![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আষাঢ় মাস শুরু হইছে দিন কয়েক আগে। ঘুম থেকেই উঠেই দেখি আকাশটা মেঘাচ্ছন্ন। আষাঢ়ের আকাশ যেমন দেখা যায় আর কি। ঝড় বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা আছে। যাই হোক সকাল থেকে টিউশনি। আজকে ২ টা টিউশন। পরীক্ষা চলতেছে বিধায় চাপ একটু বেশি। গতকাল রাত্রে বৃষ্টি হইছে তাই ঘুম ও বেশি হইছে। অনেকদন পর রাত্রে একটা ভালো ঘুম হইল। পরীক্ষার চাপে বেশি একটা ঘুম হয় না। সকাল ৯ টায় টিউশনি তাড়াতাড়ি করে সকালের নাস্তা শেষ করলাম। আজকের নাস্তা ছিল খুদের ভাত। আমাদের এলাকায় খুবই ট্রেডিশনাল। আর হ্যা আজকে শুক্রবার। প্রতি শুক্রবার আম্মু খুদের ভাত রান্না করে। তার সাথে ছিল শুটকির ভর্তা, আলু ভাজি ও ডিম ভাজি। নাস্তা শেষ করে তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বের হইলাম। কর্দমাক্ত রাস্তা। হাটতেও খুব কষ্ট হইতাছে। অবশেষে স্টুডেন্ট এর বাসায় পৌছলাম। নতুন টিউশন। এই মাসেই এলাকার এক বড় ভাইয়ের মারফতে পাওয়া। স্টুডেন্ট ক্লাস ফাইভ এর ছাত্র। ভালোই পাড়ে তাই পড়াইতেও বেশি কষ্ট করতে হয় না। আন্টি অনার্স পাশ। উনিই সারাদিন ছেলেকে পড়ায়। আন্টির সাথে কোনদিন দেখা বা কথা হয় নাই। কারন উনি খুব পর্দানশীল নারী। পর পুরুষের সামনে আসেন না। পড়ানো শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পরেই টাপুর টুপুর বৃষ্টি শুরু হইছে। একটু পর আরো জোরে বৃষ্টি শুরু হল। শুধু বৃষ্টি না সাথে বজ্রপাতও। বজ্রপাতের কারণে ঠিকমত পড়ানো যাইতাছে না। স্টুডেন্ট দেখলাম খুবই সাহসী বজ্রপাতের শব্দকে ভয় পায় না। বাইরে বৃষ্টি হওয়াতে আমারও আর পড়াতে ইচ্ছা করতাছে না। একটু পর বৃষ্টি কমলে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। আজকে ছাতা আনতে ভুলে গেছি। বর্ষাকালে ছাতা অতি প্রয়োজনীয়। মোবাইল, ওয়ালেটের মতই অনেকটা। বের হওয়ার সময় স্টুডেন্ট এর কাছ থেকে একটা ছাতা নিয়া বের হলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। বাহিরে বের হয়ে দেখলাম মোটামুটি ভালোই বৃষ্টি। ছাতাটা নিয়া খুব উপকারই হইছে। বাসায় আইসা দেখি বিদ্যুৎ নাই। বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ নিলে ৩/৪ ঘন্টার মধ্যেও আসেনা। জুমার দিন তাড়াতাড়ি গোসল শেষ করলাম। মসজিদে দেরি করে যাওয়ার অভ্যাস আমার। মসজিদে ঢুইকাই চার রাকাআত কাবলার জুমা পড়ি তারপর খুতবা শুনি। খুতবা শুনা ওয়াজিব। ফরজের পরই ওয়াজিব এর অবস্থান। তাই খুব মনোযোগ দিয়েই শুনতে হয়। কিন্তু আমি মনোযোগ ধরে রাখতে পারি না। আমাকে কেউ আরবি থেকে বাংলায় ট্রান্সলেট করে দিলে খুবই ভালো হইতো। অন্তত কিছুটা বুঝতে পারতাম। কিন্তু আরবিতে সওয়াব আছে তাই এটাও মিস করা ঠিকনা। যতদূর জানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরবির পাশাপাশি নিজের মাতৃভাষায় ও খুতবা পাঠ করে শোনানো হয়।