগে পাবেন।

ধন্যবাদ।

৭| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: অসাধারন।

৮| ০৭ ই মার্চ, ২০০৮ রাত ৮:৩৪

মুকুল বলেছেন: ভালো পোস্ট। *****

৯| ০৮ ই মার্চ, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮

মনের কথা বলেছেন: পুরুষরা সঠিক অর্থে শিক্ষিত না হলে নারীদের অধিকার সুনিশ্চিত হবে না।

(কেমন আছেন?)

০৮ ই মার্চ, ২০০৮ রাত ৮:০৪

হমপগ্র বলেছেন: ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।

অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে, ব্লগে অনেক কম আসেন। কেন?

আমি ভালো আছি। আপনি ভালো আছেন? আপনার আইডি পাওয়া যাবে? যদি এখানে দিতে অসুবিধা হয় তাহলে মেইল করুন
[email protected]

আপনাকে মিস করি। ভালো থাকবেন, আর রিপ্লাইয়ের জন্য অপেক্ষমান রইলাম।

১০| ০৮ ই মার্চ, ২০০৮ রাত ৮:১৬

দূরন্ত বলেছেন:
ভালো পোস্ট। +

এ বিষয়ে আজকে আমারও একটা লেখা আছে, দেখতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.