আমাদের দেশে এটা করলে সমস্যা কি বুঝলাম না। হজের সময়ও খুতবা বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। ফরয নামাজ শেষে চার রাকাআত সুন্নত পড়ে মসজিদ থেকে বের হইলাম। নামাজের শেষে বাড়ির সামনে জমপেশ একটা আড্ডা হয়। আজকেও তেমনি হইল কিন্তু আড্ডার সদস্য কমই ছিল। আড্ডা শেষে বাসায় ফিরলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজের বিছানায় একটু শুইলাম। দুপুরের ঘুম অনেক দিনের অভ্যাস। করোনার লকডাউনের সময় থেকেই এই অভ্যাস টা হইছে। আমি আবার শুয়ে পরলেই ঘুমাই যাই। ঘুমানোর আগে জানালায় তাকাইয়া দেখলাম আকাশ ঘন কালো হইয়া আছে। আসরের নামাযের একটু আগে ঘুম থেকে উঠলাম। উযু শেষ করে মসজিদের দিকে রওনা দিলাম। তখনও বাহিরে ফোটা ফোটা বৃষ্টি। নামাজ শেষ করে বের হইয়াই নদীর দিকে হাটা শুরু করলাম। বর্ষাকালের নদী পানিতে টুইটুম্বুর। কয়েকদিন যাবত সারাদেশেই বৃষ্টি। বিভিন্ন জেলায় দেখা দিছে বন্যা। অনেক নদীর পানি বিপদসীমার অনেক উপরে। সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি অনেক বেশি খারাপ। এবার এস এস সি পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে বন্যার কারণে। নদীতেও বেশিক্ষন দাড়ানো গেল না।আবার বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। ফিরে এসে বাড়ির সামনের চৌকিতে বসলাম। নানরকম বিষয় নিয়ে আড্ডা দেওয়া হইল। স্থির হইল মাগরিবের পর কোথাও খাইতে যাওয়া হবে। মাগরিবের নামাযের সময় অনেক বৃষ্টি। তারপরও ছাতা নিয়ে বের হইলাম নামাযের জন্য। নামায শেষে বৃষ্টির মধ্যেই বের হলাম রেষ্টুরেন্ট এর উদ্দেশ্যে। রেষ্টুরেন্টটা খুব কাছেই। রেষ্টুরেন্টের মালিক আমার ছাত্রীর দুলাভাই। সম্পর্কে আমার এলাকার বর ভাই হয়। ওপেন হইছে বেশিদিন হয় নাই।গত রমজান মাস থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করছে। ম্যানেজমেন্টা এখনও অনেক দূর্বল। খাবার তেমন মজাদার না। এটলিস্ট আমার কাছে ভালো লাগে নাই। তারপরও সবার সাথে যাইতে হয়। যেকোন রেস্টুরেন্টের ডাইনিং এ খাওয়ার আলাদা একটা মজা আছে। এই বিষয় আরেক দিন লিখব। বের হইতেই বৃষ্টি। মানে ঝুম বৃষ্টি। ব্রীজের নিচে এক জায়গায় অনেকক্ষন দাড়াইয়া থাকলাম। বৃষ্টি একটু কমলে বাসার দিকে রওনা দিলাম। বাসায় পৌছায়াই দেখি স্পেশাল রান্নাবান্না চলতেছে। পোলাও, গরুর মাংস ও চিকেন ফ্রাই। আম্মুর হাতের রান্না আমার খুব পছন্দের। আবার সাথে সেই বৃষ্টি। এ এক অন্যরকম অনুভূতি। বৃষ্টি নামলেই আমার রবীন্দ্রনাথের লেখা চিরচেনা সেই উক্তিটির কথা খুব মনে পড়ে যায়, "গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে’ আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হ’ল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খর-পরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।"
২| ০১ লা জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৯
বিজন রয় বলেছেন: নতুন লেখা দেন ইমতিয়াজ সাহেব।
ব্লগ খুলে বসে থাকলে হবে?
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৫৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ছবি ও লেখা ভাললাগলো।
খুদের ভাত আমাদের এলকায় ও খায়। তবে খুদের চাল ও ডাল আর আলু দিয়ে বৌয়া রান্নাটা সবচেয়ে মজার। সাথে শুঁটকি ভর্তা আর ডিম ভাজি থাকলে তো কথাই নেই।
আপনি নিয়মিত পোস্ট করুন, মন্তব্য করুন তাহলে প্রথম পাতায় যেতে পারবেন। ভাল থাকবেন।